89. বল প্রয়োগে বাধ্য করা

【1】

আল্লাহর বাণীঃ তবে তার জন্য নয় (যাকে সত্য অস্বীকার করতে) বাধ্য করা হয়।

কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অবিচলিত। আর যে সত্য অস্বীকারে অন্তর উন্মুক্ত রাখল তার উপর পতিত হবে আল্লাহ্‌র গযব ... ... (সূরা নাহল ১৬/১০৬)। আল্লাহ্ বলেন : তবে যদি তোমরা তাদের কাছ থেকে কোন ভয়ের আশংকা কর আর (আরবী) একই অর্থ (সূরা আল ‘ইমরান ৩/২৮)। আল্লাহ্ আরো বলেনঃ যারা নিজেদের উপর জুল্ম করে, তাদের প্রাণ নেয়ার সময় ফেরেশতাগণ বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে। তারা বলে, দুনিয়ায় আমরা দুর্বল ছিলাম। তারা বলে, তোমরা নিজ দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে বসবাস করতে পারতে আল্লাহ্‌র দুনিয়া কি এমন প্রশস্ত ছিল না? ... ... আল্লাহ্ পাপ মোচনকারী ও ক্ষমাশীল- (সূরা আন্-নিসা ৪/৯৭-৯৯)। আল্লাহ্ বলেনঃ এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য? যারা বলে ... সহায়-পর্যন্ত (সূরা আন্-নিসা ৪/৭৫)। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন : আল্লাহ্ দুর্বলদেরকে ক্ষমার যোগ্য বলে চিহ্নিত করেছেন যারা আল্লাহ্‌র নির্দেশসমূহ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। আর বল প্রয়োগকৃত ব্যক্তি এমনই দুর্বল হয় যে, সে ঐ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না, যার নির্দেশ তাকে দেয়া হয়েছে। হাসান (রহঃ) বলেন : তকিয়া কেয়ামত পর্যন্ত অবধারিত। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, যাকে জালিমরা বাধ্য করার কারণে সে তালাক প্রদান করে ফেলে তা কিছুই নয়। ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ), ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) শা’বী (রহঃ) এবং হাসান (রহঃ)-ও এ মত পোষণ করেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল কাজই নিয়তের সঙ্গে সম্পর্কিত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে দু‘আ করতেন। হে আল্লাহ্! আইয়াশ ইব্‌নু আবূ রাবী‘আ, সালামা ইব্‌নু হিশাম, ওয়ালীদ ইব্‌নু ওয়ালীদকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ্! দুর্বল মু’মিনদেরকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ্! মুযার গোত্রের উপর তোমার পাঞ্জা কঠোর করে দাও এবং তাদের ওপর ইউসুফের দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত বছর পাঠিয়ে দাও। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭১)

【2】

যে ব্যক্তি কুফরী গ্রহণ করার বদলে দৈহিক নির্যাতন, নিহত ও লাঞ্ছিত হওয়াকে বেছে নেয়।

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি জিনিস এমন যার মধ্যে সেগুলো পাওয়া যাবে, সে ঈমানের স্বাদ পাবে। ১. আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল তার কাছে আর সবকিছুর চেয়ে প্রিয় হওয়া। ২. কাউকে কেবল আল্লাহ্‌র জন্য ভালবাসা। ৩. জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে যেভাবে অপছন্দ করে, তেমনি পুনরায় কুফরীর দিকে ফিরে যাওয়াকে অপছন্দ করে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭২) কায়স (রহঃ) তিনি বলেন, আমি সা‘ঈদ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমি মনে করি ‘উমর (রাঃ)-এর কঠোরতা আমাকে ইসলামের উপর সুদৃঢ় করে দিয়েছে। তোমরা ‘উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে যা করেছ তাতে যদি উহুদ পর্বত ফেটে যেত তা হলে ফেটে যাওয়া ন্যায়সঙ্গতই হত। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৩) খাব্বাব ইব্‌নু আরাত্ (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কোন বিষয়ে অভিযোগ পেশ করলাম। তখন তিনি কা‘বা ঘরের ছায়ায় তাঁর চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম, (আমাদের জন্য কি) সাহায্য চাইবেন না? আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন না? তিনি বললেনঃ তোমাদের আগের লোকদের মাঝে এমন ব্যক্তিও ছিল, যাকে ধরে নিয়ে তার জন্য যমীনে গর্ত করা হত। তারপর করাত এনে মাথায় আঘাত হেনে দু’টুক্‌রা করে ফেলা হত। লোহার শলাকা দিয়ে তার গোশত ও হাড্ডি খসানো হত। তা সত্বেও তাকে তার দ্বীন থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারত না। আল্লাহ্‌র কসম! এ দ্বীন অবশ্যই পূর্ণতা লাভ করবে। এমন হবে যে সান‘আ থেকে হায্‌রামাওত পর্যন্ত ভ্রমণকারী ভ্রমণ করবে। অথচ সে আল্লাহ্ ছাড়া কাউকে ভয় করবে না এবং নিজের মেষ পালের জন্য বাঘের ভয় থাকবে, কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়ো করছ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৪)

【3】

জোর করে কাউকে দিয়ে তার নিজের সম্পদ বা অপরের সম্পদ বিক্রয় করানো।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, একবার আমরা মসজিদে ছিলাম। হঠাৎ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে এসে বললেনঃ তোমরা ইয়াহূদীদের কাছে চল। আমি তাঁর সঙ্গে বের হয়ে গেলাম এবং বায়তুল-মিদ্‌রাস নামক শিক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ হে ইয়াহূদী সম্প্রদায়! তোমরা মুসলিম হয়ে যাও, নিরাপদ থাকবে। তারা বলল, হে আবুল কাসিম! আপনি (আপনার দায়িত্ব) পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ এটাই আমি চাই। তারপর দ্বিতীয়বার কথাটি বললেন। তারা বলল, হে আবুল কাসিম! আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। এরপর তিনি তৃতীয়বার তা আবার বললেন। আর বললেনঃ তোমরা জেনে রেখো যে, যমীন কেবল আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের। আমি তোমাদেরকে দেশান্তর করতে মনস্থ করেছি। তাই তোমাদের যার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, তা যেন সে বিক্রি করে ফেলে। তা না হলে জেনে রেখো, যমীন কেবল আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের। [১৩৪] [৩১৬৭; মুসলিম ৩২/২০, হাঃ ১৭৬৫, আহমাদ ৯৮৩৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৫)

【4】

যার উপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে এমন ব্যক্তির বিয়ে জায়েয হয় না।

আল্লাহ্ বলেন : তোমরা দাসীগণকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না .... .... (সূরা আন্-নূর ২৪/৩৩) খান্‌সা বিন্‌ত খিযাম আনসারী (রাঃ) যে, তাকে তার পিতা (অনুমতি ছাড়া) বিয়ে দিলেন। আর সে ছিল বিধবা। এ বিয়ে সে অপছন্দ করল। তাই সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে জানাল। ফলে তিনি তার এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন। [১৩৫](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৬) আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! মহিলাদের বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিতে হবে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কুমারীর কাছে অনুমতি চাইলে তো লজ্জাবোধ করে; ফলে সে নীরব। তিনি বললেনঃ তার নীরবতাই তার অনুমতি।[৫১৩৭; মুসলিম ১৬/৮, হাঃ ১৪২০, আহমাদ ২৪২৪০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৭)

【5】

কাউকে যদি বাধ্য করা হয়, যার কারণে সে গোলাম দান করে ফেলে অথবা বিক্রি করে দেয় তবে তা কার্যকর হবে না।

কেউ কেউ সে রকমই রায় পোষণ করেন। অন্য পক্ষে তার মতে ক্রেতা যদি এতে কিছু মানত করে তাহলে তা কার্যকর হবে। তদ্রুপ তাকে যদি মুদাব্বার বানিয়ে নেয় তাহলে তা কার্যকর হবে। জাবির (রাঃ) এক আনসারী লোক তার এক গোলাম মুদাব্বার বানিয়ে দেয়। অথচ তার এছাড়া অন্য কোন মাল ছিল না। এ সংবাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেনঃ কে আমার নিকট হতে এ গোলাম কিনে নিবে? নু‘আয়ম ইব্‌নু নাহ্হাম (রাঃ) আটশ’ দিরহামে তাকে ক্রয় করলেন। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ঐ গোলামটি কিব্তী গোলাম ছিল এবং (ক্রয়ের) প্রথম বছরই মারা যায়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৮)

【6】

‘ইকরাহ্’ (বাধ্য করা) শব্দ থেকে কারহান ও কুরহান নির্গত, দু’টি অর্থ একই।

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি এ আয়াতঃ “হে মু’মিনগণ! নারীদেরকে জোরপূর্বক তোমাদের উত্তরাধিকার মনে করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়.....”- (সূরা আন্-নিসা ৪/১৯)। এর ব্যাখ্যায় বলেন, তাদের নিয়ম ছিল, যখন কোন লোক মারা যেত তখন তার অভিভাবকগণই তার স্ত্রীর ব্যাপারে অধিক হক্দার বলে মনে করত। ইচ্ছা করলে তাদের মধ্যে কেউ তাকে বিয়ে করত, ইচ্ছা করলে তাকে (অন্যত্র) বিয়ে দিত, আর ইচ্ছা করলে তাকে বিয়ে দিত না। স্ত্রীর অভিভাবকদের তুলনায় নিজেদেরকে অধিক হক্দার তারাই মনে করত। এ সম্পর্কেই উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৯)

【7】

যখন কোন মহিলাকে ব্যভিচারে বাধ্য করা হয় তখন তার উপর কোন ‘হদ’ আসে না। কেননা, আল্লাহ্‌ বলেনঃ তবে কেউ যদি তাদেরকে বাধ্য করে সে ক্ষেত্রে জবরদস্তির পর আল্লাহ্‌ তো তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আন্‌-নূর ২৪/৩৩)

লায়স (রহঃ) নাফি‘ (রহঃ) লায়স (রহঃ) নাফি‘ (রহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, সুফীয়্যাহ বিন্‌ত আবূ ‘উবায়দ তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, সরকারী মালিকানাধীন এক গোলাম গনীমতের পঞ্চমাংশে পাওয়া এক দাসীর সঙ্গে জবরদস্তি করে যিনা করে। তাতে তার কুমারীত্ব মুছে যায়। ‘উমর (রাঃ) উক্ত গোলামকে কশাঘাত করলেন ও নির্বাসন দিলেন। কিন্তু দাসীটিকে সে বাধ্য করেছিল বলে কশাঘাত করলেন না। যুহরী (রহঃ) কুমারী দাসীর ব্যাপারে বলেন, যার কুমারীত্ব কোন আযাদ ব্যক্তি ছিন্ন করে ফেলল, বিচারক ঐ কুমারী দাসীর মূল্য অনুপাতে তার জন্য ঐ আযাদ ব্যক্তির নিকট হতে কুমারীত্ব মুছে ফেলার দিয়াত গ্রহণ করবেন এবং ওকে কশাঘাত করবেন। আর বিবাহিতা দাসীর ক্ষেত্রে ইমামদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন জারিমানা নেই। কিন্তু তার উপর ‘হদ’ জারি হবে। [১৩৬](আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইব্রাহীম (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘সারা’ (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে হিজরত করে এমন এক জনপদে আসলেন, যেখানে একজন স্বৈরাচারী বাদশাহ্ ছিল। সে তাঁকে বলে পাঠাল যে, যেন তিনি ‘সারা’ কে তার নিকট পাঠিয়ে দেন। তিনি তাকে পাঠিয়ে দিলেন। সে ‘সারার’ দিকে অগ্রসর হতে লাগল। অপর দিকে ‘সারা’ ওযূ করে সালাত আদায় করতে লাগলেন। আর বললেন, হে আল্লাহ্! আমি যদি তোমার ও তোমার রাসূলের প্রতি ঈমান এনে থাকি তাহলে আমার উপর ঐ কাফিরকে ক্ষমতা দিও না। ফলে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে (মাটিতে পড়ে) গোড়ালি দিয়ে ঘর্ষণ করতে লাগল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮০)

【8】

যখন কোন লোক তার সঙ্গীর ব্যাপারে নিহত হওয়া বা তদ্রুপ কিছুর আশঙ্কা করে তখন (তার কল্যাণে) কসম করা যে, সে তার ভাই।

তদ্রুপ যে কোন বল প্রয়োগকৃত লোকের ব্যাপারে যখন কোন প্রকার আশঙ্কা দেখা দেয়। কেননা, এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে জালিমের হাত থেকে রক্ষা করবে। তার জন্য লড়াই করবে, তাকে লাঞ্ছিত করবে না। যদি সে মজলুমের জন্যে লড়াই করে তাহলে তার উপর কোন ‘হদ’ বা কিসাস নেই। যদি কাউকে বলা হয় তোমাকে অবশ্যই মদ পান করতে হবে, অথবা মৃতের গোশ্‌ত খেতে হবে, অথবা তোমার দাসকে বিক্রি করতে হবে অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করতে হবে অথবা কিছু দান করতে হবে বা তদ্রুপ যে কোন চুক্তির কথা বলা হয়, নইলে আমরা তোমার পিতাকে অথবা মুসলিম ভাইকে হত্যা করে ফেলব। তখন তার জন্য ঐসব কাজ করার অনুমতি আছে। কেননা, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কেউ কেউ বলেন, যদি বলা হয়, তোমাকে অবশ্যই মদ পান করতে হবে, অথবা মৃতের গোশ্‌ত খেতে হবে, অন্যথায় আমরা তোমার পুত্রকে বা তোমার পিতাকে বা তোমার কোন নিকট আত্মীয়কে হত্যা করে ফেলব, তখন তার জন্য এসব কাজ করার অনুমতি নেই। কেননা সে নিরুপায় নয়। কেউ কেউ এর বিপরীত রায় ব্যক্ত করে বলেন, যদি তাকে বলা হয়, আমরা অবশ্যই তোমার পিতাকে বা তোমার পুত্রকে হত্যা করে ফেলব, না হয় তোমাকে ঐ গোলামটি বিক্রি করতে হবে, অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করতে হবে, অথবা হেবা স্বীকার করতে হবে, তাহলে কিয়াসের দৃষ্টিতে তার জন্য তা জরুরী হয়ে যায়। তবে ইস্‌তিহ্‌সানের প্রেক্ষিতে আমরা বলি যে, এ ক্ষেত্রে বিক্রি, দান বা যে কোন চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। কাজেই তারা কিতাব (কুরআন), সুন্নাহ্‌ ছাড়াই নিকটাত্মীয় ও আত্মীয়দের মধ্যে প্রভেদ করে নিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ইবরাহীম (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, ইনি আমার বোন। আর তা ছিল আল্লাহ্‌র ব্যাপারে (দ্বীনের ভিত্তিতে)। নাখই (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি হলফ্‌ করায়, সে যদি অত্যাচারী হয় তাহলে হলফকারীর নিয়তই গ্রহণীয় হবে। আর যদি সে মজলুম হয় তাহলে তার নিয়তই গ্রহণীয় হবে। আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই, না সে তার প্রতি জুলুম করবে, না তাকে অন্যের হাওলা করবে। যে কেউ তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে আল্লাহ্ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮১) আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার ভাইকে সাহায্য কর। সে জালিম হোক অথবা মজলুম হোক। এক লোক বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! মজলুম হলে তাকে সাহায্য করব তা তো বুঝলাম। কিন্তু জালিম হলে তাকে কিভাবে সাহায্য করব? তিনি বললেনঃ তাকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখবে। আর এটাই হল তার সাহায্য।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮২)