20. লি’আন

【1】

লি'আন সম্পর্কে

সাহ্‌ল ইবনু সা’দ ইবনু সা’দ সা’ইদী (রাযিঃ) ‘উওয়াইমির আল-‘আজলানী (রাযীঃ) ‘আসিম ইবনু ‘আদী আনসারী (রাযীঃ)-এর কাছে এসে তাকে বললেন, হে ‘আসিম! যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে (ব্যভিচারে লিপ্ত)পায়; তবে তোমার অভিমত কী? সে কি তাকে হত্যা করবে? আর তখন তো তোমরা তাকে (কিসাস হিসেবে) হত্যা করবে। যদি তা না হয় তবে সে কী করবে? হে ‘আসিম! তুমি আমার জন্য এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস কর। তখন ‘আসিম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রকম প্রশ্ন করা অপছন্দ করলেন এবং এটি দূষণীয় মনে করলেন [২]। ‘আসিম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। এর নিকট যা শুনলেন এতে বড়ই দুঃখিত হলেন। যখন ‘আসিম ফিরে এলেন, তখন ‘উওয়াইমির তার কাছে এসে বললেনঃ হে ‘আসিম! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে কী বলেছেন? ‘আসিম ‘উওয়াইমিরকে বললেনঃ তুমি আমার কাছে ভাল কাজ নিয়ে আসনি। তুমি যে বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে বলেছ তা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুবই অপছন্দ করেছেন। ‘উওয়াইমির (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস না করে ক্ষান্ত হব না। তখন ‘উওয়াইমির গেলেন এবং লোক সমাবেশে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কোন পুরুষকে (ব্যভিচারে লিপ্ত) দেখতে পায় তাহলে সে–কি তাকে হত্যা করে ফেলবে? এরপর তো (কিসাস হিসেবে) আপনারা তাকে হত্যা করে ফেলবেন। অথবা সে কী করবে? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আল্লাহর হুকুম নাযিল হয়েছে। তুমি যাও, তোমার স্ত্রীকে নিয়ে এসো। সাহল বললেনঃ এরপর তারা উভয়ে (স্বামী-স্ত্রী) লি’আন করলো। আর আমিও তখন লোকজনদের সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট হাযির ছিলাম। যখন লি’আন সমাধা করলেন তখন ‘উওয়াইমির বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! যদি আমি তাকে আমার স্ত্রী হিসেবে রেখে দেই তাহলে তো আমি তার উপর মিথ্যারোপকারী হয়ে গেলাম। রসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে নির্দেশ দেয়ার আগেই তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, তখন থেকে লি’আনকারীদের জন্য এটাই নিয়ম-বিধান হিসেবে পরিণত হল। (ই.ফা.৩৬০১, ৪র্থ খন্ড; ই.সে.৩৬০১, ৫ম খন্ড) সাহ্‌ল ইবনু সা’দ (রাযিঃ) ‘আজলান গোত্রের ‘উওয়াইমির আনসারী ‘আসিম ইবনু ‘আদীর কাছে এলেন ... পরবর্তী অংশ মালিক বর্ণিত হাদীসের মত বর্ণনা করেন। তিনি তার হাদীসে এ কথাও বলেছেন, “উওয়াইমির তার স্ত্রীকে আলাদা করে দেয়াতে পরবর্তীতে লি’আনকারীদ্বয়ের জন্য তা বিধানরূপে পরিগণিত হল।’’ তিনি তার বর্ণনায় আরও উল্লেখ করেছেন, “সাহল বলেছেন- সে মহিলাটি ছিল গর্ভবতী। সে গর্ভজাত সন্তানটিকে পরবর্তীতে তার মায়ের দিকে সম্বন্ধ করে ডাকা হয়।’’ এরপর এ বিধান প্রবর্তিত হলো যে, সে তার মায়ের ওয়ারিস পাবে এবং তার মা আল্লাহর নির্ধারিত অংশ হিসেবে তার (সন্তান) থেকে মিরাসের অধিকারী হবে। (ই.ফা.৩৬০২, ই.সে.৩৬০২) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমাকে ইবনু শিহাব (রহঃ) বানু সা’ইদাহ্‌ গোত্রের ইবনু সা’দ বর্ণিত দু’জন লি’আনকারী ও তার বিধান সম্পর্কে অবহিত করেছেন। তিনি (সাহল) বলেনঃ জনৈক আনসারী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! যদি কোন লোক তার স্ত্রীর সঙ্গে (ব্যভিচাররত) অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পায় তাহলে সে সম্পর্কে আপনার মতামত কী? এরপর পুরো ঘটনাসহ হাদীস বর্ণনা করেন। এতে বাড়তি বর্ণনা করেন যে, (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ে মাসজিদের ভেতর লি’আন করল আর আমি উপস্থিত ছিলাম। আর তিনি এ হাদীসে বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)তাকে কোন নির্দেশ দেয়ার তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখেই তাকে আলাদা করে দেন।তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ উভয় লি’আনকারীর মাঝখানে বিচ্ছেদ। [৩] (ই.ফা.৩৬০৩, ই.সে.৩৬০৩) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) তিনি বলেন, মুস’আবের স্ত্রীর ব্যাপারে আমাকে লি’আনকারী দু’জনের মাস’আলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, তাদের আলাদা করা হবে কি না। তিনি বলেনঃ তখন আমি কী বলব তা আমি বুঝতে পারছিলাম না। এরপর আমি মাক্কায় ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর বাসায় গেলাম। আমি তাঁর গোলামকে বললাম, আমার জন্য অনুমতি নিয়ে এসো। সে বললঃ তিনি এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন। কিন্তু তিনি আমার কন্ঠস্বর শুনতে পেলেন। তিনি বললেনঃ ইবনু জুবায়র? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ ভিতরে এসো। আল্লাহ্‌র কসম! বিশেষ প্রয়োজনই এ সময় তোমাকে নিয়ে এসেছে। আমি ভিতরে গিয়ে দেখতে পেলাম তিনি একটি বিছিয়ে একটি বালিশের উপর হেলান দিয়ে আছেন। বালিশটি খেজুর ছোবড়ায় ভরা ছিল। আমি বললামঃ হে আবূ ‘আবদুর রহমান! দু’জন লি’আনকারী- এদেরকে কি পৃথক করা হবে? তিনি বললেনঃ সুবহানাল্লাহ্‌! হ্যাঁ। সর্বপ্রথম এ বিষয়ে অমুকের পুত্র অমুক জিজ্ঞেস করেছিল। সে বলেছিলঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি কী বলেন, যদি আমাদের মধ্যে কেউ তার স্ত্রীকে অপকর্মে লিপ্ত দেখতে পায় তাহলে সে কী করবে? যদি সে বলাবলি করে তাহলে তো গুরুতর আকার ধারণ করবে। যদি সে নীরব থাকে, তাহলে এমন সাংঘাতিক বিষয়ে কি করে নীরব থাকবে। তিনি বলেনঃ তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ রইলেন; কোন উত্তর দিলেন না। সে ব্যক্তি আবার তাঁর কাছে এসে বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল!যে বিষয়টি সম্পর্কে ইতোপুর্বে আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমার নিজের উপরই তা ঘটছে। তখন আল্লাহ তা’আলা সূরা আন-নূর-এর এ আয়াতগুলো নাযিল করেন- “আর যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নেই- তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্যের পদ্ধতি হবে এই যে, সে চারবার আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, সে অবশ্যি সত্যবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর আল্লাহর লা’নাত বর্ষিত হবে। আর স্ত্রীর শাস্তি বাতিল করা হবে যদি সে চারবার আল্লাহর নামে কসম করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামীই মিথ্যাবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে , তার স্বামী যদি সত্যবাদী হয় তবে নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব” – (সূরা আন্‌-নূর ২৪ ; ৬-৯)। তিনি তাকে এ আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে শোনালেন। এরপর তাকে নসীহত করলেন এবং স্মরণ করিয়ে দিলেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় সহজ। সে বলল, ‘না’। সে মহান সত্তার কসম- যিনি আপনাকে নবী হিসেবে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি তার (আমার স্ত্রীর) উপর কোন মিথ্যা আরোপ করিনি। এরপর তিনি মহিলাকে ডেকে পাঠালেন এবং তাকে উপদেশ দিলেন, তাকে আখিরাতের ভয় দেখালেন, সর্বোপরি তাকে জানিয়ে দিলেন যে, দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনাত সহজতর। সে বলল, না, সে মহান সত্তার কসম- যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, নিশ্চয়ই সে মিথ্যাবাদী। এরপর তিনি পুরুষ লোকটির দ্বারা লি’আন বাক্য পাঠ করাতে শুরু করলেন। তখন সে চারবার আল্লাহর নামে কসম করে সাক্ষ্য দিল যে, সে তার কথা সত্যবাদী। পঞ্চমবারে সে বলল, যদি সে মিথ্যাবাদী হয় তাহলে তার উপর আল্লাহর লা’নাত নেমে আসুক। এরপর তিনি (নাবী সাঃ) স্ত্রীলোকটিকে ডেকে পাঠালেন। সেও আল্লাহর নামে শপথ করে চারবার সাক্ষ্য দিল যে, সে (স্বামী) মিথ্যাবাদী। পঞ্চমবারে সে বলল, যদি সে (তার স্বামী) সত্যবাদী হয় তাহলে তার (মহিলার) উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন। (ই.ফা.৩৬০৪, ই.সে.৩৬০৪) সা’ঈদ ইবনূ জুবায়র (রহঃ) মুস’আব ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর শাসনামলে দু’জন লি’আনকারী সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করা হলে আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না কী উত্তর দেব। তখন ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে এলাম এবং সে দু’জন লি’আনকারী সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলামঃ তাদের বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে আপনার মত কী? এরপর তিনি ইবনু নুমায়র (রহঃ)- এর হাদীসের মতই বর্ণনা করেন। (ই.ফা.৩৬০৫, ই.সে.৩৬০৫) ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’জন লি’আনকারীর (লি’আন বাক্য পাঠের ব্যাপারে) তোমাদের দু’জনের হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে। তোমাদের দু’জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আর তোমার (স্ত্রীর) উপর তোমার কোন করণীয় নেই। লোকটি বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার অর্থের (প্রদত্ত মাহর) কী হবে। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার অর্থ পাবে না। যদি তুমি তার ব্যাপারে সত্যবাদী হও তাহলে তোমার দেয়া সম্পদ ঐ বস্তুর বদলা বলে গণ্য হবে যা দ্বারা তুমি তার লজ্জাস্থান হালাল করেছ। আর যদি তুমি তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থাক তাহলে তার থেকে মাল ফেরত পাওয়া দুরহ ব্যাপার। যুহায়র (রহঃ) তার বর্ণনায় বলেছেন যে, সুফ্‌ইয়ান (রহঃ) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ)-এর সূত্রে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বলতে শুনেছি। (ই.ফা.৩৬০৬, ই.সে.৩৬০৬) ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেনঃ বানী ‘আজলান গোত্রের দু’জনকে (স্বামী-স্ত্রী) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিচ্ছিন্ন করে দিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ ভালভাবেই জানেন যে, নিশ্চয়ই তোমাদের দু’জনের মধ্যে একজন মিথ্যাবাদী। অতএব তোমাদের কেউ কি তাওবাহ্‌ করতে আগ্রহী? (ই.ফা.৩৬০৭, ই.সে.৩৬০৭) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) আমি লি’আন সম্পর্কে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করলেন। (ই.ফা.৩৬০৮, ই.সে.৩৬০৮) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) তিনি বলেন, মুস’আব (ইবনু যুবায়র) (রাঃ) তার শাসনামলে লি’আনকারীদের আলাদা করেননি। সা’ঈদ বলেনঃ এরপর বিষয়টি আমি ‘আবদুল্লাহ্‌ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে উঠালাম। তখন তিনি বললেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানূ ‘আজলান গোত্রের দু’জনকে (স্বামী-স্ত্রীকে) আলাদা করে দিয়েছিলেন। (ই.ফা.৩৬০৯, ই.সে.৩৬০৯) ইবনু ‘উমার (রাঃ) কোন এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় তার স্ত্রীর উপর লি’আন করেছিল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের দু’জনকে বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং সন্তানের বংশ পরিচিতি তার মায়ের সাথে জুড়ে দেন। রাবী ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ) মালিককে জিজ্ঞেস করলেন, আপনাকে কি নাফি’ (রহঃ) এ হাদীস বর্ণনা করেছেন? তিনি (মালিক) বলেন, হ্যাঁ। (ই.ফা.৩৬১০, ই.সে.৩৬১০) ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন আনসারী পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে লি’আন করালেন এবং তাদের আলাদা করে দিলেন। (ই.ফা.৩৬১১, ই.সে.৩৬১১) ‘উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ) উক্ত সানাদে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.৩৬১২, ই.সে.৩৬১২) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি একবার জুমু’আর রাতে মাসজিদে ছিলাম। তখন একজন আনসারী সেখানে উপস্থিত হলেন। তিনি বললেনঃ যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পায়, সে যদি এ নিয়ে কথা বলে, তাহলে আপনারা তো তাকে (অপবাদদাতা হিসেবে) চাবুক লাগাবেন? অথবা সে যদি তাকে হত্যা করে ফেলে তাহলে তো আপনারা তাকে হত্যা করবেন (কিসাস হিসেবে)। যদি সে নীরব থাকে তাহলে তো তাকে সাংঘাতিক ক্রোধ (হযম) করে নীরব থাকতে হবে। আল্লাহর কসম! আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবই। পরদিন সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে প্রশ্ন করল। সে বলল, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে কোন পুরুষকে (ব্যভিচারে লিপ্ত) দেখতে পায় এবং সে এ নিয়ে কথা বলে তাহলে আপনারা তাকে হত্যা করে ফেলবেন। আর যদি নীরব থাকে তবে তো তাকে রাগ চেপে নীরব থাকতে হবে। (সুতরাং তার উপায় কী?) তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’আ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! তুমি এর ফয়সালা দাও এবং তিনি দু’আ করতে লাগলেন। তখন লি’আনের আয়াত অবতীর্ণ হলো- “ আর যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ দেয় অথচ তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নেই”- এ আয়াতগুলো। (সূরা আন্‌-নূর ২৮ : ৬-৯) এরপর সে ব্যক্তি লোকজনের সামনে লি’আনের পরীক্ষার মুখোমুখি হলো। তারপর সে তার স্ত্রীসহ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এল এবং তারা উভয়ে লি’আন করল। লোকটি আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে চারবার সাক্ষ্য দিল যে, সে সত্যবাদী। এরপর পঞ্চমবারে বলল, সে যদি মিথ্যাবাদী হয় তাহলে তার উপরে আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। এরপর মহিলাটি লি’আনের জন্য এগিয়ে এলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ থাম (যদি তোমার স্বামীর উক্তি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তুমি তা স্বীকার করে নাও)। কিন্তু সে অস্বীকার করল এবং লি’আন করে ফেলল। যখন তারা দু’জন ফিরে যাচ্ছিল তখন (নাবী সাঃ) বললেনঃ সম্ভবত এ মহিলা কালো কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট সন্তান প্রসব করবে। অবশেষে তার গর্ভে কালো কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট সন্তানই জন্ম নিয়েছিল। (ই.ফা.৩৬১৩, ই.সে.৩৬১৩) আ’মাশ (রহঃ) এ একই সানাদে অনুরূপ বর্ণিত আছে। (ই.ফা.৩৬১২, ই.সে.৩৬১) মুহাম্মাদ (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমি একটি বিষয়ে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। আমার ধারণা ছিল যে, আমি যা জানতে চাই সে বিষয়ের জ্ঞান তার কাছে আছে। আনাস (রাঃ) বলেনঃ হিলাল ইবনু ‘উমাইয়্যাহ্‌ (রাঃ) শারীক ইবনু সাহমার সাথে তার স্ত্রীর সম্পর্কে যিনার অভিযোগ আনলেন। তিনি ছিলেন বারা ইবনু মালিকের বৈপিত্রেয় ভাই। ইসলামে ইনিই সর্বপ্রথম লি’আন করেন। রাবী বলেনঃ তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে লি’আন সমাধা করলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার ঐ মহিলার প্রতি নযর রাখবে। যদি সে সোজা চুলধারী উজ্জ্বল বর্ণের লাল চোখ বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে তাহলে সে হিলাল ইবনু উমায়্যার ঔরষজাত সন্তান। আর যদি সে (মহিলা) সুরমা চোখ বিশিষ্ট কোঁকড়ানো চুল, পায়ের চিকন নলা বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে তাহলে সে শারীক ইবনু সাহমার সন্তান। রাবী আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমি জানতে পারলাম যে, ঐ মহিলাটি সুরমা চোখ বিশিষ্ট কুঞ্চিত কেশধারী সরু নলা বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করেছে। (ই.ফা.৩৬১৫, ই.সে.৩৬১৫) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট লি’আনের বিষয়টি আলোচিত হল। তখন ‘আসিম ইবনু ‘আদী (রাঃ) ঐ বিষয়ে কিছু কথা বলে ফিরে গেলেন। তখন তার গোত্রের একজন লোক তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে এক (অপরিচিত) লোককে দেখতে পেয়েছে। তখন ‘আসিম (রাঃ) বললেন, আমি আমার উক্তির (বক্তব্যের) কারণে এ বিপদে পড়লাম। তিনি তাঁকে নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এলেন। এরপর সে তাঁকে (রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ) সে ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত করল যাকে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখতে পেয়েছিল। এ লোকটি (বর্ণনাদাতা) ছিল হলদে বর্ণ বিশিষ্ট হালকা-পাতলা ও সোজা চুলবিশিষ্ট। আর সে যাকে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখতে পেয়েছিল সে ছিল সুঠাম দেহী, মোটা নলা ও বাদামী রং বিশিষ্ট। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ইয়া আল্লাহ্‌! তুমি বিষয়টি ফায়সালা করে দাও। সে মহিলা এমন একটি সন্তান প্রসব করল, যে ছিল ঐ লোকটির মত যাকে স্বামী তার সঙ্গে দেখতে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের দু’জনের মধ্যে লি’আন করালেন। তখন এক ব্যক্তি সে মজলিসেই ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললঃ এ কি সে মহিলা যার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, “যদি আমি বিনা দলীলে কাউকে ‘রজম’ (পাথর নিক্ষেপ) করতাম তবে একেই রজম করতাম।” তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ না-সে ছিল অপর এক মহিলা যার অপকর্ম মুসলিমদের মাঝে প্রকাশিত ছিল। (ই.ফা. ৩৬১৬,ই.সে. ৩৬১৬) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে দু’জন লি’আনকারীর প্রসঙ্গে আলোচনা করা হলো। পরবর্তী অংশ লায়সের হাদীসের মতই। অবশ্য এতে মাংসল উল্লেখ করার পর তিনি অতিরিক্ত বলেছেন, “সে ছিল কোঁকড়া চুলধারী।” (ই.ফা. ৩৬১৭,ই.সে. ৩৬১৭) ‘আবদুল্লাহ্‌ ইবনু শাদ্দাদ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকটে দু’ লি’আনকারীর বিষয় আলোচনা করা হলো। তখন ইবনু শাদ্দাদ (রহঃ) বললেনঃ এরা কি ঐ দুই ব্যক্তি যাদের সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেনঃ আমি যদি কাউকে বিনা দলীলে ‘রজম’ করতাম তবে ঐ মহিলাকে ‘রজম’ করতাম। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ ‘না’ , এ মহিলা সে নয়। সে ছিল অপর এক মহিলা যার ব্যাপার প্রকাশ্য ছিল। ইবনু আবী ‘উমার (রহঃ) তার বর্ণনায় কাসিম ইবনু মুহাম্মদের সূত্রে বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাসের কাছে শুনেছি। (ই.ফা. ৩৬১৮, ই.সে. ৩৬১৮) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ্‌ আনসারী (রাঃ) বলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! সে লোকটি সম্পর্কে আপনার মতামত কী যে তার স্ত্রীর সাথে অপর পুরুষকে পায়? সে কি তাকে হত্যা করে ফেলবে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না। সা’দ (রাঃ) বললেনঃ নিশ্চয় (সে তাকে হত্যা করবে), সে সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দ্বারা সম্মানিত করেছেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা শোন; তোমাদের নেতা (সা’দ) কী বলেছেন। (ই.ফা. ৩৬১৯,ই.সে. ৩৬১৯) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ্‌ (রাঃ) বলেছেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি যদি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কাউকে দেখতে পাই তাহলে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করা পর্যন্ত আমি কি তাকে সুযোগ দেব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। (ই.ফা. ৩৬২০, ই.সে. ৩৬২০) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) তিনি বলেনঃ সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! যদি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোন পুরুষকে দেখতে পাই তবে চারজন সাক্ষী উপস্থিত না করা পর্যন্ত আমি কি তাকে ধরব না? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, পারবে না। তিনি (সা’দ) বললেনঃ এমনটি কিছুতেই হতে পারে না, সে মহান সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, অবশ্যি আমি তার (চারজন সাক্ষী উপস্থিত করার) আগেই কাল বিলম্ব না করে তার প্রতি তলোয়ার হানব। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা শোন, তোমাদের নেতা কী বলছেন। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় আত্মমর্যাদার অধিকারী। আর আমি তার চাইতেও অধিকতর আত্মমর্যাদাশীল এবং আল্লাহ আমার চাইতেও অধিক মর্যাদাবান। (ই.ফা. ৩৬২১, ই.সে. ৩৬২১) মুগরীহ্‌ শু’বাহ্‌ (রাঃ) তিনি বলেনঃ সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ্‌ (রাঃ)বললেনঃ আমি যদি আমার স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পাই তবে নিশ্চয়ই আমি তাকে আমার তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে তার উপর আঘাত হানব- পার্শ্ব দিয়ে নয়। এ কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌছল। তিনি বললেনঃ তোমরা কি সা’দের আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে আশ্চর্‍্য হয়েছ? আল্লাহ্‌র কসম! আমি তার চাইতে অধিকতর আত্মমর্যাদাবান। আর আল্লাহ আমার তুলনায় অধিকতর মর্যাদাবান। আল্লাহ তাঁর আত্মমর্যাদার কারণে প্রকাশ্য ও গোপন যাবতীয় অশ্লীল কর্ম হারাম করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ্‌র তুলনায় অধিক আত্মমর্যাদাসপম্পন্ন কেউ নেই এবং আল্লাহর চাইতে অধিকতর ওযর (স্থাপন) পছন্দকারী কেউ নেই। [৪] এ কারণেই আল্লাহ তাঁর নাবী-রসূলদের সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ্‌র চাইতে অধিকতর প্রশংসা পছন্দকারী কেউ নেই। এ কারণে তিনি জান্নাতের ও’য়াদা করেছেন। (ই.ফা. ৩৬২২, ই.সে. ৩৬২২) ‘আবদুল মালিক ইবনু উমায়র (রহঃ) সূত্র এ সানাদে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি তার বর্ণনায় অনুরূপ ‘তলোয়ারের পাস দিয়ে নয়’ শব্দটির উল্লেখ করেছেন এবং তিনি ‘তাত্থেকে’ শব্দটি বলেননি। (ই.ফা. ৩৬২৩, ই.সে.৩৬২৩) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) তিনি বলেনঃ বানূ ফাযারাহ্ গোত্রের এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এলো। এরপর সে বলল, আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান প্রসব করেছে (আমি তো কালো নই)। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার নিকট কি কোন উট আছে? সেও বলল হ্যাঁ, আমার উট আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রঙ কি রকম? সে বললঃ লাল রং এর। তিনি বললেনঃ তাতে মেটে রং এরও কি আছে? সে বললঃ হ্যাঁ, মেটে রং এর আছে। তিনি বললেনঃ এই মেটে রং কোত্থেকে এলো? সে বললঃ সম্ভবত তা পূর্ববর্তী বংশধারা থেকে নিয়ে এসেছে। তখন তিনি বললেনঃ তোমার এ কালো সন্তানটিও সম্ভবত পূর্ববর্তী বংশধারা থেকে এসেছে। (ই.ফা.৩৬২৪, ই.সে.৩৬২৪) যুহরী (রহঃ) সূত্র ইবনু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) –এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে মা’মার রহঃ বর্ণিত হাদিসে এতটুকু ব্যতিক্রম রয়েছে যে, “সে বলল, হে আল্লাহর রসুল ! আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান প্রসব করেছে। এ উক্তি দ্বারা ঐ সময় সে তার পিতৃত্ব প্রত্যাখ্যানের দিকে ইঙ্গিত করেছিল। আর হাদিসের শেষ ভাগে এতোটুকু বাড়িয়ে বলেছেন, তারপর তিনি তাকে ঐ সন্তানের পিতৃত্ব প্রত্যাখ্যানের সুযোগ দেননি। (ই.ফা. ৩৬২৫, ই.সে.৩৬২৫) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) জনৈক বেদুঈন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বলল হে আল্লাহর রাসুল! আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান প্রসব করেছে এবং তাকে আমি মেনে নিতে পারছিনা। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তোমার উট আছে কি? সে বলল, আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলো কোন রঙের? সে বললঃ লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কি মেটে (কালো) রং এর ও আছে? সে বলল, হ্যাঁ। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ রং কিভাবে এলো? সে বললঃ সম্ভবত তার বংশধারার কোন শিকড় নিয়ে এসেছে। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার এই কালো সন্তানের ক্ষেত্রেও হয়ত সে তার পূর্ব পুরুষের কোন শিকড় নিয়ে এসেছে। [৫] (ই.ফা.৩৬২৬, ই.সে.৩৬২৬) ইবনু শিহাব (রহঃ) তিনি বলেন আমাদের নিকট এ খবর পৌঁছেছে যে , আবু হুরাইয়াহ্ (রাঃ)রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে তাদের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.৩৬২৭, ই.সে.৩৬২৭)