32. হারানো বস্তু প্রাপ্তি

【1】

হাজীগনের হারানো বস্তু প্রাপ্তি

যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর কাছে এসে তাঁকে হারিয়ে যাওয়া জিনিস পাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তার থলে এবং তার বাঁধন ভাল করে চিনে রাখবে। তারপর এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দেবে। এ সময়ের মধ্যে যদি এর মালিক আসে তবে তাকে তা দিয়ে দিবে। অন্যথায় তা তোমার ইচ্ছাধীন। [৩০] তারপর সে হারানো ছাগল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেনঃ তা তোমার জন্য অথবা তোমার অন্য কোন ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের (খাবারের) জন্য। তারপর সে হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেনঃ এ নিয়ে তোমার ভাবনা কি? তার সাথে আছে পানির মশ্‌ক (পেটের মধ্যে কয়েকদিনের পানি ধারণের থলে) জুতোর মত পায়ের পাতা (মরুভূমিতে চলার উপযোগী)। সে নিজেই পানি পান করবে এবং গাছের পাতা খাবে যতক্ষন না মালিক তাকে পেয়ে যায়। ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় আমি (মালিকের নিকট) (আরবী) পড়েছি। (ই. ফা. ৪৩৪৯, ই. সে. ৪৩৪৯) যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে হারিয়ে যাওয়া জিনিস পাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেনঃ তুমি এক বছর পর্যন্ত সেটার প্রচার করবে এবং (এরপর) তুমি থলি ও বাঁধন চিনে রাখবে। তারপরে তুমি তা খরচ করতে পার। আর যদি তার প্রকৃত মালিক আসে, তবে তাকে তা আদায় করে দিবে। তারপর সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! হারানো বকরির বিধান কী? তিনি বললেনঃ তা তুমি ধরে নিয়ে রাখ। কেননা, এটি তুমি নিবে কিংবা তোমার ভাই নিবে কিংবা নেকড়ে নিয়ে যাবে। [৩১] তারপর সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তবে যদি হারানো উট হয়? বর্ণনাকারী বলেনঃ তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাগান্বিত হলেন, এমনকি তাঁর গাল দু’টি লাল হয়ে গেল। অথবা তিনি বলেছেনঃ তাঁর চেহারা লাল হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেন, তাকে নিয়ে তোমার ভাবনা কী? তার সাথে আছে তার জুতো আর পানির মশক; সেটির মালিক সেটিকে পেয়ে যাবে। (ই. ফা. ৪৩৫০, ই. সে. ৪৩৫০) রাবি‘আহ্ ইবনু আবূ ‘আবদুর রহমান (রহঃ) একই সূত্রে মালিক (রাঃ) –এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি বাড়তি বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট এল তখন আমি তার সঙ্গে ছিলাম। সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে হারিয়ে যাওয়া জিনিস পাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আম্‌র (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেন যে, যখন এর কোন দাবীদার না আসে ততক্ষণ তা খরচ করে যাবে, মালিক এসে গেলে তা দিয়ে দিবে। (ই. ফা. ৪৩৫১, ই. সে. ৪৩৫১) যায়দ ইবনু খালেদ জুহানী (রাঃ) এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট এল … অতঃপর তিনি ইসমা‘ঈল ইবনু জা‘ফর (রাঃ) –এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি এও বলেছেন, “তখন তাঁর পবিত্র মুখমন্ডল ও ললাট লাল হয়ে গেল এবং তিনি রাগান্বিত হলেন”। এবং আরও বাড়তি বলেছেন, ‘আর তা এক বছর ঘোষণা করবে’ যদি এর মালিক না আসে, তবে তা তোমার নিকট আমানাত হিসেবে থাকবে। (ই. ফা. ৪৩৫২, ই. সে. ৪৩৫২) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাহাবা যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে সোনার অথবা রূপার হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ তুমি এর বন্ধন ও থলে চিনে রাখবে; তারপর একবছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিবে। এরপরও যদি তুমি মালিকের সন্ধান না পাও, তবে তা তুমি ব্যয় করে ফেলতে পার। কিন্তু তা তোমার নিকট আমানাত হিসেবে থাকবে। যদি কোন সময় এর দাবীদার আসে তবে তা তুমি তাকে দিয়ে দিবে। তারপর সে হারানো উট সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেনঃ এতে তোমার কী? তুমি এ প্রসঙ্গ বাদ দাও। কেননা এর সাথে এর জুতা আছে এবং পানি সংরক্ষণের থলে আছে। সে নিজেই পানির ঘাটে যেতে পারে এবং বৃক্ষ থেকে খেতে পারে। অবশেষে একদিন তার মনিব তাকে পেয়ে যাবে। তারপর সে বকরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেনঃ তুমি সেটি নিয়ে যাও। কেননা, তা তুমি নিবে অথবা তোমার ভাই নিবে অথবা নেকড়ে খেয়ে ফেলবে। (ই. ফা. ৪৩৫৩, ই. সে. ৪৩৫৩) যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। রাবী‘আহ্ (রহঃ) অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, “তিনি এতে এত রাগান্বিত হলেন যে, তাঁর গাল দু’টো রক্তিম বর্ণ হয়ে গেল” তারপর … অবশিষ্ট হাদীস উল্লিখিত বর্ণনাকারীদের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি আরো অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, তারপর যদি এর মালিক আসে এবং তার থলে এবং (মুদ্রার) সংখ্যা ও বন্ধন সঠিকভাবে চিনতে পারে, তবে তাকে তা দিয়ে দিবে। নচেৎ তা তোমারই থাকবে। (ই. ফা. ৪৩৫৪, ই. সে. ৪৩৫৪) যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেন, তা তুমি এক বছর পর্যন্ত প্রচার করবে। এর মধ্যে যদি জানা না যায় তবে এর থলে ও বন্ধন চিনে রাখবে। তারপর তুমি তা খেতে পারবে। তারপর যদি তার মালিক আসে, তাবে তা তাকে দিয়ে দিবে। (ই.ফা. ৪৩৫৫, ই.সে. ৪৩৫৫) যাহ্হাক ইবন ‘উসমান (রহঃ) এ একই সূত্রে বর্ণনা করেন। আর তিনি তাঁর হাদীসে বলেছেন যে, যদি জানা যায়, তবে তাকে তা দিয়ে দেবে। অন্যথায় তুমি তার থলে, তার বন্ধন, তার আবরণ ও (মুদ্রার) সংখ্যা চিনে রাখবে। (ই. ফা. ৪৩৫৬, ই. সে. ৪৩৫৬) সুওয়াইদ ইবনু গাফালাহ্‌ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি এবং যায়দ ইবনু সূহান ও সালমান ইবনু রাবী‘আহ্‌ যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আমি একটি চাবুক পেয়ে তা উঠিয়ে নিলাম। তখন আমার সাথী দু’জন আমাকে বললেন, তুমি তা রেখে দাও। আমি বললাম, না বরং আমি এটির ঘোষণা করব। যদি এটির মালিক আসে তো ভাল, অন্যথায় আমি এটি নিয়ে ব্যবহার করব। তিনি বলেন, আমি উভয়ের কথা প্রত্যাখ্যান করলাম। তারপর যখন আমরা যুদ্ধ থেকে ফিরে এলাম, তখন এক সময় আমার হাজ্জে যাওয়ার সুযোগ এলো। তখন আমি মদীনায় গেলাম এবং উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। আমি চাবুকের ঘটনা এবং সঙ্গীদ্বয়ের কথা তাঁকে বললাম। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর যামানায় একটি থলে পেয়েছিলাম। তাতে একশ’ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) ছিল। আমি সেটি নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ তুমি তা এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দেবে। বর্ণনাকারী বললেন, আমি সেটির ঘোষণা দিলাম, কিন্তু তা চিনে নিতে পারে এমন কাউকে পেলাম না। পরে আমি তাঁর কাছে এলাম, তখন তিনি বললেনঃ আরো এক বছর পর্যন্ত প্রচার কর। তারপরও আমি তার কোন দাবীদার পেলাম না। তারপর আবার আমি তাঁর কাছে এলাম। তখন তিনি বললেনঃ আরো এক বছর তার ঘোষণা দাও। তারপরও আমি কাউকে সেটির দাবীদার পেলাম না। তিনি বললেনঃ তুমি এটির সংখ্যা, থলে ও তার বন্ধন সংরক্ষন করে রাখবে। যদি এর মালিক আসে, তবে ভাল। অন্যথায় তুমি তা ভোগ করবে। তারপর তা আমি ভোগ করলাম। তারপর যখন মক্কায় এলাম তখন সেটির মালিকের সাক্ষাৎ পেলাম। বর্ণনাকারী সন্দেহ করে বলেন, আমার খেয়াল নেই যে, তিনি কি তিন বছরের কথা বলেছিলেন, না এক বছরের। (ই.ফা. ৪৩৫৭, ই.সে. ৪৩৫৭) সুওয়াইদ ইবনু গাফালাহ্‌ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা আমি যায়দ ইবনু সূহান এবং সালমান ইবনু রাবী‘আহ্‌ (রহঃ)-এর সাথে বের হলাম এবং আমি একটি চাবুক পেলাম। তারপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ.....(তা আমি ব্যবহার করলাম) পর্যন্ত বর্ণনা করেন। শু‘বাহ্‌ (রাঃ) বলেন, পরে আমি তাঁকে দশ বছর পর বলতে শুনেছি যে, তিনি সেটা এক বছর পর্যন্ত প্রচার করেছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৫৮, ই.সে. ৪৩৫৮) কুতাইবাহ্ ইবনু সা’ঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্, ইবনু নুমায়র মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও ‘আবদুর রহমান ইবনু বাশর (রহঃ) সকলেই সালামাহ্ ইবনু কুহায়ল (রহঃ) হতে একই সূত্র শু’বাহ্ (রাঃ) –এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। উল্লিখিত সকলের বর্ণিত হাদীসেই ‘তিন বছর’ কথাটি উল্লেখ আছে। আর সুফ্ইয়ান, যায়দ ইবনু আবূ উনাইসাহ্ ও হাম্মাদ ইনু সালামাহ্ (রহঃ) –এর হাদীসে রয়েছে, “যদি কোন ব্যক্তি এরপর আসে এবং তার গণনা, থলে ও তার বন্ধনের বর্ণনা দিতে পারে, তবে তাকে তা দিয়ে দিবে।” আর সুফ্ইয়ান (রহঃ)..... ওয়াকী’ (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে একটু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, অন্যথায় তা তোমার মালের মতই। আর ইবনু নুমায়র (রহঃ) –এর বর্ণনায় “অন্যথায় তুমি তা ব্যবহার করতে পারবে” বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৪৩৫৯, ই.সে. ৪৩৫৯) ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘উসমান তাইমী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজীদের হারানো বস্তু তুলে নিতে নিষেধ করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৬০, ই.সে. ৪৩৬০) যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হারানো বস্তু উঠিয়ে রাখল সে যদি তা প্রচার না করে তবে সে পথভ্রষ্ট। (ই.ফা. ৪৩৬১, ই.সে. ৪৩৬১)

【2】

মালিকের বিনানুমতিতে কোন পশুর দুধ দোহন হারাম

ইবনু ‘উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ যেন কোন ব্যক্তির পশুর দুধ তার অনুমতি ব্যতীত দোহন না করে। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে যে, তার কুটিরে কিছু সঞ্চিত হোক, তারপর অন্য কেউ তার ভান্ডার ভেঙ্গে খাদ্য সামগ্রী বের করে নিয়ে যাক? এমনিভাবে পশুদের স্তন তাদের ধনাগার স্বরূপ, তাতে তারা তাদের খাদ্য সামগ্রী সঞ্চয় করে। অতঃপর কেউ যেন কারো পশুর দুগ্ধ মালিকের বিনানুমতিতে দোহন না করে। (ই.ফা. ৪৩৬২, ই.সে. ৪৩৬২) কুতাইবাহ্ ইবনু সা’ঈদ মুহাম্মাদ ইবনু রুম্হ আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্, ইবনু নুমায়র, আবূ রাবি’, আবূ কামিল, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু আবূ ‘উমার ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’ (রহঃ) সকলেই ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সূত্র নাবী (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে মালিক (রাঃ) –এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তাদের হাদীসে (আরবী) রয়েছে। কিন্তু লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে “তাঁর খাদ্য সামগ্রী স্থানান্তর করে নিয়ে যায়” অংশটি মালিক (রাঃ) –এর বর্ণনার অনুরূপ বর্ণিত রয়েছে। (ই.ফা. ৪৩৬৩, ই.সে. ৪৩৬৩)

【3】

মেহমানদের আপ্যায়ন এবং অনুরূপ বিষয়

আবূ শুরাইহ্‌ ‘আদাবী (রাঃ) তিনি বলেন, আমার দু’কান শুনেছে এবং দু’চক্ষু দেখেছে, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালভাবে নিজ মেহমানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তখন সাহাবীগন বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম)! ভালভাবে মানে কি? তখন তিনি বললেন, তাকে একদিন ও এক রাত্রি আপ্যায়ন করবে। আর (সাধারনভাবে) মেহমানদারীর সময়কাল তিন দিন। এর চাইতে বেশি দিন মেহমানদারী করা তার জন্য সাদকাহ্‌ স্বরূপ। তিনি আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে। [দ্রষ্টব্য হাদীস ১৭৬] (ই.ফা. ৪৩৬৪, ই.সে. ৪৩৬৪) আবূ শুরাইহ্‌ খুযা’ঈ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মেহমানদারী তিন দিন এবং উত্তমরূপে মেহমানদারী একদিন ও একরাত্রি। কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে সে তার ভাই-এর নিকট অবস্থান করে তাকে পাপে নিপতিত করবে। তখন সাহাবাগন বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম)! কিভাবে সে তাকে পাপে নিপতিত করবে? তিনি বললেন, সে (মেহমান) তার নিকট (এমন বেশী দিন) থাকবে, অথচ তার (মেযবানের) এমন সম্বল নেই যা দ্বারা সে তার মেহমেনদারী করবে। (ই.ফা. ৪৩৬৫, ই.সে. ৪৩৬৫) আবূ শুরায়হ্ খুযা‘ঈ (রাঃ) তিনি বলেন, আমার দু’কান শুনেছে, আমার দু’চক্ষু দেখেছে এবং আমার অন্তর স্মরণ রেখেছে যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলেছিলেন। তারপর তিনি লায়স-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, কারো জন্য বৈধ নয় তার ভাই-এর নিকট এত সময় অবস্থান করা, যা’তে সে তাকে পাপে ফেলে দেয়। বাকী অংশ ওয়াকী‘ (রহঃ)-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪৩৬৬, ই.সে. ৪৩৬৬) ‘উকবাহ্ ইবনু ‘আমির (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা বললাম হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদের (বিভিন্ন স্থানে) পাঠিয়ে থাকেন। আমরা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে অবতরণ করি, যারা আমাদের মেহমানদারী করে না। এ সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বললেনঃযদি তোমরা কোন সম্প্রদায়ের কাছে অবতরণ কর, আর তারা তোমাদের জন্য এমন সব আসবাব পত্র প্রদান করার হুকুম করে যা মেহমানদারীর জন্য প্রয়োজন, তবে তোমরা তা গ্রহণ করবে। আর যদি তারা তা না করে তবে তোমরা তাদের থেকে মেহমানদারীর হক আদায় করে নেবে, যা তাদের করণীয়। (ই. ফা. ৪৩৬৭, ই. সে. ৪৩৬৭)

【4】

নিজের প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদের দ্বারা অন্যের সহায়তা করা মুসতাহাব

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, একদা আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি সওয়ারীতে আরোহণ করে তাঁর কাছে এলো এবং ডানদিকে ও বামদিকে তাকাতে লাগলো। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃযার কাছে আরোহণের কোন অতিরিক্ত বাহন থাকে, সে যেন তা দিয়ে তাকে সাহায্য করে যার কোন বাহন নেই। আর যার কাছে অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য থাকে সে যেন তা দিয়ে তাকে সাহায্য করে যার খাদ্যদ্রব্য নেই। তারপর তিনি বিভিন্ন প্রকার সম্পদ সম্পর্কে এমনিভানে বললেন। এমনকি আমাদের মনে হল যে, অতিরিক্ত সম্পদের মধ্যে আমাদের কারো কোন অধিকার নেই। (ই.ফা. ৪৩৬৮, ই.সে. ৪৩৬৮)

【5】

যখন খাদ্যদ্রব্য পরিমাণে কম হয় তখন সমস্ত খাদ্যদ্রব্য একত্রে মিলিয়ে ফেলা এবং তদদ্বারা একে অন্যকে সাহায্য করা মুস্তাহাব

সালামাহ্ (রহঃ) তাঁর পিতা তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে গিয়েছিলাম। তখন আমাদের মধ্যে খাদ্যের অভাব দেখা দিল। অবশেষে আমাদের কিছু সওয়ারীর বাহন যাবাহ করার কথা ইচ্ছা করেছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশে আমরা আমাদের খাদ্যদ্রব্য একত্রিত করলাম। আমরা একটি চামড়া বিছালাম এবং তাতে লোকদের খাদ্যদ্রব্য জমা করা হল। বর্ণনাকারী বলেন, আমি সেটির প্রশস্ততা অনুমান করার জন্য দাঁড়ালাম এবং আমি আন্দাজ করলাম সেটি একটি ছাগল বসার স্থানের সমান। আর আমরা সংখ্যায় ছিলাম চৌদ্দশ’। রাবী বলেন, আমরা সকলেই তৃপ্তির সাথে খেলাম। তারপর আমাদের নিজ নিজ খাদ্য রাখার থলে পূর্ণ করে নিলাম। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃওযূর জন্য কি পানি আছে? বর্ণনাকারী বলেন, এক ব্যক্তি তার পাত্রে সামান্য পানি নিয়ে এগিয়ে এল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) তা একটি বড় পাত্রে ঢেলে দিলেন। এরপর আমরা চৌদ্দশ’ লোক সকলেই তার থেকে পানি ঢেলে ঢেলে ওযূ করলাম। তারপর আরো আটজন লোক এসে বলল, ওযূর জন্য কি পানি আছে? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃওযূর পানি সমাপ্ত হয়ে গেছে। (ই. ফা ৪৩৬৯, ই. সে. ৪৩৬৯)