35. শিকার ও যবেহকৃত জন্তু এবং যেসব পশুর গোশত খাওয়া হালাল

【1】

প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার

'আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমি শিকারের উদ্দেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ছেড়ে দেই এবং সেগুলো শিকার ধরে আমার জন্য রেখে দেয়, (নিজেরা খায় না) আমি কুকুরগুলোকে ছাড়ার সময় 'বিসমিল্লাহ' বলে ছাড়ি। তিনি বললেনঃ যখন তুমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম নিয়ে ছেড়ে থাকো তাহলে তুমি তা খেতে পার। আমি বললাম, যদি এরা শিকারকে হত্যা করে? তিনি বললেনঃ যদিও হত্যা করে ফেলে তবে তার সাথে যদি অন্য কুকুর শারীক না হয়। আমি তাঁকে বললাম, আমি শিকারের উদ্দেশে 'মি'রায' (কাঠ বা তীক্ষ্ণ ছড়ি) নিক্ষেপ করে থাকি এবং শিকার পেয়েও থাকি? তিনি বললেনঃ তুমি মি'রায নিক্ষেপ করার পর তাতে শিকারের সম্মুখভাগ প্রবিষ্ট হয়ে শিকার মারা গেলে তবে তুমি তা খেতে পারো। আর যদি নিক্ষিপ্ত ফলকের চ্যাপ্টা (বিপরীত) দিকের আঘাতে শিকার মারা যায়, তবে তুমি তা খেও না। (ই.ফা. ৫ম খণ্ড-৪৮১৯, ই.সে. ৬ষ্ঠ খণ্ড -৪৮২০) 'আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমরা এমন এক সম্প্রদায় যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করে থাকি। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম নিয়ে ছাড়লে তাদের শিকার করা পশু খেতে পারো, যদিও তারা তা মেরে ফেলে। তবে কুকুর তার কিছু অংশ খেয়ে ফেললে তা খাবে না। কেননা আমার আশঙ্কা হচ্ছে,সে হয়তো এ শিকার নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এ শিকারে অন্য কুকুর শারীক হয়ে থাকে তাহলে তুমি তা খাবে না। (ই.ফা. ৪৮২০, ই.সে. ৪৮২১) 'আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- কে মি'রায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ এর ধারালো অংশ দ্বারা শিকার মারা গেলে তুমি তা খেতে পারবে, আর যদি এর পাশের অংশের আঘাতে শিকার মারা যায় তবে তা (কুরআনে বর্ণিত) 'ওয়াকীয' বা পিটিয়ে নিহত করার অন্তর্ভুক্ত। কাজেই তুমি তা খাবে না। আমি রসূ্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- কে কুকুর সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহর নাম নিয়ে তোমার কুকুর ছেড়ে থাকলে তুমি তা খেতে পারো। যদি কুকুর শিকারের কিছু অংশ খেয়ে ফেলে তবে তুমি তা খাবে না। কেননা সেটা সে তার নিজের জন্যই ধরেছে। আমি বললাম, যদি আমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুর দেখি এবং কে শিকার ধরেছে তা ঠিক করতে না পারি? তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি তা খাবে না। কেননা তুমি শুধু তোমার কুকুর ছাড়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়েছ, অন্যটির উপর নাওনি। (ই.ফা. ৪৮২১, ই.সে. ৪৮২২) 'আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে মি'রায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। অতঃপর তিনি অনুরূপ বর্ণনা করেন। ( ই.ফা. ৪৮২২, ই.সে. ৪৮২৩) 'আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রসূ্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- কে মি'রায সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম...... (অবশিষ্ট অংশ) পূর্বের হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪৮২৩, ই.সে. ৪৮২৪) ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ‘মি’রায’ দ্বারা শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি, তখন তিনি বললেনঃ ধারালো অংশ দ্বারা নিহত হলে খেতে পারো। আর যদি তীরের পার্শ্ব ভাগ লেগে নিহত হয় তাহলে সেটা ‘ওয়াকীয’ শ্রেণীভুক্ত। আমি তাঁকে কুকুরের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ সে তোমার জন্য যে শিকার ধরে রাখবে এবং তা থেকে সে না খায়, তাহলে তুমি তা খেতে পার। কারণ তার শিকার করাই ছিল যাবাহ গণ্য হবে। তবে যদি তুমি তার পাশে অন্য কুকুর দেখ এবং তোমার আশঙ্কা হয় যে, শিকার ধরায় সেটাও শামিল ছিল এবং সে কুকুরই হয়তো শিকার হত্যা করেছে, তবে তুমি তা খেও না। কেননা তুমি তো শুধু তোমার কুকুর ছাড়ার সময় ‘বিস্মিল্লা-হ’ বলেছ, অন্য কুকুরের উপর তা বলনি। (ই.ফা. ৪৮২৪, ই.সে. ৪৮২৫) যাকারিয়্যা ইবনু আবূ যায়িদাহ্ (রহঃ) এ সানাদে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮২৫, ই.সে. ৪৮২৬) শা’বী (রহঃ) তিনি বলেন, ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) ছিলেন আমাদের প্রতিবেশী, ব্যবসায়ের অংশীদার এবং ‘নাহ্রাইন’-এ আমাদের সহকর্মী। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে প্রশ্ন করেছিলেন যে, আমি আমার কুকুরকে (শিকারের উদ্দেশে) ছেড়ে থাকি এবং পরে আমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুরও দেখতে পাই, সেটির সাথে শিকারও দেখতে পাই। আমি অবহিত নই কোন্ কুকুরটি শিকার ধরেছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি তা খাবে না। কেননা তুমি কেবল তোমার কুকুর ছাড়ার সময়ই আল্লাহ্‌র নাম নিয়েছ; অন্যটির উপরে আল্লাহ্‌র নাম নাওনি। (ই.ফা. ৪৮২৬, ই.সে. ৪৮২৭) ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) হতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। (ই.ফা. ৪৮২৭, ই.সে. ৪৮২৮) ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ তুমি তোমার কুকুর ছাড়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নেবে। তারপর যদি সে তোমার জন্য শিকার ধরে রাখে এবং তুমি তা জীবিত পাও, তবে তুমি তাকে যবহ করবে। আর যদি মৃত পাও অথচ সে এর কোন অংশ খায়নি, তাহলে তুমি তা খেতে পার। আর যদি তোমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুর দেখ আর শিকারও মৃত, তবে তা খাবে না। কেননা তুমি তো অবহিত নও, কোন্‌ কুকুরটি শিকার হত্যা করেছে। আর তুমি তীর ছোঁড়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়েই ছুঁড়বে। অতঃপর শিকার একদিন পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকার পর তা পেলে, তাতে যদি তোমার তীরের ক্ষত আঘাত ব্যতীত অন্য চিহ্ন না দেখ, তবে ইচ্ছে হলে তা খেতে পারো। তবে পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় পেলে তা খেও না। (ই.ফা. ৪৮২৮, ই.সে. ৪৮২৯) ‘আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে শিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বললেনঃ যখন তুমি তোমার তীর নিক্ষেপ করবে তখন ‘বিসমিল্লা-হ’ বলবে। যদি শিকার মৃত পাও, তবে তা খেতে পার। কিন্তু যদি তা পানিতে পাও তবে খেও না। কারণ তুমি তো অবহিত নও যে, পানিই তাকে হত্যা করেছে, নাকি তোমার তীর। (ই.ফা. ৪৮২৯, ই.সে. ৪৮৩০) আবূ সা’লাবাহ্‌ খুশানী (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে বলি, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমরা আহ্‌লে কিতাবের এলাকায় থাকি, আমরা তাদের পাত্রে আহার করে থাকি এবং আমরা শিকারের এলাকায় থাকি। আমি আমার ধনুক ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করি, পাশাপাশি অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারাও শিকার করে থাকি। অতএব আমার জন্য কোন্‌টি হালাল তা আমাকে বলে দিন। তিনি বললেনঃ তুমি যে বললে তোমরা কিতাবধারীদের এলাকায় বাস করো এবং তাদের পাত্রে আহার করো; যদি তাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও তবে তাদের পাত্রে আহার করো না। আর যদি অন্য পাত্র না পাও, তবে তা ধুয়ে নেয়ার পর খাবে। তুমি যে বললে, তোমরা শিকারের এলাকায় বসবাস করো। এর বিধান হলো, তোমার ধনুক দ্বারা শিকার হত্যা করার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে ধনুক ছুঁড়বে, তারপর তা খাবে। আর তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা যা শিকার করবে তাও প্রেরেণের সময় আল্লাহ্‌র নাম নিবে, অতঃপর তা খাবে। আর তোমার অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করবে তা যাবাহ করার সুযোগ পেলে তা খাবে। (ই.ফা. ৪৮৩০, ই.সে. ৪৮৩১) হাইওয়াহ্ (রহঃ) এ সানাদে এ হাদীসটি ইবনু মুবারাক (রহঃ)– এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু ওয়াহ্ব তার হাদীসে ধনুক দ্বারা শিকারের কথা উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৮৩২, ই.সে.)

【2】

হারিয়ে যাওয়া শিকার পাওয়া গেলে

আবূ সা’লাবাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ তুমি তীর নিক্ষেপের পর শিকার যদি নিরুদ্দেশ হয়ে যায় এবং পরে তা পেয়ে যাও, তাহলে শিকার দুর্গন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তুমি তা খেতে পারো। (ই.ফা. ৪৮৩২, ই.সে. ৪৮৩৩) আবূ সা’লাবাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ যে কেউ তার শিকার তিনদিন পরে পেলে তা দুর্গন্ধ না হওয়া পর্যন্ত খেতে পারবে। (ই.ফা. ৪৮৩৩, ই.সে. ৪৮৩৪) আবূ সা’লাবাহ্ খুশানী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ তাতে তিনি দুর্গন্ধ হওয়ার কথা উল্লেখ করেননি। আর তিনি কুকুর (এর শিকার) সম্পর্কে বলেছেনঃ তিন দিন পরেও তা খেতে পারবে- তবে পচে গেলে তা ফেলে দাও। (ই.ফা. ৪৮৩৪, ই.সে. ৪৮৩৫)

【3】

হিংস্র পশু ও নখরওয়ালা পাখি খাওয়া হারাম

আবূসা’লাবাহ্‌ (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হিংস্র পশু খেতে নিষেধ করেছেন। ইসহাক্‌ এবং ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে আরো রয়েছে, যুহ্‌রী বলেছেন, আমরা এ হাদীসটি সিরিয়ায় আসার পূর্বে শুনিনি। (ই.ফা. ৪৮৩৫, ই.সে. ৪৮৩৬) আবূ সা’লাবাহ্‌ খুশানী (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সব ধরনের হিংস্র জন্তু খেতে বারণ করেছেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমি এ হাদীসটি হিজাযে আমাদের ‘আলিমদের কাছে শুনিনি। শেষ পর্যন্ত আবূ ইদ্‌রীস (রহঃ) তা আমার কাছে বর্ণনা করেন। আর তিনি ছিলেন সিরিয়ার ফিকাহ্‌বিদদের অন্তর্ভৃক্ত। (ই.ফা. ৪৮৩৬, ই.সে. ৪৮৩৭) আবূ সা’লাবাহ্‌ খুশানী (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সব ধরনের হিংস্র পশু খেতে নিষেধ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৩৭, ই.সে. ৪৮৩৮) আবূ তাহির, মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’, ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়াহ্ইয়া, হুলওয়ানী ও আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) যুহরী (রহঃ) এ সানাদে ইউনুস ও ‘আমর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তাঁরা সকলেই খাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু সালিহ্ ও ইউসুফ-এর বর্ণনায় ‘খাওয়ার’ কথা উল্লেখ নেই। তাদের বর্ণনায় রয়েছে, ‘তিনি হিংস্র পশু থেকে নিষেধ করেছেন’। (ই.ফা. ৪৮৩৭, ই.সে. ৪৮৩৯) আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সকল প্রকার হিংস্র জন্তুই খাওয়া হারাম। (ই.ফা. ৪৮৩৮, ই.সে. ৪৮৪০) আবূ তাহির (রহঃ) মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৩৮, ই.সে. ৪৮৪১) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সব ধরনের হিংস্র জন্তু এবং সব ধরনের নখরধারী পাখি খেতে বারণ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৩৯, ই.সে. ৪৮৪২) শু’বাহ (রহঃ) এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৪০, ই.সে. নেই) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সকল প্রকার হিংস্র জন্তু এবং নখরধারী শিকারী পাখি (খেতে) নিষেধ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৪১, ই.সে. নেই) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিষেধ করেছেন...। অবশিষ্ট অংশ শু’বাহ হতে হাকাম (রহঃ)-এর মাধ্যমে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪৮৪২, ই.সে. ৪৮৪৩)

【4】

সাগরের মৃত হালাল

জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবূ ‘উবাইদাহ্‌কে আমাদের আমীর বানিয়ে আমাদেরকে একটি অভিযানে পাঠালেন কুরায়শদের একটি কাফিলাকে রোধ করার জন্য। তিনি আমাদের সাথে এক থলে খেজুর দিয়ে দিলেন। এছাড়া আমাদের অন্য কিছু দেয়ার মত পেলেন না। আবূ ‘উবাইদাহ্‌ (রাঃ) আমাদেরকে একটি করে খেজুর দিতেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, এই একটি মাত্র খেজুর দিয়ে আপনারা কিভাবে কী করতেন? আমি বললাম, আমরা তা চুষতাম- যেভাবে শিশুরা চুষে থাকে। তারপর পানি পান করতাম, আর এটাই আমাদের দিবারাত্রের জন্য যথেষ্ট হতো। এছাড়া এমরা আমাদের লাঠি দিয়ে গাছের পাতা পেড়ে পানিতে তা ভিজিয়ে নিয়ে তা খেতাম। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আমরা সাগর উপকূল দিয়ে চলতে লাগলাম। হঠাৎ সমুদ্রোপকূলে উঁচু ঢিবির মতো কী যেন একটি আমাদের সামনে ভেসে উঠলো। আমরা সেটির কাছে গিয়ে দেখলাম, তা একটি জন্তু, যাকে ‘আম্বর’ বলে অভিহিত করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন, আবূ ‘উবাইদাহ্‌ (রাঃ) বললেন, এতো মৃত জন্তু। তারপর বললেন, না, বরং আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রেরিত দূত এবং আমরা আল্লাহর পথেই আছি। এখন তো তোমরা প্রাণান্তকর অবস্থায় রয়েছ , সুতরাং তোমরা তা খেতে পারো। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর দীর্ঘ একমাস আমরা তিনশ’ লোক তা খেয়েই কাটালাম এবং আমরা মোটাতাজা হয়ে উঠলাম। রাবী বলেন, আমি দেখেছি, কিভাবে কলসীর পর কলসী ভরে তৈল (চর্বি) আমরা তার চক্ষুর কোটর থেকে বের করি এবং তার দেহ থেকে এক একটি ষাঁড় পরিমাণ গোশ্‌তের টুকরা কেটে নেই। তারপর আবূ ‘উবাইদাহ্‌ (রাঃ) আমাদের মধ্যকার তের জনকে ডেকে নিলেন এবং ঐ জন্তুটির চোখের কোটরে বসিলে দিলেন। তিনি জন্তুটির পাঁজরের একটি অস্থি তুলে দাঁড় করিয়ে আমাদের সর্বাধিক বড় উটটির উপর হাওদা চড়ালেন আর সে উটটি দিব্যি তার নিচ দিয়ে অতিক্রম করে গেল। তারপর অবশিষ্ট গোশত আমরা সিদ্ধ করে আমাদের পাথেয় রূপে নিয়ে আসলাম। যখন আমরা মাদীনায় ফিরে এলাম তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি তাঁকে জানালাম। তখন তিনি বরলেন, এটা হচ্ছে রিয্‌ক যা আল্লাহ তোমাদের জন্যই বের করেছিলেন। তোমাদের কাছে তার অবিশিষ্ট কিছু গোশ্‌ত আছে কি আমাকে তা থেকে দিতে পারবে? বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে তার কিছু অংশ পাঠালাম এবং তিনি তা খেলেন। (ই.ফা. ৪৮৪৩, ই.সে. ৪৮৪৪) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে একটি অভিযানে পাঠালেন। আমরা তিনশ’ আরোহী ছিলাম এবং আবূ ‘উবাইদাহ্‌ ইবনু জাররাহ্‌ (রাঃ) ছিলেন আমাদের দলনেতা। আমরা কুরায়শের একটি কাফেলার জন্য ওৎ পেতে ছিলাম। অর্ধমাস পর্যন্ত আমরা সমুদ্রোপকূলে অবস্থান করলাম। তখন আমরা খুবই খাদ্যাভাবে পড়লাম এবং আমরা (বাধ্য হয়ে) গাছের পাতা খেলাম। তাই এ বাহিনীর নাম দেয়া হলো ‘জাইশুল খাবাত’ বা লতা-পাতার বাহিনী। এ সময় সমুদ্রে আমাদের জন্য একটি জন্তু (বিরাট মাছ) নিক্ষেপ করলো- যাকে ‘আম্বর’ বলা হয়। আমরা অর্ধমাস পর্যন্ত তা খেলাম এবং তার তেল আমাদের গায়ে মালিশ করলাম, তাতে আমাদের দেহ মোটাতাজা হয়ে উঠলো। বর্ণনাকারী বলেন, আবূ ‘উবাইদাহ্‌ (রাঃ) জন্তুটির পাঁজরের একটি হাড় নিয়ে খাড়া করলেন, তারপর বাহিনীর সবচেয়ে লম্বা লোকটি এবং উচ্চতর উটটির উপরে তুলে ধরলেন। তারপর ঐ ব্যক্তিটিকে ঐ উটের উপর চড়িয়ে দিলেন। আর সে অনায়াসে এর নিচ দিয়ে অতিক্রম করে গেল। ঐ জন্তুটির চোখের কোটরে অনেকগুলো লোক একত্রে বসলেন। রাবী বলেন, আর আমরা তার চোখ থেকে এত এত কলস ভর্তি চর্বি বের করি। বর্ণনাকারী আরও বলেন, তখন আমাদের নিকট এক বস্তা খেজুর ছিল। আবূ ‘উবাইদাহ্‌ (রাঃ) প্রথমে আমাদের প্রত্যেককে এক মুষ্ঠি করে খেজুর দিলেন। তারপর শেষদিকে তিনি আমাদের জনপ্রতি একটি করে খেজুর দিতেন। যখন তাও শেষ হয়ে গেল তখন আমরা অভাব অনুভব করলাম। (ই.ফা. ৪৮৪৪, ই.সে. ৪৮৪৫) ‘আমর (রহঃ) ‘আমর (রহঃ)-কে ‘জাইশুল খাবাত’ সম্পর্কে বলতে শুনেছেনঃ এক ব্যক্তি প্রথমে তিনটি উট যবাহ্ করল, তারপর আরও তিনটি, অতঃপর আরও তিনটি। তারপর আবূ ‘উবাইদাহ্ (রাঃ) তাঁকে এরূপ করতে নিষেধ করেন। (ই.ফা. ৪৮৪৫, ই.সে. ৪৮৪৬) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা আমাদেরকে একটি অভিযানে পাঠালেন। বাহিনীতে আমরা ছিলাম তিনশ’ জন। আমরা আমাদের রসদপত্র আমাদের কাঁধে বহন করেছিলাম। (ই.ফা. ৪৮৪৬, ই.সে. ৪৮৪৭) জাবির ইবন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবূ ‘উবাইদাহ্‌ ইবনু জাররাহ্‌ (রাঃ)-কে তাঁদের ‘আমীর নিযুক্ত করে তিনশ’ লোকের একটি বাহিনী পাঠালেন। তাঁদের পাথেয় প্রায় শেষ হয়ে গেলে আবূ ‘উবাইদাহ্‌ (রাঃ) সকলের পাথেয় একই পাত্র জমা করে আমাদের প্রত্যেকের দৈনন্দিন খাদ্য সববরাহ করতেন। তখন আমাদের প্রত্যেকের ভাগে দৈনিক একটি করে খেজুর পড়তো। (ই.ফা. ৪৮৪৭, ই.সে. ৪৮৪৮) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি বাহিনীকে সমুদ্রোপকূলে প্রেরণ করেন। আমি সে দলেই ছিলাম। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ ‘আম্‌র ইবনু দীনার ও আবূ যুবায়র (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। তবে ওয়াহ্‌ব ইবনু কায়সান (রহঃ) এর হাদীসে রয়েছে যে, ‘সেনাবাহিনী আঠার দিন পর্যন্ত মাছটি খেয়েছিল’। (ই.ফা. ৪৮৪৮, ই.সে. ৪৮৪৯) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি বাহিনীকে জুহাইনাহ্‌ গোত্রের এলাকায় পাঠালেন এবং এক লোককে তার সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। অবশিষ্ট অংশ পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪৮৪৯, ই.সে. ৪৮৫০)

【5】

গৃহপালিত গাধা খাওয়া হারাম

‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) খাইবার যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মহিলাদের সাথে মুত’আহ্‌ বিবাহ করতে এবং গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করেছেন। [দ্রষ্টব্য হাদীস ৩৪৩১] (ই.ফা. ৪৮৫০, ই.সে. ৪৮৫১) আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্, ইবনু নুমায়র, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু নুমায়র (রহঃ) ভিন্ন সানাদ অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবূ তাহির, হারমালাহ্, ইসহাক্ ও ‘আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)... যুহরী (রহঃ) হতে এ সানাদে বর্ণনা করেছেন। তবে ইউনুস-এর বর্ণনায় রয়েছে, গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৫১, ই.সে. ৪৮৫২) আবূ সা’লাবাহ্‌ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত (খাওয়া) হারাম করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৫২, ই.সে. ৪৮৫৩) ইবনু ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে বারণ করেছেন। [দ্রষ্টব্য হাদীস ১২৪৮] (ই.ফা. ৪৮৫৩, ই.সে. ৪৮৫৪) ‘উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাইবার যুদ্ধের দিন গৃহপালিত গাধা খেতে নিষেধ করেন অথচ সেদিন লোকদের খাদ্যাভাব ছিল। (ই.ফা. ৪৮৫৪, ই.সে. ৪৮৫৫) ‘আলী ইবনু মুসহির শাইবানী (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)-কে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, খাইবারের দিন আমাদের ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছিল। এখন আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গেই ছিলাম। শহরের বাইরে আমরা কিছু গৃহপালিত গাধা পেলাম। সুতরাং আমরা সেগুলো যাবাহ করলাম। আমাদের ডেগ্‌চীসমূহ যখন টগবগ করছিল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা করল, ডেগ্‌চীগুলো উল্টিয়ে ফেলে দাও এবগ গাধার গোশ্‌তের সামান্য অংশও খেয়ো না। আমি বললাম, কোন্‌ ধরনের গাধার গোশ্‌ত হারাম? রাবী বলেন, আমরা নিজেরা এ বিষয়ে আলোচনা করলাম এবং বললাম, একেবারেই হারাম অথবা গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ বাদ না দিয়ে রান্না করার কারণেই তা হারাম করা হয়েছে। (ই.ফা. ৪৮৫৫, ই.সে. ৪৮৫৬) সুলাইমান শাইবানী (রহঃ) আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, খাইবারের রাতগুলোতে আমরা ভীষণ ক্ষুধার্ত হই। অতঃপর খাইবারের দিন আমরা গৃহপালিত গাধা পেয়ে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম এবং সেগুলো যাবাহ করলাম। যখন এর গোশ্‌ত ডেগচীতে টগবগ করছিল তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা করল যে, ডেগ্‌চীগুলো উল্টিয়ে ফেলে দাও এবং গাধাগুলোর গোশ্‌ত একটুও খেয়ো না। রাবী বলেন, তখান কিছু লোক বললো, যেহেতু গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ বের করা হয়নি তাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা হারাম করেছেন। অন্যরা বলল, না, তা চিরকালের জন্যই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। (ই.ফা. ৪৮৫৬, ই.সে. ৪৮৫৭) ‘আদী ইবনু সাবিত (রহঃ) আমি বারা এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমরা কিছু গৃহপালিত গাধা পেলাম। যখন আমরা তা রান্না করছি তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা করলো, তোমাদের ডেগচীগুলো উল্টিয়ে ফেলে দাও। (ই.ফা. ৪৮৫৭, ই.সে. ৪৮৫৮) বারা (রাঃ) খাইবার যুদ্ধের দিন আমরা কিছু গৃহপালিত গাধা পেলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা করলো, ডেগ্চীগুলো উল্টে ফেলে দাও। (ই.ফা. ৪৮৫৮, ই.সে. নেই) সাবিত ইবনু ‘উবায়দ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বারা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করা হয়েছে। (ই.ফা. ৪৮৫৯, ই.সে. ৪৮৫৯) বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত কাঁচা বা রান্না করা যাই হোক তা ফেলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর তিনি কখনো তা খেতে নির্দেশ দেননি। (ই.ফা. ৪৮৬০, ই.সে. ৪৮৬০) ‘আসিম (রহঃ) এ সানাদে উক্ত হাদীসে অনুরূপ বর্ণিত। (ই.ফা. ৪৮৬০, ই.সে. ৪৮৬১) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমি অবহিত নই, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিষেধ করার কারণ কি এটা ছিল কিনা যে, এগুলো লোকের সওয়ারী হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তাই সওয়ারী নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি এরূপ অপছন্দ করলেন। অথবা খাইবার যুদ্ধের দিন গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত তিনি চিরদিনের জন্য হারাম করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৬১, ই.সে. ৪৮৬২) সালামাহ্‌ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবার অভিমুখে রওনা হলাম। আল্লাহ তাদেরকে বিজয়ী করলেন। বিজয় দিবসের সন্ধ্যা বেলায় অনেক (চুলায়) আগুন জ্বালানো হয়। ফলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রশ্ন করলেন, এসব কিসের আগুন? কি রান্না হচ্ছে? কোন জিনেসের উপর তোমরা আগুন জ্বালিয়েছ? লোকেরা বললো, গোশ্‌ত রান্না করা হচ্ছে। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, কিসের গোশ্‌ত? জবাবে লোকেরা বললো, গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এগুলো ফেলে দাও এবং হাঁড়ি-পাতিলগুলো ভেঙ্গে ফেল। তখন এক ব্যক্তি বলল, আমরা এগুলো ফেলে দিয়ে হাঁড়ি-পাতিলগুলো ধুয়ে নিব কি? তিনি বললেন, এটাও করতে পারো। [দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৬৬৮] (ই.ফা. ৪৮৬২, ই.সে. ৪৮৬৩) ইয়াযীদ ইবনু আবূ ‘উবায়দ (রহঃ) এ সানাদে (অনুরূপ) হাদীস বর্ণিত। (ই.ফা. ৪৮৬৩, ই.সে. ৪৮৬৪) আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন খাইবার জয় করেন তখন আমরা শহরের বাইরে কিছু গাধা পেলাম। আমরা কিছু গাধা (যাবাহ করে) রান্না করছিলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা করলোঃ জেনে রাখো, আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমাদেরকে গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা তা শাইতানের ঘৃণ্য কাজ। রাবী বলেন, তারপর ডেগ্‌চীগুলো গোশ্‌তসহ উল্টিয়ে ফেলা হলো। (ই.ফা. ৪৮৬৪, ই.সে. ৪৮৬৫) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, খাইবার বিজয়ের দিন এক আগন্তুক এসে বললোঃ হে আল্লাহর রসূল! গাধাগুলো যাবাহ করে খাওয়া হচ্ছে। অতঃপর আরেক ব্যক্তি এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! গাধাগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবূ তালহাহ্‌ (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলেন তদনুযায়ী তিনি ঘোষণা করলেনঃ ‘আল্লাহ এবং তাঁর রসূল উভয়েই তোমাদেরকে গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করেছেন। কারণ তা ঘৃণ্যবস্তু বা অপবিত্র। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর পাতিলগুলো গোশ্‌তসহ উল্টে ফেলে দেয়া হল। (ই.ফা. ৪৮৬৫, ই.সে. ৪৮৬৬)

【6】

ঘোড়ার গোশ্‌ত আহার করা

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাইবার দিন গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করেন এবং ঘোড়ার গোশ্‌ত খাওয়ার অনুমতি দেন। (ই.ফা. ৪৮৬৬, ই.সে. ৪৮৬৭) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) খাইবারে আমরা ঘোড়া এবং বন্য গাধার গোশ্‌ত খেয়েছি। পক্ষান্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৬৭, ই.সে. ৪৮৬৮) আবূ তাহির, ইয়া’কূব দাওরাকী ও আহমাদ ইবনু ‘উসমান নাওফালী (রহঃ) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। (ই.ফা. ৪৮৬৭, ই.সে. ৪৮৬৮/ক) আসমা (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে আমরা ঘোড়া যাবাহ করে খেয়েছি। (ই.ফা. ৪৮৬৮, ই.সে. ৪৮৬৯) হিশাম (রহঃ) হতে এ সানাদ (অনুরূপ) হাদীস বর্ণিত। (ই.ফা. ৪৮৬৯, ই.সে. ৪৮৭০)

【7】

গুই সাপের গোশ্‌ত হালাল

ইবনু ‘উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গুইসাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি তা খাই না, এবং তা হারামও বলি না। (ই.ফা. ৪৮৭০, ই.সে. ৪৮৭১) ইবনু ‘উমার (রাঃ) একদা এক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ আমি তা খাই না এবং তা (খাওয়া) হারামও বলি না। (ই.ফা. ৪৮৭১, ই.সে. ৪৮৭২) ইবনু ‘উমার (রাঃ) একদা এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে মিম্বারে বসা অবস্থায় গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি তা খাই না এবং তা (খাওয়াকে) হারামও বলি না। (ই.ফা. ৪৮৭২, ই.সে. ৪৮৭৩) ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত। (ই.ফা. ৪৮৭৩, ই.সে. ৪৮৭৪) নাফি’ (রাঃ) সূত্র নাফি’ (রাঃ) সূত্রে ও ইবনু ‘উমার (রাঃ) কর্তৃক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে গুইসাপ সম্পর্কে লায়স কর্তৃক নাফি’র মাধ্যমে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। তবে আইয়ূব বর্ণিত হাদীসে আরো রয়েছে, ‘রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে গুইসাপের গোশ্ত নিয়ে আসা হলো। তিনি তা খাননি এবং হারামও বলেননি’। আর উসামাহ্ (রাঃ)-এর এক হাদীসে রয়েছে, ‘এক লোক মাসজিদে দাঁড়ালো, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বারে বসা ছিলেন’। (ই.ফা. ৪৮৭৪, ই.সে. ৪৮৭৫) ইবনু ‘উমার (রাঃ) একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে তাঁর কতিপয় সাহাবী ছিলেন। যাদের মধ্যে সা’দ (রাঃ)-ও ছিলেন। তাঁদের সম্মুখে গুইসাপের গোশ্‌ত আনা হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এক স্ত্রী উচ্চৈঃস্বরে বললেন, এটা কিন্তু গুইসাপের গোশ্‌ত! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা খেয়ে নাও, কারণ এটা হালাল, তবে এটা আমার খাদ্য নয়। (ই.ফা. ৪৮৭৫, ই.সে. ৪৮৭৬) তাওবাহ্‌ ‘আম্‌বরী (রহঃ) তিনি বলেন, শা’বী (রহঃ) আমাকে বলেছেনঃ আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত হাসান (রাঃ)-এর হাদীসটি শুনেছেন? আমি তো প্রায় দু’বছর কিংবা দেড় বছর ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম, কিন্তু তাঁকে এ হাদীসটি ছাড়া নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অন্য কিছু বর্ণনা করতে শুনিনি। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কতিপয় সাহাবীর মধ্যে সা’দ (রাঃ)-ও ছিলেন, অতঃপর (বাকী অংশ) মু’আয (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪৮৭৬, ই.সে. ৪৮৭৭) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমি এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে মাইমূনাহ্‌ (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তখন ভুনা গুইসাপ পরিবেশন করা হলো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা নেয়ার জন্য হাত বাড়ালেন। তখন মাইমূনাহ্‌ (রাঃ)-এর বাড়িতে উপস্থিত জনৈকা মহিলা বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা খেতে চাইছেন সে সম্বন্ধে তোমরা তাঁকে জানাও। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (খাবার থেকে) তাঁর হাত তুলে নিলেন। আমি বললম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! এটা কি হারাম? তিনি বললেন,না। যেহেতু এটা আমাদের এলাকার প্রাণী নয়, তাই আমি তা অপছন্দ করি। খালিদ (রাঃ) বলেন, এরপর আমি তা টেনে নিয়ে খেলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দৃশ্য দেখছিলেন। (ই.ফা. ৪৮৭৭, ই.সে. ৪৮৭৮) খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)- যাঁকে সাইফুল্লাহ বলা হয় তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রী মাইমূনাহ্‌ (রাঃ)-এর ঘরে ঢুকলেন। তিনি ছিলেন তাঁর ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর খালা। এ সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর নিকট ভূনা গুইসাপ দেখতে পান, যা তাঁর (মাইমূনাহ্‌র) বোন হুফাইদাহ্‌ বিনতু হারিস নাজ্‌দ থেকে এনেছিল। তিনি গুইসাপটি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পরিবেশন করলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল কোন খাদ্যের বিবরণ ও তার নাম উল্লেখ না করা পর্যন্ত তিনি সে দিকে কম-ই হাত বাড়াতেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গুইসাপটির দিকে হাত বাড়ালে উপস্থিত জনৈকা মহিলা বললেন, তোমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সামনে যা পেশ করছো তাঁকে জানিয়ে দাও। তারা বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! এটা কি গুইসাপ। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর হাত তুলে নিলেন। খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! এটা কি হারাম? তিনি বললেন, না। তবে যেহেতু এটা আমার এলাকাতে নেই তাই আমি এটা পছন্দ করি না। খালিদ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি ওটা টেনে নিয়ে খাচ্ছিলাম। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা দেখছিলেন। তবে তিনি আমাকে নিষেধ করেননি। (ই.ফা. ৪৮৭৮, ই.সে. ৪৮৭৯) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) তাকে বলেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে তাঁর খালা মাইমূনাহ্ বিন্তু হারিস (রাঃ)- এর ঘরে যান। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সামনে গুইসাপের গোশ্ত পরিবেশন করা হয়, যা উম্মু হুফায়দ বিনতু হারিস নাজ্দ থেকে নিয়ে এনেছিলেন। তিনি ছিলেন বানূ জা’ফার গোত্রের এক ব্যক্তির সহধর্মিণী। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন বস্তুর বিবরণ না জানা পর্যন্ত তা খেতের না। বাকী অংশ বর্ণনাকারী ইউনুস (রহঃ)-এর হাদীসের অনুরূপ। তবে হাদীসের শেষাংশে তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, ইবনু আসাম মাইমূনাহ্ (রাঃ) সূত্রে তাঁকে বর্ণনা করেছেন, তিনি (রসূলুল্লাহ) তখন তাঁর ঘরেই ছিলেন। (ই.ফা. ৪৮৭৯, ই.সে. ৪৮৮০) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা মাইমূনাহ্‌ (রাঃ)-এর ঘরে ছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সামনে দু’টি ভুনা গুইসাপ পেশ করা হলো। বাকী অংশ উক্ত হাদীসসমূহের অনুরূপ। তবে বর্ণনাকারী (মা’মার) “মাইমূনাহ্‌ (রাঃ) থেকে ইয়াযীদ ইবনু আসাম (রহঃ)-এর সূত্র” কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৮৮০, ই.সে. ৪৮৮১) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাইমূনাহ্‌ (রাঃ)-এর ঘরে থাকা অবস্থায় তাঁর নিকটে গুইসাপের গোশ্‌ত পরিবেশন করা হয়। তখন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) তাঁর সাথেই ছিলেন। ইবনু মুন্‌কাদির বাকী অংশ যুহ্‌রী (রহঃ)-এর সমার্থক হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৮৮১, ই.সে. ৪৮৮২) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমার খালা উম্মু হুফায়দ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে কিছু ঘি, পনির এবং কয়েকটি গুইসাপ হাদিয়া স্বরূপ পাঠালেন। তিনি ঘি ও পনির থেকে কিছু খেলেন এবং গুইসাপ নোংরা হওয়ার দরুন খাওয়া বর্জন করলেন। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হয়। তা হারাম হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হতো না। (ই.ফা. ৪৮৮২, ই.সে. ৪৮৮৩) ইয়াযীদ ইবনু আসাম (রহঃ) তিনি বলেন, মাদীনার এক নববিবাহিত ব্যক্তি আমাদেরকে দা’ওয়াত করলো এবং আমাদের সামনে তেরটি গুইসাপ পরিবেশন করা হলো। কিছু লোক তা খেল আর কিছু লোক তা বর্জন করলো। পরদিন আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি তাঁকে জানালাম। তখন তাঁর পাশের লোকজন নানা উক্তি করতে লাগলো, এমনকি তাদের একজন বললোঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আমি এটি খাইও না, নিষেধও করি না এবং হারামও বলি না। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তোমরা যা বলছ তা সঠিক নয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে হালাল ও হারাম নির্ণয় করার জন্যই পাঠানো হয়েছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা মাইমূনাহ্‌ (রাঃ)-এর ঘরে ছিলেন। তাঁর সাথে ফায্‌ল ইবনু ‘আব্বাস, খালিদ ইবনু ওয়ালিদ ও অন্য এক মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁদের কাছে একটি পাত্র পেশ করা হলো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন খাওয়ার ইচ্ছা করলেন তখন মাইমূনাহ্‌ (রাঃ) তাঁকে বললেন, এটা গুইসাপের গোশ্‌ত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর হাত গুটিয়ে নিয়ে বললেন, এ গোশ্‌ত আমি কখনোও খাইনি। তিনি তাঁদের বললেন, তোমরা খেতে পারো। ফায্‌ল, খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) এবং ঐ মহিলা তাত্থেকে খেলেন। মাইমূনাহ্‌ (রাঃ) বললেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা খান, তাছাড়া অন্য কিছু আমি খাব না। (ই.ফা. ৪৮৮৩, ই.সে. ৪৮৮৪) জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট গুইসাপ আনা হলে তিনি তা খেতে অস্বীকার করে বললেন, জানি না হয়তো এটা ঐসব উম্মাত থেকে হতে পারে, যাদের বিকৃত করা হয়েছিল। (ই.ফা. ৪৮৮৮, ই.সে. ৪৮৮৫) আবূ যুবায়র (রহঃ) তিনি বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে গুইসাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটি তোমরা খেও না। তিনি তা নোংরা হিসেবে অবহিত করলেন। তিনি আরও বলেন, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটিকে হারাম করেননি। মহান আল্লাহ এর দ্বারা অনেক লোককে উপকৃত করেছেন। কেননা, জনসাধারণের খাদ্য এ থেকে আসে। আমার নিকট থাকলে আমিও তা খেতাম। (ই.ফা. ৪৮৮৫, ই.সে. ৪৮৮৬) আবূ সা’ঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমরা এমন এলাকায় থাকি, যেখানে গুইসাপ পাওয়া যায়। সুতরাং এ ব্যাপারে আপনি আমাদের কী আদেশ করেন? অথবা বললেন, আপনি এ ব্যাপারে আমাদের কী ফাতাওয়া দেন? তিনি বললেনঃ আমাকে জানানো হয়েছে যে, বানী ইস্‌রাঈলের একটি সম্প্রদায়কে বিকৃত করে দেয়া হয়েছিল। এরপর তিনি আদেশও করেননি, নিষেধও করেননি। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, পরবর্তী সময়ে ‘উমার (রাঃ) বলেন, আল্লাহর দ্বারা অনেক লোককে উপকৃত করবেন। কারণ এটা এ উম্মাতের অধিকাংশের খাবার। আমার নিকট থাকলে আমি অবশ্যই তা খেতাম। তবে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটি কেবল অপছন্দ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৮৬, ই.সে. ৪৮৮৭) আবূ সা’ঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এক বেদূইন এসে বলল, আমি এমন নিম্নাঞ্চলে বাস করি যেখানে প্রচুর গুইসাপ পাওয়া যায়। এটা আমার পরিবারের সাধারণ খাদ্য। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি কোন জবাব দিলেন না। আমরা তাঁকে বললাম, আবার জিজ্ঞেস করো। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলে তিনি এবারও কোন জবাব দিলেন না। অতঃপর তৃতীয়বারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ডেকে বললেনঃ হে বেদূঈন! মহান আল্লাহ বানী ইসরাঈলের একটি সম্প্রদায়ের প্রতি অভিসম্পাত করেন, অথবা ক্রোধান্বিত হয়ে তাদের আকৃতি বিকৃত করে স্থলচর প্রাণীতে রূপান্তরিত করে দেন। আমি অবহিত নই যে, এটা তাদেরই অন্তর্ভূক্ত কিনা। সুতরাং আমি তা খাইও না এবং এ থেকে নিষেধও করি না। (ই.ফা. ৪৮৮৭, ই.সে. ৪৮৮৮)

【8】

টিড্‌ডি খাওয়ার বৈধতা

‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে সাতটি যুদ্ধে যোগদান করেছি, তখন আমরা টিড্‌ডি খেয়েছি। (ই.ফা. ৪৮৮৮,, ই.সে. ৪৮৮৯) আবু বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম ও ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) সকলেই ইবনু ‘উয়ায়নাহ্ (রহঃ)-এর সূত্র আবূ ইয়া’ফূর (রহঃ) হতে উল্লিখিত সানাদে হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। আবূ বকর (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় সাতটি যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন। ইসহাক্ বলেছেন, ছয়টি এবং ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) বলেছেন, ছয়টি কিংবা সাতটি। (ই.ফা. ৪৮৮৯,, ই.সে. ৪৮৯০) মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও ইবনু বাশ্শার (রহঃ) আবূ ইয়া’কূব (রহঃ) এ সানাদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সাতটি যুদ্ধ। (ই.ফা. ৪৮৯০, ই.সে. ৪৮৯১)

【9】

খরগোশ খাওয়ার বৈধতা

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা চলতে চলতে ‘মার্‌রুয যাহ্‌রান’ নামক স্থানে পৌঁছলে সেখানে একটি খরগোশকে ধাওয়া করলাম। লোকজনও সেটাকে ধাওয়া করলো এবং তারা ক্লান্ত হয়ে পড়লো। তিনি বলেন, অবশেষে আমি ধাওয়া করে ওটা ধরে ফেলি এবং আবূ তালহার কাছে নিয়ে আসি। তিনি এটাকে যাবাহ করলেন এবং পেছনের অংশ ও উভয় রান রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পাঠালেন। আমি এগুলো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে এলে তিনি তা গ্রহণ করেন। (ই.ফা. ৪৮৯১, ই.সে. ৪৮৯২) শু’বাহ্ (রহঃ) এ সানাদে হাদীসটি বর্ণিত। তবে ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, এর পিছনের অংশ কিংবা উভয় রান। (ই.ফা. ৪৮৯১, ই.সে. ৪৮৯৩)

【10】

যা দ্বারা শিকার করা ও শত্রুর বিরুদ্ধে সহায়তা লাভ করা যায় তার বৈধতা এবং পাথর নিক্ষেপ নিষিদ্ধ হওয়া

ইবনু বুরাইদাহ্‌ (রহঃ) তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) তাঁর সঙ্গীদের একজনকে পাথর নিক্ষেপ করতে দেখে তাকে বললেন, পাথর মারবে না। কারণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাথর মারা অপছন্দ করতেন। অথবা বলেছেন, নিষেধ করতেন। কারণ এর দ্বারা শিকার করাও যায় না এবং শত্রুকে ঘায়েল করাও যায় না; বরং এটি দাঁত ভাঙ্গে এবং চক্ষুতে ক্ষত করে। পরবর্তীতে তাকে আবারো পাথর ছুড়তে দেখে তিনি বললেন, আমি তোমাকে জানালাম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাথর নিক্ষেপ পছন্দ করতেন না, অথবা তা নিষেধ করতেন। তবুও তোমাকে পাথর ছুঁড়তে দেখছি? আমি তোমার সাথে এত এত দিন কথা বলব না। (ই.ফা. ৪৮৯২, ই.সে. ৪৮৯৪) ‘উসমান ইবনু ‘আমর বলেন, কাহমাস (রহঃ) এ সানাদে আমাদের কাছে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৯৩, ই.সে. ৪৮৯৫) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছোট ছোট পাথর ছুঁড়তে বারণ করেছেন। ইবনু জা’ফার (রহঃ) তাঁর বর্ণনাতে বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরও বলেছেনঃ এটা শত্রুকে পরাভূত করে না, শিকারও মারতে পারে না বরং এটা দাঁত ভাঙ্গে এবং চোখে আঘাত করে। ইবনু মাহ্‌দী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন, এটা শত্রুকে আঘাত করে না। তিনি “চোখে আঘাত করার কথা” উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৮৯৪, ই.সে. ৪৮৯৬) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ)-এর একজন নিজের লোক ছোট ছোট পাথর ছুঁড়লে তিনি তাকে তা করতে বারণ করেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ বারণ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এটা না শিকার করতে পারে আর না শত্রুকে পরাভূত করতে পারে; বরং এটি দাঁত ভাঙ্গে আর চোখে আঘাত করে। সা’ঈদ (রহঃ) বলেন, লোকটি যখন পূণরায় এ কাজ করল তখন তিনি বললেন, আমি তোমাকে হাদীস শোনাচ্ছি যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে নিষেধ করেছেন, এরপরও তুমি কঙ্কর নিক্ষেপ করছো? তোমার সঙ্গে আমি কখনো কথা বলবো না। (ই.ফা. ৪৮৯৫,, ই.সে. ৪৮৯৭) আইয়ূব (রহঃ) উল্লেখিত সূত্রে হুবহু রিওয়ায়াত করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৯৬, ই.সে. ৪৮৯৮)

【11】

যাবাহ ও হত্যায় দয়াশীল হওয়া ও ছুরিধার করার নির্দেশ

শাদ্দাদ ইবনু আওস (রহঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে আমি দু’টি কথা মনে রেখেছি, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের উপর ‘ইহসান’ অত্যাবশ্যক করেছেন। অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে, দয়ার্দ্রতার সঙ্গে হত্যা করবে; আর যখন যাবাহ করবে তখন দয়ার সঙ্গে যাবাহ করবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার যাবাহকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে। (ই.ফা. ৪৮৯৭, ই.সে. ৪৮৯৯) ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) হুশায়ম, ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম, ‘আবদুল ওয়াহ্হাব আস্-সাক্বাফী, আবূ বাকর ইবনু নাফি’ গুনদার, শু’বাহ্, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুর রহমান দারিমী, মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ সুফ্ইয়ান থেকে, ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) জারীর মানসূর তাঁরা সকলে খালিদ হায্যা (রহঃ) হতে ইবনু ‘উলাইয়্যাহ্ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের সানাদ ও অর্থের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৯৮,, ই.সে. ৪৯০০)

【12】

জীব-জন্তু বেঁধে তীরের লক্ষ্যবস্তু বানানোর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে

শু’বাহ্‌ (রহঃ) তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনু যায়দ ইবনুন আনাস ইবনু মালিক (রহঃ)-এর নিকট শুনেছি। তিনি বলেন, আমি আমার দাদা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর সাথে হাকাম ইবনু আইয়ূব (রহঃ)-এর গৃহে গেলাম। সেখানে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি একটি মুরগী বেঁধে তার দিকে তীর নিক্ষেপ করছিল। তিনি বলেন, তখন আনাস (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন জন্তু বেঁধে সেটিকে তীরের লক্ষ্য বানাতে বারণ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৯৯, ই.সে. ৪৯০১) যুহায়র ইবনু হারব, ইয়াহ্ইয়া ইবনু হাবীব (রহঃ), আবূ কুরায়ব (রহঃ) প্রমুখ সকলেই শু’বাহ্ (রহঃ) উল্লেখিত সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮৯৯, ই.সে. ৪৯০২) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা এমন কোন বস্তুকে (তীর বা বন্দুকের) লক্ষ্যবস্তু বানিও না যার মধ্যে প্রাণ আছে। (ই.ফা. ৪৯০০, ই.সে. ৪৯০৩) মুহাম্মাদ ইবনু জা’ফার ও ‘আবদুর রহমান ইবনু মাহ্দী উভয়ে শু’বাহ্ উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় উপরের হাদীসের অবিকল রিওয়ায়াত করেছেন। (ই.ফা. নেই, ই.সে. ৪৯০৪) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) একদল লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা একটি মুরগী বেঁধে সেটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করছিল। তারা ইবনু ‘উমারকে দেখে মুরগীটি ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, কে এ কাজ করলো? যে এমন কাজ করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে লা’নাত করেছেন। (ই.ফা. ৪৯০১, ই.সে. ৪৯০৫) সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) কতিপয় কুরায়শ যুবকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা একটি পাখি বেঁধে সেটির দিকে তীর নিক্ষেপ করছিল। আর প্রত্যেকটি নিশানা ব্যর্থ হওয়ার কারণে তারা পাখির মালিকের জন্য একটি করে তীর নির্ধারণ করছিল। তারপর তারা ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে দেখে আলাদা হয়ে গেল। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, কে এ কাজ করলো? যে ব্যক্তি এরূপ করেছে তার প্রতি আল্লাহর লা’নাত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লা’নাত করেছেন, যে কোন জীব-জন্তুকে লক্ষ্যস্থল বানায়। (ই.ফা. ৪৯০২, ই.সে. ৪৯০৬) মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) হতে, ভিন্ন সূত্রে ‘আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) হতে, আর একটি সূত্রে হারূন ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) তিনি বলেন, আবূ যুবায়র (রহঃ) আমাকে বলেছেন যে, তিনি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন প্রাণীকে বেঁধে হত্যা করতে বারণ করেছেন। (ই.ফা. ৪৯০৩, ই.সে. ৪৯০৭)