20. সাওম (রোযা)

【1】

সাওম (রোযা) ফরয হওয়া

তালহা ইব্‌ন উবায়দুল্লাহ (রাঃ) এলোমেলো চুল বিশিষ্ট এক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললো, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আল্লাহ তা’আলা আমার উপর যে সালাতসমূহ ফরয করেছেন সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। তবে হ্যাঁ, তুমি যা খুশী নফল আদায় করবে। তারপর সে বললো, আপনি আমাকে আল্লাহ তাআলা আমার উপর যে সাওম (রোযা) ফরয করেছেন সে সমন্ধে অবহিত করুন। তিনি বললেন, রমযান মাসের সাওম (রোযা)। তবে হ্যাঁ, তুমি যা খুশী নফল আদায় করবে। অতঃপর সে বললো, আপনি আমাকে আল্লাহ তা’আলা আমার উপর যে যাকাত ফরয করেছেন সে সমন্ধে অবহিত করুন। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ইসলামী শরীয়ার আহকাম সম্পর্কে অবহিত করলেন। অতঃপর সে বললো, ঐ সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সম্মানিত করেছেন আমি অতিরিক্ত কোন নফল ও আদায় করবনা এবং আল্লাহ তা’আলা আমার উপর যা যা ফরয করেছেন তাতে কোন কম করব না। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি সে সত্যই বলে থাকে তবে সে কৃতকার্য হয়ে যাবে অথবা তিনি বললেন, যদি সে সত্যই বলে থাকে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, কুরআনে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে যেন নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া 'সাল্লাম) এর কাছে কোন ব্যাপারে প্রশ্ন না করি। তাই আমরা মনে মনে আশংকা করতাম যেন গ্রাম থেকে কোন জ্ঞানী ব্যাক্তি এসে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করে। ইতিমধ্যে একজন গ্রাম্য ব্যক্তি এসে বলল, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের কাছে আপনার দুত এসেছিলেন। তিনি আমাদের বললেন যে, আপনি নাকি দাবী করেন যে, আল্লাহ তা’আলা আপনাকে রাসুল করে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেন যে, সে সত্যই বলেছে। অতঃপর সে প্রশ্ন করলঃ তবে আসমান কে সৃষ্টি করেছে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা, অতঃপর সে প্রশ্ন করলঃ যমীন-কে সৃষ্টি করেছে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা। তারপর সে প্রশ্ন করলঃ যমীনে পাহাড়সমূহ কে স্হাপন করেছে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা। এরপর সে প্রশ্ন করলঃ তাতে উপকারী বৃক্ষসমূহ কে সৃষ্টি করেছে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা। অতঃপর সে বললোঃ ঐ সত্তার শপথ যিনি আসমান এবং যমীন সৃষ্টি করেছেন আর তাতে পাহাড়সমুহ স্হাপন করেছেন এবং তাতে উপকারী বৃক্ষসমূহ সৃষ্টি করেছেন- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে রাসুল করে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। অতঃপর সে বললোঃ আপনার দুত বলেন যে, আমাদের উপর প্রত্যেক দিন রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয? তিনি বললেনঃ সে তো সত্যই বলেছে। অতঃপর সে বললোঃ ঐ সত্তার শপথ যিনি-আপনাকে রাসুল রুপে প্রেরন করেছেন- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যা। অতঃপর সে বললোঃ আপনার দুত বলেন যে, আমাদের উপর স্বীয় ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করা ফরয? তিনি বললেনঃ সে তো সত্যই বলেছে। সে বললোঃ সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে প্রেরণ করেছেন- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর সে বললোঃ আপনার দূত বলেন যে, আমাদের উপর প্রত্যেক বছর রমযানের রোযা ফরয? তিনি বললেনঃ সে তো সত্যই বলেছে। সে বলল, ঐ সত্তার শপথ যিনি আপনাকে প্রেরণ করেছেন- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর সে বললোঃ আপনার দূত বলেন যে, আমাদের মধ্যে রাহা খরচ বহনের উপর সামর্থ্যবানদের উপর হজ্জ ফরয? তিনি বললেনঃ সে তো সত্যই বলেছে। সে বললো, ঐ সত্তার শপথ যিনি আপনাকে প্রেরণ করেছেন- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর সে বললোঃ ঐ সত্তার শপথ যিনি আপনাকে প্রেরণ করেছেন- আমি-এগুলোর উপর কোন কিছু কখনো বৃদ্ধিও করবো না আর এর থেকে (কিছু) হ্রাসও করবো না। যখন সে ফিরে গেলো, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি সে তার কথায় সত্যবাদী হয়ে থাকে তবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আনাস ইবন্‌ মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা মসজিদে বসা ছিলাম। ইতিমধ্যে উটের উপর আরোহণ করে এক ব্যক্তি আসলো এবং সেই উটকে মসজিদের (আঙ্গিনায়) বসালো ও বাঁধলো আর উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞাসা করলোঃ তোমাদের মধ্যে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন উপস্থিতদের মধ্যে ঠেস দিয়ে বসা ছিলেন। আমরা তাকে বললাম, এই ঠেস দিয়ে বসা ফর্সা ব্যক্তি। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সেই ব্যক্তি বললোঃ হে আব্দুল মুত্তালিবের বংশজাত! তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ আমি তোমার ডাকে সাড়া দিয়েছি। তখন সেই ব্যাক্তি বললোঃ হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবো এবং প্রশ্নের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করব। আপনি কিছু মনে করবেন না। তখন তিনি বললেনঃ তোমার যা মনে চায় প্রশ্ন কর। তখন সে বললোঃ আমি আপনাকে আপনার প্রভু এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রভুর নামে শপথ দিয়ে বলছি আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে সমস্ত মানুষের হিদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন” নিশ্চয়ই। সে বললো, এখন আমি আপনাকে আল্লাহর নামে শপথ দিয়ে বলছি- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে রাত-দিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন” নিশ্চয়ই। অতপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর নামে শপথ দিয়ে বলছি- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে বছরের এ (রমযান) মাসে সাওম (রোযা) পালন করতে নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয়। “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। অতঃপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর নামে শপথ দিয়ে বলছি- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে আমাদের বিত্তশালীদের থেকে এ যাকাত নিয়ে তা আমাদের অভাবীদের মধ্যে বন্টন করার নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয়ই, “-হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন” তারপর সে ব্যাক্তি বললোঃ আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার উপর আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম। আর আমি নিজ গোত্রের অবশিষ্ট লোকদের জন্য দূতরূপে এসেছি এবং আমার নাম হল দিমাম ইব্‌ন ছা’লাবা; আমি সা’দ ইব্‌ন বাক্‌র গোত্রের লোক। আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মসজিদে বসা ছিলাম। ইতিমধ্যে উটের উপর আরোহণ করে এক ব্যক্তি আসলো এবং সেই উটকে মসজিদের (আঙ্গিনায়) বসিয়ে বেঁধে ফেললো। অতঃপর বললোঃ তোমাদের মধ্যে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে? তিনি তখন আমাদের মধ্যে ঠেস দিয়ে বসা ছিলেন। তখন আমরা তাকে বললাম, এই ঠেস দিয়ে বসা ফর্সা ব্যক্তি। তৎপর সে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললোঃ হে আলে মুত্তালিবের বংশজাত। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ আমি তোমার ডাকে সাড়া দিয়েছি। অতঃপর সে বললো:হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবো এবং প্রশের ব্যাপারে আপনার সাথে কঠোরতা অবলম্বন করবো। তখন তিনি বললেনঃ তোমার যা মনে চায় প্রশ্ন করো। সে বললোঃ আমি আপনাকে আপনার প্রভূ এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রভূর নামে শপথ দিয়ে বলছি- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে সমস্ত মানুষের হিদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিশ্চয়ই, “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। অতঃপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে প্রত্যেক বছরের এ (রমযান) মাসে সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন? রাবী বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয়ই, “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। অতঃপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি- আলাহ তা’আলা কি আপনাকে আমাদের বিত্তশালীদের থেকে এ যাকাত নিয়ে তা আমাদের অভাবীদের মধ্যে বন্টন করার নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয়ই, “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। অতঃপর সে বললো, আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার উপর আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম। আর আমি নিজ গোত্রের অবশিষ্ট লোকদের জন্য দূত স্বরূপ এসেছি; আর আমার নাম হল দিমাম ইব্‌ন ছা’লাবা আমি সা’দ ইব্‌ন বাক্‌র গোত্রের লোক। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ সাহাবীদের সাথে ছিলেন, ইতিমধ্যে একজন গ্রাম্য ব্যক্তি তাদের কাছে এসে বললোঃ তোমাদের মধ্যে আব্দুল মুত্তালিবের বংশজাত কে? সাহাবীগণ বললেনঃ এই হেলান দেওয়া লালবর্ন মিশ্রিত ফর্সা ব্যক্তি। হামযা (রহঃ) বলেনঃ (আরবি) শব্দের অর্থ হল লালবর্ন মিশ্রিত ফর্সা। অতঃপর সেই ব্যক্তি বললোঃ আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবো। আর প্রশ্নের ব্যাপারে আপনার সঙ্গে কঠোরতা অবলম্বন করবো। তিনি বললেনঃ তোমার যা মনে চায় প্রশ্ন কর। সে বললোঃ আমি আপনার প্রভৃ এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রভুর নামে আপনাকে শপথ দিয়ে বলছি- আল্লাহ তাআলা কি আপনাকে প্রেরণ করেছেন? তিনি বললেন, নিশ্চয়ই, “হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থেকো”, তারপর সে বললোঃ আমি আল্লাহর শপথ দিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করবো। আল্লাহ তা-আলা কি আপনাকে রাতদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই, “হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থেকো”। তারপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে প্রশ্ন করছি, আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে আমাদের বিত্তশালীদের ধন-সম্পদ থেকে এ যাকাত নিয়ে তা আমাদের অভাবীদের দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেনঃ নিশ্চয়, “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। তারপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে প্রশ্ন করছি, আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে বার মাসের মধ্যে এ (রমযান) মাসে সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, নিশ্চয়ই, “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। তারপর সে বললোঃ আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে প্রশ্ন করছি- আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে আমাদের মধ্যে রাহা খরচ বহনের উপর সামর্থ্যবানদের জন্য কা’বা ঘরের হজ্জ করার নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেনঃ নিশ্চয়, “হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন”। তারপর সে বললোঃ আপনার উপর আমি বিশ্বাস স্হাপন করলাম এবং আপনাকে সত্যবাদীরূপে মেনে নিলাম। আর আমার নাম হল দিমাম ইব্‌ন ছা’লাবা। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্যান্য লোকদের তূলনায় অত্যধিক দানশীল ব্যাক্তি ছিলেন। রমযান মাসে যখন জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি অত্যধিক দানশীল হয়ে যেতেন। আর জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমযানের প্রত্যেক রাত্রে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁকে কুরআন শিক্ষা দিতেন। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যখন জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাক্ষাত করতেন তখন তিনি প্রবাহমান বায়ু অপেক্ষাও অত্যধিক দানশীল হতেন। আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উল্লেখযোগ্য কোন অভিশাপ দিতেন না। আর যখন জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অবতরণের সময় নিকটবর্তী হত যিনি তাঁকে কুরআন শিক্ষা দিতেন, তখন তিনি প্রবামান বায়ূ অপেক্ষাও অত্যধিক দানশীল হতেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান মাস আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানদেরকে বেঁধে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান মাস আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানদেরকে বেঁধে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান মাস আগমন করে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খূলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমুহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান মাস আগমন করে তখন জান্নাতের দরজাসমুহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমুহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানকে শূংখলাবদ্ধ করে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রমযান মাস আসে করে তখন জান্নাতের দরজাসমুহ খূলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এই রমযান মাস যা তোমাদের কাছে আগমন করেছে। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়।

【2】

মা’মার থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে পার্থক্য

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয ব্যতীত রমযানের তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করার জন্যও উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন যে,যখন রমযান আগমন করে জান্নাতের দরজাসমূহ খূলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন রমযান আগমন করে তখন রহমতের দরজাসমুহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমাদের নিকট রমযান উপস্থিত হয়েছে, যা একটি বরকতময় মাস। তোমাদের উপরে আল্লাহ তা’আলা অত্র মাসের সওম ফরয করেছেন। এ মাসের আগমনে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর আল্লাহর অবাধ্য শয়তানদের গলায় লোহার বেড়ী পরানো হয়। এ মাসে একটি রাত রয়েছে যা এক হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। যে ব্যক্তি সে রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল সে প্রকৃত বঞ্চিত রয়ে গেল। আরফাজা (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমরা উতবা ইব্‌ন ফারকাদের অসুস্হতা দেখতে গিয়ে আমরা সেখানে রমযান মাস সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি ব্যাপারে আলোচনা করছ? আমরা বললাম, রমযান মাস সম্পর্কে। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, রমযান মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের গলায় লোহার শিকল পরানো হয়। এবং প্রত্যেক রাতে একজন আহবানকারী ডাক দিয়ে বলে, হে কল্যাণকামীগণ তোমরা নেক কাজ কর, হে পাপিষ্ঠগণ তোমরা পাপকর্ম থেকে বিরত থাকো। আরফাজা (রহঃ) তিনি বলেনঃ ‘আমি একটি ঘরে অবস্হান করছিলাম যেখানে উতবা ইব্‌ন ফারকাদ (রাঃ) ছিলেন। আমি একটি হাদীস বর্ণনা করতে চাইলাম, কিন্তু সেখানে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একজন সাহাবীও উপস্থিত ছিলেন, যিনি হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে আমার চেয়ে অধিক অভিজ্ঞ ছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসের ব্যাপারে বলেছেন, রমযান মাসে আসমানের দরজাসমূহ খূলে দেয়া হয়, আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর প্রত্যেক দুষ্টু শয়তানকে বন্দী করে রাখা হয়। প্রত্যেক রাতে একজন আহবানকারী আহবান করতে থাকে, ‘হে কল্যাণকামীগণ তোমরা নেক কাজ কর, হে পাপিষ্ঠগণ তোমরা পাপ হতে বিরত থাকো’।

【3】

রমযান মাসকে শুধু রমযান বলার অনুমতি

আবু বাক্‌রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ কখনও এরুপ বলবে না, আমি পূরা রমযানের সাওম (রোযা) পালন করেছি অথবা আমি পূরা রমযান মাসে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করেছি। রাবী বলেন, কেন তিনি এরুপ বলা অসমীচীন মনে করেছেন তা আমার জানা নেই। হয়তো বা এর মধ্যে নিজ প্রশংসা বা অসাবধানতা আছে বলেই তিনি এরুপ বলাকে সমীচীন মনে করেননি। ইব্ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন আনসারী মহিলাকে বলেছিলেন, যখন রমযান এসে যাবে তখন তুমি একটি উমরাহ্‌ আদায় করবে। কেননা রমযানের একটি উমরাহ্‌ একটি হজ্জের সমপরিমাণ।

【4】

বিভিন্ন দেশে চাঁদ দেখার বিভিন্নতা

কুরায়ব (রহঃ) একদা উম্মে ফাযল (রাঃ) তাঁকে মুআবিয়া (রাঃ)-এর কাছে সিরিয়ায় পাঠিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে তাঁর প্রয়োজন সমাধা করলাম এবং সিরিয়ায় অবস্হান করলে জুমূ’আর রাত্রে রমযান এর চাঁদ দর্শন করলাম। অতঃপর আমি মাসের শেষের দিকে মদীনায় ফিরে এলাম। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। অতঃপর চন্দ্রের কথা উল্লেখ করে আমাকে বললেন, তোমরা চাঁদ কখন দেখেছিলে? আমি বললাম, আমরা তো চাঁদ জুমু-আর রাত্রে দেখেছিলাম। তিনি আবারো প্রশ্ন করলেন যে, তুমি কি চাঁদ জুমু’আর রাত্রে নিজে দেখেছিলে? আমি বললামঃ হ্যাঁ, অন্যান্য লোকেরাও দেখেছে এবং তারাও সাওম (রোযা) পালন করেছে এবং মুআবিয়া (রাঃ)-ও সাওম (রোযা) পালন করেছেন। তিনি বললেন, অথচ আমরা তো চাঁদ শনিবার রাত্রে দেখেছি। আমরা সাওম (রোযা) পালন করতেই-থাকব, ত্রিশ সাওম (রোযা) পূরা করা পর্যন্ত অথবা চাঁদ দেখা পর্যন্ত। আমি বললাম, আপনি কি মূআবিয়া অথবা তাঁর সাথীদের দেখা যথেষ্ট মনে করেন না? তিনি বললেন, না, বরং আমাদেরকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরুপই নির্দেশ দিয়েছেন।

【5】

রমযান মাসের চাঁদ দেখার ব্যাপারে একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা এবং এ ব্যাপারে সিমাক (রহঃ)-এর হাদীসে সুফিয়ান(রাঃ)-এর বর্ণনা পার্থক্য

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক বেদুঈন এসে বললো যে, আমি চাঁদ দেখেছি, তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন যে, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বান্দা এবং রাসুল? সে বললো, হ্যাঁ। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোযণা দিলেন যে, তোমরা সবাই সাওম (রোযা) পালন কর। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একজন বেদূঈন এসে বললেন যে, আমি রাত্রে চাঁদ দেখেছি, তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন যে, তুমি কি সাক্ষ্য দেও যে, আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল? সে বললো, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ হে বেলাল! তুমি লোকদের সামনে ঘোযণা করে দাও যে, তারা যেন সাওম (রোযা) পালন করে। ইকরিমা (রহঃ) মুরসাল সুত্রে এই হাদীসটি বর্নিত। ইকরিমা (রহঃ) মুরসাল সুত্রে এই হাদীসটি বর্নিত। আব্দুর রহমান ইব্‌ন যায়দ (রাঃ) রমযান বা শা’বান মাসের সন্দেহযূক্ত দিনে লোকদের উদ্দেশ্য করে বললেনঃ শুন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের সাথে বসা ছিলাম। আমি তাদের প্রশ্ন করলে তাঁরা আমার কাছে বর্ননা করলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন কর এবং চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর আর চাঁদ দেখেই কুরবানী কর। তবে হ্যাঁ, (শা’বান মাসের ২৯ তারিখে) যদি আকাশে মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে তোমরা মাসের ৩০ দিন পূর্ণ করে নেবে। তবে দু'জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলে তোমরা সাওম (রোযা) পালন করবে এবং ভঙ্গ করবে।

【6】

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শা’বান মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করা এবং আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে বর্ণনা পার্থক্য

আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন করবে এবং চাঁদ দেখেই সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ, আকাশ মেঘাছন্ন থাকলে মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন করবে এবং চাঁদ দেখেই সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ, আকাশ মেঘাছন্ন থাকলে মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখ তখন সাওম (রোযা) পালন কর। আর যখন তোমরা (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখ তখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। তবে হ্যাঁ, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে মাসের ত্রিশ দিন সাওম (রোযা) পালন করবে। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ যখন তোমারা চাঁদ দেখ তখন সাওম (রোযা) পালন করবে। যখন (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখ সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ, আকাশ মেঘাছন্ন থাকলে মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। ইবনু উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের আলোচনা করছিলেন, তখন তিনি বললেনঃ যতক্ষন পর্যন্ত তোমরা চাঁদ দেখতে না পাও সাওম (রোযা) পালন করবে না। আবার যতক্ষন পর্যন্ত (সাওয়ালের) চাঁদ দেখতে না পাও তোমরা সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে না। হ্যাঁ, যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তবে তোমরা মাসের দিন গুণে নেবে (ত্রিশ দিন পূর্ন করবে)।

【7】

উবায়দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন উমর থেকে এ হাদীসের সনদের পার্থক্য বর্ণনা

ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেনঃ যতক্ষন পর্যন্ত (রমযানের) চাঁদ দেখতে না পাও তোমরা সাওম (রোযা) পালন করবে না। এবং যতক্ষন পর্যন্ত (শাওয়ালের) চাঁদ দেখতে না পাও তোমরা সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে না। হ্যাঁ, যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তবে তোমরা দিন গুণে নেবে (ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে)। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাঁদের ব্যাপারে আলোচনা করে বললেনঃ যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখবে সাওম (রোযা) পালন করবে আর যখন তোমরা (সাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখবে তখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। হ্যাঁ, যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তবে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।

【8】

আমর ইব্‌ন দীনার (রহঃ) কর্তৃক ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) থেকে উক্ত হাদীসের বর্ণনায় সনদের পার্থক্য

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা (রমযান মাসের) চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন করবে এবং (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। হ্যাঁ, যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তবে (শা’বান মাসের দিন গণনা করে) ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি আশ্চর্যবোধ করি ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে যে রমযান মাস আসার পূর্বেই সাওম (রোযা) পালন করে, অথচ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখবে তখন সাওম (রোযা) পালন করবে আর (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। হ্যাঁ, যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তবে (শা’বান মাসের দিন গণনা করে) ত্রিশ দিন পৃর্ণ করবে।

【9】

মানসূর (রহঃ) কর্তৃক রিবয়ী ইব্‌ন হিরাশ (রহঃ) সূত্রে উক্ত হাদীস বর্ণনায় সনদের পার্থক্য

হুযায়ফা ইব্‌ন ইয়ামান (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, তোমরা রমযান মাসের চাঁদ না দেখার পূর্বে কিংবা শা’বান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে রমযানের সাওম পালন করবে না। এরপর তোমরা রমযানের সাওম (রোযা) পালন করতে থাকবে যতক্ষন পর্যন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখবে কিংবা তার পূর্বেই রমযানের মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ হবে। মুহাম্মাদ ইব্‌ন বাশ্‌শার (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা রমযান মাসের চাঁদ না দেখার পূর্বে কিংবা শা’বান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে রমযানের সাওম (রোযা) পালন করবে না। এরপর তোমরা রমযানের সাওম (রোযা) পালন করতে থাকবে যতক্ষন পর্যন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখবে কিংবা তার পূর্বেই রমযান মাস ত্রিশ দিন হবে। রিব’য়ী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, যখন তোমরা রমযান মাসের চাঁদ দেখবে তখন সাওম (রোযা) পালন করবে আর যখন (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখবে তখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ যদি আকাশে মেঘাছন্ন থাকে তাহলে শা’বান মাসকে ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। তবে এর পূর্বেই চাঁদ দেখলে রমযানের সাওম (রোযা) পালন করবে। এরপর রমাযানের সাওম (রোযা) পালন করতে থাকরে যতক্ষণ পর্যন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখবে বা তার পূর্বেই রমযান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ হবে। ইকরিমা (রহঃ) তিনি বলেন, ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ননা করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন করবে এবং (শাওয়ালের) চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ, তোমাদের এবং চাঁদের মাঝখানে যদি মেঘ আড়াল হয় তাহলে তোমরা (শা’বান) মাসকে ত্রিশ দিন পূর্ন করবে। চাঁদ দেখার পুর্বেই সাওম (রোযা) পালন দ্বারা রমযান মাসকে সংবর্ধনা জানাবে না। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা রমযানের পূর্বে সাওম (রোযা) পালন করবে না। বরং তোমরা চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন করবে এবং চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) ভঙ্গও করবে। তবে হ্যাঁ, যদি চাঁদকে মেঘ আড়াল করে দেয় তবে তোমরা (শা’বান) মাসকে ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।

【10】

যুহ্‌রী (রহঃ) কর্তৃক আয়েশা (রাঃ) থেকে উক্ত রেওয়াত বর্ণনায় সনদের পার্থক্য বর্ণনা

আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ করেছিলেন যে, তিনি এক মাস বিবিদের কাছে যাবেন না। অতঃপর তিনি উত্রিশ দিন হওয়ার পর (আমার ঘরে প্রবেশ করলে) আমি বললাম, আপনি কি এক মাসের শপথ করেছিলেন না? আমি তো মাসকে ঊনত্রিশ দিন গণনা করেছি। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ মাসটি ছিল ঊনত্রিশ দিনের। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমি সর্বদা লালায়িত ছিলাম যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-কে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিবিদের মধ্য থেকে ঐ দুজন বিবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করব যাদের সস্পর্কে আল্লাহ পাক বলেছেনঃ (আরবী আছে) (যদি তোমরা উভয়ে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর যেহেতু তোমাদের হৃদয় ঝুঁকে পড়েছে- আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন।) রাবী এ হাদীসকে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। এবং এ ব্যাপারে উমর (রাঃ) বলেন যে, হাফসা (রাঃ) এ ঘটনা আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে প্রকাশ করায় রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, নিজ বিবিদের থেকে ঊনত্রিশ রাত বিচ্ছিন্ন রইলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যধিক ক্রোধবশত বলেছিলেন, যখন আল্লাহ তা’আলা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তাদের ঘটনা ব্যক্ত করেছিলেন যে, আমি তাদের ঘরে এক মাস পর্যন্ত প্রবেশ করব না। যখন ঊনত্রিশ রাত্র অতিবাহিত হয়ে গেল রাসুলুল্লাহ্‌(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়িশা (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করলেন এবং তাঁকে দিয়েই পূনরায় বিবিদের ঘরে যাওয়া শুরু করলেন, তখন আয়িশা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌। আপনি তো শপথ করেছিলেন যে, আপনি আমাদের ঘরে একমাস পর্যন্ত প্রবেশ করবেন না; আজকে তো আমরা ঊনত্রিশ রাত্র অতিবাহিত করলাম, আমরা তো তা গননা করে রেখেছি। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন যে, মাসটি ঊনত্রিশ রাত্রের ছিল।

【11】

এ প্রসঙ্গে ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীস-এর বর্ণনা

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার কাছে জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসে বললো যে, মাসটি ঊনত্রিশ দিনের। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, মাসটি ঊনত্রিশ দিনের।

【12】

ইসমাইল (রহঃ) সূত্রে সা’দ ইব্‌ন মালিক থেকে হাদীস বরননায় পার্থক্য

সা’দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত যে, তিনি এক হাত অন্য হাতের উপর মেরে বললেন যে, মাস এত দিনের হয়, মাস এতদিনের হয়, মাস এত দিনের হয়, তৃতীয় বারে তিনি একটি আঙ্গুল কমিয়ে দিলেন (ঊনত্রিশ দিনেরও হয়)। সা’দ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- বলেছেন যে, মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়। অর্থাৎ ঊনত্রিশ দিনের (২৯ দিনেরও হয়)। মুহাম্মাদ ইব্‌ন সা’দ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয় এবং মুহাম্মাদ ইব্‌ন -উবায়দ (রহঃ) তার রূপ বর্ননা করতে গিয়ে তিনবার নিজ হাতে তালি দিলেন, অতঃপর তৃতীয়বারে বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল বন্ধ করে ফেললেন।

【13】

ইয়াহয়া ইব্‌ন আবী কাসীর (রহঃ) সুত্রে আবূ সালামা থেকে উক্ত হাদীদ বর্ণনায় সনদের পার্থক্য বর্ণনা

আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, মাস কখনো ঊনত্রিশ দিনের হয় আবার কখনো ত্রিশ দিনের হয়। যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখবে তখন সাওম (রোযা) পালন করবে, আর যখন (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখবে তখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ, যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তবে মাসের ত্রিশ দিন পূর্ন করবে। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, মাস কখনো ঊনত্রিশ দিনের হয়। ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন যে, আমরা হলাম উম্মাতে উম্মিয়্যা। (মা এর শিশু সন্তানের মত) আমরা ভাল করে লিখা জানি না আর ভাল করে হিসাবও জানি না।১ মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়। এরকম তিনবার বলে তিনি ঊনত্রিশ দিনের উল্লেখ করলেন। ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমরা হলাম (মা এর শিশু সন্তানের ন্যায়) অজ্ঞ উম্মাত, (ভাল করে) হিসাবও জানি না এবং (ভাল করে) লিখতেও জানি না। আর মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়, মাস এত দিনের হয়। এবং তৃতীয় বারে বৃদ্ধ আঙুল বন্ধ করে ফেললেন। (২৯ দিন বুঝাবার জন্য)। আর মাস এরকম, এরকম এরকম, পূর্ণ ত্রিশ দিনেরও হয়। ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, মাস এত দিনের হয়। ইব্‌ন উমর (রাঃ) থেকে জাবালা (রহঃ) যে বর্ণনা করেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শুবা (রহঃ) বলেছেন যে, ইব্‌ন উমর (রাঃ) দুবার তাঁর হস্ত প্রসারিত করে এবং তৃতীয়বারে হস্তদ্বয়ের অঙ্গুলিসমুহ থেকে একটি অঙ্গুলি নামিয়ে ফেলে বলতে চেয়েছেন যে, মাস ঊনত্রিশ দিনেরও হয়। ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাস (কখনো) ঊনত্রিশ দিনেরও হয়। আব্দুলাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা সাহারী (ভোর রাত্রের খাওয়া) খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে। আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন যে, তোমরা সাহারী খাও। উবায়দুল্লাহ তিনি বলেন যে, আমি পুরোপুরি জানি না যে, এ হাদীসের বাক্য কিরূপ ছিল। আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে।

【14】

আব্দুল মালিক ইব্‌ন আবূ সুলাইমান (রহঃ) সুত্রে এ হাদীস বর্ণনায় সনদের পার্থক্য

আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে।

【15】

সাহারী বিলম্বে খাওয়া

যির (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমরা হুযায়ফা (রাঃ)-এর কাছে বললামঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আপনি কখন সাহারী খেতেন? তিনি বললেনঃ খুব ভোরেই। তবে হ্যাঁ, তখনো সূর্য উদয় হত না (ভোর রাত্রের শেষের দিকে)। যির ইব্‌ন হুবায়স (রহঃ) আমি হুযায়ফা (রাঃ)-এর সাথে সাহারী খেলাম। অতঃপর সালাত আদায় করার জন্য বের হলাম। যখন আমরা মসজিদে পৌছে দু’রাকআত সালাত আদায় করলাম (ফজরের সুন্নাত)। তখনই (জামাআতের) ইকামাত বলা হল। উভয়ের মাঝখানে মাত্র অল্প কিছুক্ষণ সময়ের ব্যবধান ছিল। সিলাহ ইব্‌ন যূফার (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমি হুযায়ফা (রাঃ)-এর সাথে সাহারী খেলাম। অতঃপর মসজিদে গিয়ে দু’রাকাআত ফজরের সালাত (সুন্নাত) আদায় করলাম। তারপরই সালাতের (জামাআতের) ইকামাত দেয়া হল এবং আমরা সালাত (ফজরের ফরয) আদায় করলাম।

【16】

সাহারী এবং ফজরের সালাতের মধ্যকার ব্যবধান

যায়দ ইব্‌ন ছাবিত (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমরা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাহারী খেলাম। অতঃপর সালাত আদায়ের জন্য দাড়িয়ে গেলাম। রাবী বলেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলাম যে, এতভয়ের মধ্যকার ব্যবধান কতক্ষণ ছিল? তিনি বললেনঃ কোন ব্যক্তির পঞ্চাশ আয়াত পড়ার সম পরিমাণ সময়।

【17】

হিশাম ও সাঈদ (রহঃ) কর্তৃক কাতাদার বর্ণনায় পার্থক্য

যাহাদ ইবন ছাবিত (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাহারী খেলাম। অতঃপর (ফজরের) সালাত আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে গেলাম। রাবী বলেনঃ সম্ভবত আনাস (রাঃ) জিজ্ঞাসা করছিলেন, উভয়ের মাঝখানের ব্যবধান কতক্ষণ ছিল? তখন তিনি বলেছিলেন কোন ব্যাক্তির পঞ্চাশ আয়াত পড়ার সমপরিমান সময় (এর ব্যবধান ছিল)। আনাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং যায়দ ইব্‌ন ছাবিত (রাঃ) একত্রে সাহরী খেলেন। অতঃপর উভয়ে ফজরের সালাত শুরু করে দিলেন। রাবী বলেনঃ আমরা আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তাঁদের সাহারী শেষ করা এবং সালাত শুরু করার মধ্যকার ব্যবধান কতক্ষণ ছিল? তিনি বলেনঃ কোন ব্যক্তির পঞ্চাশ আয়াত পড়ার সমপরিমাণ সময়।

【18】

সুলায়মান ইব্‌ন মিহরান (রহঃ) কর্তৃক আয়েশা (রাঃ) থেকে সাহরী বিলম্বে খাওয়ার শব্দ ও সনদের পার্থক্য বর্ণনা

আবূ আতিয়্যা (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমি আয়িশা (রাঃ)-কে বললামঃ আমাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এমন দু-জন সাহাবী আছেন, যাদের একজন ইফতার তাড়াতাড়ি করেন এবং সাহারী বিলম্বে খান। আর দ্বিতীয়জন ইফতার বিলম্বে করেন এবং সাহারী তাড়াতাড়ি খান। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, তাঁদের মধ্যে কে ইফতার তাড়াতাড়ি করেন এবং সাহারী বিলম্বে খান? আমি বললাম আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ)। তিনি [আয়িশা (রাঃ)] বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরকমই করতেন। আবূ আতিয়্যা (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমি আয়িশা (রাঃ)-কে বললাম যে, আমাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এমন দুজন সাহাবী আছেন যাদের একজন ইফতার তাড়াতাড়ি করেন, সাহারী বিলম্বে খান। অন্যজন ইফতার বিলম্বে করেন এবং সাহারী তাড়াতাড়ি খান। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, কে ইফতার তাড়াতাড়ি করেন এবং সাহারী বিলম্বে খান? আমি বললামঃ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ) তখন তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরকমই করতেন। আবূ আতিয়্যা (রহঃ) তিনি বলেন যে, একদা আমি এবং মাসরুক (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তখন মাসরুক (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)-কে বললেন যে, আমাদের মাঝে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এমন দুজন সাহাবী আছে, তাঁরা উভয়েই সওয়াব পাওয়ার আকাঙ্ক্ষী। তন্মধ্যে একজন মাগরিবের সালাত এবং ইফতার বিলম্বে করেন। আর অপরজন মাগরিবের সালাত এবং ইফতার তাড়াতাড়ি করেন। তখন আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন যে, কে মাগবিবের সালাত এবং ইফতার তাড়াতাড়ি করেন, মাসরুক (রহঃ) বললেনঃ আব্দুলাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ)। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রকমই করতেন। আবু আতিয়্যা (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি এবং মাসরুক (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে গেলাম এবং বললামঃ হে মুমিনদের মাতা! আমাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এমন দু’জন সাহাবী আছেন যাঁদের একজন ইফতার তাড়াতাড়ি করেন, এবং মাগরিবের সালাতও তাড়াতাড়ি করেন। আর অন্যজন ইফতার বিলম্বে করেন এবং মাগরিবের সালাতও বিলম্বে আদায় করেন। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, তাঁদের মধ্যে কে ইফতার তাড়াতাড়ি করেন এবং মাগরিবের সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করেন? আমরা বললামঃ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ)। তখন তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও এরকমই করতেন। (রাবী বলেনঃ ) দ্বিতীয় সাহাবী ছিলেন আবূ মুসা (রাঃ)।

【19】

সাহারীর ফযীলত

ইসহাক ইব্‌ন মানসূর (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমি একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গেলাম যখন তিনি সাহারী খাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন যে, এতে বরকত রয়েছে, আল্লাহ তা’আলা এ বরকত তোমাদেরকেই দান করেছেন। অতএব তোমরা একে ছাড়বে না।

【20】

সাহারী খাওয়ার জন্য আহবান করা

ইরবায ইব্‌ন সারিয়া (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি রমযান মাসে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সাহারী খাওয়ার জন্য আহবান করতে এবং বলতে শুনেছি যে, তোমরা সকালে পবিত্র আহারের দিকে এস।

【21】

সাহারীকে সকালের খাদ্য বলে নামকরণ

মিকদাম ইব্‌ন মা’দী কারিব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমরা ভোর রাত্রের খাদ্য অবশ্যই খাবে। কেননা সেটাই সকাল বেলার পবিত্র খাবার। খালিদ ইব্‌ন মা’দান (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বলেছেনঃ তোমরা সকাল বেলার পবিত্র আহারের দিকে এসো অর্থাৎ সাহারীর দিকে এস।

【22】

আমাদের সাওম (রোযা) এবং আহলে কিতাবের সাওমের মধ্যে পার্থক্য

আমর ইব্‌ন আস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, আমাদের সাওম (রোযা) এবং আহলে কিতাব-এর সাওমের মধ্যে পার্থক্য হল সাহারী খাওয়া। (আমরা সাহারী খাই কিন্তু ইয়াহুদ ও খ্রিস্টানরা তা খায় না)।

【23】

ছাতু এবং খোরমা দ্বারা সাহারী খাওয়া

আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, (একদা) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহারীর সময় বললেন যে, হে আনাস! আমি সাওম (রোযা) পালন করার ইচ্ছা করেছি, তুমি আমাকে কিছু খাবার দাও। তখন আমি তাঁর কাছে কিছু খোরমা এবং পানীয় একটি পাত্র আনলাম। এগুলো আমি বেলাল (রাঃ)-এর (সাহারী) আযান দেওয়ার পর এনেছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ হে আনাস! একজন লোক তালাশ করে আন সে আমার সাথে আহার করবে। তখন আমি যায়দ ইব্‌ন ছাবিত (রাঃ)-কে ডাকলাম, তিনি এসে বললেনঃ আমি কিছু ছাতূর পানি পান করেছি এবং সাওম (রোযা) পালন করার ইচ্ছা করেছি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমিও তো সাওম (রোযা) পালন করার ইচ্ছা করেছি। অতঃপর তাঁর সাথে সাহারী খেলেন এবং দাঁড়িয়ে গিয়ে দু’রাকাআত সালাত (ফজরের সূন্নাত) আদায় করে ফজরের ফরয সালাত আদায় করার জন্য বের হয়ে গেলেন। বারা ইব্‌ন আযিব (রাঃ) তিনি বলেনঃ তাদের কেউ যদি রাত্রের আহার না করেই ঘুমিয়ে পড়ত তবে তার জন্য সেই রাত্রে এবং পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছু খাওয়া ও পান করা বৈধ ছিল না। (আরবী আছে) এই আয়াত অবতীর্ন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত (এ নিয়ম ছিল)। রাবী বলেন, এই আয়াত আবূ কায়স ইবনু আমর (রাঃ) সম্পর্কেও অবতীর্ণ হয়েছিল। তিনি সাওম (রোযা) পালন করে মাগরিবের পর নিজ স্ত্রীর কাছে এসে বললেন যে, আহার করার মত কিছু আছে কি? তার স্ত্রী বললেন, আমার কাছে তো আহার করার মত কিছু নেই। তবে আমি আপনার জন্য রাত্রের আহারের সন্ধানে বের হচ্ছি। তারপর তাঁর স্ত্রী বের হয়ে গেলেন। ইতিমধ্যে তিনি মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন এবং ঘুমিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর স্ত্রী তাঁর কাছে ফিরে এসে তাকে নিদ্রিত অবস্থায় পেয়ে জাগিয়ে দিলেন কিন্তু তিনি কিছুই না খেয়েই রাত্র কাটিয়ে সকাল থেকে সাওম (রোযা) পালনরত থাকলেন। দুপুর হলে তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললেন। এ ঘটনাটি এ আয়াত অবর্তীর্ন হওয়ার পূর্বেই সংঘটিত হয়েছিল। তার পরেই আল্লাহ তা’আলা এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াত অবর্তীর্ন করেন। আদি ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহর বানীঃ (আরবী আছে) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, এ হল রাত্রের অন্ধকার এবং দিনের শুভ্রতা।

【24】

ফজর কখন হবে?

ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেন যে, তোমাদের মধ্যে যারা নিদ্রিত তাদের জাগ্রত করার জন্য এবং তোমাদের মধ্যে যারা তাহাজ্জ্বুদের সালাত আদায়রত আছে তাদেরকে বিরত করার জন্য বিলাল (রাঃ) রাত্রে আযান দেয়। অতঃপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয় হাতের কব্জি দ্বারা ইঙ্গিত করে দেখালেন যে এরূপ চিহ্ন প্রকাশ পাওয়া ফজর হওয়ার লক্ষণ নয়। বরং ফজর হওয়ার লক্ষণ হল এরকম চিহ্ন প্রকাশ পাওয়া। এই বলে তিনি স্বীয় তর্জনী অঙ্গূলিদ্বয় দ্বারা ইঙ্গিত করলেন। সামুরা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন যে, বিলাল (রাঃ)-এর আযান এবং এই শুভ্রতা যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলে না দেয়, যতক্ষণ না এ রকম, এ রকমভাবে প্রভাতের আলোর রেখা প্রকাশ পায় অর্থাৎ দিগন্তে। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন যে, এরপর তিনি স্বীয় হম্ভদ্বয় লম্বালম্বি ভাবে ডানে বামে ছড়িয়ে দিলেন।

【25】

রমযান মাস আসার পুর্বেই সাওম (রোযা) পালন শুরু করে দেওয়া

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেন যে, তোমরা রমযান মাস আগমন করার পূর্বেই সাওম (রোযা) পালন শুরু করে দেবে না। তবে হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি শুরু করতে পারবে, যে সর্বদা নিয়মিত সাওম (রোযা) পালন করত এবং তার নিয়মিত সাওম (রোযা) পালনকালীন দিনটি রমযান মাস আগমনের পূর্বের দিন হয়।

【26】

ইয়াহ্‌য়া ইব্‌ন আবূ কাসীর ও মুহাম্মাদ ইব্‌ন আমর (রহঃ) কর্তৃক আবূ সালামা (রহঃ) সূত্রে হাদীস বর্ণনায় পার্থক্যের উল্লেখ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কখনো রমযান মাস আগমনের একদিন বা দুই দিন পূর্বেই সাওম (রোযা) পালন শুরু করে দেবে না। তবে হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি শুরু করতে পারবে, যে ইতিপূর্বেও ঐ সময় নিয়মিত সাওম (রোযা) পালন করত। সে তার সাওম (রোযা) পালন করতে পারবে। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযান মাস আগমনের একদিন বা দুই দিন আগে সাওম (রোযা) পালন শুরু করে দেবে না। তবে হ্যাঁ, তোমাদের কেউ যদি পূর্ব থেকেই নিয়মিত সাওম (রোযা) পালন করত এবং তার সাথে এই সময়ের মিল হয়ে যায় তবে সেটা স্বতন্ত্র ব্যাপার।

【27】

এ প্রসঙ্গে আবূ সালামা (রহঃ) কর্তৃক হাদীস বর্ণনার উল্লেখ

উম্মে সালামা (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কখনো একাধারে দুই মাস সাওম (রোযা) পালন করতে দেখিনি। তবে হ্যাঁ, তিনি শা’বান মাসকে রমযান মাসের সাথে মিলাতেন (সাওম (রোযা) পালনসহ) অর্থাৎ তিনি একাধারে শা’বান ও রমযান মাসের সাওম (রোযা) পালন করতেন।

【28】

এ প্রসঙ্গে মুহাম্মাদ ইব্‌ন ইব্রাহীম (রহঃ) সূত্রে হাদীস বর্ণনায় পার্থক্য

উম্মে সালামা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শা’বান মাসকে রমযান মাসের সাথে মিলাতেন সাওম (রোযা) পালনসহ। আবূ সালামা ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রহঃ) তিনি আয়িশা (রাঃ)-কে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাওম (রোযা) পালন করা শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, তিনি আর সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবেন না। আবার যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, তিনি আর সাওম (রোযা) পালন করবেন না। তিনি শা’বান মাসের পূরা বা অধিকাংশ দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়িশা (রাঃ) আমাদের কেউ (ঋতূ ইত্যাদির কারণে) রমযান মাসের সাওম (রোযা) পালন করতে পারত না এবং তার কাযা আদায় করার সূযোগ পাওয়ার পূর্বে, শা’বান মাস এসে যেত। আর রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শা’বান মাসের মত অন্য কোন মাসে এত অধিক সাওম (রোযা) পালন করতেন না। তিনি অল্প কয়েক দিন ব্যতীত পূরো শা’বান মাসই সাওম (রোযা) পালন করতেন; বরং (বলতে গেলে) পূরো শা’বান মাসই সাওম (রোযা) পালন করতেন।

【29】

এ বিষয়ে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের শব্দের পার্থক্য-এর উল্লেখ

আবূ সালামা (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম; আমি তাঁকে বললাম, আপনি আমাকে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাওম (রোযা) পালন করতে শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, তিনি হয়ত সাওমই (রোযাই) পালন করতে থাকবেন। আবার যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, হয়ত সাওম (রোযা) ভঙ্গই করতে থাকবেন। আর তিনি শা’বান মাস অপেক্ষা অন্য কোন মাসে এত অধিক সাওম (রোযা) পালন করতেন না। উনি অল্প কিছু দিন ব্যতীত প্রায় পূরো শা’বান মাসই সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পূরো বছরে শা’বান মাসের চেয়ে বেশি অন্য কোন মাসে এত অধিক (নফল) সাওম (রোযা) পালন করতেন না। তিনি পূরো শা’বান মাসই সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শা’বান মাস সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি জানি না যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক রাত্রে পূর্ণ কুরআন খতম করেছিলেন কিনা বা পুর্ণ রাত্রে সকাল পর্যন্ত জাগ্রত থেকে ছিলেন কিনা বা কখনো রমযান মাস ব্যতীত পূর্ণ মাস সাওম (রোযা) পালন করেছিলেন কিনা। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন শফীক (রহঃ) তিনি আয়েশা (রাঃ)-কে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাওম (রোযা) পালন করা শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, তিনি হয়ত সাওমই (রোযা) পালন করতে থাকবেন, আর যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, তিনি হয়ত সাওম (রোযা) ভঙ্গই করতে থাকবেন। আর তিনি মদীনায় আসার পর থেকেই রমযান মাস ব্যতীত কখনো এক মাশ সাওম (রোযা) পালন করতেন না। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন শকীক (রহঃ) তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি চাশতের সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, না। তবে হ্যাঁ, সফর থেকে আগমন করলে আদায় করতেন। আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি কখনো পূর্ণ এক মাস সাওম (রোযা) পালন করতেন? তিনি বললেনঃ না। আমি জানি না যে, তিনি কখনো রমযান মাস ব্যতীত পূর্ণ এক মাস সাওম (রোযা) পালন করেছেন আর কোন এক মাস ভঙ্গও করেন নাই বরং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মাসের কিছুদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন (করতে অভ্যস্ত ছিলেন)। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন শকীক (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি চাশতের সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, না; তবে হ্যাঁ সফর থেকে আসলে তখন আদায় করতেন। আমি আবার প্রশ্ন করলাম যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য কি রমযান মাস ব্যতীত কোন নির্দিষ্ট সাওম (রোযা) ছিল? তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ, তিনি রমযান মাস ব্যতীত মৃত্যু অবধি কখনো পূর্ণ এক মাস সাওম (রোযা) পালন করতেন না আর পুর্ণ এক মাস সাওম (রোযা) ভঙ্গও করতেন না, বরং মাসের কিছুদিন সাওম (রোযা) করতেন।

【30】

এ হাদীসে খালিদ ইব্‌ন মা’দান (রহঃ) থেকে বর্ণনার পার্থক্যের উল্লেখ

জুবায়র ইব্‌ন নূফায়র এক ব্যক্তি আয়েশা (রাঃ)-কে সাওম (রোযা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পূর্ণ শা’বান মাস সাওম (রোযা) পালন করতেন আর সোমবার এবং বৃহস্পতিবারের সাওম (রোযা) উত্তম মনে করতেন। আয়িশা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শা’বান এবং রমযান মাসে সাওম (রোযা) পালন করতেন আর সোমবার এবং বৃহষ্পতিবারের সাওমকে (রোযাকে) উত্তম মনে করতেন।

【31】

সন্দেহযুক্ত দিনে সাওম (রোযা) পালন করা

সিলাহ (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমরা আম্মার (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। এমন সময়ে একটি ভুনা বকরী নিয়ে আসা হল। তিনি বললেন খাও। তখন উপস্থিত লোকদের একজন পাশে সরে গেলেন এবং বললেন যে, আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন আম্মার (রাঃ) বললেনঃ যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত দিনে সাওম (রোযা) পালন করল সে আবূল কাসিম [রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-এর অবাধ্যতা করল। সিমাক (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমি ইকরামা (রাঃ)-এর কাছে এমন একদিন গেলাম যে দিনটি সষ্পর্কে সন্দেহ করা হচ্ছিল যে, তা কি রমযান না শা’বান। তিনি তখন রুটি ও সবজী খাচ্ছিলেন এবং দুধ পান করছিলেন। তিনি আমাকে বললেনঃ আসো (এবং খাও) আমি বললাম, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি আল্লাহর নামে শপথ করে বললেন যে, তোমাকে অবশ্যই সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতে হবে। আমি দুইবার বললামঃ সুবহানাল্লাহ্‌। যখন আমি তাঁকে দেখলাম যে, তিনি শপথ করছেন এবং আমাকে ছাড়বেন না-আমি নিজেই অগ্রসর হয়ে বললামঃ এখন আপনার কাছে কি আছে আনুন। তিনি বললেন, আমি ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (রমযান মাসের) চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) পালন করবে এবং (শাওয়াল মাসের) চাঁদ দেখে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবে। তবে হ্যাঁ, তোমাদের এবং চাঁদের মাঝখানে যদি মেঘ অথবা অন্ধকার আড়াল হয় তবে তোমরা শা’বান মাসের গননা পূর্ণ করে নেবে এবং রমযান মাস আগমন করার পুর্বে তোমরা সাওম (রোযা) পালন দ্বারা রমযান মাসকে সন্বর্ধনা জানাবে না, আর একদিনের সাওম (রোযা) পালন দ্বারা রমযান মাসকে শা’বান মাসের সাথে মিলিয়ে ফেলবে না।

【32】

সন্দেহযুক্ত দিনে রোযা রাখা

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলতেনঃ খবরদার! তোমরা রমযান মাসকে এক অথবা দুই দিনের সাওম (রোযা) পালন দারা অগ্রে নিয়ে আসবে না। হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি যে নিয়মিত সাওম (রোযা) পালন করে, সে ঐদিনও সাওম (রোযা) পালন করতে পারবে।

【33】

যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযান মাসে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করে এবং সাওম (রোযা) পালন করে তার সওয়াব এ বিষয়ে যুহ্‌রী (রহঃ) থেকে রেওয়ায়ত বর্ণনায় পার্থক্য

সাঈদ ইব্‌ন মুসায়্যাব (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি রমযান মাসে আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করবে তার পূর্বাপর সমস্ত (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। উরওয়া ইব্‌ন যুবায়র (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মীনী আয়েশা (রাঃ) তাকে অবহিত করেছেন: রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরযের নির্দেশ দেওয়া ব্যতীতই লোকদেরকে তারাবীহ্‌র সালাতের ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন এবং বলতেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করবে তার পূর্বের সমস্ত (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। উরওয়া ইব্‌ন যুবায়র (রাঃ) আয়েশা (রাঃ) তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একদা) গভীর রাত্রে বের হয়ে গেলেন এবং মসজিদে গিয়ে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। এটা দীর্ঘ হাদীস; এতে উল্লেখ রয়েছে যে, আয়েশা (রাঃ) বলেছেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের ফরযের নির্দেশ দেওয়া ব্যতীতই তারাবীহ্‌র সালাতের ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন এবং বলতেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রিতে জাগরণ করে তার পূর্বাপর সমস্ত (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। রাবী বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল পর্যন্ত তাঁর আমল এরকমই ছিল। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রমাযানের ব্যাপারে বলতে শুনেছি: যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। উরওয়া ইব্‌ন যুবাইর (রহঃ) আয়েশা (রাঃ) তাঁকে খবর দিয়েছনঃ একদা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গভীর রাত্রে বের হয়ে গেলেন এবং মসজিদে সালাত আদায় করলেন। এটি দীর্ঘ হাদীস। রাবী তাতে বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের ফরযের নির্দেশ দেওয়া ব্যতীতই তারাবীহ্‌র সালাতের ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন এবং বলতেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযানে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রমযানের ব্যাপারে বলতে শুনেছি: যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযানে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযানে তারাবীহ্‌র সালাত আদায় করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরযের নির্দেশ দেওয়া ব্যতীতই তারাবীহ্‌র সালাতের ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারারীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি রমযান মাসের সাওম (রোযা) পালন করে। আবূ কুতায়বা (রহঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রে জাগ্রত থাকে তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযান মাসের সাওম (রোযা) পালন করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযান মাসের সাওম (রোযা) পালন করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযান মাসের সাওম (রোযা) পালন করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

【34】

এ হাদীস বর্ণনায় ইয়াহ্‌য়া ইব্‌ন আবূ কাসীর ও নায্‌র ইব্‌ন শায়বান (রহঃ) –এর বর্ণনার পার্থক্যের উল্লেখ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রে জাগ্রত থাকে, তার পূর্বাপৃর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দূঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রে জাগ্রত থাকে, তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। নযর ইব্‌ন শায়বান (রহঃ) তিনি আবূ সালামা ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রহঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে বললেন, আপনি রমযান মাস সষ্পর্কে উত্তম যা কিছু আলোচনা শুনেছেন তা আমার কাছে বর্ননা করুন। তখন আবূ সালামা (রহঃ) বললেন যে, আব্দুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রাঃ) আমার কাছে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসের আলোচনা করলেন এবং রমযান মাসকে সকল মাসের উপর মর্যাদা দান করে বললেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, সে স্বীয় গুনাহসমূহ থেকে ঐ দিনের মত পবিত্র হয়ে যায় যে দিন তার মাতা তাকে প্রসব করেছিল। আবূ সালামা (রহঃ) অতঃপর পূর্বের অনুরূপ হাদীস বর্ননা করলেন এবং বললেন যে, যে ব্যক্তি রমযান মাসে সাওম (রোযা) পালন করে এবং তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে এবং সওয়াবের নিয়তে। নযর ইব্‌ন শায়বান (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমি আবূ সালামা ইবনু আব্দুর রহমান (রহঃ)-কে বললামঃ আপনি আমার কাছে রমযান মাস সম্পর্কে যা আপনি আপনার পিতা থেকে শুনেছেন। আর আপনার পিতা তা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এমতাবস্হায় শুনেছিলেন যে, আপনার পিতা এবং রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মাঝখানে অন্য আর কেউ ছিল না। তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমার পিতা আমার কাছে বর্ননা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর রমযান মাসের সাওম (রোযা) ফরয করেছেন এবং আমি তোমাদের জন্য তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) কে সুন্নাত করে দিয়েছি। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সওয়াবের নিয়তে রমযান মাসে সাওম (রোযা) পালন করে এবং তারাবীহ্‌র সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, সে স্বীয় গুনাহসমূহ থেকে সে দিনের মত পবিত্র হয়ে যায় যে দিন তার মাতা তাকে প্রসব করেছিল।

【35】

সিয়াম পালনের ফযীলত, এ প্রসঙ্গে আলী ইব্‌ন আবু তালিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনায় পার্থক্য

আলী (রাঃ) তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ সাওম (রোযা) আমারই জন্য আর আমিই তার প্রতিদান দেব। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে -যখন সে ইফতার করে এবং যখন সে তার রবের সাথে (আল্লাহ তা’আলার) সাথে সাক্ষাৎ করবে, ঐ সত্তার শপথ যাঁর কুদরতী হস্তে আমার জীবন রয়েছে সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্শত) মুখের দূর্গ্নন্ধ আল্লাহ তা’আলার নিকট মিশকের সুগন্ধি থেকে অধিক পছন্দনীয়। আবূল আহওয়াস (রহঃ) আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন যে, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ সাওম (রোযা) আমারই জন্য আর আমিই তার প্রতিদান দেব। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে- একটি যখন সে তার রবের (প্রভুর) সাথে সাক্ষাৎ করবে আর দ্বিতীয়টি তার ইফতারের সময়। আর সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত) মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার নিকট মিশকের সুগন্ধি থেকে অধিক পছন্দনীয়।

【36】

এ হাদীসের বর্ণনায় আবূ সালিহ (রহঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্যের উল্লেখ

আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন যে, সাওম (রোযা) আমারই জন্য আর আমিই তার প্রতিদান দেব। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে- সে যখন ইফতার করে আনন্দ লাভ করে আর সে যখন আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং আল্লাহ তাকে প্রতিদান দিবেন তখনও সে আনন্দ লাভ করবে। ঐ সত্তার শপথ যার হাতে আমার জীবন, সাওম (রোযা) পালনকারীর মুখের দূর্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার নিকট মিশকের সুগন্ধি থেকে বেশী পছন্দনীয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে,১ (আল্লাহ্‌ বলেন) সাওম (রোযা) আমারই জন্য। আমিই তার প্রতিদান দেব। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দ রয়েছে; ইফতারের সময় এবং আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাতের সময়। আর সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে) নির্গত মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার নিকট কস্তূরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে কোন নেককাজ আদম সন্তান করে না কেন তার জন্য দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করে সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ সাওম (রোযা) ব্যতীত, যেহেতু সাওম (রোযা) আমারই জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দিব। সাওম (রোযা) পালনকারী আমারই কারণে স্বীয় কামভাব এবং পানাহার পরিত্যাগ করে। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে- তার ইফতারের সময় এবং তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়। আর সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত) মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার কাছে কস্তূরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়। আবূ সালিহ যায়্যাত (রহঃ) তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, বনী আদমের প্রত্যেক নেক কাজ তার নিজের জন্য (কেননা সব কাজের প্রতিদান তাকে দেওয়া হয়) কিন্তু সাওম (রোযা) আমারই জন্য (আল্লাহর জন্য) এবং আমিই নিজে (আল্লাহ নিজে) তার প্রতিদান দিব। আর সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। তোমাদের মধ্যে কেহ যখন সাওম (রোযা) পালন করে, তখন সে যেন অশ্লীল বাক্য ব্যবহার না করে এবং উচ্চস্বরে কথা না বলে ও কারো উপর রাগান্বিত না হয়। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে তখন সে যেন বলে, ‘আমি সাওম (রোযা) পালন করছি’। ঐ সত্তার শপথ যার পবিত্র হস্তে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রাণ, সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে) মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার কাছে কস্তূরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয় হবে। সাওম (রোযা) পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দ রয়েছে- যার দ্বারা সে আনন্দিত হবে। স্বীয় ইফতারের সময় সে আনন্দিত হবে এবং তার রবের সাথে সাক্ষাত করার সময় তার সাওম (রোযা) পালনের কারণে আনন্দিত হবে। আতা যায়্যাত (রহঃ) তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ বনী আদমের প্রত্যেক নেক কাজ তারই। (কেননা নেক কাজের প্রতিদান তাকে দিয়ে দেওয়া হয়)। কিন্তু সাওম (রোযা) একমাত্র আমারই জন্য এবং আমিই নিজে তার প্রতিদান দিব। আর সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। তোমাদের মধ্যে কেও যখন সাওম (রোযা) পালন করে, তখন সে যেন অম্লীল বাক্য ব্যবহার না করে এবং উচ্চস্বরে কথা না বলে ও কারো উপর রাগান্বিত না হয়। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে তখন সে যেন বলে, ‘আমি সাওম (রোযা) পালন করছি’। ঐ সত্তার শপথ যার পবিত্র হস্তে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবন, আল্লাহ তা’আলার নিকট সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত) মুখের দুর্গন্ধ কস্তূরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়। সাঈদ ইব্‌ন মুসায়্যাব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ বনী আদমের প্রত্যেক নেক কাজ তার নিজের। (কেননা সব নেক কাজের প্রতিদান তাকে দিয়ে দেওয়া হয়) কিন্তু সাওম (রোযা) ; একমাত্র আমারই জন্য এবং আমিই নিজে তার প্রতিদান দিব। ঐ সত্তার শপথ যার পবিত্র হস্তে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবন, সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত) মুখের দু্র্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার নিকট কস্তূরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (আল্লাহ্‌ বলেন) বনী আদম যে নেক কাজ করে তাকে তার দশ গুণ প্রতিদান দেওয়া হয়। কিন্তু সাওম (রোযা) আমারই জন্য এবং আমি নিজেই তার প্রতিদান দিব।

【37】

সাওম (রোযা) পালনকারীর ফযীলত সম্পর্কে আবূ উসামা (রাঃ)-এর হাদীসে মুহাম্মদ ইব্‌ন আবূ ইয়াকূব (রহঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য উল্লেখ

আবূ উমামা (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললামঃ আমাকে এমন একটি ইবাদাতের নির্দেশ দিন যা আমি আপনার নির্দেশ ক্রমে পালন করব। তিনি বললেনঃ তুমি সাওম (রোযা) কে আঁকড়ে ধর যেহেতু এর কোন বিকল্প নাই।১ আবূ উমামা বাহিলিী (রাঃ) আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললামঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমাকে এমন একটি ইবাদাতের নির্দেশ দিন যা দ্বারা আল্লাহ আমার উপকার করবেন। তিনি বললেনঃ তুমি সাওমকে (রোযাকে)(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আঁকড়ে ধর, যেহেতু এর কোন বিকল্প নাই। আবূ উমামা (রাঃ) তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করেছিলেন, কোন ইবাদাত সর্বোত্তম? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি সাওম (রোযা) -কে আঁকড়ে ধর, যেহেতু সাওম (রোযা)-এর কোন বিকল্প নাই। আবূ উমামা (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি বললাম যে, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমাকে কোন একটি আমলের নির্দেশ দিন। তিনি বললেন, তুমি সাওম (রোযা)-কে আঁকড়ে ধর যেহেতু সাওম (রোযা)-এর কোন বিকল্প নাই। (এ একটি অদ্বিতীয় ইবাদত)। মু’আয ইব্‌ন জাবাল (রাঃ) তিনি বলেন যে, সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) তিনি বলেন যে, সাওম (রোযা) ঢাল স্বরপ। মু’আয (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। আবূ সালিহ যায়্যাত (রহঃ) অনুরুপ হাদিস বর্ণিত। আবূ সালিহ যায়্যাত (রহঃ) তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন: রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। আতা যায়্যাত (রহঃ) তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন: রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ। সাঈদ ইব্‌ন আবূ হিন্‌দ (রহঃ) আমির ইব্‌ন সা’অসা’আ গোত্রের মুতাররিফ (রহঃ) নামক জনৈক ব্যক্তি বর্ননা করেছেন যে, উছমান ইব্‌ন আবূল ‘আস (রাঃ) তাকে পান করাবার জন্য দুধ আনালে তিনি বললেন যে, আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন উছমান (রাঃ) বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, সাওম (রোযা) ঢাল স্বরূপ, তোমাদের যুদ্ধে ব্যবহৃত ঢালের ন্যায়। মুতারবিফ (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমি উছমান ইব্‌ন আবূল আস (রাঃ)-এর কাছে গেলে তিনি আমার জন্য দুধ আনালেন। তখন আমি বললাম, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, সাওম (রোযা) জাহান্নামের অগ্নি থেকে ঢালস্বরূপ, তোমাদের যুদ্ধে ব্যবহৃত ঢালের ন্যায়। যাকারিয়্যা ইব্‌ন ইয়াহইয়া (রহঃ) অনুরুপ হাদিস বর্ণিত আছে। ইয়াদ ইব্‌ন গুতায়ফ (রহঃ) আবূ উবায়দা (রাঃ) বলেছেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ সাওম (রোযা) ঢালস্বরূপ যতক্ষন পর্যন্ত ভেঙ্গে না ফেলে। আয়েশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সাওম (রোযা) জাহান্নামের অগ্নি থেকে ঢালস্বরূপ। তাই যে ব্যক্তি সাওম (রোযা) পালনরত অবস্থায় যার ভোর হয় সে যেন অজ্ঞ ব্যক্তির ন্যায় ব্যাবহার না করে। অন্য কেউ যদি তার সাথে অজ্ঞ ব্যক্তির ন্যায় আচরণ করে তবে সে যেন তার সাথে অশ্লীল বাক্য ব্যবহার না করে এবং গালি না দেয়। বরং বলে যে, আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ যার হস্তে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবন, সাওম (রোযা) পালনকারীর (ক্ষুধাজনিত কারণে নির্গত) মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তা’আলার নিকট কস্তৃরীর সুগন্ধি থেকেও অধিক পছন্দনীয়। আবূ উবায়দা (রাঃ) তিনি বলেনঃ সাওম (রোযা) ঢালস্বরূপ যতক্ষণ পর্যন্ত সে তা ভেঙ্গে না ফেলে। সাহ্‌ল ইবনু সা’দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, সাওম (রোযা) পালনকারীদের জন্য জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে রায়্যান বলা হয়, সে দরজা দিয়ে সাওম (রোযা) পালনকারীগণ ব্যতীত অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। যখন তাদের শেষ ব্যক্তি প্রবেশ করে ফেলবে, সে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে পানি পান করবে আর যে পানি পান করবে সে কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। আবূ হাকিম (রহঃ) তিনি বলেন, সাহ্‌ল আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, নিশ্চয়ই জান্নাতে একটি দরজা আছে যাকে রায়্যান বলা হয়। কিয়ামতের দিন বলা হবে কোথায় সাওম (রোযা) পালনকারীরা? তোমরা কেন রায়্যান এর দিকে আসছ না? যে ব্যক্তি সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। যখন সাওম (রোযা) পালনকারীরা প্রবেশ করে ফেলবে সে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। অতএব সে দরজা দিয়ে সাওম (রোযা) পালনকারীগণ ব্যতীত অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক জোড়া (ভাল জিনিস) দান করবে তাকে কিয়ামতের দিন ডাকা হবে, হে আল্লাহর বান্দা! তোমার এ দানটা কতই না ভালো। যে ব্যক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ে অভ্যস্ত হবে তাকে সালাতের দরজা দিয়ে ডাকা হবে, আর যে ব্যক্তি জিহাদে অভ্যস্ত হবে তাকে জিহাদের দরজা দিয়ে ডাকা হবে যে ব্যক্তি দান খয়রাতে অভ্যন্ত হবে তাকে দান খয়রাতের দরজা দিয়ে ডাকা হবে আর যে ব্যক্তি সাওম (রোযা) পালনে অভ্যস্ত হবে তাকে রায়্যান নামক দরজা দিয়ে ডাকা হবে। তখন আবূ বকর সিদ্দিক (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! কাউকে এক যোগে এই সমুদয় দরুজা দিয়ে ডাকার কোন প্রয়োজন নেই। তাই কাউকে কি এই সমুদয় দরজা দিয়ে এক যোগে ডাকা হবে? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হ্যাঁ এবং আমি আশা করি যে, আপনি সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের অন্যতম হবেন’। আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন যে, আমরা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে একবার বের হলাম; তখন আমরা যুবক ছিলাম কিন্তু আমাদের বিবাহের সামর্থ্য ছিল না। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে যুবক শ্রেণী! তোমরা বিবাহ করে ফেল। কেননা তা দৃষ্টিকে অবনত রাখে আর লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ করে। আর যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সাওম (রোযা) পালন করে। কেননা সাওম (রোযা) তার কামভাব দমন করবে। আলকামা (রহঃ) ইব্‌ন মাসঊদ (রাঃ) একদা আরাফাতে উছমান (রাঃ)–এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তিনি ইব্‌ন মাসঊদ (রাঃ) কে নির্জনে নিয়ে গিয়ে বললেন যে, তোমার কি কোন যুবর্তীর প্রয়োজন আছে যাকে আমি তোমার সাথে বিবাহ দিয়ে দিব? তখন আব্দুল্লাহ (রাঃ) আলকামা (রহঃ)-কে ডেকে তার কাছে বর্ণনা করলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে ফেলে। কেননা বিবাহ দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্হানকে সংরক্ষন করে। আর যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সাওম (রোযা) পালন করে, যেহেতু সাওম (রোযা) তার কামভাব দমনকারী। আব্দুলাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে আর যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য না রাখে সে যেন সাওম (রোযা) পালন করে। কেননা সাওম (রোযা) তার কামভাবকে দমন করবে। আব্দুর রহমান ইব্‌ন ইয়াযীদ (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমরা আব্দুল্লাহ (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তখন আমাদের সাথে আলকামা, আসওয়াদ (রহঃ) এবং একজন লোক ছিলেন। তিনি আমাদের সামনে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করলেন, যা আমার ধারণায়, উপস্থিত লোকদের নয় বরং আমাকেই উপলক্ষ করে বর্ণনা করলেন। যেহেতু আমি উপস্থিত লোকদের মধ্যে কম বয়সের ছিলাম। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, হে যুবক শ্রেণী! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ রাখে সে যেন বিবাহ করে, যেহেতু বিবাহ দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্হানকে সংরক্ষণ করে। আলকামা (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি ইব্‌ন মাসঊদ (রাঃ)-এর সাথে বসা ছিলাম। তিনি তখন উসমান (বা)-এর কাছে ছিলেন। উসমান (রাঃ) বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েকজন যুবকের কাছে গেলেন এবং বললেন যে, তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য রয়েছে সে যেন বিবাহ করে ফেলে। কেননা বিবাহ দূষ্টিকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্হানকে সংরক্ষণ করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সাওম (রোযা) তার কামভাবকে দমন করবে। আবূ আব্দুর রহমান নাসায়ী বলেন, অত্র হাদীসের অন্যতম রাবী আবূ মা’শার-এর নাম যিয়াদ ইব্‌ন কুলায়ব। তিনি নির্ভরযোগ্য এবং ইবরাহীমের ছাত্র; তার থেকে মানসূর, মুগীরা এবং শু’বা রিওয়ায়াত করেছেন। অপরদিকে আবূ মা’শার মাদানীর নাম নূজায়হ, তিনি দুর্বল।

【38】

যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করলো তার সওয়াব এ বিষয়ে হাদীস বর্ণনায় সুহায়ল ইব্‌ন আবূ সালিহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা পার্থক্য প্রসঙ্গ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা সেই একদিনের সাওমের বিনিময়ে তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরে সরিয়ে রাখবেন। (অর্থাৎ তার চেহারা জাহান্নাম থেকে বহু দুরে থাকবে।) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা সেই একদিনের সাওমের বিনিময়ে তার জাহান্নামের মাঝ খানে সত্তর বছরের দুরত্ব করে দেবেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরে সরিয়ে রাখবেন। আবূ সাঈদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দুরত্বে সরিয়ে রাখবেন। আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা সেই সাওমের বিনিময়ে তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছারের দূরে সরিয়ে রাখবেন।

【39】

এ বিষয়ে সুফিয়ান (রহঃ) সূত্রে হাদীস বর্ণনায় বর্ণনা পার্থক্য

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কোন ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা সেই সাওমের বিনিময়ে তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা সেই সাওমের বিনিময়ে তার চেহারা থেকে জাহান্নামের উত্তাপকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা সেই সাওমের বিনিময়ে তার চেহারা থেকে জাহান্নামকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। উকবা ইব্‌ন আমির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আল্লাহ তা’আলা তার থেকে জাহান্নামকে একশত বছরের দুরত্বে সরিয়ে রাখবেন।

【40】

সফরকালীন সাওম (রোযা) মাকরূহ হওয়া

কা’ব ইব্‌ন আসিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়।১ সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করা সাওয়াবের কাজ নয়।

【41】

যে কারনে সফরে সাওম (রোযা) পালন সম্পর্কে উক্ত বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে জাবির ইব্‌ন আব্দুল্লাহ্‌ থেকে বর্ণিত সনদে মুহাম্মাদ ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রহঃ) এর বর্ণনা পার্থক্য

জাবির ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখলেন যে, কিছু লোক একজন লোককে ঘিরে রেখেছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল যে, এই ব্যক্তিকে সাওম (রোযা) পরিশ্রান্ত করে ফেলেছে। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সফরকালীন অবস্তায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়। জাবির ইব্‌ন আব্দূল্লাহ্‌ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে গেলেন যিনি গাছের ছায়ায় (বসা) ছিলেন আর তার উপর পানি ছিটানো হচ্ছিল, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন যে, তোমাদের এ সাথীর কি হল? তারা উত্তর দিল, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! সে সাওম (রোযা) পালন করছিল, তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়। তোমরা আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগের সদ্যবহার কর; যে সুযোগ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের দিয়েছেন, তোমরা তা গ্রহণ কর। মুহাম্মাদ ইব্‌ন আন্দুর রহমান (রাঃ) তিনি বলেন, সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়। তোমরা আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার কর এবং তা গ্রহণ কর।

【42】

আলী ইব্‌ন মুবারক (রহঃ) থেকে বর্ণনায় সনদের বিভিন্নতা

জাবির ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়। তোমরা আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার কর এবং তা গ্রহণ কর। জাবির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়।

【43】

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীর ব্যক্তির নাম

জাবির ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) সফররত অবস্থায় ছায়া দেওয়া হচ্ছিল। তখন তিনি বললেন যে, সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করা সওয়াবের কাজ নয়। জাবির (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের বছর মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হলেন এবং সাওম (রোযা) পালন করেই কুরাউল গামীম নামক উপত্যকা পর্যন্ত পৌঁছলেন। সাহাবীগণও সাওম (রোযা) পালন করতে লাগলেন। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, সাহাবীদের জন্য সাওম (রোযা) পালন করা কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। তখন তিনি আসরের পরে এক পেয়ালা পানি চাইলেন এবং তা পান করে ফেললেন। আর সাহাবীগণ (এ দৃশ্য) দেখছিল এবং কিছু সাহাবী সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন আর কিছু সাহাবী সাওম (রোযা) পালন করতে থাকলেন। যখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, কিছু সাহাবী এখনো সাওম (রোযা) পালন করেছেন তিনি বললেন যে, তারা অপরাধী। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে মাররুজ্‌ জাহ্‌রান নামক স্থানে কিছু খানা নিয়ে আসা হলে তিনি আবূ বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ)-কে বললেন, তোমরা দু’জন কাছে এসো এবং খাও। তাঁরা উভয়ে বললেন আমরা সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন তিনি বললেন, তোমাদের সাথীদ্বয়ের জন্য হাওদা প্রস্তুত কর এবং তাদেরকে সহযোগিতা কর। আবূ সালামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাররুজ জাহ্‌রান নামক স্থানে দ্বিপ্রহরের আহার করছিলেন আর তার সাথে আবূ বকর এবং উমর (রাঃ)-ও ছিলেন। তখন তিনি (তাঁদেরকে) বললেন, এসো খাও। আবূ সালামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ বকর ও উমর (রাঃ) মাররুজ জাহ্‌রান নামক স্থানে ছিলেন।

【44】

মুসাফির থেকে সাওম (রোযা) মুলতবীকরণ এবং আমর ইব্‌ন উমাইয়া (রাঃ) থেকে আওযায়ী কর্তৃক রেওয়াত বর্ণনায় সনদের বিভিন্নতা

আমর ইব্‌ন উমাইয়া দমরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমি একবার সফর থেকে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলাম। তিনি বললেন, হে আবূ উমাইয়া! দ্বিপ্রহরের আহার গ্রহণের জন্য অপেক্ষা কর। আমি বললাম যে, আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, আসো আমার কাছে আসো, যাতে আমি তোমাকে মুসাফিরের সম্পর্কে বিধান বলতে পারি। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির থেকে সাওম (রোযা) কে মুলতবী রেখেছেন আর অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করে দিয়েছেন। আমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, হে আবূ উমাইয়া! তুমি কি দ্বিপ্রহরের খানা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, আসো আমার কাছে আসো; আমি তোমাকে মুসাফির সম্পর্কে বিধান অবহিত করি। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করে দিয়েছেন। আবূ উমাইয়া দমরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে সফর থেকে আসলাম এবং তাঁকে সালাম করলাম। যখন আমি চলে যেতে উদ্যত হলাম, তিনি বললেনঃ দ্বিপ্রহরের আহারের জন্য অপেক্ষা কর, হে আবূ উমাইয়া (রাঃ)! আমি বললাম, ইয়া নবীয়্যাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে মুসাফিরের বিধান সস্পর্কে অবহিত করি। আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী এবং অর্ধেক সালাতকে (নামায/নামাজ) রহিত করেছেন। আবূ উমাইয়া দমরী (রাঃ) তিনি একবার সফর থেকে রাসূলুল্লাহর (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে আসলেন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ উমাইয়া (রাঃ)! দ্বিপ্রহরের খানার অপেক্ষা কর। আমি বললাম, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। কাছে এসো; আমি তোমাকে মুসাফিরের বিধান সস্পর্কে অবহিত করি। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী এবং অর্ধেক সালাতকে (নামায/নামাজ) রহিত করেছেন। আবূ উমাইয়া দমরী (রাঃ) তিনি একবার সফর থেকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আসলেন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ উমাইয়া (রাঃ)! দ্বিপ্রহরের খানার অপেক্ষা কর। আমি বললাম, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। কাছে এসো; আমি তোমাকে মুসাফিরের বিধান সস্পর্কে অবহিত করি। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী এবং অর্ধেক সালাতকে (নামায/নামাজ) রহিত করেছেন।

【45】

এ হাদীসে মুয়াবিয়া ইব্‌ন সাল্লাম ও আলী ইবনুল মুবারক (রহঃ)-এর বর্ণনার বিভিন্নতা

আবূ উমাইয়া দমরী (রাঃ) তিনি একবার সফর থেকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আসলেন আর তখন তিনি সাওম (রোযা) পালন করছিলেন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমি কি দ্বিপ্রহরের আহার করা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না? তিনি বললেন, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কাছে এসো; আমি তোমাকে মুসাফিরের সাওমের (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিধান সস্পর্কে অবহিত করি। আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী এবং অর্ধেক সালাতকে (নামায/নামাজ) রহিত করেছেন। আবূ উমাইয়া (রাঃ) তিনি এক সফর থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আসলেন এরপর উক্তরূপ বর্ণনা করেছেন। আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে রহিত করে দিয়েছে অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) এবং মুলতবী রেখেছেন সাওম (রোযা)-কে। আর গর্ভবর্তী মহিলা এবং দুগ্ধদানকারী মহিলা থেকেও মুলতবী করে দিয়েছেন সাওম (রোযা)। আনাস ইব্‌ন মালিক আল কুশাইরী (রাঃ) আমার প্রাপ্য উটের ব্যাপারে সফর করে যেতে যেতে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কাছে পৌঁছলাম। তখন তিনি খাচ্ছিলেন অথবা বলেন যে, তিনি আহার গ্রহণ করছিলেন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেলেনঃ কাছে এসো এবং খানা খাও। আমি বললাম, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করেছেন এবং সাওম (রোযা) মুলতবী করে দিয়েছেন। আর গর্ভবর্তী মহিলা এবং দুগ্ধদানকারী মহিলা থেকেও মুলতবী করে দিয়েছেন সাওম (রোযা)। আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে (বনূ হাওয়াজেন এর সাথে লড়াইয়ে প্রাপ্ত) আমার ভাগের উট নেওয়ার জন্য আসলাম। তাঁর কাছে গিয়ে দেখলাম যে তিনি আহার করছেন। তিনি আমাকেও আহার করতে ডাকলেন। আমি বললাম যে, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে এ ব্যাপারে অবহিত করব। আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে সাওম (রোযা) মুলতবী এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করে দিয়েছেন। সুওয়ায়দ ইব্‌ন নাস্‌র (রহঃ) তিনি বলেন যে, আমি কোন প্রয়োজনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তখন তিনি দ্বিপ্রহরের আহার করছিলেন। তিনি বললেন, খেতে এসো। আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে সাওমের বিধান সস্পর্কে অবহিত করব। আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে সাওম (রোযা) মুলতবী এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করে দিয়েছেন। আর গর্ভবর্তী এবং দুগ্ধদানকারী মহিলাকেও সাওম (রোযা) মুলতবী রাখার সুযোগ দিয়েছেন। সুওয়ায়দ ইব্‌ন নাসর (রহঃ) আবূল ‘আলা ইবনুল শিখ্‌খীর অপর এক ব্যক্তি থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কুতায়বা (রহঃ) বালহারীশ গোত্রের এক ব্যক্তির পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার মুসাফির অবস্হায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তখন আমি সাওম (রোযা) পালন করছিলাম আর তিনি আহার গ্রহণ করছিলেন। তিনি বললেন, এসো, আমি বললাম, আমিতো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, এসো, তুমি কি আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে কি কি মুলতবী করে দিয়েছেন তা জান না? আমি বললাম, মুসাফিরের উপর থেকে কি কি মুলতবী করে দিয়েছেন? তিনি বললেন, সাওম (রোযা) এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ)। আব্দুর রহমান ইব্‌ন মুহাম্মাদ (রহঃ) বালহারীশ গোত্রের এক ব্যক্তির পিতা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি যথায় ইচ্ছা সফর করতাম। একবার আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তখন তিনি আহার করছিলেন। তিনি বললেন, এসো, খাও। আমি বললাম আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তোমাকে সাওম (রোযা) সস্পর্কে অবহিত করব। আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে সাওম (রোযা) মুলতবী এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করে দিয়েছেন। (আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি সফর করছিলাম। একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তখন তিনি আহার করছিলেন আর আমি সাওম (রোযা) পালন করছিলাম। তিনি বললেন, এসো, আমি বললাম- আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তিনি বললেন, তুমি কি জান, আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে কি কি মুলতবী করে রেখেছেন? আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কি কি মূলতবী করে রেখেছেন? তিনি বললেন, সাওম (রোযা) এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ)। গায়লান (রহঃ) তিনি বলেন, আমি একবার আবূ কিলাবা (রাঃ)-এর সাথে সফরে বের হলাম। খানা উপস্তিত করা হলে আমি বললাম, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন তিনি বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার সফরে বের হয়েছিলেন, তখন তার সামনে খানা উপস্থিত করা হলে তিনি এক ব্যক্তিকে বলেছিলেন, কাছে এসো এবং খাও। তখন সে ব্যক্তি বলেছিল যে, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, আল্লাহ তা’আলা মুসাফিরের উপর থেকে সফরের অবস্হায় সাওম (রোযা) মুলতবী এবং অর্ধেক সালাত (নামায/নামাজ) রহিত করে দিয়েছেন। অতএব তুমি এসো এবং খাও। অতঃপর আমি কাছে গেলাম এবং খেলাম।

【46】

সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালনকারীর উপর সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীর ফযীলত

আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। আমাদের মধ্যে কিছু সাওম (রোযা) পালনকারী লোকও ছিলেন আর কিছু সাওম (রোযা) ভঙ্গকারী লোকও ছিলেন। একদিন গরম পড়লে আমরা একটি ছায়াযূক্ত স্থানে উপনীত হলাম; সাওম (রোযা) পালনকারীরা বিশ্রাম নিতে লাগলেন আর সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীরা সওয়ারী উটগুলোকে পানি পান করাতে লাগলেন। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আজ তো সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীরা সমুদয় সওয়াব নিয়ে গেল।

【47】

সফরকালীন সাওম (রোযা) পালনকারী বাড়িতে অবস্থানকালীন সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীর ন্যায়

আব্দুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রাঃ) তিনি বলেন, বলা হল যে, সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করা বাড়িতে অবস্হানকালে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করার ন্যায়। (সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন দ্বারা যদি সাওম (রোযা) পালনকারী পরিশ্রান্ত হয়ে যায় তবে তার জন্য সাওম (রোযা) ভঙ্গ করাই উত্তম।) আব্দুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রাঃ) তিনি বলেন, সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি বাড়িতে অবস্হানকালে সাওম (রোযা) ভঙ্গকারী ব্যক্তির ন্যায়। আব্দুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রাঃ) তিনি বলেন যে, সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করা বাড়িতে অবস্হানকালে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করার ন্যায়।

【48】

সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করা এ বিষয়ে ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসে বর্ণনাভেদের উল্লেখ

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার রমযান মাসে সফরে বের হলেন। যখন কুদায়দ নামক স্থানে পৌঁছলেন তখন একটি দূধের পেয়ালা আনা হলে তিনি এবং তার সাহাবীগণ তা পান করলেন এবং সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় সাওম (রোযা) শুরু করে (সফর করে) কুদায়দ নামক স্থানে আসলেন এবং সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে মক্কায় পৌঁছলেন। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) শুরু করে কুদায়দ নামক স্থানে পৌঁছলেন এবং এক পেয়ালা দুগ্ধ চেয়ে নিয়ে পান করে তিনিও সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন এবং তার সাহাবীগণও সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন।

【49】

মানসূর (রহঃ)-এর বর্ণনার পার্থক্য

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার উদ্দেশ্যে বের হলেন এবং সাওম (রোযা) শুরু করলেন। যখন ‘উস্‌ফান১ নামক স্থানে পৌঁছলেন, এক পেয়ালা দুধ চেয়ে নিয়ে তা পান করলেন। শু’বা (রহঃ)-এর বর্ননায় “রমযান মাসে” এ উল্লেখ রয়েছে। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) বলতেন, যার ইচ্ছা হল সাওম (রোযা) পালন করবে আর যার ইচ্ছা হয় সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলবে। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার রমযানে সফর করলেন এবং সাওম (রোযা) শুরু করে ‘উসফান’ নামক স্থানে পৌছেলেন। অতঃপর একটি (দূধের) পাত্র চেয়ে নিয়ে তা দিনের বেলায় পান করলেন। লোকজন তাঁকে দেখছিল। তারপর সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন। (সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতে থাকলেন মক্কা পৌঁছা পর্যন্ত।) আওয়াম ইব্‌ন হাওশাব (রহঃ) তিনি বললেন, আমি মুজাহিদ (রহঃ)-কে বললাম, সফর অবস্থায় সাওম (রোযা) (কি পালন করতে হবে?) তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সফর অবস্হায় কখনো) সাওম (রোযা) পালন করতেন (আবার কখনো) সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন। মুজাহিদ (রহঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার রমযান মাসে সাওম (রোযা) শুরু করে তা সফরের মধ্যে ভঙ্গ করে ফেলেছিলেন।

【50】

এ বিষয়ে হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ)-এর হাদীসে সুলায়মান ইব্‌ন ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণনার ইখতিলাফের উল্লেখ

হামযা ইব্‌ন আমর আসলামী (রাঃ) তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ‘যদি’। অতঃপর তিনি এমন কিছু বাক্য ব্যবহার করলেন যার অর্থ হল যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। অনুবাদ পাওয়া যায়নি হামযা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) সম্পর্কে জিজ্ঞানা করলে তিনি বললেনঃ যদি তোমার সাওম (রোযা) পালন করতে ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর, আর যদি সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতে ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, যদি তোমার সাওম (রোযা) পালন করতে ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর, আর যদি তোমার সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলতে ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। হামযা ইব্‌ন আমর আসলামী (রাঃ) তিনি বলেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ যদি তোমার সাওম (রোযা) পালন করতে ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর। আর যদি তোমার সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতে ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যূগে বিরামহীন সাওম (রোযা) পালন করতাম। তাই অমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি সফরকালীন অবস্হায় বিরামহীন সাওম (রোযা) পালন করি। তিনি বললেন, যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। হামযা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি বিরামহীন সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি। তাই আমি কি সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করব? রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন আর তিনি-সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি ছিলেন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল।

【51】

এ প্রসঙ্গে হামযা (রাঃ) কর্তৃক হাদীসে উরওয়াহ (রহঃ)-এর বর্ণনা পার্থক্যের উল্লেখ

হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেনঃ আমি সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি, তাতে কি আমার কোন অসুবিধা হবে? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন যে, সেটা হল আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে একটি সুযোগ। অতএব, যে ব্যক্তি তার-সদ্ব্যবহার করল সে ভাল কাজ করল আর যে ব্যক্তি সাওম (রোযা) পালন করতে ভালবাসে তার কোন অসুবিধা নেই।

【52】

এ প্রসঙ্গে হিশাম ইব্‌ন উরওয়াহ (রহঃ)-এর বর্ণনাভেদের উল্লেখ

হামযা ইব্‌ন আমর আসলামী (রাঃ) যে, তিনি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আমি সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করতে পারব? তিনি বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন করবে আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলবে। হামযা ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ্‌! আমি সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি, আমি কি সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করব? তিনি বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর, আর যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন যে, হামযা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ, (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি কি সফরকালীন অবস্থায় সাওম (রোযা) পালন করব? আর তিনি অধিক সাওম (রোযা) পালনকারী ছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ হামযা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি কি সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) পালন করব? তিনি বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল। আয়েশা (রাঃ) হামযা আসলামী (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন আর তিনি সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি ছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন কর আর যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল।

【53】

এ প্রসঙ্গে আবূ নাযরাহ মুনযির ইব্‌ন মালিক ইব্‌ন কাত’আ থেকে বর্ণিত পার্থক্যের উল্লেখ

আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি বলেছেনঃ আমরা একবার রমযান মাসে সফর করছিলাম। আমাদের কতেক সাওম (রোযা) পালনকারী ছিলেন আর কতেক সাওম (রোযা) ভঙ্গকারী ছিলেন। কিন্তু আমাদের সাওম (রোযা) পালনকারীরাও সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীদের তিরস্কার করছিলেন না আর সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীরাও সাওম (রোযা) পালনকারীদের তিরস্কার করছিলেন না। আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমরা একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সফর করছিলাম। আমাদের মধ্যে কতেক সাওম (রোযা) পালনকারী ছিলেন আর কতেক সাওম (রোযা) ভঙ্গকারী ছিলেন কিন্তু আমাদের সাওম (রোযা) পালনকারীরাও সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীদের তিরস্কার করছিলেন না আর সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীরাও সাওম (রোযা) পালনকারীদের তিরস্কার করছিলেন না। জাবির (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে একবার সফর করছিলাম, আমাদের কতেক সাওম (রোযা) পালন করছিলেন আর কতেক সাওম (রোযা) ভঙ্গ করছিলেন। আবূ সাঈদ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সফর করছিলেন, তখন সাওম (রোযা) পালনকারীরা সাওম (রোযা) পালন করতেন আর সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীরা সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন। কিন্তু সাওম (রোযা) পালনকারীরাও সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীদের তিরস্কার করতেন না আর সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীরাও সাওম (রোযা) পালনকারীদের তিরস্কার করতেন না।

【54】

মুসাফিরের জন্য কিছু সাওম (রোযা) পালন করার কিছু সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলার অনুমতি

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ মক্কা বিজয়ের বছর রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসে সাওম (রোযা) পালন অবস্হায় বের হলেন। যখন কাদীদ নামক স্থানে পৌঁছলেন তখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন।

【55】

যে ব্যক্তি রমযান মাসে ব্যতিত অবস্থানকালে সাওম (রোযা) শুরু করে তারপর সফর শুরু করে, তার জন্য সাওম (রোযা) ভঙ্গ করার অনুমতি

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার সফর করছিলেন এবং সাওম (রোযা) শুরু করে ‘উসফান’ নামক স্হানে পৌঁছলেন। তারপর একটি পাত্র চেয়ে নিয়ে দিনের বেলায়ই পান করলেন যাতে লোকজন দেখতে পায়। অতঃপর সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন এবং মক্কায় প্রবেশ করে রমযান মাসে মক্কা বিজয় করে ফেললেন। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরকালীন অবস্হায় সাওম (রোযা) শুরু করে তারপর তা ভঙ্গ করে ফেলেছিলেন। তাই যার ইচ্ছা হয় সে সাওম (রোযা) পালন করবে আর যার ইচ্ছা হয় সে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলবে।

【56】

গর্ভবতী এবং স্তন্য দানকারিণী মহিলা থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী করা

আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) সাহাবীদের থেকে এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে মদীনায় আসলেন। তখন তিনি দ্বিপ্রহরের আহার করছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন যে, খেতে এসো। তিনি বললেনঃ আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন যে,। আল্লাহ তা’আলা মুসাফির, গর্ভবর্তী এবং স্তন্য দানকারিণী মহিলার উপর থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী, অর্ধেক সালাতকে রহিত করে দিয়েছেন।

【57】

আল্লহর বাণীঃ (আরবী আছে) -এর তফসীর

সালামা ইব্‌ন আকওয়া (রাঃ) তিনি বলেন, যখন (আরবী আছে) আয়াত অবর্তীর্ন হল তখন আমাদের মধ্যে যারা ইচ্ছা করত সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলত এবং ফিদয়া দিত। যখন তার পরবর্তী আয়াত: (আরবী আছে) অবর্তীর্ন হল উক্ত আয়াতের হুকুমকে রহিত করে দিল। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আরবী আছে) (অর্থঃ আর যাদের সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য আছে তারা ইচ্ছা করলে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে একজন মিসকীনকে তার বিনিময়ে খাদ্য দান করতে পারবে)-এর ব্যাখ্যায় বর্ণিত আছেঃ যাদের সাওম (রোযা) করতে খুব বেশী কষ্ট হয় তারা প্রত্যেকটি সাওমের পরিবরর্তে ফিদয়া স্বরূপ একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। আর যে ব্যক্তি আরো অধিক দান করবে তা তার জন্য উত্তম হবে-এই আয়াতের হুকুম রহিত হয়নি আর যদি তোমরা সাওম (রোযা) পালন কর তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম। অত্র আয়াতে সাওম (রোযা) পালনে সামর্থ্যবানদের অব্যাহতি দেওয়া হয়নি বরং অক্ষম এবং এমন অসুস্হ ব্যক্তিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে যাদের রোগ মুক্তির আশা নেই।

【58】

ঋতুবতী মহিলার উপর থেকে সাওম (রোযা)-কে মুলতবী করা

মুআযা আদাবীয়া (রহঃ) এক মহিলা আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করল যে, ঋতুবতী মহিলা যখন ঋতু থেকে পবিত্র হবে তখন কি সে সালাত কাযা করবে? তিনি বললেন, তুমি কি হারূরী গোত্রের মহিলা? আমরা তো রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ঋতুবতী হতাম এবং যখন পবিত্র হতাম তখন আমাদেরকে সাওম (রোযা) কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হল কিন্তু সালাত কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হত না। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, যদি আমার উপর রমযানের সাওম (রোযা) অনাদায়ী থেকে যেত তবে আমি তা পূনরায় শা’বান মাস না আসা পর্যন্ত কাযা করতাম না।

【59】

রমযান মাসে ঋতুবতী মহিলা পবিত্র হলে বা মুসাফির (বাড়িতে) ফিরে এলে তারা কি দিনের অবশিষ্ট সময় সাওম (রোযা) পালন করবে?

মুহাম্মাদ ইব্‌ন সায়ফী (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিন জিজ্ঞাসা করলেন যে, আজ কি তোমরা কেউ কিছু খেয়েছ? তারা বললেন, আমাদের কেউ কেউ সাওম (রোযা) পালন করছে আর কেউ কেউ সাওম (রোযা) ভঙ্গ করেছে। তখন তিনি বললেন, তবে তোমরা অবশিষ্ট দিন পূর্ন করে ফেল (না খেয়ে খাক)। আর মক্কা ও মদীনার আশে পাশেও সংবাদ পাঠাও তারাও যেন তাদের দিনের অবশিষ্ট অংশ পূর্ন করে ফেলে।

【60】

রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করলে পরবর্তী দিনের নফল সাওম (রোযা) পালন হবে কি?

সালামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বলেছিলেন, তুমি আশুরার দিন ঘোষণা করে দাওঃ যে ব্যক্তি না খেয়ে থাকে আর যে ব্যক্তি এখনো কিছু খায়নি সে যেন সাওম (রোযা) পালন করে।১

【61】

সাওমের নিয়্যত এবং এ প্রসঙ্গে আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীসে তালহা ইব্‌ন ইয়াহ্‌য়া ইব্‌ন তালহা (রহঃ) থেকে বিভিন্নতার উল্লেখ

আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমার কাছে আসলেন এবং বললেনঃ তোমার কাছে কি খাওয়ার কিছু আছে? আমি বললামঃ না; তিনি বললেন, তাহলে আমি সাওমের নিয়্যত করে নিলাম, এরপর তিনি আরেক দিন আমার কাছে আসলেন এবং সে দিন আমাকে কিছু “হায়স” (খেজুর এবং ঘি ইত্যাদি দ্বারা প্রস্তুত এক প্রকার খাদ্য), উপহার দেওয়া হয়েছিল, আমি তা থেকে কিছু রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য রেখে দিয়েছিলাম। আর তিনি হায়স খুব পছন্দ করতেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হয়েছিল, আমি সেখান থেকে আপনার জন্য কিছু পৃথক করে রেখে দিয়েছি। তিনি বললেন, নিয়ে এসো, আমি তো আজকে সকালে সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম, অতঃপর তা থেকে খেলেন। তারপর বললেন, নফল সাওমের দৃষ্টান্ত হল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে স্বীয় ধন-ম্পদ থেকে দান করার নিয়্যতে কিছু মাল বের করল। এখন সে ব্যক্তি ইচ্ছা করলে তা দানও করতে পারে আবার ইচ্ছা করলে রেখেও দিতে পারে। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমার কাছে এসে বললেন, তোমার কাছে কি খাওয়ার কিছু আছে? আমি বললাম, আমার কাছে তো কিছুই নেই। তিনি বললেন, তা হলে আমি সাওমের নিয়ত করে নিলাম। আয়েশা (রাঃ) বলেন, অতঃপর তিনি আরেক বার আমার কাছে আসলেন, তখন আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হয়েছিল। আমি উহা তাঁকে দিলাম। তিনি তা খেয়ে ফেললেন। আমি তাতে আশ্চার্যানিত হয়ে গেলাম এবং বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আপনি (একবার) সাওম (রোযা) পালনরত অবস্হায় আমার কাছে এলেন তারপর হায়স খেয়ে ফেললেন। তিনি বললেন, হে আয়েশা! হ্যাঁ, যে ব্যাক্তি রমযানের সাওম (রোযা) বা তার কাযা ছাড়া নফল সাওম (রোযা) পালন করে তার তুলনা ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে স্বীয় মাল দান করার জন্য বের করল এবং সেখান থেকে যা ইচ্ছা দান করল আর বাকী যা ইচ্ছা ফিরিয়ে নিল। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে বললেনঃ তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম: না; তিনি বললেন, তাহলে আমি সাওমের নিয়্যত করে ফেললাম। আরেক দিন তিনি আমার কাছে আসলেন তখন আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হয়েছিল। তিনি বললেন, আমি তো সকালে সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম, অতঃপর খেলেন। উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমাদের কাছে আসলেন তখন আমরা বললাম যে, আমাদেরকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া ছিল আমরা তার থেকে আপনার জন্য কিছু রেখে দিয়েছিলাম। তিনি বললেন যে, আমি তো সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম অতঃপর তিনি সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেললেন। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার তার কাছে আসলেন তখন তিনি সাওম (রোযা) পালন করছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কাছে আহারের কিছু আছে কি যা আমাকে খাওয়াতে পার? আমরা বললাম, না; তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে আমি সাওমের নিয়্যত করে নিলাম। এরপর আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে আবার আসলেন তখন আয়েশা (রাঃ) বললেন যে, আমাদেরকে কিছু উপহার দেওয়া হয়েছে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি? তিনি বললেন, হায়স, তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তো সকালে সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম, অতঃপর খেলেন। মু’মিনীন আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেনঃ একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম, না; তিনি বললেন, তাহলে আমি সাওমের (রোযার) নিয়্যত করে ফেললাম। মুজাহিদ (রহঃ) একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কাছে এসে বললেন, তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম না; তিনি বললেন, তাহলে আমি সাওমের (রোযার) নিয়্যত করে ফেললাম। রাবী বলেন, তিনি আরেক দিন আসলেন তখন আয়িশা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হয়েছে। তিনি তা চেয়ে নিলেন এবং বললেন যে, আজকে সকালে তো আমি সাওমের (রোযার) নিয়্যত করে ফেলেছিলাম। অতঃপর তা খেলেন। মুজাহিদ এবং উম্মে কুলসূম (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে গেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন যে, তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? রাবী পূর্বের বর্ণনার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার তাঁর কাছে আসলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম না; তখন তিনি বললেন, তাহলে আমি সাওমের (রোযার) নিয়্যত করে ফেললাম। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তিনি আমার কাছে আরেকবার আসলেন, তখন আমি বললামঃ রাসুলুল্লাহ্‌! আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হয়েছে। তিনি বললেন, তাহলে আজ আমি সাওম (রোযা) পালন করব না অথচ আমি সাওমের (রোযার) নিয়্যত করে ফেলেছিলাম।১

【62】

এ প্রসঙ্গে হাফসা (রাঃ)-এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে বর্ণনা পার্থক্যের উল্লেখ

হাফসা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি (রমযানের সাওম (রোযা) ব্যতীত) রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন করা হবে না। হাফসা (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি রাত্রে ফজরের পূর্বেই সাওমের (রোযার) নিয়্যত (দূঢ় ইচ্ছা) না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ফজর উদয়ের পূর্বেই রাত্রে সাওমের (রোযার) নিয়ত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রাঃ) যে ব্যক্তি রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রাঃ) তিনি বলতেনঃ যে ব্যক্তি রাত্রে সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করবে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) হাফসা (রাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বেই রাত্রে সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রাঃ) তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রে সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রা) তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রাঃ) তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। হাফসা (রাঃ) তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। আয়েশা (রাঃ) যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। ইব্‌ন উমর (রাঃ) তিনি বলেন, যদি কোন ব্যক্তি রাত্রেই সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তবে সে যেন সাওম (রোযা) পালন না করে (তার সাওম (রোযা) পালন হবে না)। ইব্‌ন উমর (রাঃ) তিনি বলতেন, যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের (রোযার) নিয়্যত না করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না।

【63】

আল্লাহ্‌র নবী দাঊদ (আঃ)-এর সাওম (রোযা)

আব্দূল্লাহ ইব্‌ন আমর (রহঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় সাওম (রোযা) দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা)। তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন না। আর আল্লাহ তা’আলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় সালাত দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সালাত। তিনি অর্ধরাত্র নিদ্রা যেতেন এবং রাত্রের এক তৃতীয়াংশ সালাত আদায় করতেন আবার রাত্রের ষষ্ঠমাংশ নিদ্রা যেতেন।

【64】

নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাওম (রোযা), তাঁর উপর আমার মাতা পিতা উৎসর্গিত হোক

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাড়ীতে অবস্হানকালীন অবস্হায় এবং সফরকালীন অবস্থায় আইয়ামে বীযের সাওম (রোযা) পালন করা থেকে বিরত থাকতেন না। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাওম (রোযা) পালন শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, হয়ত আর সাওম (রোযা) ছাড়বেন না আবার যখন সাওম (রোযা) রাখা থেকে বিরত থাকতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা) পালন করার ইচ্ছাই রাখেন না। আর মদীনায় আগমনের পর থেকে রমযান মাস ব্যতীত কখনো পূর্ন এক মাস বিরামহীন সাওম (রোযা) পালন করতেন না। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাওম (রোযা) পালন শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা) পালন থেকে বিরত থাকার ইচ্ছাই রাখেন না। আবার যখন সাওম (রোযা) পালন থেকে বিরত থাকতেন তখনো আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা) পাননের ইচ্ছাই রাখেন না। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো এক রাত্রে পূর্ন কুরআন খতম করেছেন বা কখনো সকাল পর্যন্ত পূর্ণ রাত্র সালাত আদায় করেছেন। কিংবা রমযান মাস ব্যতীত পূর্ণ এক মাস কখনো সাওম (রোযা) পালন করেছেন বলে আমার জানা নেই। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন শকীক (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, তিনি যখন সাওম (রোযা) পালন শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত এবার সাওমই (রোযাই) পালন করতে থাকবেন। আবার যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করতেন তখনো আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত এবার সাওম (রোযা) ভঙ্গই করতে থাকবেন। আর তিনি মদীনায় আগমনের পর থেকে রমযান মাস ব্যতীত কখনো পূর্ণ এক মাস সাওম (রোযা) পালন করেন নি। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আবূ কায়স (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে মাস সমূহের মধ্যে শা’বান মাসের সাওম (রোযা) পালন করা সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল। বরং তিনি শা’বান মাসকে (সাওম (রোযা) পালনসহ) রমযানের সাথে মিলিরে নিতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সাওম (রোযা) পালন শুরু করতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা) ভঙ্গই করবেন না। আবার যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করতেন তখনো আমরা মনে মলে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা) পালনই করবেন না এবং আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শা’বান মাসের চেয়ে বেশী অন্য কোন মাসে সাওম (রোযা) পালন করতে দেখিনি। সালামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শা’বান এবং রমযান মাস ব্যতীত কখনো বিরামহীন দুই মাসের সাওম (রোযা) পালন করতেন না। উম্মে সালামা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত যে, তিনি শা’বান মাস ব্যতীত কখনো বছরের পূর্ণ মাস সাওম (রোযা) পালন করতেন না আর উহাকে রমযানের সাথে মিলিয়ে নিতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো শা’বান মাসের চেয়ে বেশী অন্য কোন মাসে সাওম (রোযা) পালন করতেন না। তিনি পূর্ণ শা’বান মাস অথবা তার অধিকাংশ দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েক দিন ব্যতীত পূর্ণ শা’বান মাসের সাওম (রোযা) পালন করতেন। জুবায়ের ইব্‌ন নূফায়র (রহঃ) আয়েশা (রাঃ) বলেছেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পূর্ণ শা’বান মাসই সাওম (রোযা) পালন করতেন। উসামা ইব্‌ন যায়দ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি আপনাকে তো শা’বান মাসে যে পরিমাণ সাওম (রোযা) পালন করতে দেখি বছরের অন্য কোন মাসে সে পরিমাণ সাওম (রোযা) পালন করতে দেখি না। তিনি বললেন শা’বান মাস রজব এবং রমযানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যে মাসের (গুরুত্ব সম্পর্কে) মানুষ খবর রাখে না অথচ এ মাসে আমলনামা সমূহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকটে উত্তলোন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহ তা’আলার নিকটে উত্তোলন করা হবে আমার সাওম (রোযা) পালনরত অবস্হায়। উসামা ইব্‌ন যায়দ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আপনি যখন সাওম (রোযা) পালন করা শুরু করেন তখন সহসা আর সাওম (রোযা) ভঙ্গ করেন না আবার যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করেন তখন আর সহসা সাওম (রোযা) পালন করা শুরু করেন না। কিন্তু দুইটি দিন; দুই দিন আপনার সাওম (রোযা) পালন করার দিন সমূহের মধ্যে এসে পড়ে (তবে আপনি সে দু’দিন সাওম (রোযা) পালন করেনই) তা না হলেও আপনি ঐ দুই দিনের সাওম (রোযা) পালন করে থাকেন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, সে কোন দু’দিন? আমি বললাম, সোমবার এবং বৃহস্পতিবার। তিনি বললেন, সেই দু’দিন মানুষের আমলনামা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকটে উত্তোলন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহর নিকটে এমন অবস্থায় উত্তোলন করা হয় যখন আমি সাওম (রোযা) পালনরত থাকি। উসামা ইব্‌ন যায়দ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন বিরামহীন সাওম (রোযা) পালন শুরু করতেন তখন মনে মনে ধারণা করা হত যে, হয়ত তিনি সাওম (রোযা) ভঙ্গ করবেন না। আবার যখন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা শুরু করতেন তখনো মনে মনে ধারণা করা হত যে, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা) পালনই করবেন না। জুবায়র ইব্‌ন নুফায়র (রহঃ) আয়েশা (রাঃ) বলেছেনঃ রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন। (সাওম (রোযা) পালন করাকে অধিক গুরুত্ব দিতেন)। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন। উম্মে সালামা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন (প্রথম সপ্তাহে) সোমবার, বৃহষ্পতিবার এবং পরবর্তী সপ্তাহে শুধূ সোমবার। হাফসা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসের সোমবার এবং বৃহস্পতিবার দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন এবং পরবর্তী সপ্তাহে শুধু সোমবার। হাফসা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নিদ্রা যেতেন তখন তাঁর পবিত্র ডান হাত গণ্ড মুবারকের নীচে রখেতেন এবং সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসঊদ (রাঃ) তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসের শুরুতে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন, আর শুক্রবার দিন খুব কমই সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন। আবূ হুবায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, আমাকে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাশতের দুই রাকআত সালাত আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিত্‌রের সালাত আদায় না করে নিদ্রা না যাওয়ার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করারও নির্দেশ দিতেন। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-কে যখন আশুরার সাওম (রোযা) সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তখন তিনি তাকে বলতে শুনেছেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসের ও আশুরার সাওম (রোযা) ব্যতীত অন্য কোন দিনের সাওম (রোযা)-কে অন্য দিনের সাওমের (রোযার) উপর গুরত্ব দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। হুমায়দ ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রহঃ) তিনি বলেনঃ আমি মুআবিয়া (রাঃ)-কে আশুরার দিন মিনারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি যে, হে মদীনাবাসীগন, তোমাদের আলিমগণ কোথায়? আমি রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এদিন সম্পর্কে বলতে শুনেছি যে, আমি তো সাওম (রোযা) পালন করছি। অতএব যারা সাওম (রোযা) পালন করতে ইচ্ছুক তারা যেন সাওম (রোযা) পালন করে। হুনায়দাহ্‌ ইব্‌ন খালিদ (রাঃ)-এর স্ত্রী তিনি বলেনঃ আমার কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের মধ্যে কোন একজন বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিন, জিলহজ্ব মাসের নবম তারিখ এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন মাসের প্রথম সোমবার ও দু’বৃহস্পতিবার সাওম (রোযা) পালন করতেন।

【65】

এ বিষয়ে আতা (রহঃ) বর্ণিত রেওয়ায়তে বর্ণনার ইখতিলাফ

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না।১ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না এবং ইফতারও গ্রহণযোগ্য হবে না। ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করে তার সাওম (রোযা) পালন হবে না। ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করে তার সাওম (রোযা) পালন গ্রহণযোগ্য হবে না। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করে তার সাওম (রোযা) ও ইফতার গ্রহণযোগ্য হবে না। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সংবাদ পৌঁছাল যে, আমি সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করি। (ইহা একটি দীর্ঘ হাদীস) রাবী বলেন, আতা (রহঃ) বলেছেন যে, আমি বলতে পারব না তিনি সর্বদা সাওম (রোযা) পালনের ব্যাপার কিভাবে উল্লেখ করেছিলেনঃ “যে ব্যক্তি সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করে তার সাওম (রোযা) গ্রহণ যোগ্য নয়”। (এভাবে বলেছেন না অন্যভাবে বলেছেন, সঠিক শব্দগুলি আমার মনে নাই।)

【66】

সর্বদা সাওম (রোযা) পালন থেকে নিষেধ করা এ বিষয়ে মুতাররিফ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ্‌ থেকে বর্ণনায় রাবীদের ইখতিলাফ

ইমরান (রাঃ) তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হলঃ ইয়া রাসুলল্লাহ্‌! অমুক ব্যক্তি সারা বছর দিনে খায় না (সাওম (রোযা) পালন করে)। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তার সাওম (রোযা) পালন এবং তার ইফতার গ্রহণযোগ্য হবে না। আব্দুল্লাহ (রাঃ) একদা রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে এক ব্যক্তি সস্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছিল যে সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করত। তখন রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার সাওম (রোযা) এবং তার ইফতার গ্রহণযোগ্য নয়। আব্দুল্লাহ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারীর ব্যাপারে বলেছেন যে, তার সাওম (রোযা) এবং ইফতার গ্রহণযোগ্য হবে না।

【67】

এ হাদীসের বর্ণনায় গায়লান ইব্‌ন জারীর (রহঃ) বর্ণনাভেদের উল্লেখ

উমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। আমরা এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সাহাবীরা বললেনঃ ইয়া নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন পর্যন্ত সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে না। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার সাওম (রোযা)ও গ্রহণযোগ্য নয় আর তার সাওম (রোযা) ভঙ্গও গ্রহণযোগ্য নয়। আবু কাতাদা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তার সাওম (রোযা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাগান্বিত হয়ে গেলেন, তখন উমর (রাঃ) বললেন যে, আমরা রব হিসাবে আল্লাহর উপর, ধর্ম হিসাবে ইসলামের উপর এবং রাসুল হিসাবে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর সন্তুষ্ট। আরেকবার সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বললেনঃ তার সাওম (রোযা) পালনও গ্রহণযোগ্য নয়। তার সাওম (রোযা) ভঙ্গও গ্রহণযোগ্য নয়।

【68】

সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করা

আয়েশা (রাঃ) হামযা ইব্‌ন আমর আসলামী (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তি। তাই আমি কি সফরকালীন সময়ে সাওম (রোযা) পালন করব? তিনি বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) পালন করবে আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলবে।

【69】

সারা বছরের দুই-তৃতীয়াংশকাল সাওম (রোযা) পালন করা এবং এ বিষয়ে রেওয়ায়ত বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের ইখতিলাফের উল্লেখ

মুহাম্মদ ইব্‌ন বাশ্‌শার (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এক সাহাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলা হল যে, এক ব্যক্তি সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করে। তিনি বললেনঃ আমার মনে চায় সে যেন কখনো কিছু আহার না করে।১ সাহাবীরা বললেন, তাহলে বছেরর দুই তৃতীয়াংশকালে সাওম (রোযা) পালন করুক? তিনি বললেন, তাও অধিক। সাহাবীরা বললেন, তাহলে সারা বছরের অর্ধেক? তিনি বললেন, তাও অধিক। অতঃপর তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের অন্তরের ওয়াস্‌ওয়াসা বিদূরীত করার আমল সম্পর্কে অবহিত করব না? তা হল প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা। আমর ইব্‌ন শুরাহবীল (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক ব্যক্তি আসল এবং জিজ্ঞাসা করল যে, ইয়া রাসুলল্লাহ্‌! আপনি এমন ব্যক্তি সস্পর্কে কি বলেন, যে সারা বছর সাওম (রোযা) পালন করে? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার মনে চায় সে যেন কখনো কিছু আহার করে। তখন আগত ব্যক্তি বলল, সারা বছরের দুই-তৃতীয়াংশকাল? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন যে, তাও অধিক। সে বলল, তাহলে সারা বছরের অর্ধেক কাল? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাও অধিক। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের অন্তরের ওয়াসওয়াসা দূর করার আমল সষ্পর্কে অবহিত করব না? সাহাবীগণ বললেন, কেন নয়? তিনি বললেন, তা হল প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা। আবূ কাতাদা (রাঃ) উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্‌! সারা বছর সাওম (রোযা) পালনকারী ব্যক্তির অবস্থা কেমন হবে? তিনি বলেন, তার সাওমও (রোযাও) গ্রহণযোগ্য হবে না, আর তার সাওম (রোযা) ভঙ্গও গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! দুইদিন সাওম (রোযা) পালনকারী এবং একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীর অবস্থা কেমন হবে? (উত্তরে) তিনি বললেন, এও কি কারো দ্বারা সম্ভব? তিনি (উমর (রাঃ)) জিজ্ঞাসা করলেন যে, একদিন সাওম (রোযা) পালনকারী এবং একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীর অবস্হা কেমন হবে? (উত্তরে) তিনি বললেন যে, এ হল দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা)। তিনি (উমর (রাঃ)) বললেন একদিন সাওম (রোযা) পালনকারী এবং দূইদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গকারীর অবস্হা কেমন হবে? (উত্তরে) তিনি বললেন, আমার ইচ্ছা হয় আমি যেন সেই শক্তি পাই। উমর (রাঃ) বলেন যে, অতঃপর রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রমযান মাসের সাওম (রোযা) এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা, ইহাই সারা বছর সাওম (রোযা) পালন করার সমতৃল্য।

【70】

একদিন সাওম (রোযা) পালন করা এবং একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা এবং এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন আমর (রাঃ)-এর বর্ণনায় রাবীদের শব্দ বর্ণনার পার্থক্যের উল্লেখ

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সর্বোত্তম সাওম (রোযা) হল দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা)। তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন। আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন আমর (রাঃ) আমাকে আমার পিতা এক সম্ভ্রান্ত মহিলা বিবাহ করালেন। অতঃপর আমার পিতা তার কাছে এসে তার স্বামী সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন। আমার স্ত্রী বলত যে, আমার স্বামী খুবই ভাল মানুষ (তবে) তিনি কখনো আমার সাথে বিছানা মাড়ান নি এবং আমি তার কাছে আসা অবধি তিনি কখনো আমার পাশে আসেন নি। আমার পিতা তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো। অতঃপর আমি আমার পিতার সাথে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গেলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কিভাবে সাওম (রোযা) পালন কর? আমি বললাম, আমি প্রত্যেক দিন সাওম (রোযা) পালন করি। তিনি বললেনঃ তুমি প্রত্যেক সপ্তাহে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করবে। আমি বললাম, (ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌!) আমি এর চেয়েও বেশী সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি দুইদিন সাওম (রোযা) পালন কর এবং একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! আমি এর চেয়েও বেশী সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি সর্বোত্তম সাওম (রোযা) অর্থাৎ দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন কর; একদিন সাওম (রোযা) পালন কর আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে এক মহিলা বিবাহ করালেন এবং তাকে দেখতে আসলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন যে, তুমি তোমার স্বামীকে কেমন পেলে? সে বলল খুবই ভাল লোক। তিনি রাত্রে নিদ্রাও যান না আর দিনেও সাওম (রোযা) ভঙ্গ করেন না। তখন আমার পিতা আমাকে তিরস্কার করে বললেন, আমি তোমাকে এক মুসলিম মহিলা বিবাহ করালাম আর তুমি তাকে এভাবে ঠেলে রাখলে। (আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি নিজের মধ্যে শক্তি অনুভব করার কারণে আমর পিতার তিরস্কারের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছিলাম না। এ সংবাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি বললেন, আমি তো সালাতও আদায় করি আবার নিদ্রাও যাই, সাওম (রোযা) পালনও করি আবার সাওম (রোযা) ভঙ্গও করি। তাই তুমিও সালাত আদায় কর, নিদ্রা যাও, সাওম (রোযা) পালন কর এবং সাওম (রোযা) ভঙ্গও কর। তিনি বললেন, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন কর। তখন আমি বললাম, আমি তো এরও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন কর। একদিন সাওম (রোযা) পালন কর আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। আমি বললাম আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি প্রতি মাসে এক খতম করে কুরআন তিলাওয়াত কর। অতঃপর তিনি তা পনের দিনে খতম করার অনুমতি দিলে আমি বলছিলাম, আমি এর চেয়েও অধিক এর চেয়ে অধিক সামর্থ্য রাখি। আব্দুল্লাহ (রাঃ) একবার রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কামরায় প্রবেশ করলেন এবং বললেন, আমাকে অবহিত করা হয়েছে যে, তুমি নাকি সারা রাত্র সালাত আদায় কর এবং সারাদিন সাওম (রোযা) পালন কর? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি [রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, তুমি কখনো এরুপ করবে না বরং কিছুক্ষণ নিদ্রা যাবে। আর কিছুক্ষন সালাত আদায় করবে এবং কখনো কখনো সাওম (রোযা) পালন করবে আবার কখনো সাওম (রোযা) ভঙ্গও করে ফেলবে। কেননা তোমার চক্ষুর জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার শরীরের জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার স্ত্রীর জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার মেহমানের জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার বন্ধুর জন্য তোমার হক রয়েছে। আশা করি, তুমি দীর্ঘজীবী হও! তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করবে। ইহাই সারা বছর সাওম (রোযা) পালন করার সমান হবে, যেহেতূ প্রত্যেক ভাল কাজের জন্য তার দশ দশ গুন সওয়াব রয়েছে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সামর্থ্য রাখি। আমি কঠোরতা অবলম্বন করতে চাইলে তিনি তার অনুমতি দিলেন। তিনি বললেন, তুমি প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। আমি কঠোরতা অবলম্বন করতে চাইলে তিনি তার অনুমাতি দিলেন। তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর নাবী দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ন্যায় সাওম (রোযা) পালন কর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) কিরুপ ছিল? রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বছরের অর্ধেক সময়। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে তার সমন্ধে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেনঃ আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন অবশ্যই সারা রাত্র সালাত আদায় করব এবং অবশ্যই সারা দিন সাওম (রোযা) পালন করব। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি কি এরুপ বলেছ? আমি তাঁকে বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি নিশ্চয়ই এরুপ বলেছি। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি এ রকম পারবে না। অতএব তুমি কখনো কখনো সাওম (রোযা) পালন কর-আর কখনো সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেল এবং কিছু সময় নিদ্রা যাও আর কিছু সময় সালাত আদায় কর। আর প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন কর। কেননা প্রত্যেক ভাল কাজের জন্য তার দশ দশ গুণ সওয়াব রয়েছে। আর এটাই বছর সাওম (রোযা) পালনের সমতুল্য। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি এক দিন সাওম (রোযা) পালন কর এবং দুই দিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি একদিন সাওম (রোযা) পালন কর, একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। আর এটাই দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) এবং এটাই হলো সর্বোত্তম সাওম (রোযা)। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এর চেয়ে উত্তম সাওম (রোযা) আর হয় না। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, যে তিন দিনের সাওম (রোযা) পালন করার কথা বলেছিলেন তা গ্রহণ করাই আমার নিকট আমার পরিবার-পরিজন ও আমার ধন-সম্পদ থেকে অধিকতর প্রিয় মনে হয়। আবূ সালামা ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বললাম, হে চাচা! রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে যা বলেছিলেন তা আমাকে বলুন। তিনি বললেন, হে আমার ভ্রাতূষ্পুত্র, আমি দৃঢ় সংকল্প করেছিলাম যে, আমি অত্যধিক পবিশ্রম করব, এমনকি মনে মনে বলেছিলাম যে, আমি অবশ্যই সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করব এবং প্রত্যেক দিবা রাত্রে একবার কুরআন খতম করব। এ খবর রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কানে ফেললে তিনি আমার কাছে আসলেন এবং ঘরে প্রবেশ করে বললেন যে, আমি শুনেছি- তুমি নাকি বলেছ যে, আমি অবশ্যই সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করব এবং সারাক্ষণ কুরআন তিলাওয়াত করব? আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ্‌! আমি অবশ্যই বলেছি। তিনি বললেন, তুমি এরূপ কর না বরং তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক সপ্তাহে দুই দিন সাওম (রোযা) পালন করবে সোমবার এবং বৃহষ্পতিবার। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ন্যায় সাওম (রোযা) পালন করবে। কেননা সেটাই আল্লাহ তা’আলার নিকট সর্বোত্তম সাওম (রোযা)। একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করে ফেলবে। আর দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ওয়াদা করতেন তা পূর্ণ করতেন আর যখন শক্রর মুখোমুখী হতেন পলায়ন করতেন না।

【71】

সাওমে হ্রাস-বৃদ্ধি করা এবং এ বিষয়ে ‘আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন ‘আমর (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য-এর উল্লেখ

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেন, তুমি (প্রত্যেক দশ দিনে) একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে তা হলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। তিনি বলেন, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ, (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তা হলে তুমি দুই দিন সাওম (রোযা) পালন কর তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। তিনি বললেন, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি তিন দিন সাওম (রোযা) পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। তিনি বললেন, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি আল্লাহ তা’আালার নিকট সর্বোত্তম সাওম (রোযা)-দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাওম (রোযা) পালন কর। তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সাওমের উল্লেখ করলে তিনি বললেন, তুমি প্রত্যেক দশ দিনে এক দিন সাওম (রোযা) পালন কর তাহলে অবশিষ্ট নয় দিনের সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক নয়দিনে এক দিন সাওম (রোযা) পালন কর তাহলে অবশিষ্ট আট দিনের সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পানলের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক আট দিনে এক দিন সাওম (রোযা) পালন কর তাহলে অবশিষ্ট সাত দিনের সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, আমি এরকম বলতেই থাকলাম, শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি একদিন সাওম (রোযা) পালন কর আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর। আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ তুমি একদিনের সাওম (রোযা) পালন কর তাহলে তুমি দশ দশ দিন সাওম (রোযা) পালন করার সওয়াব পাবে। আমি বললাম, আরো কিছু বাড়িয়ে দিন। তিনি বললেন, তাহলে তুমি দুই দিনের সাওম (রোযা) পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট নয়দিনের সাওম (রোযা) পালন করার সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। আমি বললাম, আরো কিছু বাড়িয়ে দিন। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি তিন দিনের সাওম (রোযা) পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট আট দিনের সাওম (রোযা) পালন করার সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হবে। ছাবিত (রহঃ) বলেন যে, আমি এ হাদীস মুতাররিফ (রহঃ)-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, আমার মনে হয় এ হাদীসের অর্থ হল, সাওম (রোযা) পালনকারী আমলের সংখ্যা বাড়ালেও সওয়াব কম হবে। বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইব্‌ন ইসমাঈল (রহঃ) এভাবে বর্ণনা করেছেন।

【72】

মাসে দশ দিন সাওম (রোযা) পালন করা এবং এ বিষয়ে ‘আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌ন আমর (রাঃ)-এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে শব্দ বর্ণনায় পার্থক্য

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, তুমি নাকি সারা রাত্র সালাত আদায় কর এবং সারা দিন সাওম (রোযা) পালন কর? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌! এর দ্বারা তো আমি ভালই আশা করে থাকি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারীর সাওম (রোযা) গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আমি তোমাকে সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করার নিয়ম বলে দিচ্ছি। তা হল প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা। আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ্‌! আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি পাঁচ দিন সাওম (রোযা) পালন কর। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি দশ দিন সাওম (রোযা) পালন কর। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন কর- তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমাকে রাসুলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তারপর দীর্ঘ হাদীস বর্ননা করলেন। আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হে আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রাঃ)! তুমি নাকি সর্বদা সাওম (রোযা) পালন কর এবং সারা রাত্র সালাত আদায় কর? তুমি যখন এরূপ করতে থাকবে তখন তোমার চক্ষু কোটেরাগত হয়ে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। সর্বদা সাওম (রোযা) পালনকারীর সাওম (রোযা) গ্রহণযোগ্য নয়। সারা জীবনের সাওম (রোযা) হল প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন কর- তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সওম ভঙ্গ করতেন। এবং (শক্রর) মুখোমুখী হলে পলায়ন করতেন না। আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি মাসে একবার কুরআন খতম কর। আমি বললাম, আমি তো এরচেয়েও অধিক পড়তে পারি। আমি তার কাছে আরো বাড়াবার আবেদন করতে থাকলে শেষ পর্যন্ত তিনি আমাকে পাঁচ দিনে কুরআন খতম করতে বললেন। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বললেন, তুমি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন কর। আমি বললাম, আমি তো এরচেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। আমি তার কাছে আরো বাড়াবার আবেদন করতে থাকলে শেষ পর্যন্ত তিনি আমাকে আল্লাহ তাআলার নিকট সর্বোত্তম সাওম (রোযা) দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন করতে বললেন। তিনি একদিন সওম পালন করতেন আর একদিন সওম ভঙ্গ করতেন। আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর ইব্ন আস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সংবাদ পৌছল যে, আমি সর্বদা সাওম (রোযা) পালন করে থাকি এবং সারা রাত্র সালাত আদায় করে থাকি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে সংবাদ পাঠালেন কিংবা তিনি তাঁর সাথে সাক্ষাত করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমাকে সংবাদ দেওয়া হয়েছে যে, তুমি সর্বদা সাওম (রোযা) পালন কর; সাওম (রোযা) ভঙ্গ কর না এবং সারা রাত্র সালাত আদায় করে থাক। তুমি এরূপ করবে না। কেননা, তোমার চক্ষুর জন্য তোমার উপর হক রয়েছে। তোমার শরীরের জন্য তোমার উপর হক রয়েছে। তোমার স্ত্রীর জন্য তোমার উপর হক রয়েছে। তুমি কখনো কখনো সাওম (রোযা) পালন করবে আবার কখনো সাওম (রোযা) ভঙ্গও করে ফেলবে। এবং রাত্রের কিছু সময় সালাত আদায় করবে আর কিছু সময় নিদ্রা যাবে। তুমি প্রত্যেক দশ দিনে একদিন সাওম (রোযা) পালন করবে, তাহলে তোমার জন্য অবশিষ্ট নয় দিনের সওয়াবও লেখা হবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ রাখি। তিনি বলেন, তাহলে তুমি দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) পালন কর। তিনি বলেনঃ দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা) কিরূপ ছিল ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)? তিনি বলেন, দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর তিনি একদিন সওম ভঙ্গ করতেন আর তিনি শত্রুর মুখোমুখী হলে পলায়ন করতেন না। তিনি বললেন যে, ইয়া নবীয়্যাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সেই শক্তি কোথায়?

【73】

মাসের পাচ দিন সাওম (রোযা) পালন করা

আব্দুল্লাহ ইবৃন আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে আমার সাওম (রোযা) পালন সম্পর্কে উল্লেখ করা হলে তিনি আমার কাছে আসলেন এবং আমি তার জন্য একটি খেজুরের বাকল ভর্তি মধ্যম আকারের চামড়ার বালিশ আগিয়ে দিলাম। তিনি মাটিতে বসে গেলেন এবং বালিশ আমার আর তার মাঝখানে ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার জন্য কি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন যথেষ্ট নয়? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! (আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন) তিনি বললেন, তাহলে পাঁচ দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! (আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন) তিনি বললেন, তাহলে সাত দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! (আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন) তিনি বললেন, নয় দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! (আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন) তিনি বললেন, তাহলে এগার দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! (আরো বাড়িয়ে দিন) তিনি বললেন, দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওমের উপরে কোন সাওম (রোযা) হতে পারে না। আর তা হল সারা জীবনের অর্ধেক একদিন সাওম (রোযা) পালন করা আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করা।

【74】

মাসে চার দিন সাওম (রোযা) পালন করা

আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ তুমি প্রত্যেক মাসে একদিন সাওম (রোযা) পালন কর তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তবে তুমি দুইদিন সওম পালন কর, অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ রাখি। তিনি বললেন, তবে তুমি তিন দিন সাওম (রোযা) পালন কর, অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ রাখি। তিনি বললেন, তবে তুমি চারদিন সাওম (রোযা) পালন কর, তুমি অবশিষ্ট দিনগুলোর সাওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সবোত্তম সাওম (রোযা) হল দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা)। তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সাওম (রোযা) ভঙ্গ করতেন।

【75】

মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা

আবূ যর (রাঃ) তিনি বলেন, আমার বন্ধু (রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) আমাকে তিনটি আমলের ওসীয়্যত করেছেন; ইনশাআল্লাহ্ আমি সেগুলো কখনো পরিত্যাগ করব না। তিনি আমাকে চাশতের সালাত এবং নিদ্রা যাওয়ার পূর্বে বিতরের সালাত আদায় করার আর প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার ওসীয়্যত করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি আমলের নির্দেশ দিয়েছেনঃ বিতরের সালাত আদায় করেই নিদ্ৰা যাওয়ার, শুক্রবার দিন গোসল করার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার। আবু হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দুই রাকআত চাশতের সালাত আদায় করার, বিত্রের সালাত আদায় করার পরই নিদ্রা যাওয়ার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আৰু হুরায়রা তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বিতরের সালাত আদায় করার পরই নিদ্রা যাওয়ার, প্রত্যক শুক্রবার দিন গোসল করার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

【76】

মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা বিষয়ে আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে আলী ইবন উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণনার বিভিন্ন রূপ

আবু হুরায়রা (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ধৈর্যের মাস হল রমযান মাস আর প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা বছর সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আবূ যর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করল সে যেন সারা বছর সাওম (রোযা) পালন করল। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহ তা'আলা কুরআনে সত্যই বলেছেনঃ যে ব্যক্তি একটি ভাল কাজ করবে তাকে তার দশ গুণ সওয়াব দেওয়া হবে। আবূ যর (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করল সে যেন সারা মাস সাওম (রোযা) পালন করল অথবা তিনি বলেছেনঃ তার জন্য সারা মাস সাওম (রোযা) পালন করার সওয়াব রয়েছে। উসমান ইব্‌ন আবুল আস (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ উত্তম সাওম (রোযা) হল প্রতি মাসে তিন দিন সওম পালন করা। উসমান ইব্‌ন আবুল আস (রাঃ) উসমান ইব্‌ন আবুল আস (রাঃ) অনুরূপ বলেছেন। ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন।

【77】

প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) কিভাবে পালন করবে? এবং এ বিষয়ে রেওয়ায়ত বর্ণনাকারীদের বর্ণনার পার্থক্য

ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন। মাসের প্রথম সপ্তাহে সোমবার, তার পরবর্তী সপ্তাহে বৃহস্পতিবার এবং তার পরবর্তী সপ্তাহে বৃহস্পতিবার। উন্মুল মুমিনীন (হাফসা (রাঃ)) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন। মাসের প্রথম সোমবার, তারপর বৃহস্পতিবার এবং তার পরবতী বৃহস্পতিবার। হাফসা (রাঃ) তিনি বলেন, চারটি আমল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো পরিত্যাগ করতেন না। আশুরার দিনের সাওম (রোযা), যিলহজ্জ মাসের নয় দিনের সাওম (রোযা), প্রত্যেক মাসে তিন দিনের সাওম (রোযা) এবং ফজরের দুরাকাআত সুন্নাত। আহমদ ইব্‌ন ইয়াহইয়া (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন স্ত্রী থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যিলহজ্জ মাসের নয় দিন, আশুরার দিন এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন-মাসের সোমবার এবং দুই বৃহস্পতিবার। মুহাম্মদ ইব্‌ন উসমান (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন স্ত্রী থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যিলহজ্জ মাসের নবম তারিখ এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন-সোমবার (দুই-সোমবার) এবং বৃহস্পতিবার। উন্মে সালামা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিতেন। মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার, তারপরে পরবর্তী সোমবার এবং তার পরবর্তী সোমবার। জারীর ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেনঃ প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আর আইয়ামে বীয -তের তারিখের সকাল থেকে চোদ্দ এবং পনের তারিখ পর্যন্ত।

【78】

মাসে তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা প্রসঙ্গে মূসা ইবন তালহা (রহঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য

আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একজন বেদুঈন একটি ভুনা খরগোশ নিয়ে আসল এবং তা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে রাখল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খাওয়া থেকে বিরত রইলেন কিন্তু উপস্থিত সাহাবীগণকে তা খেতে বললেন। বেদুঈন ব্যক্তিও বিরত রইল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি কেন খাওয়া থেকে বিরত রইলে। সে বলল, আমি মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করছি। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি সাওম (রোযা) পালনই কর তবে আলোময় দিনের সাওমই (রোযাই) পালন কর (আইয়ামে বীযের সওম পালন কর)। আবূ যর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে প্রত্যেক মাসের আইয়ামে বীযের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন- তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের। আবু যর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে প্রত্যেক মাসে আইয়ামে বীযের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থাৎ তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের। আবূ যর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ তুমি যখন মাসের কোন সাওম (রোযা) পালন করবে তখন তের তারিখ, চৌদ্ধ এবং পনের তারিখের সাওম (রোযা) পালন করবে। আবূ যর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বলেছিলেনঃ তোমার উপর তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের সাওম (রোযা) পালন করা উচিত। আবু যর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইবনুল হাওতাকিয়্যা (রহঃ) তিনি বলেন, আমার পিতা বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক বেদুঈন ব্যক্তি আসল, তার সাথে একটি ভুনা খরগোশ এবং কিছু রুটি ছিল। সে তা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে রাখল এবং বলল যে, আমি তাকে রক্তস্রাব অবস্থায় পেয়েছি। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় সাহাবীগণকে বললেনঃ এটা ক্ষতিকর নয়, অতএব তোমরা খাও এবং বেদুঈন ব্যক্তিটিকে বললেন, তুমিও খাও। সে বলল, আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটা কিসের সাওম (রোযা)? সে বলল, মাসের তিন দিনের সাওম (রোযা)। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি তুমি সাওম (রোযা) পালন করই তবে উজ্জ্বল আলোময় দিনগুলোয় সাওম (রোযা) পালন কর অর্থাৎ তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের। মূসা ইব্ন তালহা (রাঃ) এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একটি খরগোশ নিয়ে আসল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। তখন বাহক বলল যে, আমি এর সাথে রক্ত দেখেছি তারপর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাত গুটিয়ে নিলেন এবং সাহাবীদের নির্দেশ দিলেন যে, তোমর খাও, উপস্থিত সাহাবীদের মধ্যে একজন পাশে বসা ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমার কি হল? সে বলল যে, আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি আইয়ামে বীযের তিন দিনের সাওম (রোযা) কখনো পরিত্যাগ করবে না অর্থাৎ তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের সাওম (রোযা)। মূসা ইব্‌ন তালহা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক ব্যক্তি একটি ভুনা খরগোশ রেখে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমি এর সাথে রক্ত দেখেছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরত রইলেন এবং খেলেন না, কিন্তু তাঁর সামনে যাঁরা ছিলেন তাঁদেরকে বললেন, তোমরা খাও। কেননা আমার আগ্রহ থাকলে আমিও খেতাম। আর এক ব্যক্তি পাশে বসে ছিল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, এসো এদের সাথে খাও। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি সাওম (রোযা) পালন করছি। তখন তিনি বললেন, তুমি আইয়ামে বীযের সাওম (রোযা) কেন পালন করলে না? সে বলল, আইয়ামে বীয কি? রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখ। আব্দুল মালিক (রহঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আইয়ামে বীযের এই তিন দিন সওম পালন করার নির্দেশ দিতেন এবং বলতেন যে, এই তিন দিনের সাওম (রোযা) সারা মাসের সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আব্দুল মালিক (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদেরকে আইয়ামে বীযের তিন দিনের সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিতেন এবং বলতেন যে, এই তিন দিনের সাওম (রোযা) সারা মাস সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আব্দুল মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে আলোকোজ্জ্বল রাত বিশিষ্ট আইয়ামের বীযের তিন দিনের সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন তের, চৌদ্দ এবং পনের তারিখের।

【79】

প্রতি মাসে দুই দিন সাওম (রোযা) পালন করা

আৰু আকরাব (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একবার (নফল) সাওম (রোযা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তুমি প্রতি মাসে এক দিন সওম পালন কর। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আরো বাড়িয়ে দিন। আরো বাড়িয়ে দিন। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি বলছ, আরো বাড়িয়ে দিন, আরো বাড়িয়ে দিন ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহলে প্রতি মাসে দু'দিন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আর একটু বাড়িয়ে দিন, আর একটু বাড়িয়ে দিন, আমি এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, “আর একটু বাড়িয়ে দিন, আর একটু বাড়িয়ে দিন, আমি এর চেয়েও অধিক সওম পালন করার সামর্থ্য রাখি।” একথা বলে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ হয়ে গেলেন। আমি ধারণা করলাম যে, তিনি নিশ্চয়ই আমার আবেদনে সাড়া দিবেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি প্রত্যেক মাসে তিনদিন সওম পালন কর। আবূ আকরাব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সাওম (রোযা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, তুমি প্রত্যেক মাসে একদিন সওম পালন কর। তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আরো সময় বাড়ানোর আবেদন করে বললেন, আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালনের সামর্থ্য রাখি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সময় আরো বাড়িয়ে দিলেন। তিনি বললেন, তুমি প্রতি মাসে দুদিন সাওম (রোযা) পালন কর। তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সময় আরো বাড়িয়ে দিলেন। তিনি বললেন, তুমি প্রতি মাসে দুদিন সাওম (রোযা) পালন কর। তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। “আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, "আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি।” “আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম (রোযা) পালন করার সামর্থ্য রাখি।” রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য বাড়াতেই রাজী ছিলেন না। যখন তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে বারবার মিনতি করছিলেন তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সওম পালন কর।