41. শিকার ও যবেহকৃত জন্তু

【1】

শিকার করার সময় বিস্‌মিল্লাহ বলার নির্দেশ

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বললেনঃ যখন তুমি শিকারের জন্য তোমার কুকুরকে ছাড়বে, তখন বিস্‌মিল্লাহ পড়ে ছাড়বে। তারপর যদি তুমি শিকারকে জীবিত পাও, তবে তাকে বিস্‌মিল্লাহ পড়ে যবেহ করবে, আর যদি ঐ শিকারকে কুকুর মেরে ফেলে এবং তা থেকে না খায়, তবে তুমি তা খাবে। কেননা সে তা তোমার জন্যই ধরেছে। আর যদি কুকুর তা থেকে খায়, তা হলে তুমি তা খাবে না, কেননা তাকে সে নিজের জন্য ধরেছে। আর যদি তোমার কুকুর অন্য কুকুরের সাথে মেশে এবং সকলে শিকার মেরে আনে, আর তারা তা না খায়, তবে তুমি তা থেকে কিছু খাবে না। কেননা তুমি জানো না, ওদের মধ্যের কোন কুকুরটি শিকার মেরেছে।

【2】

যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা না খাওয়ার নির্দেশ

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট মি‘রায বা ফলাবিহীন তীর১ দ্বারা শিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ যদি ঐ শিকারের উপর তার ধারাল অংশ লাগে, তবে তা খাবে। আর যদি কাঠটি আড়াআড়িভাবে আঘাত লাগে, তবে তা ওয়াকীয।২ এরপর আমি তাঁকে কুকুরের শিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ যখন তুমি তোমার কুকুর ছেড়ে দেবে, আর তা শিকার ধরে এনে নিজে না খাবে, তবে তুমি তা খেতে পার। কেননা তার ধরে আনাই তার যবেহ করা। আর যদি তোমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুর থাকে এবং তোমার সন্দেহ হয় যে, হয়তো অন্য কুকুরও শিকার করতে পারে, তখন তা খাবে না। কেননা তুমি তো তোমার কুকুর ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ পড়েছ, অন্য কুকুর ছাড়ার সময় তা পড়নি।

【3】

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের শিকার

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করেন, আমি শিকারী কুকুর ছাড়ি এবং সেই কুকুর প্রাণী ধরে আনে, তা খাওয়া যাবে কি? তিনি বললেনঃ যখন তুমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ছেড়ে দেবে, আর ছাড়ার সময় বিস্‌মিল্লাহ পড়ে ছাড়বে এবং সে শিকার ধরে আনবে, তুমি তা খেতে পারবে। আমি বললামঃ যদি সে তাকে মেরে ফেলে? তিনি বললেনঃ মেরে ফেললেও। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলামঃ আমি অনেক সময় লৌহবিহীন তীর বা লাঠি নিক্ষেপ করি? রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি তীরের ধারাল অংশ লাগে, তবে তা খেতে পারবে। আর যদি আড়াআড়িভাবে লেগে থাকে, তবে তা খাবে না।

【4】

যে কুকুর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় তার শিকার

আবু সা‘লাবা খুশানী (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এমন স্থানে থাকি, যেখানে অনেক শিকার পাওয়া যায়। আমি আমার তীর দ্বারা শিকার করি এবং শিকারী এবং অশিকারী উভয় কুকুর দ্বারা শিকার করি। তিনি বলেলেনঃ যে তীর নিক্ষেপের সময় তুমি আল্লাহর নাম নিবে, ঐ তীরের শিকার তুমি খাবে। আর প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম ছাড়বে, তার শিকারও খাবে। আর অশিকারী কোন কুকুর শিকার ধরে আনলে যদি তা যবেহ করতে পার, তবে তা খাবে।

【5】

কুকুর যদি শিকার মেরে ফেলে

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার শিকারী কুকুর ছাড়ি, আর সে আমার জন্য শিকার ধরে আনে, আর আমি তা খাই। তিনি বললেনঃ যখন তুমি তোমার শিকারী কুকুর ছাড়, আর তা তোমার জন্য শিকার ধরে আনে, তখন তুমি তা খাবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম : যদি সে কুকুর শিকার মেরে ফেলে, তবুও? তিনি বললেনঃ যদিও সে মেরে ফেলে; কিন্তু শর্ত হল তোমার কুকুরের সাথে যেন অন্য কুকুর না থাকে। আমি আরয করলামঃ আমি লোহাবিহীন তীর নিক্ষেপ করি, আর তা শিকারের গায়ে গেঁথে যায়? তিনি বললেনঃ যদি তা গায়ে গেঁথে যায় তবে খাবে, আর যদি আড়াআড়ি লাগে, তবে খাবে না।

【6】

যদি স্বীয় কুকুরের সাথে অন্য কুকুর থাকে যাকে ছাড়ার সময় বিস্মিল্লাহ্‌ পড়া হয়নি

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে, তিনি বললেনঃ তোমার কুকুর ছেড়ে দেওয়ার পর যদি ঐ কুকুরের সাথে অন্য এমন কুকুর থাকে যাকে ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ্‌ পড়া হয় নি, তবে ঐ শিকার খাবে না। কেননা তুমি জানো না তাদের কোনটি শিকার মেরেছে।

【7】

যদি স্বীয় কুকুরের সাথে অন্যের কুকুর পায়

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কুকুরের শিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে, তিনি বললেনঃ যখন তুমি বিসমিল্লাহ্‌ পড়ে কুকুর ছাড়বে তখন ঐ শিকার খাবে, আর যদি তোমার কুকুরের সাথে অন্য কোন কুকুর দেখতে পাও তবে ঐ শিকার খাবে না। কেননা তোমারা নিজের কুকুর ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ্‌ পড়েছ , অন্যের কুকুরের উপর পড়নি। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) নাহরায়নে আমাদের একজন পড়শী ছিলেন যিনি অন্য গোত্র থেকে আমাদের গোত্রে এসে নিবাস গ্রহণ করেছিলেন এবং ইবাদতের জন্য নির্জনতা অবলম্বন করেছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করেনঃ আমি আমার কুকুরকে শিকারের জন্য ছেড়ে দেই; পরে ঐ কুকুরের সাথে অন্য কুকুর দেখতে পাই, আমি বুঝতে পারি না কোন কুকুর শিকার করেছে? তিনি বললেনঃ তা খাবে না। কেননা তুমি তো তোমার কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ্ পড়েছ, অন্যের কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ্‌ পড়নি। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বললামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি আমার কুকুর ছেড়ে দেই। তিনি বললেনঃ যদি তুমি বিসমিল্লাহ্‌ বলে তোমার কুকুর ছাড়, তবে ঐ শিকার খাবে। যদি কুকুর তাঁর কিছু অংশ খায়, তবে তুমি তা খাবে না। কেননা সে তা নিজের জন্য ধরেছে। আর যদি কুকুর ছাড়ার পড় তাঁর সাথে অন্য কুকুর পাও, তবে তা খাবে না। কেননা তুমি তোমার কুকুর ছাড়ার সময় তার উপর তো বিসমিল্লাহ্‌ পড়েছ, অন্য কুকুরের উপর পড়নি। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আমি আমার কুকুর ছাড়ার পর, আমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুর দেখতে পাই, ফলে আমি বুঝতে পারি না, কোন কুকুর শিকার করেছে? তিনি বললেনঃ তুমি ঐ শিকার খাবে না। কেননা তুমি তো তোমার কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ্‌ পড়েছ; অন্য কুকুরের উপর পড়নি।

【8】

যদি কুকুর শিকারের অংশ খায়

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে লৌহবিহীন তীর দ্বারা শিকার করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেনঃ যদি ঐ তীরের ধারাল অংশ লাগে, তবে তুমি তা খাবে। আর যদি আড়াআড়িভাবে লাগে, তবে তা হারাম। তিনি বলেন, এরপর আমি শিকারি কুকুর সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ যদি তুমি বিসমিল্লাহ্‌ বলে কুকুর ছেড়ে থাক, তবে তা খাবে। আমি বললামঃ যদি সে শিকার মেরে ফেলে? তিনি বললেনঃ যদিও মেরে ফেলে। কিন্ত যদি তা হতে কিছু অংশ খায়, তবে তুমি খাবে না। আর যদি তোমার কুকুরের সাথে অন্য কোন কুকুর দেখ আর দেখ যে, সে-ই তাকে মেরেছে, তবে তুমি ঐ শিকার খাবে না। কেননা তুমি তোমার কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ্‌ পড়েছ, অন্য কুকুরের উপর পড়নি। আদী ইব্‌ন হাতিম তায়ী (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ যদি তুমি বিসমিল্লাহ্‌ বলে তোমার কুকুর ছেড়ে থাক এবং সে শিকার মেরে আনে, অথচ সে তা থেকে কিছুই খায় নি, তবে তুমি তা খাবে। আর যদি তা থেকে খায়, তবে তুমি তা খাবে না। কেননা সে তা নিজের জন্য ধরেছে, তোমার জন্য ধরেনি।

【9】

কুকুর হত্যার নির্দেশ

মায়মূনা (রাঃ) জিবরাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেনঃ আমরা ঐ ঘরে প্রবেশ করি না, যে ঘরে কুকুর এবং ছবি থাকে। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ্ সকালবেলা কুকুর মারার নির্দেশ দেন। এমনকি তিনি ছোট ছোট কুকুরও মারার নির্দেশ দেন। ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর মারার নির্দেশ দেন, যেগুলো বাদ দিয়েছেন, তা ব্যতীত। আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উচ্চস্বরে কুকুর হত্যার নির্দেশ দিতে শুনেছি। এরপর কুকুর হত্যা শুরু হয়। তবে শিকারী কুকুর এবং মেষপালের পাহারার ব্যবহৃত কুকুর ব্যতীত। ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর হত্যার নির্দেশ দেন; তবে শিকারী কুকুর এবং মেষপালের পাহারায় ব্যবহৃত কুকুর ব্যতীত।

【10】

যে সব কুকুরকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন মুগাফ্ফাল (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কুকুর অন্যান্য প্রজাতির মতো একটি প্রজাতি না হতো, তাহলে আমি সেগুলো হত্যার নির্দেশ দিতাম। তোমরা তাদের মধ্যকার কালো কুকুরকে হত্যা করবে। যে সকল লোক তাদের কৃষিকর্ম ও শিকার করা কিংবা পশু পাহারা ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে কুকুর পালন করে, তাদের আমল হতে প্রতিদিন এক কীরাত১ সওয়াব কমে যায়।

【11】

যে ঘরে কুকুর থেকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না

আলী ইব্‌ন আবু তালিব (রাঃ) সুত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেনঃ যে ঘরে কুকুর, ছবি এবং জুনুব২ ব্যক্তি থাকে, সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। আবু তাল্হা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে, সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী মায়মূনা (রাঃ) বলেন, একদা ভোরে আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চিন্তিত দেখে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আজ ভোর হতে আপনাকে চিন্তিত দেখছি? তিনি বললেনঃ জিবরাঈল (আঃ) আজ রাতে আমার সাথে সাক্ষাতের ওয়াদা করেন কিন্তু তিনি আসেন নি। আল্লাহ্‌র শপথ! তিনি কখনও আমার সাথে ওয়াদা খেলাফ করেন নি। তিনি সারা দিন এভাবেই অতিবাহিত করলেন। এরপর তাঁর স্মরণ হল যে, একটা কুকুর ছানা আমাদের খাটের নিচে রয়েছে। তিনি আদেশ করলে সেটি বের করা হয়। পরে তিনি নিজ হাতে পানি নিয়ে ঐ স্থানে ছিটিয়ে দেন। সন্ধ্যায় জিবরাঈল (আঃ) আসলে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেনঃ আপনি তো গতরাতে আমার সাথে দেখা করার ওয়াদা করেছিলেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, কিন্তু আমরা ঐ ঘরে প্রবেশ করি না, যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে। সেই দিনের সকাল হতে রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর হত্যার নির্দেশ দেন।

【12】

গবাদি পশুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কুকুর পালনের অনুমতি

ইব্‌ন উমর (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুকুর পালন করে, প্রতিদিন তার আমল হতে দুই কীরাত সওয়াব কম করা হয়, তবে শিকারী কুকুর অথবা গবাদি পশুর রক্ষনাবেক্ষনের কুকুর ব্যতীত। সুফিয়ান ইব্‌ন আবু যুহায়র শানাঈ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কৃষিকাজের হিফাযত এবং গৃহপালিত পশুর হিফাযতের কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করে, তাঁর আমল হতে প্রতিদিন এক কীরাত সওয়াব কমে যাবে। রাবী সায়িব ইব্‌ন ইয়াযীদ (রাঃ) সুফিয়ান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনি কি এটা রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এই মসজিদের রবের কসম।

【13】

পরিচ্ছেদঃ শিকারী কুকুর পালনের অনুমতি

ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর অথবা পশু রক্ষার কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করে, তার সওয়াব হতে প্রতিদিন দুই কীরাত কমে যায়। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর অথবা পশু রক্ষণাবেক্ষণের কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালে, তার সওয়াব থেকে প্রতিদিন দুই কীরাত কমে যায়।

【14】

পরিচ্ছেদঃ কৃষির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কুকুর পালনের অনুমতি

আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌ন মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর, গবাদি পশুর রক্ষণাবেক্ষণের কুকুর এবং কৃষিকাজের হিফাযতের কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পালন করবে, প্রতিদিন তার সওয়াব থেকে এক কীরাত কমে যাবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর, পালিত জন্তুর রক্ষক কুকুর অথবা জমি পাহারার কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পালন করবে, তার আমল হতে প্রতিদিন এক কীরাত সওয়াব কমে যাবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শিকারী কুকুর পালিত পশুর রক্ষক কুকুর কিংবা কৃষিভূমির পাহারার কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পালন করবে, তার সওয়াব হতে প্রতিদিন দুই কীরাত সওয়াব কমে যাবে। আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পালিত পশুর রক্ষক কুকুর অথবা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালে, তার আমল থেকে প্রতিদিন এক কীরাত সওয়াব কমে যাবে। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেনঃ অথবা কৃষিকাজের কুকুর ব্যতীত।

【15】

কুকুরের মূল্য ভোগে নিষেধাজ্ঞা

আবূ মাসঊদ উকবা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারিণীর উপার্জন এবং গনকদের কাজের বিনিময় ভোগ করতে নিষেধ করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুকুরের মূল্য, গণকদের পারিশ্রমিক এবং গণিকার উপার্জন হালাল নয়। রাফে‘ ইব্‌ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পতিতাদের উপার্জন, কুকুরের মূল্য এবং সিঙ্গা লাগানোর পারিশ্রমিক অতি নিকৃষ্ট।

【16】

শিকারী কুকুরের মূল্য নেয়ার অনুমতি

জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিড়াল ও কুকুরের মূল্য গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন, তবে শিকারী কুকুরের মূল্য ব্যতীত। আমর ইব্‌ন শু‘আয়ব (রাঃ) তাঁর পিতা তাঁর দাদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমার নিকট শিকারী কুকুর আছে, আপনি আমাকে তাদের ব্যাপারে বলে দিন। তিনি বললেনঃ তোমার কুকুর যা তোমার জন্য ধরে আনে, তা তুমি খাবে। সে ব্যক্তি বললোঃ আমার কুকুর ঐ শিকার মেরে ফেললেও? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, মেরে ফেললেও। এরপর ঐ ব্যক্তি বললোঃ আপনি আমাকে তীর-ধনুকের ব্যপারে কিছু বলুন? তিনি বললেনঃ তোমার তীর যা শিকার করবে, তুমি তা খাবে। ঐ ব্যক্তি বললোঃ যদি তীরের আঘাতের পর ঐ শিকার পালিয়ে যায়? তিনি বললেনঃ যদিও সে পালিয়ে যায়। কিন্তু তার মধ্যে যেন অন্য তীরের চিহ্ন না থাকে, আর তা পঁচে না যায়।

【17】

গৃহপালিত পশু পালিয়ে গেলে

রাফে‘ ইব্‌ন খাদীজ (রাঃ) তিনি বলেনঃ এক সময় আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুল-হুলায়ফায় ছিলাম, যা তিহামায় অবস্থিত। লোক (গনীমতের) উট এবং বকরী প্রাপ্ত হলো। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন সকলের পেছনে, সামনের লোকেরা গনীমতের মাল বণ্টনের পূর্বেই পশু যবেহ করলেন এবং উনুনে হাঁড়ি চড়ালেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে দ্রুত পৌছে গেলেন। তিনি তা দেখে তাদের হাঁড়ির গোশত ফেলে দিতে বললেন। সুতরাং হাঁড়ি উপুড় করে তা ফেলে দেওয়া হলো। তারপর তিনি পশুগুলো বণ্টন করলেন। তিনি এক উটের সামান দশটি বকরী ধরলেন। এমন সময় একটা উট পালিয়ে গেল আর লোকের নিকট ঘোড়াও ছিল অল্প। লোকেরা তাকে ধরবার জন্য দৌড়ালো কিন্তু তাকে ধরতে সক্ষম হলো না, বরং সে সকলকেই ব্যর্থ করে দিল। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি তার দিকে তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাকে থামিয়ে দিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সকল জন্তু অনেক সময় বন্য জন্তুর ন্যায় পালাতে চায়। অতএব এর কোনওটি তোমাদের ব্যর্থ করে দিলে তার সাথে এরূপই করবে।

【18】

তীর নিক্ষিপ্ত শিকার পানিতে পড়লে

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ যখন তুমি তীর নিক্ষেপ কর তখন আল্লাহ্‌র নাম উচ্চারণ করবে। তারপর ঐ জন্তুকে নিহত পেলে তাকে খাবে। কিন্তু যখন ঐ জন্তু পানিতে পড়ে যায় এবং তুমি বুঝতে পার না যে, তীরের আঘাতে মরেছে, না পানিতে পড়ে মরেছে, তা খাবে না। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেনঃ যখন তুমি তীর ছুঁড়বে অথবা বিস্‌মিল্লাহ্‌ বলে কুকুর ছাড়বে, আর তাতে আল্লাহ্‌র নাম নেবে। তারপর তোমার তীর কোন শিকার বধ করবে, তুমি তা খাবে। আদী (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! যদি ঐ শিকার এক রাতের পর আমার হাতে আসে, তবে? তিনি বললেনঃ যদি তুমি তোমার তীর পাও, আর ঐ শিকারের মধ্যে ঐ তীর ব্যতীত অন্য কিছুর চিহ্ন না পাও, তবে তা খাবে। আর যদি শিকার পানিতে পড়ে যায়, তবে তা খাবে না।

【19】

তীরের আঘাত খেয়ে শিকার উধাও হলে

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমরা শিকারী লোক। আর আমাদের মধ্যে কেউ শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে কখনও তা এক অথবা দুই রাত্রি পর্যন্ত উধাও হয়ে যায়, আর শিকারী ব্যক্তি শিকারের পদচিহ্ন অনুসরণ করে, তাকে মৃত পায় এবং তার শরীরে তীর লাগা অবস্থায় পায়। তিনি বললেনঃ যখন তুমি তার মধ্যে তোমার তীর পাও এবং অন্য কোন হিংস্র জন্তুর চিহ্ন তাতে না দেখ এবং তোমার দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে, তোমার তীরই তাকে মেরেছে, তবে তুমি তা খেতে পার। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তুমি শিকারের মধ্যে তোমার তীর বিদ্ধ দেখবে, এবং তোমার তীর ব্যতীত অন্য কিছুর চিহ্ন তাতে না দেখ, আর তোমার বিশ্বাস হবে যে, ঐ তীরই তাকে হত্যা করেছে, তবে তা খাবে। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমি শিকারের প্রতি তীর মারি, আর এক রাত্রি পর তার পদচিহ্ন অনুসরণ করি। তিনি বললেনঃ যখন তুমি তোমার তীর তার মধ্যে পাবে, আর তা থেকে কোন হিংস্র জন্তু কিছু না খাবে, তবে তুমি তা খেতে পারো।

【20】

যদি শিকার জন্তু হতে দুর্গন্ধ আসে

আবূ সা‘লাবা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তিন দিন পর তার শিকার পায়, তবে সে তা খেতে পারে, কিন্তু যদি তা দুর্গন্ধময় হয়ে যায়, তবে নয়। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমি কুকুর ছাড়ি এবং ঐ কুকুর শিকার ধরে; কিন্তু আমার নিকট যবেহ করার কিছু থাকে না, তখন আমি পাথর অথবা লাঠি দ্বারা তাকে যবেহ করি। তিনি বললেনঃ যে বস্তু দ্বারাই হোক রক্ত ঝরিয়ে দাও এবং বিস্‌মিল্লাহ পড়।

【21】

মি‘রায এর শিকার

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ছাড়ি, আর সে শিকার ধরে আনে এবং আমি তা খাই। তিনি বললেনঃ যখন তুমি বিস্‌মিল্লাহ্‌ পড়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ছাড় এবং তা শিকার ধরে আনে, তুমি তা খেতে পার। আমি বললামঃ যদি সে শিকার মেরে ফেলে? তিনি বললেনঃ যদিও সে শিকার মেরে ফেলে, যতক্ষণ তার সাথে অন্য কুকুর মিলিত না হয়। আমি বললাম, আমি মি‘রায নিক্ষেপ করি এবং তা দ্বারা শিকার করি এবং খাই? রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যখন তুমি বিস্‌মিল্লাহ বলে মি‘রায ছুঁড়বে এবং ঐ তীর ধারাল অংশ দ্বারা আঘাত করবে, তুমি তা খাবে, আর যদি আড়াআড়ি দিকে আঘাত করে, তবে তা খাবে না।

【22】

যদি তীরের পাশ লেগে মরে

আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মি‘রায দ্বারা শিকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ যদি ঐ তীরের ধারাল অংশ লাগে, তবে তুমি তা খাবে, আর যদি তার পার্শ্ব দ্বারা আঘাত করে, তবে তুমি তা খাবে না। কেননা তখন তাকে মাওকূযা২ বলা হয়। তা খাবে না।

【23】

যে শিকারে ফলকবিহীন তীরের ধারাল অংশের আঘাত লাগে

‘আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মি‘রায দ্বারা শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তুমি তা তোমার তীরের ধারাল অংশ দ্বারা শিকার কর, তবে তা খাবে। আর যদি তুমি তাকে তীরের পার্শ্বদেশের আঘাতে শিকার করে থাক, তবে তা খাবে না। আদী ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মি‘রাযের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেনঃ যদি তার ধারাল অংশ লাগে, তবে তা খাবে, আর যদি তীরের পাশ লেগে থাকে, তবে তা মাওকূযা।

【24】

শিকারের পেছনে ধাওয়া করা

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুরুভূমিতে বাস করে, সে কঠিন হয়ে যায় আর যে ব্যক্তি শিকারের পেছনে লেগে থাকে, সে অন্য সব কিছু ভুলে যায়, আর যে ব্যক্তি বাদশাহর সংশ্রবে থাকে, সে (দীনীভাবে) ফিতনায় পতিত হয়।

【25】

খরগোশ প্রসঙ্গ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, গ্রাম্য এক বেদুঈন একটি খরগোশ ভূনা করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিয়ে আসে এবং তা তাঁর সামনে রাখে। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাত গুটিয়ে নিলেন, তা খেলেন না। কিন্তু অন্য লোকদের খেতে বললেন। ঐ বেদুঈনও তা খাওয়া হতে বিরত থাকল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি খেলে না কেন? সে বললোঃ আমি প্রতি মাসে তিনটি রোযা রাখি। তিনি বললেনঃ যদি তুমি প্রত্যেক মাসে রোযা রাখ, তবে মাঝের তিন দিন (১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রাখবে। আবুল হাওতাকিয়া (রহঃ) তিনি বলেনঃ উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ কাহা১ দিবসে আমাদের সাথে কে ছিল? আবূ যর (রাঃ) বললেনঃ আমি ছিলাম। সেখানে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একটি খরগোশ আনা হল। যে ব্যক্তি সেটি এনেছিল, সে বললোঃ আমি এর স্রাব হতে দেখেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খেলেন না। তিনি অন্যান্য লোকদের খেতে বললেন। এ সময় এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমি রোযা রেখেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি রোযা রেখেছ? সে বললোঃ প্রতি মাসে তিনটি রোযা। তিনি বললেনঃ তবে তুমি কেন আইয়ামে বীযের অর্থাৎ ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে রোযা রাখ না? আনাস (রাঃ) মাররুয-যাহরান নামক স্থানে আমি একটি খরগোশকে ধাওয়া করলাম এবং ধরে ফেললাম। আবূ তাল্‌হা (রাঃ)-এর নিকট আমি তা নিয়ে গেলে তিনি তা যবেহ করলেন এবং তার উভয় রান ও নিতম্ব নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পাঠালেন, তিনি তা গ্রহন করলেন। ইব্‌ন সাফওয়ান (রাঃ) তিনি বলেন, আমি দু‘টি খরগোশ ধরলাম। কিন্তু তা যবেহ করার মত কিছুই পেলাম না। পরে আমি পাথর দিয়ে তাদের যবেহ করি। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে তা খাওয়ার আদেশ দেন।

【26】

গোসাপ

ইব্‌ন উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বরের উপর থাকাবস্থায় তাঁর নিকট গোসাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি তো তা খাই না, আর তা হারামও বলি না। ইব্‌ন উমর (রাঃ) এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আপনি গোসাপ সম্বন্ধে কী বলেন? তিনি বললেনঃ আমি তা খাইও না এবং তা হারামও বলি না। খালিদ ইব্‌ন ওলীদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ভাজা একটি গোসাপ আনা হলে তিনি তা খাওয়ার জন্য হাত বাড়ান, এমন সময় এক ব্যক্তি বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! এটা গোসাপের গোশ্ত। তখন তিনি তা আর খেলেন না এবং হাত উঠিয়ে নিলেন। খালিদ ইব্‌ন ওলীদ (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! গোসাপ কি হারাম ? তিনি বললেনঃ না, কিন্তু তা আমার গোত্রের এলাকায় পাওয়া যায় না বলে এর প্রতি আমার অরুচি রয়েছে। পরে খালিদ ইব্‌ন ওলীদ (রাঃ) হাত বাড়িয়ে তা খেতে লাগলেন। আর তা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখছিলেন। খালিদ ইব্‌ন ওলীদ (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে তাঁর খালা মায়মূনা বিনত হারিস (রাঃ)-এর গৃহে প্রবেশ করলেন। সেখানে সামনে গোসাপের গোশ্ত পেশ করা হল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অভ্যাস ছিল যে, কোন খাবার ততক্ষণ পর্যন্ত খেতেন না, যতক্ষণ না জেনে নিতেন তা কী? তাই কোন মহিলা বললেনঃ তোমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানাচ্ছ না কেন, তিনি কী খাচ্ছেন? সুতরাং আমি তাঁকে বললামঃ এটা গোসাপের গোশ্ত। তখন তিনি তা পরিহার করলেন। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ তখন আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, তা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, তবে তা এমন জন্তু, যা আমার কওমের এলাকায় পাওয়া যায় না, তাই তা আমার খেতে রুচি হয় না। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ আমি তা আমার দিকে টেনে নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম আর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখছিলেন। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমার খালা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পনির, ঘি এবং গোসাপের গোশত পেশ করলে তিনি পনির, ঘি তো খেলেন কিন্তু অরুচি হওয়ায় গোসাপের গোশত খেলেন না তবে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হয়েছে। যদি তা হারাম হতো তবে দস্তরখানে তা খাওয়া হতো না। সাঈদ ইব্‌ন জুবায়র (রাঃ) ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গোসাপ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ উম্মে হুফায়দ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট পনির, ঘি এবং গোসাপ প্রেরণ করলে তিনি ঘি এবং পনির তো খান এবং গোসাপ অপছন্দ করে পরিহার করেন। যদি তা হারাম হতো, তবে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হত না, আর তিনিও খেতে অনুমতি দিতেন না। সাবিত ইব্‌ন ইয়াযীদ আনসারী (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। আমরা এক মনযিল অবতরণ করলে লোকে গোসাপ দেখতে পেল। আমি একটি গোসাপ ধরলাম। তারপর সেটি ভেজে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে পেশ করলাম। তিনি একখণ্ড কাঠ নিয়ে তার আঙ্গুল গণনা শুরু করলেন। পরে বললেনঃ বনী ইসরাঈলের একদল লোককে সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীতে রুপান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা জানা নেই তারা কোন জন্তু। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌। লোক তো তা খেয়েছে। সাবিত (রাঃ) বলেনঃ তিনি তা খেতে আদেশও করেন কি এবং নিষেধও করেন নি। সাবিত ইব্‌ন ওদীআ (রাঃ) তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গোসাপ নিয়ে উপস্থিত হলে তিনি তাকে ওলট-পালট করে দেখতে লাগলেন এবং বললেনঃ একটি সম্প্রদায়কে বিকৃত করা হয়েছিল। জানি না, শেষ পর্যন্ত তাদের কী হয়েছিল? আর আমি এটাও জানি না যে, এরা তাদের মধ্য হতে কিনা। সাবিত ইব্‌ন ওদী‘আ (রাঃ) এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গোসাপ আনলে তিনি বললেনঃ একটি সম্প্রদায়ের আকৃতি পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছিল। আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন (তা গোসাপ না অন্য কিছু)।

【27】

হায়েনা

ইব্‌ন আবু আম্মার (রাঃ) আমি জাবির ইব্‌ন আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে হায়েনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি আমাকে তা খাওয়ার আনুমতি দিলেন।১ আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ এটা কি শিকার? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আবার জিজ্ঞাসা করালামঃ আপনি কি তা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।

【28】

পরিচ্ছেদঃ হিংস্র জন্তু খাওয়া হারাম

আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক দাঁতাল হিংস্র জন্তু খাওয়া হারাম। আবু সা‘লাবা খুশানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক দাঁতাল হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন। আবু সা‘লাবা খুশানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লুণ্ঠিত মাল হালাল নয় এবং দাঁতাল হিংস্র জন্তু হালাল নয়, আর মুজছামা, অর্থাৎ গুলি, তীর ইত্যাদির আঘাতে যে জন্তু মারা যায়, তা-ও হালাল নয়।

【29】

ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি

জাবির (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বর যুদ্ধের দিন গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেন। আর ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দেন । জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ঘোড়ার গোশত খাওয়ান এবং গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেন। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে খায়বর যুদ্ধের দিন ঘোড়ার গোশত খাওয়ান এবং গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেন। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে ঘোড়ার গোশত খেতাম।

【30】

ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অবৈধতা

খালিদ ইব্‌ন ওলীদ (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধার গোশত খাওয়া বৈধ নয়। খালিদ ইব্‌ন ওলীদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়া, খচ্চর, গাধা এবং দাঁতাল হিংস্র জন্তুর গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা ঘোড়ার গোশত খেতাম। আতা (রহঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ খচ্চরের গোশত? তিনি বললেনঃ না।

【31】

পালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম

মুহাম্মদ (রহঃ) আলী (রাঃ) ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)-কে বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বরের দিন মুত‘আ বিবাহ১ এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেন। আলী ইব্‌ন আবু তালিব (রাঃ) তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বরের দিন নারীদেরকে মুতআ বিবাহ করতে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেন। ইবন্ উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বর বিজয়ের দিন গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করেন। ইব্‌ন উমর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরুপ বর্ণিত আছে, কিন্তু এই বর্ণনায় খায়বরের উল্লেখ নেই। বারা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বার বিজয়ের দিন গৃহপালিত গাধার গোশত রান্না করা বা রান্না ব্যতীত খেতে নিষেধ করেন। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আবূ আওফা (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা খায়বর বিজয়ের দিন ঐ সকল গাধা ধরেছিলাম, যা গ্রাম থেকে বের হয়েছিল। আমরা তা রান্না করলাম। এ সময় সাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ হতে ঘোষক ঘোষণা দিলেন যে, রাসূলু্ল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গাধার গোশত হারাম করেছেন, তোমরা গোশতসহ পাত্র উলটিয়ে দাও। তখন আমরা পাত্র উলটিয়ে গোশ্ত ফেলে দিই। আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বর বিজয়ের দিন অতি প্রত্যুষে সেখানে পৌঁছেন। তখন খায়বরের ইয়াহুদীরা কোদাল নিয়ে বের হয়েছিল। যখন তারা আমাদেরকে দেখলো তখন বলে উঠলোঃ মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সেনাবাহিনী! এই বলে তারা দৌড়িয়ে দুর্গে আশ্রয় গ্রহন করলো। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় হস্তদ্বয় উত্তোলন করে বললেনঃ আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! খায়বর ধ্বংস হলো। যখন আমরা কোন সম্প্রদায়ের চত্বরে অবতরণ করি, তখন সতর্ককৃত সে সম্প্রদায়ের ভোর কতই না দু:খজনক হয়। আনাস (রাঃ) বলেন: আমরা সেখানে গাধা ধরে তা রান্না করলাম। এমন সময় রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোষক ঘোষণা দিলেন যে, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল তোমাদেরকে গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা তা অপবিত্র। আবূ সালাবা খুশানী (রাঃ) তিনি বলেন, লোক রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে খায়বরের যুদ্ধ জন্য বের হলো। তখন তারা ছিল ক্ষুধার্ত, তারা সেখানে কিছু পালিত গাধা পেয়ে গেল এবং তা যবেহ করলো। এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌছলে তিনি আবদুর রহমান ইবন্ আউফকে ঘোষণার আদেশ দিলেন। তিনি লোকের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, পালিত গাধার গোশ্ত এমন কারও জন্য্ হালাল নয়, যে সাক্ষ্য দেয় যে, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল। আবূ সা‘লাবা খূশানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিংস্র দাঁতাল জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন এবং গৃহপালিত গাধার গোশতও খেতে নিষেধ করেছেন।

【32】

বন্য গাধার গোশত খাওয়ার বৈধতা

জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা খয়বরের দিন ঘোড়া ও বন্য জন্তুর গোশত খেয়েছি। আর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করেছেন। উমায়র ইব্‌ন সালামা যামরী (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গে মদীনার রাওহা নামক স্থান অতিক্রম করছিলাম, আর তাঁরা সকলেই ছিলেন হজ্জের ইহরাম অবস্থায়। এমন সময় একটি আহত বন্য গাধা আমাদের দৃষ্টিগোচর হলো। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ একে ছেড়ে দাও, হয়তো এর শিকারী মালিক আসছে। এমন সময় বাহায গোত্রের এক ব্যক্তি, যে গাধাটিকে আঘাত করেছিল, সে এসে বললোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! এই গাধা আপনি নিয়ে নিন। তখন তিনি আবূ বকর (রাঃ)-কে আদেশ দিলেন যেন সকলের মধ্যে এর গোশত বন্টন করে দেন। আবু কাতাদা (রাঃ) তিনি বলেন, তিনি একটি বন্য গাধা শিকার করে তাঁর সাথীদের নিকট নিয়ে আসেন তখন তারা সকলে ছিল ইহরাম অবস্থায়, কিন্তু তিনি ইহরাম অবস্থায় ছিলেন না। আমরা তা খেয়ে পরে একে অপরকে বললামঃ এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন ছিল। পরে আমরা তাঁর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ তোমরা ভালই করেছ। তিনি আমাদেরকে আরো বললেনঃ তোমাদের নিকট এর অবশিষ্ট কিছু আছে কি? আমরা বললামঃ জ্বি হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তা আমাকে হাদিয়া দাও। আমরা তা তাঁর নিকট নিয়ে আসলে তিনি তা থেকে খান, আর তখন তিনি ইহরাম অবস্থায় ছিলেন।

【33】

মোরগের গোশ্ত খাওয়ার বৈধ্যতা

যাহ্দাম (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ)-এর নিকট একটি রান্নাকরা মুরগী আনা হলে উপস্থিত লোকদের একজন সরে পড়লো। আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ তোমার কি হলো? সে বললো: আমি একে একটা বস্তু খেতে দেখেছি। তাই আমার ঘেন্না হয় এবং আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ তুমি নিকটে এসো এবং খাও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তা খেতে দেখেছি। আর তিনি ঐ ব্যক্তিকে বললেন: তুমি তোমার কসমের কাফ্ফারা দাও। বাহ্দাম জারমী (রহঃ) আমারা আবূ মূসা (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম, এমন সময় তাঁর খানা আনা হলো আর তাতে মুরগীর গোশ্ত ছিল। উপস্থিত লোকদের মধ্যে তায়মুল্ল্যাহ গোত্রের রক্তিম বর্ণের এক ব্যক্তি যে ক্রীতদাস ছিল, সে নিকটে আসলো না। তখন আবূ মূসা (রাঃ) তাকে বললেন: নিকটে এসো, আমি রাসূলু্ল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এটা খেতে দিখেছি। ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বরের দিন প্রত্যেক থাবাবিশিষ্ট পাখি এবং দাঁতাল হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেন।

【34】

চড়ুই পাখির গোশত খাওয়ার অনুমতি

আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি চড়ুই অথবা তা থেকে ছোট কোন জন্তু অন্যায়ভাবে হত্যা করে, আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করবেন। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! এর ন্যায্যতা কি? তিনি বললেনঃ এর ন্যায্যতা এই যে, এক আল্লাহ্‌র নামে যবেহ্ করে খাবে। এর মাথা কেটে ফেলে দেবে না।

【35】

সমুদ্রের মৃত জন্তু

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সমুদ্রের পানি পাক, আর এর মৃত জীব হালাল। জাবির ইব্‌ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) তিনি বলেনঃ আমাদের তিনশত ব্যক্তির একদলকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিহাদে পাঠান। আমরা আমাদের পাথেয় কাঁধে বয়ে নিচ্ছিলাম। এক সময় আমাদের পাথেয় নিঃশেষ হয়ে গেল। এমনকি আমাদের প্রত্যেকের একটি করে খেজুর মিলত। এক ব্যক্তি বললোঃ হে আবূ আবদুল্লাহ্! একজন লোকের একটি খেজুরে কী হয়? জাবির (রাঃ) বললেনঃ তাও যখন ফুরিয়ে গেল, তখন আমরা বুঝলাম, একটি খেজুরের মূল্য কী? অতঃপর আমরা সমূদ্র তীরে আসলাম এবং সেখানে এমন এক মাছ পেলাম, সমূদ্র যা তীরে নিক্ষেপ করেছে। তা আমরা আঠার দিন পর্যন্ত খেয়েছিলাম। আমর (রাঃ) আমি জবির (রাঃ)-কে বলেতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনশত ব্যক্তিকে আবু উবায়দা ইব্‌ন জাররাহ্ (রাঃ)-এর অধীনে কুরায়শের বাণিজ্যদলের গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য পাঠান। আমরা ঐ কাফেলার অপেক্ষায় সমূদ্র তীরে অবস্থান করি। আমরা এমন খাদ্য সংকটে পড়লাম যে, শেষ পর্যন্ত আমরা গাছের পাতা খেতে লাগলাম। এ অবস্থায় একদিন সমূদ্র একটি মাছ তীরে নিক্ষেপ করল যাকে আম্বর বলা হয়ে থাকে। আমরা তা অর্ধমাস পর্যন্ত খেতে থাকি, আর এর চর্বি তেল হিসেবে ব্যবহার করি। এমনকি আমাদের হৃত স্বাস্থ্য ফিরে আসল। আবূ উবায়দা (রাঃ)-এর পাঁজরের একটি হাঁড় তুলে নেন। তিনি একটি লম্বা উটের প্রতি লক্ষ্য করেন, আর বাহিনীর সর্বাপেক্ষা লম্বা ব্যক্তিকে এর উপর সওয়ার করালেন। লোকটি এর নিচ দিয়ে চলে গেল। আবার বাহিনীর খাদ্যাভাব দেখা দিলে অবারও এক ব্যক্তি তিনটি উট যবেহ করল। আবূ উবায়দা (রাঃ) পরে তা নিষেধ করেন। সুফিয়ান১ (রহঃ) বলেনঃ আবূ যুবায়র (রাঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমরা এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলেনঃ তোমাদের নিকট কি এর অবশিষ্ট আছে? জাবির (রাঃ) বলেন, আমরা এর চক্ষুদ্বয় হতে এত-মটকা চর্বি বের করলাম। আর এর চক্ষের কোটরে চার ব্যক্তি নেমে পড়েছিল। আবূ উবায়দা (রাঃ)-এর নিকট একটি খেজুর ভর্তি থলি ছিল। তিনি আমাদেরকে একা-এক মুষ্ঠি দান করতেন। পরে একটি করে খেজুর দিতেন, তা ফুরিয়ে যাওয়ার পর আমরা এর ফুরিয়ে যাওয়ার মূল্য বুঝতে পারি। জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ উবায়দার নেতৃত্বে আমাদেরকে এক যুদ্ধে প্রেরণ করেন। আমাদের পাথেয় ফুরিয়ে যাওয়ার পর আমরা এমন একটি মাছ পেলাম যা সমূদ্র তীরে নিক্ষেপ করেছিল। আমরা তা থেকে খাওয়ার ইচ্ছা করলে আবূ উবায়দা (রাঃ) নিষেধ করলেন। পরে তিনি বললেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রেরিত এবং আমরা আল্লাহ্‌র রাস্তায় রয়েছি। অতএব খাও। আমরা বেশ কিছু দিন তা থেকে খেয়েছিলাম। আমরা পরে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তোমাদের কাছে কিছু অবশিষ্ট থেকে থাকে, তবে তা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দাও। জবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের তিনশত ব্যক্তির উর্ধ্বে একটি দলকে আবূ উবায়দার নেতৃত্বে যুদ্ধে পাঠান। তিনি আমাদের পাথেয় হিসাবে এক থলি খেজুর দিলেন। আবূ উবায়দা (রাঃ) এ থেকে আমাদেরকে এক মুষ্ঠি করে দিতেন। আর যখন তা নি:শেষ হতে চললো, তখন তিনি একটি করে খেজুর বন্টন করতেন। আমরা শিশুদের ন্যায় তা চুষতাম এবং পরে পানি পান করতাম। যখন তাও শেষ হলো, তখন আমরা এর মূল্য অনুভব করতে পারলাম। শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের বর্শা দ্বারা গাছের পাতা ঝরিয়ে তা খেতে লাগলাম। এরপর পানি পান করতাম। এই জন্য ঐ সেনাদলের নাম ‘পাতার দল’ হয়ে গেল। যখন আমরা সমূদ্র তীরে পৌছালাম, সেখানে আমরা এক জন্তু দেখতে পেলাম, যা বালুর টিলার ন্যায় পড়ে ছিল। তাকে আম্বর বলা হতো। আবূ উবায়দা (রাঃ) বললেন: এটা মৃত জন্তু, তোমরা তা খাবে না। এরপর তিনি বললেনঃ আমরাতো রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সেনাদল, আর আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় রয়েছি এবং আমরা নিরুপায়। অতএব তোমরা আল্লাহ্‌র নামে খাও। পরে আমরা তা খেলাম এবং মাছের কিছু অংশ শুকালাম। এর চোখের কোটরে তের ব্যক্তি বসতে পারতো। বর্ণনাকারী বলেনঃ আবূ উবায়দা (রাঃ) এর পাঁজরের এক পাশের একখানা হাঁড় নিলেন। তারপর সর্ববৃহৎ উটের পিঠে হাওদা বসান। তারপর সেটিকে সেই হাঁড়ের নিচ দিয়ে চালিয়ে নেন। আমরা এরপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বললেনঃ তোমরা এত দেরী করলে কেন? আমরা বললামঃ আমরা কুরায়শদের দলের প্রতীক্ষায় ছিলাম। আর আমরা তাঁর নিকট ঐ জন্তুর ঘটনাও বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ এটা আল্লাহ্-প্রদত্ত বিয্ক, যা তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন। তোমাদের নিকট এর কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে কি? রাবী বলেনঃ আমরা বললামঃ হ্যাঁ।

【36】

ব্যাঙ

আবদুর রহমান ইব্‌ন উসমান (রাঃ) একজন চিকিৎসক রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ঔষধ হিসাবে ব্যাঙ-এর উল্লেখ করলে, তিনি একে হত্যা করতে নিষেধ করেন।

【37】

ফড়িং

আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আবু আওফা (রাঃ) আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নেতৃত্বে সাতটি জিহাদে শরীক ছিলাম। তখন আমরা ঘাস ফড়িং খেতাম। আবূ ইয়া‘ফুর (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আবূ আওফা (রাঃ)-কে ফড়িং হত্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ আমি রাসূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছয়টি জিহাদে শরীক হয়েছিলাম। আর সে সময় আমরা ঘাস ফড়িং খেতাম।

【38】

পিঁপড়া হত্যা

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন এক নবীকে একটি পিঁপড়া দংশন করলে তিনি সে পিঁপড়ার বস্তি জ্বালিয়ে দেয়ার আদেশ দেন এবং তা জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর প্রতি ওহী প্রেরণ করে বলেনঃ তোমাকে তো একটা পিঁপড়া দংশন করেছে। আর তুমি এমন এক জাতিকে ধ্বংস করলে যারা আল্লাহ্‌র মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করত। হযরত হাসান (রাঃ) একজন নবী গাছের নীচে অবতরণ করলে তাঁকে একটি পিঁপড়া দংশন করে। ফলে তাঁর আদেশে তাদের পূর্ণ বস্তি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আল্লাহ্ তা‘আলা উক্ত নবীর উপর ওহী অবতীর্ণ করেন যে, তুমি ঐ পিঁপড়াকে কেন মারলে না, যে তোমাকে দংশন করেছিল? আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনরূপ বর্ণনা করেছেন, সেই বর্ণনায় এটুকু বর্ধিত আছে যে, কেননা তারা তাসবীহ পাঠ করত। হাসান (রহঃ) তিনি হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি এটাকে মারফূ’রূপে অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামে বর্ণনা করেননি।