29. চিকিৎসা

【1】

অসুস্থ্ ব্যক্তির চিকিৎসা গ্রহণ সম্পর্কে

উসামাহ ইবনু শরীক (রাঃ) তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে দেখলাম তাঁর সাহাবীদের মাথার উপর যেন পাখী বসে আছে, অর্থাৎ শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আমি সালাম দিয়ে বসলাম। অতঃপর এদিক-সেদিক হতে কিছু বেদুঈন এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো? তিনি বলেন, তোমরা চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করো; কেননা মহান আল্লাহ একমাত্র বার্ধক্য ছাড়া সকল রোগেরই ঔষধ সৃষ্টি করেছেন।

【2】

রোগীর খাদ্য গ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন করা

উম্মুল মুনযির বিনতু ক্বায়িস আল-আনসারিয়্যাহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে আমার নিকট এলেন। ‘আলী সুস্থ হয়ে উঠেছেন মাত্র কিন্তু দুর্বলতা এখনো কাটেনি। আমাদের ঘরে খেজুর গুচ্ছ লটকানো ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খেতে শুরু করলেন। ‘আলীও খেতে উঠলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলীকে বললেনঃ তুমি এগুলো খেয়ো না; কারণ তুমি এখনো দুর্বল। ‘আলী (রাঃ) বিরত থাকলেন। বর্ণনাকারীনী বলেন, আমি যব ও বীট চিনি দিয়ে খাদ্য তৈরি করে তাঁর জন্য আনলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘আলী! এটা খাও, এটা তোমার জন্য উপকারী।

【3】

রক্তমোক্ষণ (শিংগা লাগানো)

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যেসব চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকো তার মধ্যে রক্তমোক্ষণ হলো সর্বোত্তম চিকিৎসা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খাদেম সালমা (রাঃ) তিনি বলেন, কেউ মাথাব্যথার অভিযোগ নিয়ে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এলে তিনি তাকে বলতেনঃ রক্তমোক্ষণ করাও। আর পায়ের ব্যথার অভিযোগের ক্ষেত্রে বলতেন : মেহেদী পাতার রস লাগাও।

【4】

রক্তমোক্ষণের স্থান

আবূ কাবশাহ আল-আনসারী (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সিঁথিতে এবং দু’ কাঁধের মধ্যখানে রক্তমোক্ষণ করাতেন। তিনি বলতেনঃ যে ব্যক্তি এই অঙ্গ হতে রক্তমোক্ষণ করাবে, সে কোন রোগের কোন ঔষধ ব্যবহার না করলেও তার অসুবিধা নেই। আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনবার ঘাড়ের দু’টি রগে এবং কাঁধে রক্তমোক্ষণ করিয়েছেন। মা’মার (রহঃ) বলেন, একদা আমি রক্তমোক্ষণ করালে আমার স্মৃতি লোপ পেলো, এমনকি সলাতে সূরাহ ফাতিহা অন্যের সাহায্য নিয়ে পাঠ করলাম। তিনি তার মাথার মাঝখানে রক্তমোক্ষণ করিয়েছিলেন। [৩৮৬০] মা’মার বর্ণিত হাদীস সহীহ।

【5】

রক্তমোক্ষেণের উত্তম সময়

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসের সতেরো, ঊনিশ বা একুশ তারিখে রক্তমোক্ষণ করাবে, তা সকল রোগের মহা ঔষধ। কায়্যিসাহ বিনতু আবূ বাকরাহ (রহঃ) তার পিতা নিজের পরিজনকে মঙ্গলবার দিন রক্তমোক্ষণ করাতে বারণ করতেন। তিনি দাবি করতেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এরুপ বর্ণিত হয়েছে যে, মঙ্গলবার দিন হলো রক্তের দিন; এদিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যখন রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। [৩৮৬২] দুর্বল : মিশকাত (৪৫৪৯)।

【6】

শিরা কেটে রক্তমোক্ষণ করা এবং রক্তমোক্ষণের স্থান

জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাড় মচ্‌কে গেলে তিনি এর জন্য রক্তমোক্ষণ করান। জাবির (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উবাই (রাঃ)-এর নিকট একজন ডাক্তার পাঠালেন। অতএব সে তার একটি শিরা কেটে দেয়।

【7】

গরম লোহা দিয়ে দাগানো

ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোহা গরম করে শরীরে দাগ দিতে বারণ করেছেন। তবুও আমরা লোহা দাগিয়ে চিকিৎসা করেছি; কিন্তু সুস্থ হইনি, সফলকামও হইনি। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, তিনি (‘ইমরান) ফেরেশতাদের সালাম শুনতেন। তিনি লোহার দাগ গ্রহনের পর তা আর শুনতে পাননি। তিনি তা ত্যাগ করলে আগের ন্যয় সালাম শুনতে পান। জাবির (রাঃ) সা’দ ইবনু মুআয (রাঃ)-এর তীরের আঘাতের স্থানে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গরম লোহার স্যাক দিয়ে চিকিৎসা করেছেন।

【8】

নাকে ঔষধ প্রয়োগ করা

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাকে ঔষধ ব্যবহার করেছেন।

【9】

নুশরাহ (শয়তানী মন্ত্র)

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নুশরাহ সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ এগুলো শয়তানের কার্যকলাপ।

【10】

বিষের প্রতিষেধক

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আমি যদি বিষ প্রতিষেধক পান করি অথবা তাবীয লটকাই অথবা নিজের পক্ষ হতে কোন কবিতা পাঠ করি তাহলে এতে আমার প্রভাবিত হওয়ার ভয় করি না। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যতিক্রম ছিল যে, তিনি প্রতিষেধক গ্রহন করেননি। তবে তিনি উম্মাতের জন্য প্রতিষেধক গ্রহণের সুযোগ রেখেছেন। দুর্বলঃ মিশকাত(৪৫৫৪)

【11】

নিষিদ্ধ ঔষধ ব্যবহার

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাপাক ঔষধ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘উসমান (রাঃ) একদা এক ডাক্তার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ব্যাঙ দিয়ে ঔষধ তৈরী সম্পর্কে প্রশ্ন করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ব্যাঙ হত্যা করতে নিষেধ করলেন। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিষ পান করবে সে নিজ হাতে দোযখের আগুনে বিষ পান করবে এবং চিরকালের জন্য জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আলকামা ইবনু ওয়ায়েল (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র তিনি বলেন, তারিক ইবনু সুওয়াইদ বা সুওয়াইদ ইবনু তারিক (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মদ ব্যবহার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। তিনি পুনরায় প্রশ্ন করলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর নাবী। এটা তো ঔষধ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “না, বরং এটা ব্যাধি। আবূ দারদা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ রোগ এবং ঔষধ অবতীর্ণ করেছেন এবং প্রতিটি রোগের ঔষধ সৃষ্টি করেছেন সুতরাং তোমরা ঔষধ গ্রহণ করো; তবে হারাম ঔষধ নয়। [৩৮৭৪] দুর্বলঃ গায়াতুল মারাম(৬৬), মিশকাত(৪৫৩৭)।

【12】

আজওয়া খেজুর সম্পর্কে

সা’দ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে আসলেন এবং আমার বুকে তাঁর হাত রাখলেন। আমি আমার হৃদয়ে তাঁর হাতের শীতলতা অনুভব করলাম। অতঃপর তিনি বললেনঃ তুমি হৃদরোগী, তুমি সাকীফ গোত্রের হারিস ইবনু কালাদাহ্‌র নিকট যাও; কারণ সে এসব রোগের চিকিৎসা করে। সে যেন মাদীনাহ্‌র আজওয়া খেজুর হতে সাতটি খেজুর নিয়ে বীচিসহ চূর্ণ করে সেগুলো তোমার মুখে ঢেলে দেয়। [৩৮৭৫] দুর্বলঃ মিশকাত(৪২২৪)। আমির ইবনু সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রহঃ) হতে নিজের পিতার সূত্র তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যহ সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোন ধরনের বিষ ও যাদু তাকে ক্ষতি করবে না।

【13】

আলজিভ ফোলা সম্পর্কে

উম্মু ক্বায়িস বিনতু মিহসান (রাঃ) তিনি বলেন, আমি আমার ছেলেকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম। তার আলজিভ ফুলে ব্যথা হওয়ায় আমি তাতে মালিশ করেছিলাম। তিনি বললেনঃ আলজিভ ফোলার কারণে তোমরা তোমাদের সন্তানদের গলায় চাপ দিয়ে তাদের কষ্ট দিচ্ছো কেন? তোমরা উদ হিন্দী ব্যবহার করো; কেননা সাত প্রকার ব্যাধিতে তা উপকারী। শিশুদের আল্‌জিভ ফুলে ব্যথা হলে তা ঘষে গুড়া করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে নাকের ভেতর ফোটায় প্রবেশ করাবে এবং ফুসফুস আবরক ঝিল্লীর প্রদাহ হলেও এভাবে তা পান করাতে হবে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ ঊদ(কাঠ) হলো এক প্রকার সুগন্ধি কাঠ।

【14】

সুরমা লাগানো

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো এবং তা দিয়ে তোমাদের মৃতদের কাফন পরাও; কেননা তা তোমাদের উত্তম পোশাক। আর তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হলো ‘ইসমিদ’ সুরমা; কারণ তা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাতার চুল গজায়।

【15】

বদনযর লাগা সম্পর্কে

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্র তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ বদনযর লাগা সত্য। [৩৮৭৯] ‘আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, বদনযরকারীকে নির্দেশ দেয়া হতো যেন সে উযু করে এবং সেই পানি দিয়ে নযর লাগা ব্যক্তি বা বস্তু ধুয়ে নেয়।

【16】

শিশুর দুধপান মেয়াদে সহবাস করা সম্পর্কে

আস্‌মা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা গোপনে নিজেদের সন্তানদের হত্যা করবে না। কারণ গর্ভাবস্থায় শিশুকে দুধপান করানোর মেয়াদে সহবাস করলে আরোহীকে ঘোড়া তার পিঠ হতে ভুলুন্ঠিত করে। [৩৮৮১] দুর্বলঃ গায়াতুল মারাম(২৪২) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) জুদামাহ আল-আসদিয়া (রাঃ) তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ আমি ভেবেছিলাম যে, শিশুকে দুধ পান করানোর মেয়াদে স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে নিষেধ করবো। কিন্ত আমাকে জানানো হয়েছে, রোম ও পারস্যবাসীরা এরূপ করে থাকে, অথচ এতে তাদের সন্তানদের কোন ক্ষতি হয় না।

【17】

তাবীয ঝুলানো

‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর স্ত্রী যাইনাব (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্র তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ জাদু, তাবীয ও অবৈধ প্রেম ঘটানোর মন্ত্র শির্ক-এর অন্তর্ভুক্ত। তিনি (যাইনাব) বলেন, আমি বললাম, আপনি এসব কি বলেন? আল্লাহর কসম! আমার চোখ হতে পানি পড়তো, আমি অমুক ইয়াহুদী কর্তৃক ঝাড়ফুঁক করাতাম। সে আমাকে ঝাড়ফুঁক করলে পানি পড়া বন্ধ হয়ে যেতো। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, এগুলো শয়তানের কাজ। সে নিজ হাতে চোখে যন্ত্রণা দেয়, যখন সে ঝাড়ফুঁক দেয় তখন সে বিরত থাকে। এর চেয়ে বরং তোমার জন্য এরূপ বললেই যথেষ্ট হতো, যেরূপ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ “হে মানব জাতির রব! যন্ত্রণা দূর করে দিন, আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্যদাতা, আপনার দেয়া নিরাময়ই যথার্থ নিরাময়, যার পরে আর কোন রোগ বাকী থাকে না”। ‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কেবল বদনযর লাগা কিংবা বিষাক্ত প্রাণীর দংশনের চিকিৎসায় ঝাঁড়ফুঁক দেয়া যায়।

【18】

ঝাড়ফুঁক সম্পর্কে

মুহম্মাদ ইবনু ইউসুফ ইবনু সাবিত ইবনু ক্বায়িস ইবনু শাম্মাস (রহঃ) হতে তার পিতা ও দাদার সূত্র একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাবিত ইবনু ক্বায়িস (রাঃ)-এর নিকট গেলেন। আহমাদ বলেন, তিনি তখন অসুস্থ ছিলেন। তিনি বলেনঃ হে মানুষের রব! সাবিত ইবনু ক্বায়িস ইবনু শাম্মাসের রোগ দূর করে দিন। অতঃপর তিনি বাতহান নামক উপত্যকার কিছু ধুলামাটি নিয়ে একটি পাত্রে রাখলেন এবং পানিতে মিশিয়ে তার দেহে ঢেলে দিলেন। [৩৮৮৫] ‘আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমরা জাহিলী যুগে ঝাড়ফুঁক করতাম। অতঃপর আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি? তিনি বলেনঃ তোমাদের ঝাড়ফুঁকের ব্যবস্থাগুলো আমার সামনে পেশ করো; তবে যেসব ঝাড়ফুঁক শিরকের পর্যায়ে পড়ে না, তাতে কোন দোষ নেই। আশ-শিফা বিনতু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা আমি হাফসাহ (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট এসে বললেনঃ তুমি ওকে (হাফসাহকে) যেভাবে লেখা শিখিয়েছো, সেভাবে পিপড়া (পোকা) কামড়ের ঝাড়ফুঁক শিক্ষা দাও না কেন। রাবাব (রহঃ) তিনি বলেন, আমি সাহ্‌ল ইবনু হুনাইফ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমি বন্যার প্রবহমান পানির পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে তাতে নেমে গোসল করায় জ্বরে আক্রান্ত হই। এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌছলে তিনি বলেনঃ তোমরা আবূ সাবিতকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে আদেশ দাও। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আমার নেতা! ঝাড়ফুঁক কি ফলদায়ক? তিনি বলেন, শুধুমাত্র বদনযর লাগা বা সাপ-বিছার দংশনে ঝাড়ফুঁক দেয়া চলে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘হামাহ’ হলো সাপ ও বিষধর কীটের কামড়। আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেবল বদনযর লাগা বা বিষাক্ত প্রাণীর দংশন বা রক্ত বইতে থাকলে ঝাড়ফুঁক দেয়া চলে। বর্ণনাকারী আল-‘আব্বাস (রহঃ) বদনযর-এর উল্লেখ করেননি। তবে সুলায়মান ইবনু দাঊদ তা উল্লেখ করেছেন। [৩৮৮৯] দুর্বলঃ মিশকাত (৪৫৫৭)।

【19】

ঝাড়ফুঁক করার পদ্ধতি

‘আবদুল ‘আযীয ইবনু সুহাইব (রহঃ) তিনি বলেন, একদা আনাস (রাঃ) সাবিত (রাঃ)-কে বললেন, আমি কি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঝাড়ফুঁকের বাক্য দ্বারা ঝাড়ফুঁক করবো না? তিনি বললেন, হাঁ। আনাস (রাঃ) বলেন, “হে আল্লাহ, মানুষের রব! যন্ত্রণা দূরকারী! রোগমুক্তি দিন, রোগমুক্তির মালিক একমাত্র আপনিই। এমন রোগমুক্তি দিন যাতে কোন রোগই অবশিষ্ট না থাকে। ‘উসমান ইবনু আবুল ‘আস (রাঃ) তিনি বলেন, আমি শরীর ব্যথায় প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসতাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি সাতবার তোমার ডান হাত ব্যথার স্থানে বুলাতে থাকো এবং বলো, “আমি যে ব্যথা অনুভব করছি তা হতে মহাসম্মানিত আল্লাহ ও তাঁর ক্ষমতার নিকট আশ্রয় চাইছি।” তিনি বলেন, অতঃপর আমি তাই করলাম, আল্লাহ আমার ব্যথা দূর করে দিলেন। পরে সর্বদা আমি আমার পরিজন ও অন্যদের এরূপ করার আদেশ দেই। আবূ দারদা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ বা কারো ভাই যদি অসুস্থ হয় তবে সে যেন বলেঃ “হে আমাদের আসমানের রব, আল্লাহ! তোমার পবিত্র নাম, তোমার যাবতীয় নির্দেশ আসমান-যমীনে কার্যকর। আপনার রহমাত যেমন আকাশে বিদ্যমান, তেমন যমীনেও রহমাত বর্ষণ করুন; আমাদের পাপ ও অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন। আপনি পবিত্র বান্দাদের রব, আপনার দয়া থেকে দয়া বর্ষণ করুন এবং এ রোগের জন্য আপনার আরোগ্য ব্যবস্থা থেকে রোগমুক্তি দিন”। তাহলে সে আরোগ্য লাভ করবে। [৩৮৯২] দুর্বল, মিশকাত (১৫৫৫)। আমর ইবনু শু’আইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের ভীতিকর পরিস্থিতিতে এ বাক্যগুলোর মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করার শিক্ষা দিতেনঃ (অর্থ) “আল্লাহর পূর্ণ কালেমাসমূহের দ্বারা তাঁর গযব ও তাঁর বান্দাদের খারাবী ও শয়তানের কুমন্ত্রণা ও আমার নিকট তার উপস্থিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাইছি”। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) এ বাক্যগুলো তার বালেগ সন্তানদের শিখাতেন এবং নাবালেগদের জন্য লিখে তা তার গলায় ঝুলিয়ে দিতেন। [৩৮৯৩] হাসান, কিন্তু তার একথা বাদেঃ “আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর …….।’ ইয়াযীদ ইবনু আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা আমি সালামাহ (রাঃ) এর পায়ের গোছায় একটি ক্ষতচিহ্ন দেখে বললাম, এটা কি? তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধে এখানে আঘাত পেয়েছিলাম। লোকেরা বলতে লাগলো যে, সালামাহ আহত হয়েছেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমার নিকট আনা হলে তিনি আমার ক্ষতস্থানে তিনবার ফুঁ দিলেন। ফলে আজ পর্যন্ত আমি তাতে কোন ব্যথা অনুভব করি না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, কেউ ব্যথার অভিযোগ করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মুখের থুথু বের করে তাতে মাটি মিশিয়ে বলতেনঃ “আমাদের এ পৃথিবীর মাটিতে আমাদের কারো থুথু মিশালে আমাদের রবের আদেশে আমাদের রোগী ভাল হয়ে যায়।” খারিজাহ ইবনুস সালত আত-তামীমাহ (রাঃ) হতে তার চাচার সূত্র তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন। অতঃপর তাঁর কাছ হতে ফেরার পথে তিনি এক গোত্রের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। সেই গোত্রের এক পাগল লোহার শিকলে বাঁধা ছিল। গোত্রের লোকেরা তাকে বললো, আমরা জানতে পারলাম যে, তোমাদের এক সাথী (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাকি কল্যাণ নিয়ে এসেছেন? তোমাদের এমন কিছু জানা আছে কি যাতে তোমরা এর চিকিৎসা করতে পারো? অতএব আমি সূরাহ ফাতিহা পড়ে তাকে ফুঁক দিলাম। সে সুস্থ হয়ে গেলো। তারা আমাকে একশটি বকরী দিলো। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে ঘটনাটি জানালে তিনি বললেনঃ এ সূরাহ ছাড়া অন্য কিছু পড়ে ফুঁক দিয়েছো কি? মুসাদ্দাদ অন্যত্র বলেন, এ সূরাহ ছাড়া অন্য কিছু বলেছ কি? আমি বললাম, না। তিনি বলেনঃ তবে এ উপহার নিতে পারো। আমার জীবনের কসম! লোকেরা বাতিল মন্ত্র পড়ে রোজগার করে! আর তুমি তো সত্য ঝাড়ফুঁক দ্বারা রোজগার করেছো। খারিজাহ ইবনুস সালত (রাঃ) হতে তাঁর চাচার সূত্র তিনি বলেন, অতঃপর তিনি তিনদিন পর্যন্ত সকাল-সন্ধ্যা সূরাহ ফাতিহা পাঠ করে ফুঁক দিলেন। যখনি তা শেষ করেন তার মুখের থুথু একত্র করে তার উপর ছিটিয়ে দেন। দেখা গেলো, বন্দী যেন শিকল হতে মুক্তি পেলো। অতঃপর তারা তাকে এর কিছু বিনিময় দিলেন। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ সংবাদ পেলাম। অতঃপর মুসাদ্দাস বর্ণিত হাদীসের অর্থ উল্লেখ করেন। আবূ সালিহ (রহঃ) তিনি বলেন, একদা আমি আস্লাম গোত্রের এক লোককে বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর এক সঙ্গী এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি রাতে দংশিত হওয়ার কারণে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। তিনি বললেন, কিসে দংশন করেছে? আমি বললাম, বিচ্ছু। তিনি বললেনঃ রাতের বেলায় তুমি যদি একথা বলতেঃ (অর্থ) “আমি পরিপূর্ণ কালামের দ্বারা যাবতীয় দুষ্টের খারাবী হতে আশ্রয় চাইছি”, তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় কোন কিছুই তোমার ক্ষতি করতে পারতো না। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা বিছায় দংশিত এক ব্যক্তিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আনা হলে তিনি বললেনঃ সে যদি বলতোঃ (অর্থ) “আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালামের সাহায্যে তাঁর সৃষ্ট বস্তুর অনিষ্ট হতে আশ্রয় চাই”, তাহলে তা তাকে দংশন করতে পারতো না অথবা তার ক্ষতি করতে পারতো না। [৩৮৯৯] আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবী একটি স্থানের দিকে সফরে বের হলেন। পথে আরব বেদুঈনদের এক জনপদে তারা যাত্রাবিরতি করলে তাদের কেউ এসে বললো, আমাদের নেতাকে বিষাক্ত প্রাণী দংশন করেছে। তোমাদের কারো এমন কিছু জানা আছে কি যাতে তাঁর উপকার হয়? সফরকারী দলের একজন বললেন, হাঁ, আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি ঝাড়ফুঁক করি। কিন্তু আমরা তোমাদের নিকট আতিথেয়তা চেয়েছিলাম, তোমরা তা অস্বীকার করেছ। কাজেই তোমরা আমার জন্য বিনিময় নির্ধারণ না করলে আমি ঝাড়ফুঁক করবো না। সুতরাং তারা একপাল বক্‌রী দেয়ার চুক্তি করলো। তিনি রোগীর নিকট এসে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করে থুথু ছিটিয়ে দিলেন। সে সুস্থ হয়ে উঠলো, মনে হলো যেন সে বন্দীর শিকল হতে মুক্তি পেয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তারা চুক্তি মোতাবেক সব বিনিময় প্রদান করলো। দলের কয়েকজন বললো, এগুলো বন্টন করে দাও। কিন্তু ঝাড়ফুঁককারী বললো, না, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ না নেয়া পর্যন্ত এরূপ করবো না। অতঃপর তারা সকলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে তাকে ঘটনাটি জানালেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সূরাহ দ্বারা যে ঝাড়ফুঁক করা যায় তা তোমরা কিভাবে জানলে? তোমরা ভালই করেছো। এগুলো বন্টন করে নাও এবং তোমাদের সঙ্গে আমাকেও একটি অংশ দিও। খারিজাহ ইবনুস সালত আত-তামীমা (রাঃ) হতে তাঁর চাচার সূত্র তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছ হতে ফেরার পথে আরবের একটি জনপদে পৌছলাম। তারা বললো, আমরা সংবাদ পেয়েছি যে, আপনারা এ ব্যক্তি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছ থেকে কল্যাণকর কিছু নিয়ে এসেছেন। আপনাদের কারো নিকট কোন ঔষধ বা ঝাড়ফুঁকের কিছু জানা আছে কি? কেননা আমরা এক পাগলকে বেঁধে রেখেছি। তিনি বলেন, আমরা বললাম, হাঁ। তখন তারা বাঁধারত এক পাগলকে নিয়ে এলো। আমি তিন দিন ধরে সূরাহ ফাতিহা পড়ে তার উপর সকাল-সন্ধ্যা ফুঁক দিলাম এবং থুথু ছিটিয়ে দিলাম। তাতে সে যেন বন্দীদশা হতে মুক্তি লাভ করলো। অতঃপর তারা আমাকে কিছু বিনিময় দিলো। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ বিষয়ে প্রশ্ন না করে তা গ্রহণ করতে পারি না। এ ঘটনা শুনে তিনি বললেনঃ এগুলো তুমি খেতে পারো। আমার জীবনের কসম! লোকজন তো বাতিল মন্ত্র দিয়ে রোজগার করে। আমি তুমি তো সত্য ঝাড়ফুঁক দ্বারা রোজগার করেছো। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন ব্যথা অনুভব করলে তিনি নিজেই ‘মুআব্বিজাত’ সূরাহগুলো (অর্থাৎ সূরাহ নাস ও ফালাক) পড়ে ফুঁ দিতেন। ব্যথা বৃদ্ধি পেলে আমি তা পড়ে তাঁর হাতে ফুঁ দিয়ে তা তাঁর ব্যথায় স্থানে বুলিয়ে দিতাম বরকত লাভের আশায়।

【20】

মোটা হওয়ার নিয়ম

‘আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পাঠাবেন। এজন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সাথে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই।