33. গণ-গোসলখানা

【1】

গোসলখানায় প্রবেশ সম্পর্কে

‘আয়িশাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গণ-গোসলখানায় প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। অতঃপর পুরুষদের লুঙ্গি-পায়জামা পরে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন। [৪০০৯] আবুল মালীহ (রাঃ) তিনি বলেন, একদা সিরিয়ার কতিপয় মহিলা ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট আসলে তিনি প্রশ্ন করলেন, তোমরা কারা? তারা বললো, আমরা সিরিয়ার অধিবাসী। তিনি বললেন, তোমরা সম্ভবত সেই শহরের অধিবাসী, যেখানে মহিলারাও গণ-গোসলখানায় প্রবেশ করে। তারা বললো, হাঁ। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কোন মহিলা নিজের ঘর ছাড়া অন্যত্র তার পরিধেয় বস্ত্র খুললে সে তার ও আল্লাহর মধ্যকার পর্দা ছিড়ে ফেললো অর্থাৎ সম্পর্ক ছিন্ন করলো। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ শীঘ্রই তোমাদের হাতে অনারবদের বহু অঞ্চল বিজিত হবে এবং সেখানে তোমরা এমন কতগুলো ঘর দেখবে যেগুলোকে গণ-গোসলখানা বলা হয়। লুঙ্গি-পায়জামা ছাড়া কোন পুরুষ যেন তাতে প্রবেশ না করে এবং পীড়িতা ও নেফাসগ্রস্তা ছাড়া অন্য মহিলাদের তাতে প্রবেশ করতে তোমরা নিষেধ করো। [৪০১১]

【2】

উলঙ্গ হওয়া নিষেধ

ইয়া’লা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যাক্তিকে উলঙ্গ হয়ে খোলা জায়গায় গোসল করতে দেখলেন। অতঃপর মিম্বারে উঠে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ লজ্জাশীল, গোপনীয়তা অবলম্বনকারী। তিনি লজ্জা ও গোপনীয়তা পছন্দ করেন। তোমাদের কেউ গোসল করতে চাইলে সে যেন গোপনীয়তা অবলম্বন করে। সাফওয়ান ইবনু ইয়া‘লা (রহঃ) তাঁর পিতা সাফওয়ান ইবনু ইয়া‘লা (রহঃ) তাঁর পিতার সূত্রে এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, প্রথম বর্ণনাটি পূর্ণাঙ্গ। [৪০১৩] যুর’আহ ইবনু ‘আবদুর রহমান ইবনু জারহাদ (রহঃ) হতে তার পিতা তিনি বলেন, এই ‘জারহাদ’ আস্‌হাবে সুফ্‌ফার অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট বসলেন, আমার ঊরুদেশ তখন অনাবৃত ছিল। তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো না যে, ঊরুদেশ গোপন অঙ্গ? [৪০১৪] ‘আলী (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ঊরুদেশ অনাবৃত করো না এবং জীবিত ও মৃত লোকের ঊরুর দিকে তাকিও না। [৪০১৫]

【3】

উলঙ্গ হওয়া সম্পর্কে

আল-মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি একটি ভারী পাথর বহন করে হাঁটছিলাম, হঠাৎ আমার পরিধেয় বস্ত্র খুলে পড়ে গেলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডেকে বললেনঃ কাপড় সামলিয়ে নাও, তোমরা উলঙ্গ অবস্থায় চলাফেরা করবে না। বাহ্‌য ইবনু হাকীম (রাঃ) হতে তার পিতা ও দাদা তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের ঢেকে রাখার অঙ্গসমূহ কার সামনে আবৃত রাখবো এবং কার সামনে অনাবৃত করবো? তিনি বলেনঃ তোমার স্ত্রী ও দাসী ব্যতীত সবার সামনে তা আবৃত রাখো। বর্ণনাকারী বলেনঃ যতদূর সম্ভব কেউ যেন অন্যের গোপন অঙ্গের দিকে না তাকায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কেউ যখন নির্জনে থাকে? তিনি বলেনঃ লজ্জার ব্যাপারে আল্লাহ মানুষের চেয়ে অধিক হকদার। [৪০১৭] ‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন পুরুষ অন্য পুরুষের গোপন অঙ্গের দিকে তাকাবে না এবং কোন নারীও অন্য নারীর গোপন অঙ্গের দিকে তাকাবে না। আর কোন পুরুষ অপর পুরুষের সাথে একই কাপড়ের ভিতরে একত্রে ঘুমাবে না এবং কোন নারীও অপর নারীর সাথে একই কাপড়ের ভিতরে ঘুমাবে না। [৪০১৮] আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন পুরুষ অন্য পুরুষের সাথে এবং কোন নারী অন্য নারীর সাথে একই বিছানায় ঘুমাবে না, তবে শিশু বাচ্চা হলে বাবা-মা ছেলের সাথে অথবা ছোট সন্তান বাবার সাথে একই সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারে। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তৃতীয় আরেকটি কথা বলেছেন কিন্তু আমি তা ভুলে গিয়েছি। [৪০১৯]