22. পোশাক-পরিচ্ছদ

【1】

(পুরুষের) রেশমী পোশাক ও স্বর্ণালংকার ব্যবহার

আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে পুরুষদের জন্য রেশমী পোশাক এবং স্বর্ণালংকার ব্যবহার হারাম করা হয়েছে এবং মহিলাদের জন্য তা হালাল করা হয়েছে। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৫৯৫) উমার (রাঃ) তিনি জাবিয়া নামক জায়গায় ভাষণ দানের সময় বলেন, দুই, তিন অথবা চার আঙ্গুলের বেশি পরিমাণ রেশমী পোশাক ব্যবহার করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। সহীহ্, মুসলিম

【2】

যুদ্ধের সময় রেশমী পোশাক পরার সম্মতি প্রসঙ্গে

আনাস (রাঃ) এক যুদ্ধে আবদুর রাহমান ইবনু আওফ ও যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট নিজেদের শরীরে উকুন হওয়ার অভিযোগ করেন। তাদের দু’জনকেই তিনি রেশমী পোশাকের জামা পরার সম্মতি দেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি তাদের দু’জনকেই তা পরে থাকতে দেখেছি। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৯২), নাসা-ঈ

【3】

(রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য স্বর্নখচিত জুব্বা উপহার)

ওয়াকিদ ইবনু আমর ইবনু সাঈদ ইবনু মুআয (রহঃ) তিনি বলেন, (আমাদের এখানে) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আসলে আমি তার সামনে এলাম। তিনি (আমাকে) প্রশ্ন করেন, তুমি কে? আমি বললাম, আমি ওয়াকিদ ইবনু আমর ইবনু সা’দ ইবনু মুআয। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি (আনাস) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, সা’দের চেহারার সাথে তোমার চেহারার মিল আছে। সা’দ (রাঃ) ছিলেন অত্যন্ত মর্যাদাবান, বলিষ্ঠ ও লম্বা শরীরের অধিকারী। তিনি একবার স্বর্ণের কারুকার্য খচিত দীবাজ (রেশম ও সূতা মিশ্রিত) কাপড়ের একটি জুব্বা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য প্রেরণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা পরে মিম্বারে উঠে দাঁড়ান অথবা বসেন। জনগণ তা ছুঁয়ে দেখতে শুরু করলো এবং বলতে লাগল, আমরা আজকের মতো এমন জামা আর কোন দিন দেখিনি। তিনি বললেনঃ তোমরা এর সৌন্দর্য দেখে আশ্চর্য হচ্ছ! তোমরা যা দেখছ, জান্নাতে সা’দের রুমাল তার চেয়ে বেশি উত্তম। সহীহ্‌, নাসা-ঈ

【4】

লাল রং-এর কাপড় পুরুষ লোকদের জন্য অনুমোদিত

বারাআ (রাঃ) তিনি বলেন, আমি লাল রং-এর জামা পরে থাকাবস্থায় আর কোন বাবরি চুলবিশিষ্ট মানুষ দেখিনি যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেয়ে বেশি সুন্দর। কাঁধের কাছাকাছি পর্যন্ত তাঁর বাবরি চুল ঝুলন্ত ছিল। তাঁর দুই কাঁধের মাঝামাঝি জায়গা প্রশস্ত ছিল। তিনি ছিলেন না বেঁটে আকৃতির আর না লম্বাকৃতির। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৯৯), নাসা-ঈ

【5】

হলুদ রং-এর কাপড় পুরুষ লোকদের জন্য মাকরূহ্

আলী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে কাসী (সূতা ও রেশম মিশ্রিত কাপড়) ও হলুদ রং-এর জামা পরতে বারণ করেছেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬০২), মুসলিম, ৩৬৭৬ নং হাদীসে আরও পরিপূর্ণ বর্ণনা আসবে।

【6】

পশমী কাপড় পরা জায়িয

সালমান (রাঃ) তিনি বলেন, ঘি, পনির ও পশমী বা চামড়ার জামা প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর গ্রন্থে যা বৈধ করেছেন তা-ই বৈধ এবং আল্লাহ তা‘আলা তাঁর গ্রন্থে যা অবৈধ করেছেন তা-ই অবৈধ। আর তিনি যে সকল বিষয়ে নীরব থেকেছেন (বৈধ বা অবৈধ বিষয়ে কিছুই বলেননি) তা তাঁর ক্ষমা ও উদারতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। হাসান, ইবনু মা-জাহ (৩৩৬৬)

【7】

মৃত প্রাণীর প্রক্রিয়াজাত চামড়ার ব্যবহার প্রসঙ্গে

আতা ইবনু আবূ রাবাহ (রহঃ) তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, একটি ছাগল মারা গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মালিককে বললেনঃ তোমরা কেন তার চামড়া ছিলে নাওনি? তোমরা এটাকে প্রক্রিয়াজাতের পর কাজে ব্যবহার করতে পারতে। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬০৯, ৩৬১০), মুসলিম ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রক্রিয়াজাতের পর যে কোন চামড়া পবিত্র হয়ে যায়। সহীহ্‌, প্রাগুক্ত আবদুল্লাহ ইবনু উকাইম (রহঃ তিনি বলেন, আমাদের নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পত্র আসে এই মর্মেঃ মৃত প্রাণীর চামড়া এবং তন্তু তোমরা কোন কাজে লাগাবে না। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬১৩)

【8】

পায়ের গোছার নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে কাপড় পরা নিষেধ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গর্ব-অহংকারে মত্ত হয়ে যে লোক তার পরনের কাপড় পায়ের গোছার নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৬৯), নাসা-ঈ

【9】

মহিলাদের আঁচল লম্বা করে পরা প্রসঙ্গে

ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গর্ব-অহংকারের বশীভূত হয়ে যে লোক তার পরনের কাপড় গোড়ালির নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। উম্মু সালামা (রাঃ) বললেন, মহিলারা তাদের কাপড়ের প্রান্ত বা আঁচল কিভাবে সামলাবে? তিনি বললেন, তারা (গোড়ালি হতে) এক বিঘত পরিমাণ উপরে রাখবে। তিনি (উম্মু সালামা) বললেন, এতে তো তাদের পা উদম হয়ে যাবে। তিনি বললেনঃ তবে তারা এক হাত পরিমাণ নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখবে, কিন্তু এর বেশি করবে না। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৮০), (৩৫৮১) উম্মুল হাসান (রাঃ) তাদের নিকট উম্মু সালামা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা (রাঃ)-এর জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাপড়ের ঝুল এক বিঘত পরিমাণ নির্ধারিত করে দেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৮০),

【10】

পশমী কাপড় পরা সম্পর্কে

আবূ বুরদা (রাঃ) তিনি বলেন, আমাদেরকে আইশা (রাঃ) তালিযুক্ত কম্বল (বা চাদর) এবং মোটা কাপড়ের একটি লুঙ্গি বের করে দেখান এবং বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই দু’টি কাপড় পরে থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৫১), নাসা-ঈ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মূসা (আঃ)-এর সাথে যেদিন তাঁর প্রতিপালক কথা বলেছিলেন সেদিন তাঁর পরনে ছিল পশমী চাদর, পশমী জুব্বা, পশমী টুপি ও পশমী পাজামা। তাঁর জুতা দু‘টি ছিল মৃত গাধার চামড়া দিয়ে তৈরী। খুবই দুর্বল, যঈফ(৪০৮২)।

【11】

কালো রং-এর পাগড়ী প্রসঙ্গে

জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন কালো পাগড়ী পরে মক্কায় প্রবেশ করেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (২৮২২), মুসলিম

【12】

দুই কাঁধের মাঝ বরাবর পাগড়ীর এক প্রান্ত ঝুলিয়ে রাখা

ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাগড়ী বাঁধলে দুই কাঁধের মধ্য দিয়ে এর প্রান্ত ঝুলিয়ে দিতেন। নাফি (রহঃ) বলেন, ইবনু উমার (রাঃ)-ও দুই কাঁধের মাঝ বরাবর তার পাগড়ীর এক প্রান্ত ছেড়ে দিতেন। উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমি কাসিম ও সালিমকেও এরূপ করতে দেখেছি। সহীহ্‌, সহীহা (৭১৬)

【13】

স্বর্ণের আংটি পরা নিষেধ

আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বর্ণের আংটি পরতে, রেশমী পোশাক পরতে, রুকূ-সিজদায় কুরআনের আয়াত পাঠ করতে এবং হলুদ রং-এর পোশাক পরতে বারণ করেছেন। সহীহ্‌, মুসলিম, পূর্বে ১৭২৫ নং হাদীসেও সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে। ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বর্ণের আংটি পরতে নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৬৪২), নাসা-ঈ বারা (রাঃ) এবং অন্যদের হতেও বর্ণনা করেছেন।

【14】

রুপার আংটি ব্যবহার করা

আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আংটি ছিল রুপার। এতে লাল রং-এর মূল্যবান আবিসিনীয় পাথর বসানো ছিল। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬৪৬), মুসলিম

【15】

আংটির জন্য উত্তম পাথর

আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আংটি ছিল রুপার। তার পাথরও ছিল রুপার। সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল (৭৩), বুখারী

【16】

ডান হাতে আংটি পরা প্রসঙ্গে

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি স্বর্ণের আংটি তৈরী করান এবং সেটি ডান হাতে পরেন। তারপর তিনি মিম্বারের উপর বসে বললেনঃ আমি আমার ডান হাতে এই আংটিটি পরেছিলাম। তারপর তিনি তা খুলে ফেলে দিলেন এবং (তাঁর দেখাদেখি) লোকেরাও তাদের আংটি খুলে ফেলে দিল। সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল (৮৪), নাসা-ঈ সাল্ত ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নাওফাল (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে ডান হাতে আংটি পরতে দেখেছি। আমার ধারণা তিনি এও বলেছেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর ডান হাতে আংটি পরতে দেখেছি। হাসান সহীহ্‌, ইরওয়া (৩/৩০৩-৩০৪), মুখতাসার শামা-ইল (৮০) জাফর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) হতে তার বাবা তিনি (মুহাম্মাদ) বলেন, হাসান ও হুসাইন (রাঃ) তাদের বাঁ হাতে আংটি পরতেন। সহীহ্‌ মাওকূফ, মুখতাসার শামা-ইল (৮২) হাম্মাদ ইবনু সালামা (রহঃ) তিনি বলেন, আমি ইবনু আবী রাফিকে তার ডান হাতে আংটি পরতে দেখেছি। আমি এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু জাফরকে তার ডান হাতে আংটি পরতে দেখেছি। আর আবদুল্লাহ ইবনু জাফর বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাতে আংটি পরতেন। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৭৪৭) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুপা দিয়ে একটি আংটি তৈরী করান এবং এতে মুহাম্মাদুর্ রাসূলুল্লাহ খোদাই করান, তারপর বলেন, তোমরা এর উপর খোদাই কর না। সহীহ্‌, মুসলিমও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আনাস (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মলত্যাগ করতে যাওয়ার সময় তাঁর আংটি খুলে রাখতেন। যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩০৩)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।

【17】

আংটিতে কারুকাজ করা

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আংটির নকশা ছিল নিম্নরূপঃ এক পংক্তিতে ‘মুহাম্মাদ’, এক পংক্তিতে ‘রাসূল’ এবং এক পংক্তিতে ‘আল্লাহ’। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬৩৯-৩৬৪০), বুখারী আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আংটির নকশা তিন পংক্তির ছিলঃ এক পংক্তিতে ‘মুহাম্মাদ’, এক পংক্তিতে ‘রাসূল’ এবং এক পংক্তিতে ‘আল্লাহ’। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস

【18】

ছবি বা প্রতিকৃতি প্রসঙ্গে

জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, ঘরের মধ্যে কোন ছবি রাখতে এবং তা বানাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। সহীহ্‌, সহীহা (৪২৪) উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা (রাঃ) তিনি (অসুস্থ) আবূ তালহা আনসারী (রাঃ)-কে দেখতে যান। বর্ণনাকারী বলেন, আমি সেখানে সাহ্‌ল ইবনু হুনাইফ (রাঃ)-কেও উপস্থিত পেলাম। তিনি আরও বলেন, আবূ তালহা (রাঃ) একজনকে ডাকেন নিচের চাদর সরানোর জন্য। সাহ্‌ল (রাঃ) তাকে বললেন, কেন চাদর সরাবেন? তিনি বললেন, তাতে ছবি আঁকা আছে। আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সম্পর্কে যা বলেছেন তা তো তুমি জান। সাহল (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি এ কথা বলেননি, “কিন্তু পোশাকে অল্প পরিমাণ অঙ্কিত কারুকার্য থাকলে কোন সমস্যা নেই?” আবূ তালহা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। কিন্তু উহাই (ছবি সরিয়ে ফেলা) আমার জন্য উত্তম। সহীহ্‌, গাইয়াতুল মারাম (১৩৪)

【19】

ছবি নির্মাতা ও চিত্রকরদের প্রসঙ্গে

ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক কোন ছবি আঁকে, সে যে পর্যন্ত তাতে প্রাণ সঞ্চার করতে না পারবে সে পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তাকে আযাব দিতে থাকবেন। অথচ সে কোন দিনও তাতে প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। যে লোক কোন দল বা সম্প্রদায়ের গোপন কথা অগোচরে কান পেতে শুনে, অথচ তারা বিষয়টি তার কাছ থেকে গোপন রাখতে চায় তার কানে কিয়ামাত দিবসে উত্তপ্ত সীসা ঢেলে দেওয়া হবে। সহীহ্‌, গাইয়াতুল মারাম (১২০, ৪২২), বুখারী, মুসলিম (১০) প্রথম অংশ

【20】

চুলে কলপ লাগানো প্রসঙ্গে

আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা বার্ধক্যের শুভ্রতা পরিবর্তন করে দাও এবং ইয়াহূদীদের মতো হয়ো না। সহীহ্‌, জিল বাবুল মারআহ (১৮৯), সহীহা (৮৩৬) আবূ যার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বার্ধক্যের শুভ্রতা পরিবর্তনের জন্য মেহেদি (হেনা) ও কাতাম (কালচে ঘাস) তৃণই উত্তম। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (২৬২২)

【21】

মাথার চুল রাখা এবং কাঁধ পর্যন্ত তা লম্বা করা প্রসঙ্গে

আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন মধ্যম আকৃতির। তিনি অধিক লম্বাও ছিলেন না আবার খাটোও ছিলেন না। তিনি সুঠাম শরীরের অধিকারী ছিলেন এবং তাঁর গায়ের রং ছিল বাদামী। তাঁর মাথার চুল কোঁকড়ানোও ছিল না আবার একেবারে সোজাও ছিল না। তিনি রাস্তায় চলাচলের সময় সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটতেন। সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল (১, ২), নাসা-ঈ আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, আমি ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র হতে পানি নিয়ে গোসল করতাম। তাঁর বাবরি চুল কাঁধের উপরে কিন্তু কানের লতির নিচ পর্যন্ত প্রলম্বিত ছিল। হাসান সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৬০৪, ৩৬৩৫)

【22】

বার বার চুল আচড়ানো নিষেধ

আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বার বার চুল আচড়াতে বারণ করেছেন। সহীহ্‌, সহীহা (৫০১)

【23】

সুরমা লাগানো প্রসঙ্গে

ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ইসমিদ সুরমা লাগাও। এটা চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং চোখের পাতার লোম গজায়। তিনি মনে করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি সুরমাদানি ছিল। তা হতে তিনি প্রতি রাতে তিনবার ডান চোখে এবং তিনবার বাঁ চোখে সুরমা লাগাতেন। “তিনি মনে করেন” এই শব্দ ব্যতীত হাদীসটি সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল (৪২)

【24】

হাঁটু গেড়ে জড়োসড়ো হয়ে বসা এবং একটি চাদরে সর্বাঙ্গ পেচিয়ে বসা নিষেধ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাপড় পরার দুইটি পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছেন। একটি কাঁধ উদম রেখে একই চাদর পুরো গায়ে জড়িয়ে নেওয়া; একই পোশাকে পেট, ঊরু ও পায়ের গোছা ঢেকে নিতম্ব মাটিতে ঠেকিয়ে দুই হাঁটু উঁচু করে বসা এবং লজ্জাস্থানে এর কোন অংশ না থাকা। সহীহ্‌, নাসা-ই

【25】

পরচুলা ব্যবহার প্রসঙ্গে

ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পরচুলা (কৃত্রিম চুল) সংযোগকারিণী ও ব্যবহারকারিণী এবং উল্কি অঙ্কনকারিণী ও যে তা অঙ্কন করায়, এদেরকে আল্লাহ তা’আলা অভিসম্পাত করেছেন। নাফি (রহঃ) বলেন, সাধারণতঃ নিচের মাড়িতেই আঁকা হয়। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (১৯৮৭), নাসা-ই

【26】

রেশমের তৈরী আসনে বসা নিষেধ

বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) তিনি বলেন, রেশম দ্বারা বানানো আসনে বসতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছন। সহীহ্‌, আদাবুয যিফাফ (১২৫), মিশকাত তাহকীক ছানী (৪৩৫৮), সহীহা (২৩৯৬), নাসা-ঈ

【27】

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিছানা

আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘুমানোর বিছানাটি ছিল চামড়া দিয়ে বানানো। এর ভিতরে খেজুর গাছের বাকল ভর্তি ছিল। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৪১৫১), নাসা-ঈ

【28】

জামা প্রসঙ্গে

উম্মু সালামা (রাঃ) তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সবচাইতে পছন্দের পোশাক ছিল জামা। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৭৫) উম্মু সালামা (রাঃ) তিনি বলেন, জামা-ই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সবচাইতে প্রিয় পোশাক ছিল। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস। উম্মু সালামা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সবচাইতে পছন্দনীয় পোশাক ছিল জামা। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস আসমা বিনতু ইয়াযীদ ইবনু সাকান আল-আনসারিয়া (রাঃ) তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর জামার হাতা কব্জি পর্যন্ত ছিল। যঈফ, মুখতাসার শামায়িল (৪৭) যঈফা (৩৪৫৭)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন জামা পরতেন, তখন ডান দিক হতে পরা আরম্ভ করতেন। সহীহ্‌, মিশকাত তাহকীক ছানী (৪৩৩০)

【29】

নতুন কাপড় পরার দু’আ

আবূ সাঈদ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নতুন কাপড় পরার সময় প্রথমে সেটির নাম নিতেন। যেমন পাগড়ী, জামা অথবা চাদর। তারপর তিনি বলতেন: “হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা তোমার জন্য। এটা তুমি আমাকে পরিয়েছো। আমি তোমার নিকট এর মধ্যে নিহিত কল্যাণ এবং যে উদ্দেশ্যে এটা বানানো হয়েছে তার কল্যাণ চাইছি। আর এর মধ্যে নিহিত ক্ষতি এবং যে উদ্দেশ্যে এটা বানানো হয়েছে তার অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় চাই”। সহীহ্, মিশকাত (৪৩৪২)

【30】

জুব্বা ও চামড়ার মোজা পরা প্রসঙ্গে

উরওয়া ইবনুল মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) হতে তার বাবা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি রূমী জুব্বা পরেন। এর হাতাদু’টি ছিল সংকীর্ণ। সহীহ্, মুখতাসার শামা-ইল (৫৭), সহীহ্ আবূ দাঊদ (১৩৯-১৪০), নাসা-ঈ মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাহিয়া আল-কালবী (রাঃ) একজোড়া চামড়ার মোজা উপহার দিয়েছিলেন। তিনি তা পরিধান করেন। সহীহ্, মুখতাসার শামা-ইল (৫৯)

【31】

স্বর্ণ দিয়ে দাঁত বাঁধানো

আরফাজা ইবনু আসআদ (রাঃ) তিনি বলেন, জাহিলী আমলে কুলাবের যুদ্ধে আমার নাক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। আমি রুপার একটি নাক বাঁধিয়ে নিলাম। কিন্তু আমি তাতে দুর্গন্ধ অনুভব করি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে একটি স্বর্ণের নাক বানিয়ে নিতে বললেন। হাসান, মিশকাত তাহকীক ছানী (৪৪০০)

【32】

হিংস্র প্রাণীর চামড়া কাজে লাগানো নিষেধ

আবুল মালীহ (রহঃ) ১৭৭১/১. আবুল মালীহ (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, হিংস্র প্রাণীর চামড়া ফরাশ হিসাবে ব্যবহার করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। সহীহ্, সহীহা (১০১১), মিশকাত (৫০৬) আবুল মালীহ (রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে বর্ণিত আছে, হিংস্র প্রাণীর চামড়া কাজে লাগানোকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেন। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস মুআয ইবনু হিশাম-তার পিতা হতে, তিনি কাতাদা হতে, তিনি আবুল মালীহ হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি হিংস্র প্রাণীর চামড়া কাজে লাগানোকে অপছন্দ বলে মনে করেন। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসের সনদ “আবুল মালীহ-তার পিতা হতে” এভাবে সাঈদ ইবনু আবূ আরূবা ছাড়া আর কেউ বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। ----------------- ১৭৭১/২. আবুল মালীহ (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, হিংস্র প্রাণীর চামড়া ব্যবহারকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। সহীহ্‌, দেখুন পূর্বের হাদীস এই বর্ণনাটিই অনেক বেশি সহীহ্ (কারণ স্মরণ শক্তির দিক হতে শুবা (রহঃ) সাঈদ ইবনু আবূ আরূবার চাইতে অগ্রগণ্য)।

【33】

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পাদুকা

কাতাদা (রহঃ) তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জুতাজোড়া কেমন ছিল? তিনি বললেন, এর দু’টি করে ফিতা ছিল। সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল (৬০, ৬২) আনাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জুতাজোড়ার দু’টি করে ফিতা ছিল। সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল (৬০, ৬২)এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ইবনু আব্বাস ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।

【34】

এক পায়ে জুতা পরে হাঁটা নিষেধ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এক পায়ে জুতা পরে যেন তোমাদের কেউ না হাঁটে। হয় সে দুটো পায়ে জুতা পরবে অথবা দুটো পা-ই উদম রাখবে। সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (৩৬১৭), নাসা-ঈ

【35】

দাঁড়ানো অবস্থায় জুতা পরা মাকরূহ্

আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, দাঁড়ানো অবস্থায় কাউকে জুতা পরতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৬১৮) আনাস (রাঃ) মা’মার হতে কাতাদার বরাতে আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত আছে, কাউকে দাঁড়িয়ে জুতা পরতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস

【36】

এক পায়ে জুতা পরে হাঁটার সম্মতি প্রসঙ্গে

আইশা (রাঃ) তিনি বলেছেন, খুব কমই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক পায়ে জুতা পরে হেঁটেছেন। মুনকার, মিশকাত (৪৪১৬) আইশা (রাঃ) এক পায়ে জুতা পরে তিনি চলাফিরা করেছেন। সহীহ্‌, প্রাগুক্ত

【37】

প্রথমে কোন্‌ পায়ে জুতা পরতে হবে

আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ জুতা পরার সময় আগে ডান পায়ে জুতা পড়বে এবং তা খোলার সময় আগে বাম পায়ের জুতা খুলবে। অতএব জুতা পরার সময় ডান পা প্রথম হবে এবং খোলার সময় ডান পা দ্বিতীয় হবে। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬১৬), মুসলিম এবং বুখারীও একই অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আইশা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেনঃ তুমি যদি আমার সাথে মিলিত হতে চাও তবে একজন সফরকারীর মত পাথেয় নিয়ে দুনিয়াতে খুশি থাক। আর তুমি ধনীদের সাথে উঠা-বসা ও মেলামেশার ব্যাপারে সতর্ক থাক। তোমার পরনের পোশাক পুরাতন হলেও তাতে তালি না লাগানো পর্যন্ত তা বাতিল করো না। খুবই দুর্বল, যঈফা (১২৯৪), তা’লীকুর রাগীব (৪/৯৮), মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪৩৪৪)।

【38】

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মক্কায় প্রবেশ প্রসঙ্গে

উম্মু হানী (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মক্কায় পদার্পণের সময় তাঁর মাথার চুলে চারটি বেণী ছিল। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, উম্মু হানী (রাঃ) হতে মুজাহিদ (রহঃ) কিছু শুনেছেন বলে আমার জানা নেই। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৬৩১)

【39】

সাহাবীদের টুপি কেমন ছিল?

আবূ সাঈদ আবদুল্লাহ ইবনু বুসর (রহঃ) তিনি বলেছেন, আমি আবূ কাবশা আনসারী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাহাবীদের টুপি ছিল মাথা জুড়ে বিস্তৃত। যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪৩৩৩)।

【40】

লুঙ্গির সর্বনিম্ন সীমা

হুযাইফা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বা তাঁর জঙ্ঘা (হাঁটুর নিচের মাংসপেশী) ধরে বলেনঃ এটা হল লুঙ্গি বা পায়জামার জায়গা। তুমি না মানতে চাইলে আরও নিচে নামাতে পার। যদি তাও মানতে রাজী না হও তবে জেনে রাখ, লুঙ্গি-পায়জামার পায়ের গোছা স্পর্শ করার কোন অধিকার নেই। সহীহ্‌, ইবনু মা-জাহ (৩৫৭২)

【41】

টুপির উপর পাগড়ী বাঁধা

আবূ জাফর ইবনু মুহাম্মদ ইবনু রুকানা (রহঃ) হতে তার পিতা রুকানা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে কুস্তি লড়েন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ভূপাতিত করেন। রুকানা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আমাদের ও মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্য হল টুপির উপর পাগড়ী পরা। যঈফ, মিশকাত (৪৩৪০), ইরওয়া (১৫০৩)।

【42】

লোহার আংটি

আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা (রহঃ) হতে তার পিতা বুরাইদা (রাঃ) বলেছেন, এক ব্যক্তি লোহার আংটি পরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকটে এলে তিনি বলেনঃ তোমার কাছ থেকে জাহান্নামবাসীদের অলংকার ফেলে দাও। সে ফিরে গিয়ে আবার পিতলের আংটি পরে তাঁর নিকটে এলে তিনি বললেনঃ কি ব্যাপার! আমি তোমার হতে মূর্তির গন্ধ পাচ্ছি? এবার সে ফিরে গিয়ে সোনার আংটি পরে তাঁর নিকটে এলে তিনি বললেনঃ কি ব্যাপার! আমি তোমাকে জান্নাতীদের অলংকার পরা দেখতে পাচ্ছি? তখন সে বলল, আমি কিসের আংটি বানাব? তিনি বললেনঃ এক মিসকালের (সাড়ে চার মাসা) কম রূপা দিয়ে আংটি বানাও। যঈফ, মিশকাত (৪৩৯৬), আদাবু যিফাফ (১২৮)।

【43】

আংটি কোন্‌ আঙ্গুলে পরতে হবে?

আবূ মূসা (রাঃ) তিনি বলেন, আলী (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে রেশমী কাপড় পরতে, লাল জিনপোষের উপর বসতে এবং আমার আংটি এই এই আঙ্গুলে পরতে বারণ করেছেন। এই বলে তিনি তাঁর তর্জনী ও মধ্যমার দিকে ইশারা করেন। এই অথবা এই আঙ্গুলে শব্দে হাদীসটি সহীহ্‌, বর্ণনাকারী আসিম সন্দেহ করেছেন। যঈফা (৫৪৯৯), মুসলিম

【44】

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পছন্দনীয় পোশাক

আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেসব পোশাক পরতেন তার মধ্যে আঁচলবিশিষ্ট (ইয়ামানী) চাদর তাঁর নিকট সবচাইতে বেশি পছন্দের ছিল। সহীহ্‌, মুখতাসার শামা-ইল মুহাম্মাদীয়া (৫১), নাসা-ঈ