29. ওয়ালাআ ও হিবা

【1】

আযাদকারী ব্যক্তিই ওয়ালাআর অধিকারী

আইশা (রাঃ) তিনি বারীরা (রাঃ) কে ক্রয় করার ইচ্ছা করলেন। কিন্তু মালিক পক্ষ নিজেদের জন্য ওয়ালাআর শর্তারোপ করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে ব্যক্তি মূল্য পরিশোধ করে অথবা যে ব্যক্তি নিয়ামাতের (আযাদকৃতের) মালিক সে-ই ওয়ালাআর অধিকারী। সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (২৫৮৯), বুখারী, মুসলিম।

【2】

ওয়ালাআ-স্বত্ব বিক্রয় করা বা হিবা করা নিষেধ

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) ওয়ালাআ-স্বত্ব বিক্রয় করতে অথবা হিবা করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৭৪৭, ২৭৪৮), বুখারী মুসলিম।

【3】

যে ব্যক্তি নিজের মনিব অথবা বাবাকে পরিত্যাগ করে অন্য কাউকে নিজের মনিব অথবা বাবা বলে দাবি করে ।

ইবরাহীম আত-তাইমী (রাহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে তিনি বলেন, আলী (রাঃ) আমাদের সামনে খুতবাহ দেন এবং বলেন, যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, আমাদের নিকট আল্লাহ্ তা‘আলার গ্রন্থ এবং এই পুস্তিকা যার মধ্যে উটের বয়সের বিবরণী ও জখমের ক্ষতিপূরণের বিধান রয়েছে তা ব্যতীত আরো কোন গ্রন্থ আছে সে মিথ্যাবাদী। তিনি তার খুৎবায় আরো বলেন, এই গ্রন্থে আরো আছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাদীনার হেরেমের সীমানা হচ্ছে আইর পাহাড় হতে সাওর পর্বত পর্যন্ত। যদি কেউ এতে কোন প্রকার বিদ‘আতের প্রচলন ঘটায় অথবা কোন বিদ‘আতীকে আশ্রয় দেয় তাহলে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতাগণ ও সকল মানুষের অভিসম্পাত। কিয়ামাত দিবসে তার কোন ফরয বা নাফল ইবাদাতই আল্লাহ তা‘আলা ক্ববূল করবেন না। যে লোক তার বাবাকে পরিত্যাগ করে অন্য কাউকে বাবা বলে দাবি করে (নিজের বংশপরিচয় গোপন করে অন্য বংশের পরিচয় দেয়) অথবা তার মনিবকে ছেড়ে দিয়ে অন্য মনিবের নিকট পালিয়ে যায় তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতাগণ এবং সকল মানুষের অভিশাপ। তার ফরয বা নাফল কোন ইবাদাতই গ্রহণ করা হবে না। মুসলমানদের যিম্মা প্রদান একই সমান ও অখন্ড। তাদের মধ্যকার সবচেয়ে সাধারণ ব্যক্তি (কাউকে) আশ্রয় দান করলে তাও রক্ষা করা হবে। সহীহ ইরওয়া (১০৫৮) নাক্বদুল কাত্তানী (৪২), সহীহ আবূ দাঊদ (১৭৭৩-১৭৭৪), বুখারী, মুসলিম।

【4】

কেউ তার সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করলে

আবূ হুরাইরা (রাঃ) তিনি বলেন, ফাযারা বংশের একজন লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমার স্ত্রী একটি কালো বর্ণের ছেলেসন্তান প্রসব করেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তোমার উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সেগুলো কি বর্ণের? সে বলল, লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে ধূসর বর্ণের উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি ধূসর বর্ণের উটও আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে এই ধরনের রং কোথা হতে এল? সে বলল, হয়তো বংশধারা হতে তা এসেছে (এই বংশে হয়তো এরকম কোন উট ছিল)। তিনি বললেনঃ এটাও হয়তো বংশধারার টান, (তোমার) পূর্বপুরুষের মধ্যে কেউ এরূপ ছিল। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২১০২), বুখারী, মুসলিম।

【5】

চেহারা ও গঠন-প্রকৃতি দেখে বংশ নির্ণয় (কিয়াফা)

আইশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উৎফুল্লভাবে তার সামনে আসেন। তাঁর মুখমন্ডলের রেখাগুলো বিদ্যুতের মতো চকচক করছিল। তিনি বললেনঃ তুমি কি দেখনি! এইমাত্র একজন বংশ বিশারদ যাইদ ইবনু হারিসা ও উসামা ইবনু যাইদকে দেখে বলল, এগুলো একটি হতে আর একটি উদগত হয়েছে। সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৩৪৯), বুখারী, মুসলিম।

【6】

উপঢৌকন আদান-প্রদানে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উৎসাহ প্রদান

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমরা একজন অন্যজনকে উপহার দাও। উপহার মনের ময়লা দূর করে। এক প্রতিবেশিনী অপর প্রতিবেশিনীকে বকরীর পায়ের এক টুকরা ক্ষুর হলেও তা উপহার দিতে যেন অবহেলা না করে। য’ঈফ, মিশকাত ৩০২৮ হাদীসের ২য় অংশ এক প্রতিবেশিনী .. শেষ পর্যন্ত সহীহ, বুখারী, মুসলিম।

【7】

দান করার পর তা ফিরিয়ে নেয়া আপত্তিকর

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক দান করার পর তা আবার ফিরিয়ে নেয় সে কুকুর সমতুল্য, যে পেট ভরে খাওয়ার পর বমি করে, আবার ফিরে এসে তা খায়। সহীহ, ইরওয়া (৬/৩৬), বুখারী, সুমলিম সংক্ষিপ্ত ভাবে। ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ উপহার প্রদানের পর তা আবার ফিরিয়ে নেয়া কারো জন্য বৈধ নয়। তবে পিতা তার সন্তানকে দেয়া উপহার ফিরিয়ে নিতে পারে। উপহার প্রদানের বা দানের পর তা পুনরায় যে লোক ফিরিয়ে নেয় সে লোক কুকুর সমতুল্য। যেমন কুকুর পেট ভরে খাওয়ার পর বমি করে এবং তা আবার ভক্ষণ করে। সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।