14. হেবা

【1】

কোন ব্যক্তি এক সন্তানকে দান করলে (এবং অন্যদের বঞ্চিত করলে) ।

নু’মান বিন বাশীর (রাঃ) তিনি বলেন, যে, তার পিতা তাকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলেন, আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি নোমানকে আমার অমুক অমুক মাল দান করলাম। তিনি বলেনঃ তুমি নোমানকে যেমন দান করেছো, তোমার অন্য সকল পুত্রকেও কি তদ্রূপ দান করেছো? তিনি বলেন, না। তিনি বলেনঃ তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে সাক্ষী বানাও। তিনি বলেনঃ তাদের সকলে সমভাবে তোমার সাথে সদ্ব্যবহার করলে তা কি তোমাকে আনন্দিত করবে না? তিনি বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ তাহলে এরূপ করো না। [২৩৭৫] নু’মান বিন বাশীর (রাঃ) তার পিতা তাকে একটি গোলাম দান করার পর তার অনুকূলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সাক্ষী করার জন্য তাঁর নিকট আসেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি কি তোমার সকল পুত্রকে দান করেছো? তিনি বলেন, না। তিনি বলেনঃ তাহলে তুমি তা ফেরত নাও। [২৩৭৬]

【2】

ব্যক্তি নিজ সন্তানকে কিছু দান করে পুনরায় তা ফেরত নিলো।

ইবনু আব্বাস ও ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিছু দান করার পর পুনরায় তা ফেরত নেয়া দানকারীর জন্য হালাল নয়। তবে পিতা তার পুত্রকে যা দান করে তা ফেরত নিতে পারে। [২৩৭৭] আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ যেন তার হেবাকৃত জিনিস (দান) ফেরত না নেয়, তবে পিতা পুত্রকে প্রদত্ত হেবা ফেরত নিতে পারে। [২৩৭৮]

【3】

উমরা (জীবনস্বত্ব)

আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জীবনস্বত্ব বলতে কিছু নেই। তবে কাউকে জীবনস্বত্ব দেয়া হলে সেটা তারই প্রাপ্য। [২৩৭৯] জাবির (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে জীবনস্বত্ব দান করলে তা তার এবং তার ওয়ারিসদের। দানকারীর কথা তাতে তার অধিকার কর্তন (অবসান) করে দিয়েছে। অতএব যাকে জীবনস্বত্ব দান করা হয়েছে তার ও তার ওয়ারিসদের প্রাপ্য। [২৩৮০] যায়দ বিন সাবিত (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবনস্বত্বকে (স্বত্বভোগীর) ওয়ারিসদের জন্য সাব্যস্ত করেছেন। [২৩৮১]

【4】

রুকবা

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রুকবা বলতে কিছু নেই। তবে কারো অনুকূলে কিছু রুকবা (এক প্রকার দান) করা হলে তার জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরও সে তার মালিক হবে। রাবী বলেন, রুকবা এই যে, দানকারি বললো, “আমার ও তোমার মধ্যে যে শেষে মরবে এটা তার। ” [২৩৮২] জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জীবনস্বত্ব (উমরা) এক প্রকার দান, যাকে দেয়া হয়েছে সেটা তার এবং রুকবা ও এক প্রকারের দান, যাকে দেয়া হয়েছে সেটা তার। [২৩৮৩]

【5】

হেবা (দান) করে তা ফেরত নেয়া

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার দান ফেরত নেয় সে এমন কুকুরের সমতুল্য যে পেট ভরে খাওয়ার পর বমি করে, তারপর ফিরে এসে আবার তা গলধঃকরণ করে। [২৩৮৪] ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কিছু দান করে তা ফেরত নেয়, সে নিজ বমি ভক্ষণকারীর সমতুল্য। [২৩৮৫] ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি দান করে তা ফেরত নেয়, সে কুকুরের সমতুল্য, যে বমি করে তা পুনরায় ভক্ষণ করে। [২৩৮৬]

【6】

যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় হেবা (দান) করলো

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যতক্ষণ না দানের বিনিময় নেয়া হয়, ততক্ষণ দানকারীই তার বেশী হকদার। [২৩৮৭]

【7】

স্বামীর অনুমতি ব্যতীত স্ত্রীর দান করা

আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রদত্ত এক খুতবায় বলেনঃ কোন নারীর জন্য তার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত নিজ সম্পদ হস্তান্তর করা জায়েয নয়। কেননা সে তার সম্মান-সম্ভ্রম রক্ষণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে দায়বদ্ধ। [২৩৮৮] ইসমু মুবহাম বা নাম অজ্ঞাত কাব বিন মালিক (রাঃ) এর স্ত্রী খায়রা (রাঃ) নিজের গহনাপত্রসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলেন, আমি এগুলি দান- খয়রাত করতে চাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেনঃ স্বামীর সম্মতি ব্যতিত নারীর জন্য তার নিজ সম্পদ দান করা জায়েয নয়। তুমি কি কাব এর সম্মতি গ্রহন করেছ? তিনি বলেন, হাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোক পাঠিয়ে কাব বিন মালিক (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেনঃ তুমি কি খায়রাকে তার গহনাপত্র দান করার অনুমতি দিয়েছ? তিনি বলেন, হাঁ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার অলংকারপত্র গ্রহণ করেন। [২৩৮৯]