16. বন্ধক

【1】

আবূ বকর বিন আবূ শায়বাহ।

আয়িশাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ইহূদীর নিকট থেকে (বাকীতে) কিছু খাদ্যশস্য ক্রয় করেন এবং তার কাছে নিজের লৌহবর্মটি বন্ধক রাখেন। [২৪৩৬] আনাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনার এক ইহূদীর নিকট তাঁর লৌহবর্মটি বন্ধক রেখে তার থেকে নিজ পরিবারের জন্য কিছু বার্লি ক্রয় করেন। [২৪৩৭] আসমা’ বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল করেন এবং তখন তাঁর লৌহবর্মটি এক ইহূদীর নিকট কিছু খাদ্যশস্যের বিনিময়ে বন্ধক ছিল। [২৪৩৮] ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইনতিকাল করেন, তখন তাঁর লৌহবর্মটি এক ইহূদীর নিকট তিরিশ সা বার্লির বিনিময়ে বন্ধক ছিল। [২৪৩৯]

【2】

বন্ধকী জন্তুতে আরোহণ এবং তার দুধ পান করা

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: বন্ধককৃত পশুতে আরোহন করা যাবে এবং বন্ধকী পশুর দুধও পান করা যাবে। তবে যে ব্যাক্তি পশুটিকে বাহনরূপে ব্যবহার করবে বা তার দুধ পান করবে সে-ই তার আহার ও সেবাযত্নের ব্যবস্থা করবে। [২৪৪০]

【3】

বন্ধকী জিনিস বাজেয়াপ্ত করা যাবে না

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বন্ধকী জিনিস বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। [২৪৪১]

【4】

শ্রমিকদের মজুরী সম্পর্কে

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আমি তিন শ্রেণীর লোকের বিরুদ্ধে বাদী হবো। আর আমি যার বিরুদ্ধে বাদী হবো, তার বিরুদ্ধে জয়ী হবো। কিয়ামতের দিন আমি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো তারা হলোঃ যে ব্যক্তি আমার নামে অঙ্গীকার করে, পরে সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, যে ব্যক্তি অর্থ উপার্জনের জন্য স্বাধীন মানুষ বিক্রয় করে এবং যে ব্যক্তি শ্রমিক নিয়োগ করে তার থেকে পূর্ণরূপে কাজ আদায় করে নেয়, কিন্তু তার পূর্ণ মজুরী দেয় না। [২৪৪২] আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শ্রমিকের দেহের ঘাম শুকাবার পূর্বে তোমরা তার মজুরী দাও। [২৪৪৩]

【5】

পেটে-ভাতে শ্রমিক নিয়োগ

উতবাহ ইবনুল নুদ্দার (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি সূরা তা-সীন-মীম পাঠ করলেন। শেষে মূসা (আঃ) -এর ঘটনা পর্যন্ত পৌঁছে তিনি বলেনঃ মূসা (আঃ) আট অথবা দশ বছর যাবত নিজেকে শ্রমিকরূপে নিয়োজিত রেখেছিলেন নিজের লজ্জাস্থান হেফাজতের (বিবাহ) ও পেটের আহারের বিনিময়ে। [২৪৪৪] আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমি ইয়াতীমরূপে লালিত-পালিত হয়েছি এবং মিসকীনরূপে হিজরত করেছি। আমার পেটের আহার ও পালাক্রমে বাহনে আরোহনের শর্তে আমি গাযওয়ান-কন্যার শ্রমিকরূপে নিয়োজিত হই। আমি লোকদের জন্য কাঠ সংগ্রহ করতাম। তারা জন্তুযান থেকে অবতরণ করলে আমি আরোহণ করতাম এবং তারা জন্তুযানে আরোহণ করলে আমি তা হাঁকিয়ে নিতাম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি তাঁর দ্বীনকে শক্তিশালী করেছেন এবং আবূ হুরায়রাকে ইমাম (শাসক) বানিয়েছেন। [২৪৪৫]

【6】

এক একটি খেজুরের বিনিময়ে এক বালতি করে পানি উত্তোলন এবং উত্তম খেজুরের শর্তারোপ।

ইবনু আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদ্যাভাবে পতিত হলেন। ‘আলী (রাঃ) তা জানতে পেরে কাজের সন্ধানে বের হলেন, যাতে কিছু রোজগার করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খাদ্যাভাব দূর করতে পারেন। তিনি এক ইহূদীর খেজুর বাগানে পৌঁছে প্রতি বালতি পানির বিনিময়ে একটি করে খেজুরের শর্তে (কূপ থেকে) সতের বালতি পানি উঠালেন। ইহূদী তাকে সতেরটি উত্তম খেজুর বেছে নেয়ার এখতিয়ার দিলো। তিনি খেজুরসহ নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট উপস্থিত হলেন। [২৪৪৬] আলী (রাঃ) আমি এক একটি উত্তম খেজুর প্রদানের শর্তে (কূপ থেকে) এক বালতি করে পানি উত্তোলন করেছি। [২৪৪৭] আবূ হুরায়রা (রাঃ) আনসার সম্প্রদায়ের এক সাহাবী এসে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কী ব্যাপার, আমি আপনাকে বিবর্ণ দেখছি। তিনি বলেনঃ ক্ষুধার কারণে। অতএব আনসারী নিজ বাড়িতে ফিরে গেলেন, কিন্তু বাড়িতে কিছু না পেয়ে কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। তিনি এক ইহূদীকে খেজুর বাগানে পানি সেচ করতে দেখলেন। আনসারী ইহূদীকে বললেন, আমি কি তোমার বাগানে পানি সেচে দিবো? সে বললো, হাঁ। তিনি বললেন, প্রতি বালতির বিনিময়ে একটি করে খেজুর। আনসারী আরও শর্ত লাগান যে, কালো খেজুর, শুষ্ক খেজুর ও নিকৃষ্ট খেজুর নিবো না, বরং উত্তম খেজুর নিবো। অতঃপর তিনি পানি সেচ করে দু’ সা’ পরিমাণ খেজুর পেলেন এবং তা নিয়ে নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে হাজির হলেন। [২৪৪৮]

【7】

এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশের চুক্তিতে ভাগচাষ

রাফি’ বিন খাদিজ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাকালা ও মুযাবানা পদ্ধতির লেনদেন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ তিন ব্যাক্তি জমি চাষাবাদ করবে। (১) যার জমি আছে সে তা চাষাবাদ করবে, (২) যাকে ধারে জমি দান করা হয়েছে সে তার চাষাবাদ করবে এবং (৩) যে ব্যক্তি নগদ অর্থে জমি ভাড়া নেয়। [২৪৪৯] রাফি’ বিন খাদীজ (রাঃ) (ইবনু উমার) বলেন, আমরা মুখাবারা (ভাগচাষ) করতাম এবং তা দূষণীয় মনে করতাম না। এক পর্যা্য়ে আমরা রাফি’ বিন খাদীজ (রাঃ) -কে বলতে শুনলান, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাগচাষ নিষেধ করেছেন। তখন আমরা তার কথায় এটা ত্যাগ করলাম। [২৪৫০] জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কতক লোকের উদ্ধৃত্ত জমি ছিল। তারা তা এক-তৃতীয়াংশ ও এক-চতুর্থাংশ ফসলের চুক্তিতে বর্গা দিতো। নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যার উদ্ধৃত্ত জমি আছে সে যেন নিজে তা চাষাবাদ করে অথবা তার ভাইকে চাষাবাদ করতে দেয়। সে তাতে সম্মত না হলে তার জমি পতিত রাখুক। [২৪৫১] আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার জমি আছে সে যেন তা নিজে চাষাবাদ করে অথবা তার অপর ভাইকে কোনরূপ বিনিময় ছাড়াই চাষাবাদ করতে দেয়। সে তাতে সম্মত না হলে তার জমি পতিত রাখুক। [২৪৫২]

【8】

জমি ভাড়া নেয়া

ইবনু উমার (রাঃ) তিনি তার জমি বর্গা পদ্ধতিতে ভাড়া দিতেন। তার নিকট এক ব্যক্তি এসে তাকে বিন খাদীজ (রাঃ) -এর বরাতে বললো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জমি বর্গা দিতে নিষেধ করেছেন। তখন বিন উমর (রাঃ) তার কাছে গেলেন এবং আমিও তার সাথে গেলাম। বালাত নামক স্থানে তিনি তার সাক্ষাত পেয়ে এ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বর্গাচাষ নিষিদ্ধ করেছেন। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) জমি বর্গা দেয়া ত্যাগ করেন। [২৪৫৩] জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ যার জমি আছে সে যেন তা নিজে চাষাবাদ করে অথবা অন্যকে চাষাবাদ করতে ধার দেয়, কিন্তু যেন ইজারা (বর্গা) না দেয়। [২৪৫৪] আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাকালা নিষিদ্ধ করেছেন। মুহাকালা হলো, জমি কেরায়া (বর্গা) দেয়া। [২৪৫৫]

【9】

খালি জমি নগদ বিক্রয় করা অনুমোদিত

ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বহু লোককে জমি কেরায়া দেয়া সম্পর্কে সমালোচনা করতে শুনে বলতেনঃ সুবহানাল্লাহ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তার জমি তার অপর ভাইকে বিনা লাভে কেন চাষাবাদ করতে দেয় না? তিনি তা কেরায়া (বর্গা) দিতে নিষেধ করেননি। [২৪৫৬] ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো জমি তার ভাইকে বিনা লাভে চাষাবাদ করতে দেয়া, এই এই পরিমাণ নির্ধারিত কিছু গ্রহণ করে চাষাবাদ করতে দেয়ার চাইতে তার জন্য অধিক কল্যাণকর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, এটাই হলো হাকল এবং আনসারদের ভাষায় তা হলো মুহাকালাহ (বর্গাচাষ)। [২৪৫৭] হানযালাহ বিন কায়স রাফি‘ বিন খাদীজ (রাঃ), কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা এই শর্তে জমি বর্গা দিতাম যে, এই জমিতে যা উৎপন্ন হবে তা তোমার এবং এই জমিতে যা উৎপন্ন হবে তা আমার। অতঃপর আমাদেরকে উৎপন্ন শস্যের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে জমি বর্গা দিতে নিষেধ করা হয়। অবশ্য আমাদেরকে নগদ অর্থে জমি ইজারা দিতে নিষেধ করা হয়নি। [২৪৫৮]

【10】

ভাগচাষে যা অপছন্দনীয়

জুহায়র বিন রাফি‘ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এমন একটি কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন, যা ছিল আমাদের জন্য উপকারী। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন সেটাই যথার্থ। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা তোমাদের জমি চাষাবাদের ব্যাপারে কী করো? আমরা বললাম, আমরা তা এক-তৃতীয়াংশ, এক-চতুর্থাংশ শস্য বা কয়েক ওয়াসাক যব বা গমের বিনিময়ে বর্গা দেই। তিনি বলেনঃ তোমরা তা করো না। হয় তোমরা নিজেরা তা চাষাবাদ করো অথবা অন্যকে চাষাবাদ করতে (ধার) দাও। [২৪৫৯] রাফি‘ বিন খাদীজ (রাঃ) আমাদের কেউ তার জমির মুখাপেক্ষী না হলে সে তা এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ বা অর্ধেক ফসলের শর্তে বর্গা দিতো এবং তিনটি নালার শর্ত করতো (এভাবে যে, সেখানকার ফসল আমি নেবো) , আরও শর্ত লাগাতো ভূষি এবং বসন্তকালের পানি থেকে উৎপাদিত ফসল নেয়ার। তখনকার জীবনযাত্রা ছিল খুবই কষ্টকর। তখন জমিতে চাষাবাদ করা হতো লোহা এবং আল্লাহর মর্জিতে অন্যান্য জিনিস দিয়ে, অতঃপর তা থেকে লাভ আসতো। অতঃপর রাফি বিন খাদীজ (রাঃ) আমাদের নিকট এসে বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের এমন একটি কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন যা ছিল তোমাদের জন্য উপকারী। অবশ্য আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য অধিক উপকারী। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের জন্য ভাগচাষ নিষিদ্ধ করেছেন এবং বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার জমির মুখাপেক্ষী নয়, সে যেন তা তার ভাইকে চাষাবাদ করতে ধার দেয় অন্যথায় তা পতিত রাখে। [২৪৬০] যায়দ বিন সাবিত (রাঃ) আল্লাহ রাফি বিন খাদীজ (রাঃ) কে ক্ষমা করুন। আল্লাহর শপথ! সেই হাদীসটি সম্পর্কে আমি তার চেয়ে বেশি অবগত। একদা দু’ ব্যক্তি ঝগড়া করতে করতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর কাছে এসে উপস্থিত হলো। তখন তিনি বললেনঃ এই যদি হয় তোমাদের অবস্থা, তাহলে তোমরা জমি বর্গা দিও না। রাফি (রাঃ) তার কথার শুধু এটুকুই শুনলেনঃ “তাহলে তোমরা জমি বর্গা দিওনা”। [২৪৬১]

【11】

এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ ফসলের শর্তে জমি বর্গা দেয়া জায়েয

আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) (আমর বিন দীনার) বলেন, আমি তাঊস (রাঃ) কে বললাম, হে আবূ আবদুর রহমান! আপনি যদি জমি বর্গা দেয়া ত্যাগ করতেন! কারণ লোকেরা বলাবলি করে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাগচাষ নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, হে আমর! আমি লোকেদের সাহায্য করি এবং তাদের দান করি। মু আয বিন জাবাল (রাঃ) আমাদের উপস্থিতিতে লোকেদের সাথে এরূপ লেনদেন করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাগচাষ নিষেধ করেননি। বরং তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি তার ভাইকে বিনা লাভে জমি দিতো তবে সেটা তার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিময় গ্রহণ করে দেয়ার চেয়ে অধিক কল্যাণকর হতো। [২৪৬২] মুআয বিন জাবাল (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে এবং আবূ বকর (রাঃ) , উমার (রাঃ) ও উসমান (রাঃ) – এর যুগে এক-তৃতীয়াংশ ও এক-চতুর্থাংশ ফসল প্রদানের শর্তে জমি বর্গা দিতেন এবং তোমার এই কালেও তিনি তাই করছেন। [২৪৬৩] ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবশ্যই বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে নিঃস্বার্থভাবে চাষাবাদের জন্য জমি দান করলে সেটা নির্দিষ্ট পরিমাণ উৎপাদিত ফসল প্রদানের শর্তে দেয়ার চেয়ে তার জন্য অধিক কল্যাণকর। [২৪৬৪]

【12】

খাদ্যশস্যের বিনিময়ে জমি বর্গা দেয়া

রাফি‘ বিন খাদীজ (রাঃ) আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে জমি বর্গাচাষে দিতাম। আমার কোন এক চাচা আমাদের নিকট এসে বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার জমি আছে, সে যেন তা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য (উৎপন্ন ফসল) প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করতে না দেয়। [২৪৬৫]

【13】

কেউ বিনা অনুমতিতে অপরের জমি চাষাবাদ করলে

রাফি‘ বিন খাদীজ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন ব্যক্তি অন্য সম্প্রদায়ের জমি তাদের অনুমতি ছাড়া চাষাবাদ করলে সে উৎপন্ন ফসলের কিছুই পাবে না, তবে সে তার চাষাবাদের খরচপত্র ফেরত পাবে। [২৪৬৬]

【14】

উৎপন্ন খেজুর ও আঙ্গুরের ভাগ দেয়ার শর্তে চাষাবাদ করতে দেয়া

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বারবাসীদেরকে উৎপন্ন ফল বা ফসলের অর্ধেক প্রদানের শর্তে তথাকার বাগানের কাজে নিয়োজিত করেন। [২৪৬৭] ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বার এর খেজুর বাগান ও জমি তথাকার বাসিন্দাদের (উৎপন্ন খেজুর ও শস্যের) অর্ধেক প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করতে দেন। [২৪৬৮] আনাস বিন মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বার এলাকা জয় করার পর তা উৎপন্ন শস্যের অর্ধেক প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করতে দেন। [২৪৬৯]

【15】

খেজুর গাছে (পুরুষ ও মাদীর মধ্যে) সংযোগ লাগানো

তালহাহ বিন উবায়দুল্লাহ (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে একটি খেজুর বাগান অতিক্রম করছিলাম। তিনি লোকদেরকে দেখলেন যে, তারা নর খেজুর গাছের কেশর মাদী খেজুর গাছের কেশরের সাথে সংযোজন করছে। তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ এরা কী করছে? তালহা (রাঃ) বলেন, তারা নর গাছের কেশর নিয়ে মাদী গাছের কেশরের সাথে সংযোজন করছে। তিনি বলেনঃ এটা কোন উপকারে আসবে বলে মনে হয় না। লোকজন তাঁর মন্তব্য অবহিত হয়ে উক্ত প্রক্রিয়া ত্যাগ করলো। ফলে খেজুরের উৎপাদন হ্রাস পেলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিষয়টি অবহিত হয়ে বলেনঃ এটা তো ছিল একটা ধারণা মাত্র। ঐ প্রক্রিয়ায় কোন উপকার হলে তোমরা তা করো। আমি (এ বিষয়ে) তোমাদের মতই একজন মানুষ। ধারণা কখনো ভুলও হয়, কখনো ঠিকও হয়। কিন্তু আমি তোমাদের এভাবে যা বলি “আল্লাহ বলেছেন”, সেক্ষেত্রে আমি কখনো আল্লাহ্‌র উপর মিথ্যা আরোপ করবো না। [২৪৭০] আয়িশাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু শোরগোল শুনতে পেয়ে জিজ্ঞেস করেন, এটা কিসের শোরগোল? সাহাবীগণ বলেন, লোকজন নর খেজুর গাছের কেশর মাদী খেজুর গাছের কেশরের সাথে সংযোগ করছে। তিনি বলেনঃ তারা এরূপ না করলেই ঠিক হতো। অতএব তারা সে বছর উক্ত প্রক্রিয়া ত্যাগ করলো। এতে খেজুরের ফলন হ্রাস পেলো। তারা বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জানালে তিনি বলেনঃ তোমাদের একান্তই পার্থিব কোন বিষয় হলে সেটা তোমাদের নিজস্ব ব্যাপার এবং তোমাদের দ্বীনের কোন বিষয় হলে তা আমার কাছে রুজু করবে। [২৪৭১]

【16】

মুসলমানগণ তিনটি বিষয়ে যৌথ অংশীদার

ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলমানগণ তিনটি বিষয়ে যৌথ অংশীদার- পানি, ঘাস ও আগুনে, এগুলোর মূল্য নেয়া হারাম। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, অর্থাৎ প্রবাহমান পানি। [২৪৭২] তাহকিক আলবানিঃ (আরবি) অর্থাৎ তার মূল্য নেয়া হারাম - কথাটি ব্যতীত সহিহ আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তিনটি জিনিস সংগ্রহে (কাউকে) বাধা দেয়া যাবে না- পানি, ঘাস ও আগুন। [২৪৭৩] আয়িশাহ (রাঃ) তিনি বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে যা সংগ্রহে বাধা দেয়া হালাল নয়? তিনি বলেনঃ পানি, লবণ ও আগুন। আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেয়া যাবে না? তিনি বলেনঃ হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করলো, সে যেন ঐ আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করলো। যে ব্যক্তি লবণ দান করলো, ঐ লবণে খাদ্য যতোটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করলো। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করলো এবং যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করলো। [২৪৭৪]

【17】

সরকারীভাবে নদী-নালা ও পানির প্রস্রবণ জায়গিররূপে দান করা

আবয়াদ বিন হাম্মাল (রাঃ) তিনি সাদ্দ মা‘রিব নামক লবণ খনিটি জায়গিররূপে প্রার্থনা করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সেটি জায়গিররূপে দান করলেন। অতঃপর আকরা বিন হাবিস আত-তামীমী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! জাহিলী যুগে আমি লবণের খনিতে গিয়েছিলাম। ঐ এলাকায় কোন পানি নাই। যে ব্যক্তিই সেখানে যায় সে-ই কিছু লবণ সংগ্রহ করে নেয়। তা প্রবাহিত পানির মতই পর্যাপ্ত। (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবয়াদ বিন হাম্মালের নিকট লবণের চুক্তির প্রত্যাহার চাইলেন। আব্‌য়াদ বিন হাম্মাল বলেন, আমি আপনার সাথে চুক্তি রদ করতে প্রস্তুত এই শর্তে যে, সেটিকে আপনি আমার পক্ষ থেকে দানরূপে গণ্য করবেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তা তোমার পক্ষ থেকে দান হিসেবেই গণ্য হবে। আর তা প্রবাহমান পানির ন্যায়, যে-ই সেখানে যাবে তা নিতে পারবে। অধস্তন রাবী ফারাজ ইবনুসাঈদ (রাঃ) বলেন, সেটা বর্তমানেও সেভাবেই আছে। যে-ই সেখানে যায়, সে তা থেকে সংগ্রহ করে। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার থেকে সেটি ফেরত নেয়ার বিনিময়ে তাকে জুরুফ মুরাদ নামক স্থানের এক খণ্ড কৃষিভূমি ও একটি খেজুর বাগান জায়গিররূপে দান করেন। [২৪৭৫]

【18】

পানি বিক্রয় করা নিষেধ

ইয়াস বিন আবদুল মুযানী (রাঃ) তিনি কিছু লোককে পানি বিক্রয় করতে দেখে বলেন, তোমরা পানি বিক্রয় করো না। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে পানি বিক্রয় করতে নিষেধ করতে শুনেছি। [২৪৭৬] জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উদ্বৃত্ত পানি বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। [২৪৭৭]

【19】

চতুষ্পদ জন্তুকে ঘাস খেতে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা দেয়া নিষেধ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন (অপরকে উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা না দেয়, যাতে চতুষ্পদ জন্তুর ঘাস খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। [২৪৭৮] আয়িশাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা দেয়া যাবে না এবং কূপের উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারেও বাধা দেয়া যাবে না। [২৪৭৯]

【20】

উপত্যকা থেকে পানিসেচ এবং যে পরিমাণ পানি আটকে রাখা যাবে

আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবায়র (রাঃ) হাররাহ থেকে প্রবাহিত নালার পানি বন্টনকে কেন্দ্র করে এক আনসারী ব্যক্তি যুবায়র (রাঃ) - এর বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট অভিযোগ দায়ের করে। এ নালা তার খেজুর বাগানে সিঞ্চন করতো। আনসারী বললো, পানি প্রবাহিত হতে দাও। কিন্তু যুবায়র (রাঃ) তা অস্বীকার করেন। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এই বিবাদ পেশ করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন হে জুবায়র, তোমার জমিতে পানি সিঞ্চন কর, অতঃপর তো তোমার প্রতিবেশীর জন্য ছেড়ে দাও। তাতে আনসারী রাগান্বিত হল, এবং বলল হে আল্লাহর রাসূল সে আপনার ফুফুর ছেলে বলে (আপনি এরকম ফয়সালা করলেন) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চেহারা রক্তিমাভ হয়ে গেলো। তিনি বলেনঃ হে যুবায়র ! তোমার ক্ষেতে পানি দাও, তারপর তা আটকে রাখো যাতে আইল পর্যন্ত উঠতে পারে। আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবায়র (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ ! আমার ধারণামতে এ সম্পর্কেই নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয় (অনুবাদ) : “হে মুহাম্মদ ! তোমার প্রতিপালকের শপথ ! এরা কিছুতেই মুমিন হতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের পারস্পরিক মতভেদের ব্যাপারসমূহে তোমাকে বিচারকরূপে মেনে না নিবে, অতঃপর তুমি যে ফয়সালা করবে, সেই সম্পর্কে তারা নিজেদের মনে কিছুমাত্র কুন্ঠাবোধ করবে না। বরং এর সামনে নিজেদেরকে পূর্ণরূপে সোপর্দ করে দিবে”। (সূরা নিসাঃ ৬৫)। [২৪৮০] সা’লাবাহ বিন আবূ মালিক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহযূর নামক উপত্যকার পানি প্রবাহ সম্পর্কে ফয়সালা দেন যে, উঁচু ভূমি নিচু ভূমির উপর অগ্রাধিকার পাবে। উঁচু ভূমিতে পানি জমে তা পায়ের গোছা পর্যন্ত পৌঁছার পর তা নিচু ভূমির দিকে ছেড়ে দিতে হবে। [২৪৮১] আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহযূর উপত্যকার পানি প্রবাহ সম্পর্কে ফয়সালা দেন যে, পানি পায়ের গোছা পরিমাণ না জমা পর্যন্ত আটকে রাখা যাবে, অতঃপর (তার নিম্নের জমিতে) ছেড়ে দিতে হবে। [২৪৮২] উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নালা থেকে খেজুর বাগানে পানি সেচ সম্পর্কে ফয়সালা দেন যে, নিম্ন ভূমির আগে উচ্চভূমি পানিসেচে অগ্রাধিকার পাবে, যাবত না গোছা পর্যন্ত পানি জমে। তারপর পূর্বোক্ত নিয়মে সংলগ্ন নিচু ভূমির দিকে পানি ছেড়ে দিতে হবে। বাগানসমূহের বিলুপ্তি অথবা পানি নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলবে। [২৪৮৩]

【21】

পানি বন্টন

আমর বিন আওফ আল-মুযানী (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গবাদি পশুর পানি পান করানোর দিন প্রথমে ঘোড়াকে পানি পান করতে দিতে হবে। [২৪৮৪] ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহিলী যুগে যে জিনিস যেভাবে ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছিল, তা সেভাবেই বহাল থাকবে। আর যে সব জিনিসের ভাগ-বাঁটোয়ারা ইসলামী যুগে পড়েছে তা ইসলামের বন্টন নীতি অনুসারে ভাগ-বাঁটোয়ারা হবে। [২৪৮৫]

【22】

কূপের সীমানা

আবদুল্লাহ বিন মুগাফ্ফাল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি কূপ খনন করেছে সে তার গবাদী পশুর পানি পান করানোর সুবিধার্থে কূপের চারপাশে চল্লিশ হাত জায়গা পাবে। [২৪৮৬] আবু সাইদ আল-খুদরী (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কূপের চতুঃসীমা হবে কূপ থেকে পানি তোলার রশির দৈর্ঘের সমপরিমাপ। [২৪৮৭]

【23】

গাছের সীমানা

উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফয়সালা দিয়েছেন যে, একটি, দু’টি বা তিনটি খেজুর গাছের স্বত্ব নিয়ে লোকেদের মধ্যে মতবিরোধ হলে, প্রতিটি গাছের ডালপালা যতদূর বিস্তৃত, ততোটা হবে এর সীমা। [২৪৮৮] তাহক্কিক আলবানিঃ (আরবি) ইবনু উমার (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খেজুর গাছের শাখা চারদিকে যতদূর বিস্তৃত হবে ততদূর তার সীমা। [২৪৮৯] তাহক্কিক আলবানিঃ (আরবি)

【24】

কোন ব্যক্তি বাড়ি-ঘর ও জায়গা-জমির বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পদ ক্রয় না করলে।

সাঈদ হুরায়স (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তি বাড়িঘর অথবা স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করার পর তার বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পত্তি ক্রয় না করলে তাকে কখনো তাতে বরকত দান করা হয় না। [উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সানাদটি হলোঃ] ২/২৪৯০ (১) . সাঈদ বিন হুরায়স (রাঃ)। [২৪৯০] তাহকীক আলবানীঃ হাসান। হিযায়ফাহ ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন ব্যক্তি বাড়িঘর বিক্রয় করার পর তার বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পত্তি ক্রয় না করলে তাকে কখনো বরকত দান করা হয় না। [২৪৯১]