32. পোশাক-পরিচ্ছেদ

【1】

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পোশাক

আয়িশাহ (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কারুকার্য খচিত একটি পশমী চাদর পরিহিত অবস্থায় সলাত আদায় করলেন, অতঃপর বললেনঃ এই চাদরের কারুকার্য আমাকে অমনোযোগী করেছে। এটা আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং আমার জন্য তার কারুকার্যবিহীন (আম্বেজানী) চাদর নিয়ে এসো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবূ বুরদাহ আমি আয়িশাহ (রাঃ) এর নিকট প্রবেশ করলে তিনি আমার সামনে ইয়ামানের তৈরী মোটা কাপড়ের একট লুঙ্গি এবং একটি কম্বল (বা চাদর) বের করলেন এবং শপথ করে আমাকে বললেন, কাপড় দু’টি পরিহিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল করেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি চাদর পরিহিত অবস্থায় সলাত আদায় করেন, যা তিনি পিঠ দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন। [২৮৮৪] তাহকীক আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল। আনাস বিন মালিক (রাঃ), আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। তাঁর পরনে ছিল মোটা পাড়যুক্ত একটি নাজরানী চাদর। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আয়িশাহ (রাঃ), আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কাউকে গালি দিতে শুনিনি এবং কাউকে তাঁর কাপড় ভাঁজ করে দিতেও দেখিনি। [২৮৮৬] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল। সাহল বিন সা’দ আস-সাইদী (রাঃ), এক মহিলা একখানা চাদরসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার জন্য আমি নিজ হাতে এটা বুনেছি। চাদরের প্রয়োজন অনুভব করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা গ্রহণ করলেন, অতঃপর তা লুঙ্গীর মতো করে পরিধান করে আমাদের নিকট আসলেন। তখন অমুকের পুত্র অমুক এসে বললো, হে রাসূল! চাদরটা কী চমৎকার। এটা আমাকে পরতে দিন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আচ্ছা। তিনি বাড়িতে গিয়ে চাদরটা ভাঁজ করে তার নিকট পাঠিয়ে দিলেন। লোকজন তাকে বললো, আল্লাহর শপথ! কাজটা তুমি ভালো করোনি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রয়োজন অনুভব করেই তা পরেছিলেন। আর তুমি তাঁর নিকট তা চেয়ে নিলে! অথচ তুমি জানো যে তিনি কোন প্রার্থীকেই বিমুখ করেন না। সে বললো, আল্লাহর শপথ! আমি এটা পরার জন্য তাঁর কাছ থেকে চেয়ে নেইনি, বরং আমার কাফন বানানোর জন্য চেয়ে নিয়েছি। সাহল (রাঃ) বলেন, লোকটা যেদিন মারা গেল সেদিন সেটিই তার কাফন হলো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পশমী কাপড় পরেছেন, ছেঁড়া জুতা পরেছেন এবং মোটা কাপড়ও পরেছেন। [২৮৮৮] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【2】

কোন বেক্তি নতুন কাপড় পরিধানের সময় যে দুয়া পড়বে।

আবূ উমামাহ (রাঃ) বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) নতুন কাপড় পরে বলেন, “আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী কাসানী মা উওয়ারী বিহি আওরাতী ওয়াতাজাম্মালু বিহি ফী হায়াতী” (সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাকে এমন বস্ত্র পরিধান করিয়েছেন যা দিয়ে আমি আমার লজ্জাস্থান ঢাকতে পারি এবং আমার জীবনযাত্রাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে পারি)। অতঃপর তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধানকালে এ দু’আ পড়বে, “আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী কাসানী উওয়ারী বিহি আওরাতী ওয়াতাজাম্মালু বিহি ফী হায়াতী”, অতঃপর পুরাতন কাপড়খানাও রেখে দেয়ার ইচ্ছা করে তা দান করে দেয় , তবে সে জীবনে ও মরণে আল্লাহর আশ্রয়ে ও আল্লাহর হিফাযাতে থাকবে। কথাটি তিনি তিনবার বলেন। [২৮৮৯] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল। ইবনু উমার (রাঃ), রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমার (রাঃ)-র পরনে একটি সাদা জামা দেখতে পেয়ে বলেনঃ তোমার এ কাপড় ধোয়া না নতুন? তিনি বলেন, না, বরং ধৌত করা। তিনি বলেনঃ নতুন কাপড় পরিধান করো, উত্তম জীবনযাপন করো এবং শহীদি মৃত্যু বরণ করো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【3】

যেসব পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে

আবু সাঈদ আল-খুদরী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাপড় পরিধানের দু’টি পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছেন। অতএব সে দু’টি পদ্ধতি হলোঃ (১) এক কাঁধ খোলা রেখে একই চাদর গোটা শরীরে জড়িয়ে নেয়া এবং (২) একই কাপড়ে পেট, উরু ও পায়ের গোছা ঢেকে নিতম্ব মাটিতে ঠেকিয়ে দু’হাঁটু উঁচু করে বসা এবং লজ্জাস্থানে এর কোন অংশ না থাকা। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাপড় পরিধানের দু’টি পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছেনঃ (১) এক কাঁধ খোলা রেখে একই চাদর সমস্ত শরীরে জড়িয়ে নেয়া এবং (২) একই কাপড়ে পেট, উরু ও পায়ের গোছা ঢেকে নিতম্ব মাটিতে ঠেকিয়ে দু’ হাঁটু উঁচু করে বসা এবং লজ্জাস্থানে এর কোন অংশ না থাকা। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আয়িশাহ (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাপড় পরিধানের দু’টি পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছেনঃ (১) এক কাঁধ খোলা রেখে একই চাদর গোটা শরীরে জড়িয়ে নেয়া এবং। (২) একই কাপড়ে পেট, উরু ও পায়ের গোছা ঢেকে তোমার নিতম্ব মাটিতে ঠেকিয়ে দু’হাঁটু উঁচু করে বসা এবং লজ্জাস্থানে এর কোন অংশ না থাকা। তাহকিক আলবানীঃ সহীহ

【4】

পশমী পোশাক পরিধান

(আবু বুরদাহ) আমার পিতা আমাকে বললেন, হে বৎস! বৃষ্টির সময় তুমি যদি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমাদের দেখতে তবে অবশ্যই তুমি আমাদের শরীরের গন্ধকে মেষের গন্ধ বলে অনুভব করতে। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ), একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংকীর্ণ হাতাবিশিষ্ট একটি রুমীয় পশমী জুব্বা পরিহিত অবস্থায় আমাদের নিকট বের হয়ে এলেন। তিনি সেটি পরিহিত অবস্থায় আমাদের সাথে সলাত আদায় করলেন। এটি ছাড়া তার শরীরে উপরাংশে আর কিছু ছিলো না। [২৮৯৫] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল। সালমান ফারিসী (রাঃ), রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযু করার পর তাঁর পশমী জুব্বা উল্টিয়ে তা দিয়ে তাঁর মুখমণ্ডল মুছলেন। [২৮৯৬] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল আনাস বিন মালিক (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মেষ পালের কানে দাগ দিতে দেখেছি এবং তাঁকে একটি চাদর পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। [২৮৯৭] তাহকীক আলবানীঃ হাদীসটি সহীহ কিন্তু সানাদটি দুর্বল

【5】

সাদা পোশাক পরিধান

ইবনু আব্বাস(রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের পোশাকের মধ্যে উত্তম পোশাক হল সাদা পোশাক। অতএব তোমরা সাদা রংয়ের পোশাক পরো এবং তা দিয়ে মৃতদের কাফন দাও। (বুখারী, মুসলিম, দাঊদ ও তিরমিজি) তাহকীক আলবানীঃ সহীহ সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "তোমরা সাদা রংয়ের পোষাক পরিধান করো। কেননা তা অধিক পবিত্র ও উত্তম।” তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ আবূ দারদা' (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কবরসমূহে ও মসজিদসমূহে আল্লাহ তা'আলার সাথে সাদা পোষাকে সাক্ষাত করাই তোমাদের জন্যে উত্তম। [২৯০০] তাহক্বীক আলবানীঃ বানোয়াট।

【6】

যে ব্যক্তি অহংকারবশে পরিধেয় বস্তু (পায়ের গোছার নীচে) ঝুলিয়ে দেয়।

ইবনু 'উমার (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি অহংকারবশে নিজের পরিধেয় বস্ত্র গোছার নীচে পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরিধান করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। আবূ সাঈদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অহংকারে মত্ত হয়ে তার পরিধেয় বস্ত্র গোছার নীচে পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। রাবী আমাশ (রাঃ) বলেন, আমি ‘বালাত’ নামক স্থানে বিন উমার (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাত করে নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আবূ সাঈদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি তার নিকট পেশ করলাম। তিনি তার দু'কানের দিকে ইশারা করে বলেন, আমার এ দু'কান তা শুনেছে এবং আমার অন্তর তা আত্মস্থ করেছে। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। আবূ সালামাহ আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)-এর পাশ দিয়ে এক কুরাইশ যুবক তার পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছার নীচে পর্যন্ত ঝুলিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বললেন, হে ভাতিজা! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি অহংকারবশে তার পরিধেয় বস্ত্র গোছার নীচে পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। [২৯০৩] তাহক্বীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।

【7】

পরিধেয় বস্ত্রের সর্বনিম্ন সীমা।

হুযায়ফাহ (রাঃ) তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার (অপর বর্ণনায় তাঁর নিজের) জঙ্ঘার পশ্চাদভাগ ধরে বললেনঃ এই হলো লুঙ্গির (সর্বনিম্ন) স্থান। তুমি যদি তা মানতে না চাও তবে আরো নীচে, যদি তাও মানতে না চাও আরো নীচে (নামাতে পারো)। যদি তুমি তাও মানতে না চাও তবে পায়ের গোছার নীচে যাওয়ার অধিকার লুঙ্গির নাই। উক্ত হাদীসের রাবী আতিয়্যাহ সম্পর্কে আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তার হাদীস দলিলযোগ্য নয়। আবূ হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবূ যুরআহ আর রাযী বলেন, তিনি যাচাই বাছাই ছাড়া হাদীস গ্রহণ করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন হাম্বাল বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ শুয়ায়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইমাম যাহাবী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৫৬, ২০/১৪৫ নং পৃষ্ঠা) [উপরোক্ত হাদীসের মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সানাদটি হলো]: ২/৩৫৭২(১). হুযায়ফাহ (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত আছে। আব্দুর রহমান আমি আবূ সাঈদ (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট লুঙ্গি সম্পর্কে কিছু শুনেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ মু'মিন ব্যক্তির লুঙ্গি তার দু' জঙ্ঘার মধ্যাংশ পর্যন্ত (প্রলম্বিত হতে পারে), তবে জঙ্ঘা থেকে গোছা পর্যন্ত (প্রলম্বিত হওয়ায়) কোন দোষ নেই। কিন্তু গোছার নিম্নাংশে পৌঁছুলে তা জাহান্নামে যাবে। এ কথা তিনি তিনবার বলেছেন। যে ব্যক্তি অহংকারবশে তার লুঙ্গি (গোছার নীচে) ঝুলিয়ে পরে আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। মুগীরাহ বিন শু'বাহ (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে সুফিয়ান বিন সাহল! পরিধেয় বস্ত্র (গোছার নীচে) ঝুলিয়ে পরো না। কারণ আল্লাহ তা'আলা এভাবে পরিধেয় বস্ত্র ঝুলিয়ে পরিধানকারীদের পছন্দ করেন না। [২৯০৬] তাহক্বীক আলবানীঃ হাসান।

【8】

জামা পরিধান

উম্মু সালামাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জামার চেয়ে অধিক প্রিয় কোন পোষাক ছিলো না। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ

【9】

জামা কতখানি লম্বা হবে?

'আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ " 'ইসবা' (পায়ের গোছার নীচে পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরিধান) লুঙ্গি, জামা ও পাগড়ীর বেলায়ই হয়ে থাকে। যে ব্যক্তি অহংকারবশে কোন কিছু (পায়ের গোছার নীচে) ঝুলিয়ে পরে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে ফিরে তাকাবেন না। রাবী আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, হাদীসটি সানাদের দিক দিয়ে কিছুটা অপ্রসিদ্ধ। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ।

【10】

জামার হাতার দৈর্ঘ্য

ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ক্ষুদ্র হাতা-বিশিষ্ট জামা পরিধান করতেন। [২৯০৯] তাহক্বীক আলবানীঃ দুর্বল।

【11】

জামার বোতাম খোলা রাখা

কুররাহ বিন ইয়াস (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে তাঁর হাতে বাইআত হলাম। তাঁর জামার বোতামগুলো খোলা ছিল। রাবী উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, তাই আমি শীতকালে বা গ্রীষ্মকালে মুআবিয়া ও তার ছেলের জামার বোতাম খোলা রাখতে দেখেছি। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ।

【12】

পায়জামা পরিধান

সুওয়ায়দ বিন কায়স (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের এখানে এসে দরদাম করে পায়জামা খরিদ করলেন। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ

【13】

স্ত্রীলোকের পরিধেয় বস্ত্রের আঁচল কতখানি (দীর্ঘ হবে)?

উম্মু সালামাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন নারী তার পরিধেয় বস্ত্রের আঁচল কতখানি (নীচে) ঝুলিয়ে পরতে পারে? তিনি বলেন, (গোড়ালী থেকে) এক বিঘত পরিমাণ (উপরে রাখবে)। আমি বললাম, এতে তো তার পা উদাম হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, তাহলে সে এক হাত পরিমাণ নীচে ঝুলিয়ে রাখবে, তার বেশী নয়। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীগণকে এক হাত পরিমাণ আঁচল লম্বা করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। নারীরা আমাদের নিকট এলে আমরা তাদেরকে কাঠি দ্বারা এক হাত পরিমাণ মেপে দেখিয়ে দিতাম। [২৯১৩] তাহক্বীক আলবানীঃ القصب শব্দ ব্যতীত সহীহ। আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাতিমাহ (রাঃ) অথবা উম্মু সালামাহ (রাঃ)-কে বলেনঃ তোমার পরিধেয় বস্ত্রের আঁচল এক হাত পরিমাণ লম্বা হতে পারে। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। আয়িশাহ (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নারীদের পরিধেয় বস্ত্রের আঁচল সম্পর্কে বলেনঃ তা এক বিঘত পরিমাণ (গোড়ালীর উপরে থাকবে)। আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, তাহলে তো তাদের পায়ের জঙ্ঘা অনাবৃত হয়ে যাবে। তিনি বলেনঃ তবে এক হাত পরিমাণ (নীচের দিকে) লম্বা হবে। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ।

【14】

কালো পাগড়ি

আমর বিন হুরায়স (রাঃ), আমি নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় মিম্বারের উপর খুতবা দিতে দেখেছি। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। জাবির (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় (মক্কায়) প্রবেশ করেন। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু উমার (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন কালো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় (মক্কায়) প্রবেশ করেন। তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ।

【15】

দু কাঁধের মাঝ বরাবর পাগড়ির প্রান্তভাগ ঝুলানো

আমর বিন হুরায়স (রাঃ), আমি যেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাঁর মাথার কালো পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি। তিনি তাঁর পাগড়ির দু’প্রান্ত তাঁর দু’কাঁধের মাঝ বরাবর ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【16】

রেশমী বস্ত্র পরিধান নিষিদ্ধ

আনাস বিন মালিক (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশমী বস্ত্র পরিধান করলো, আখেরাতে সে তা পরিধান করতে পারবেনা। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। বারা’ বিন আ’যিব (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীবাজ, হারীর ও ইসতাবরাক নিষিদ্ধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। হুযায়ফা (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেশমী বস্ত্র ও সোনার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন এবং বলেছেনঃ এটা দুনিয়াতে তাদের (কাফেরদের) জন্য এবং আখেরাতে আমাদের জন্য। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) তিনি বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) লাল বর্ণের একটি হুল্লা (রেশম মিশ্রিত চাদর) দেখে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাত দানকালে এবং জুমুআর দিন ব্যবহারের জন্য যদি আপনি এটা কিনতেন! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এটা এমন লোকে পরতে পারে, আখেরাতে যার কোন অংশ নেই। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【17】

যাকে রেশমী বস্ত্র পরিধানের অনুমতি দেয়া হয়েছে

আনাস বিন মালিক (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবায়র ইবনুল আওওয়াম ও আবদুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) কে তাদের চর্মরোগের কারণে রেশমী জামা পরার অনুমতি দেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【18】

কাপড়ে চিহ্ন লাগানোর অনুমতি

উমার (রাঃ), তিনি হীরার ও দীবাজ এতটুকু পরিমাণের অধিক ব্যবহার করতে নিষেধ করতেন। অতঃপর তিনি তাঁর হাতের প্রথম আংগুল, এরপর দ্বিতীয়টি, এরপর তৃতীয়টি এবং এরপর চতূর্থটি দিয়ে ইশারা করলেন। তিনি আরও বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে রেশমী বস্ত্র ব্যবহার করতে নিষেধ করতেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আসমা বিনতু আবূ বাকর (রাঃ), (আবূ উমার) বলেন, আমি ইবনু উমার (রাঃ) কে রেশমী বস্ত্রের প্রান্তযুক্ত একটি পাগড়ী ক্রয় করতে দেখলাম। অতঃপর তিনি কাঁচি আনিয়ে তা কেটে ফেলেন। আমি আসমা (রাঃ) এর নিকট প্রবেশ করে বিষয়টি তাঁর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বলেন, আবদুল্লাহর জন্য দুঃখ হয়। হে মেয়ে! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জুব্বাটা নিয়ে এসো। সে জুব্বাটি নিয়ে আসলো, যার দুই হাতা, গলা ও বুকে রেশমের ‘ফিতা’ লাগানো ছিল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【19】

মহিলাদের রেশমী বস্ত্র ও সোনা ব্যবহার

আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বাম হাতে কিছু রেশমী বস্ত্র এবং ডান হাতে কিছু সোনা নিলেন এবং সেগুলো সহ তাঁর দু’হাত উপরে তুলে বলেনঃ আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য এ দু’টির ব্যবহার হারাম এবং তাদের মহিলাদের জন্য হালাল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আলী (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রেশমী সূচীকর্ম খচিত একটি চাদর উপহার দেয়া হলো, যার টানা অথবা পড়ন ছিল রেশমী সূতার। তিনি সেটি লোক মারফত আমার নিকট পাঠিয়ে দিলেন। আমি তাঁর নিকট এসে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এটা দিয়ে আমি কি করবো, আমি কি এটা পরবো? তিনি বলেনঃ না, এটা দ্বারা ফাতেমার ওড়না বানিয়ে দাও। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে আমাদের নিকট এলেন। তাঁর এক হাতে ছিল একটি রেশমী বস্ত্র এবং অপর হাতে ছিল এক টুকরা সোনা। তিনি বলেনঃ এ দু’টি জিনিস আমার উম্মাতের পুরুষদের জন্য হারাম এবং তাদের মহিলাদের জন্য হালাল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস (রাঃ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা যায়নাব (রাঃ)’র পরিধানে লাল রং-এর রেশমী কাপড়ের জামা দেখেছি। [২৯৩০] তাহকীক আলবানীঃ শায তবে যায়নাব এর স্থানে উম্মু কুলসুম হলে হাদীসটি মাহফূয হবে।

【20】

পুরুষদের লাল রংয়ের কাপড় ব্যবহার

বারা’ বিন আযিব (রাঃ), লাল রং-এর পোশাকে ও পরিপাটি চুলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কাউকে দেখিনি। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। বুরায়দাহ (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন (শিশু) হাসান ও হোসাইন (রাঃ) লাল জামা পরিহিত অবস্থায় আছাড়-পাছাড় খেতে খেতে সামনে এসে দাঁড়ালেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বার থেকে নেমে এসে তাদের উভয়কে তাঁর কোলে তুলে নিলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সত্য বলেছেন, “তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো পরীক্ষা বিশেষ” (সূরা তাগাবুন:১৫)। এ দু’জনকে দেখে আমি র্ধৈয ধারণ করতে পারলাম না। অতঃপর তিনি আবার খুতবা দিতে শুরু করেন। তাহকীক আলবানী: সহীহ।

【21】

পুরুষদের জন্য হলুদ রং-এর পোষাক পরিধান মাকরূহ

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘মুফাদ্দাম’ পরতে নিষেধ করেছেন। রাবী ইয়াযিদ (রাঃ) বলেন, আমি হাসান বিন সুহায়লকে জিজ্ঞেস করলাম ‘মুফাদ্দাম’ কী? তিনি বলেন, হলুদ রং-এ রঞ্জিত বস্ত্র। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবদুল্লাহ বিন হুনায়ন তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এবং আমি বলি না যে, তোমাদেরকেও হলুদ রং-এ রঞ্জিত পোশাক পরতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আযাখির উপত্যকা থেকে আসছিলাম। তিনি আমার দিকে তাকালেন, আমার পরনে ছিল হলুদ রং-রঞ্জিত লুঙ্গি। তিনি বলেনঃ এটা কী? আমি তাঁর কিসে অপছন্দ তা অনুভব করলাম। আমি আমার পরিজনের কাছে এলাম, তখন তারা তাদের চুলায় আগুন ধরাচ্ছিল। আমি লুঙ্গিটি চুলায় নিক্ষেপ করলাম। পরদিন সকালে আমি তাঁর নিকট গেলে তিনি বলেনঃ হে আবদুল্লাহ! লুঙ্গিটা কি করেছো? বিষয়টি আমি তাঁকে অবহিত করলাম। তিনি বলেন, তোমার পরিবারের কাউকে তা পরতে দিলে না কেন? কেননা নারীদের এই রং ব্যবহারে কোন আপত্তি নেই। [২৯৩৫] তাহকীক আলবানীঃ হাসান।

【22】

পুরুষ লোকেদের হলুদ বর্ণের পোষাক পরিধান

কায়স বিন সা’দ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট আসেন। আমরা তাঁর ঠান্ডা হওয়ার জন্য পানি রাখি। তিনি গোসল করলেন। আমি তাঁর জন্য হলুদ রং-এর একটি চাদর নিয়ে এলাম। আমি তাঁর পিঠে হলুদ রং-এর ছাপ দেখতে পেলাম। [২৯৩৬] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【23】

অপচয় ও অহংকার এড়িয়ে তুমি যে কোন ধরনের পোশাক পরতে পার

আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা পানাহার করো, দান-খয়রাত করো এবং পরিধান করো যাবত না তার সাথে অপচয় বা অহংকার যুক্ত হয়। [২৯৩৭] তাহকীক আলবানীঃ হাসান।

【24】

যে ব্যক্তি খ্যাতি লাভের মানসে পোশাক পরে

ইবনু উমার (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি খ্যাতি লাভের মানসে পোশাক পরে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে অপমানের পোশাক পরাবেন। [২৯৩৮] তাহকীক আলবানীঃ হাসান। আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুনিয়াতে যশ লাভের উদ্দেশ্যে পোশাক পরে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে অপমানের পোশাক পরাবেন, অতঃপর তাতে অগ্নিসংযোগ করবেন। [২৯৩৯] তাহকীক আলবানীঃ হাসান আবু যার (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যাক্তি যশের পোশাক পরে, আল্লাহ তার প্রতি ভ্রক্ষেপ করবেন না যাবত না তাকে যেখানে ইচ্ছা ফেলে রাখেন। [২৯৪০] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【25】

যে ব্যক্তি মৃত জীবের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার পর পরিধান করে

ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমি রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে কোন চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হলেই তা পাক হয়ে যায়। তাহকীক আলবানীঃ সহিহ। মায়মূনাহ (রাঃ) তার মুক্তদাসীকে যাকাত থেকে একটা বকরী দান করেছিলেন। বকরীটি মারা গেলে তা ফেলে দেয়া হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটির পাশ অতিক্রমকালে বলেনঃ এরা এর চামড়া খুলে নিলো না কেন, এটা প্রক্রিয়াজাত করে কাজে লাগাতে পারতো! সাহাবীগন বললেন হে আল্লাহর রাসুল! এটা তো মৃত। তিনি বলেনঃ মৃত জীব খাওয়া হারাম। তাহকীক আলবানী: সহীহ। সালমান আল ফারিসী (রাঃ), তিনি বলেন কোন এক উম্মুল মুমিনীনের বকরি মারা গেল। রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটি অতিক্রমকালে বলেনঃ তারা এর চামড়াটা কাজে লাগালে তাদের কোন ক্ষতি হতো না। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আয়েশা (রাঃ), রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার পর তা কাজে লাগাতে নির্দেশ দিয়েছেন। [২৯৪৪] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【26】

যে ব্যক্তি মৃত জীবের চামড়া ও শিরা কাজে লাগানো নাজায়েজ মনে করে

আব্দুল্লাহ বিন উকায়ম (রাঃ), আমাদের নিকট এই মর্মে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নির্দেশনামা এলোঃ তোমরা মৃতজীবের চামড়া ও শিরা কোন কাজে ব্যবহার করো না। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【27】

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্যান্ডেল

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জুতাজোড়ার সামনের দিকে দুটি ফিতা ছিলো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জুতা জোড়ার দুটি ফিতা ছিল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【28】

জুতা পরিধান করা ও তা খুলে রাখা

আবু হুরাইরাহ (রাঃ), রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ জুতা পরিধানের সময় যেন ডান পায়ে আগে পরে, এবং খোলার সময় যেন বাম পায়ের জুতা আগে খোলে। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【29】

এক পায়ে জুতা পরে হাঁটা

আবু হুরাইরাহ (রাঃ), রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন এক পায়ে জুতা পরে বা এক পায়ে মোজা পরে না হাঁটে। হয় সে উভয় পায়ে জুতা পরবে, অন্যথায় উভয় পা খোলা রাখবে (বুখারী, মুসলীম ও তিরমিযি)। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।

【30】

দাঁড়ানো অবস্থায় জুতা পরা

আবু হুরাইরাহ (রাঃ), রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন ব্যক্তিকে দাঁড়ানো অবস্থায় জুতা পরতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু উমার (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন ব্যক্তিকে দাঁড়ানো অবস্থাই জুতা পরতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ

【31】

কালো মোজা

বুরায়দাহ (রাঃ) নাজ্জাসী (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মিশমিশে কালো রংয়ের একজোড়া মোজা উপটৌকন দেন। তিনি তা পরিধান করেন। [২৯৫২] তাহকীক আলবানীঃ হাসান।

【32】

মেহেদির খেজাব

আবু হুরাইরাহ (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ইহুদী ও খৃস্টানরা খেযাব ব্যবহার করেনা। সুতরাং তোমরা তাদের বিপরীত করো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আবু যার (রাঃ), রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যেসব জিনিস দিয়ে তোমরা বার্ধক্যকে পরিবর্তন করতে পারো তার মধ্যে মেহেদী ও কাতাম হলো সর্বোত্তম। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উসমান বিন মাওহাব আমি উম্ম সালামা (রাঃ) এর নিকট প্রবেশ করলাম। রাবী বলেন, তিনি আমার সামনে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চুল বের করলেনঃ যা মেহেদী ও কাতাম দ্বারা রঞ্জিত ছিল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【33】

কালো খেজাব ব্যবহার

জাবির (রাঃ), মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আনা হলো। তার মাথার চুল ছিল ধবধবে সাদা। রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা তাকে তার কোন স্ত্রীর নিকট নিয়ে যাও এবং সে যেন তার (চুলের) রং পরিবর্তন করে দেয়। তবে তোমরা তার জন্য কালো রং পরিহার করো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। সুহায়ব আল খায়র (রাঃ), রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা যা দিয়ে চুল রঙ্গিন করো তার মধ্যে এই কালো খেযাব খুবই উত্তম। তাতে তোমাদের প্রতি নারীদের আকর্ষন আছে এবং জিহাদে তা তোমাদের শত্রুদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টিকর। [২৯৫৭] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【34】

হলুদ রঙয়ের খেজাব ব্যবহার

উবায়দ বিন জুরায়জ তিনি ইবনু উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, আমি তো আপনাকে ওয়ারস ঘাসের রং দিয়ে আপনার দাঁড়ি রঞ্জিত করতে দেখেছি। বিন উমার (রাঃ) বলেন, আমার দাড়ী হলুদ রংয়ে রঞ্জিত করার কারন এই যে, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দাঁড়ি হলুদ রংয়ে রঞ্জিত করতে দেখেছি। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু আব্বাস (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মেহেদির খেযাব গ্রহণকারী এক ব্যক্তিকে অতিক্রম করার সময় বলেনঃ এটা কতই না উত্তম। অতঃপর তিনি মেহেদি ও কাতামের খেযাব গ্রহণকারী এক ব্যক্তিকে অতিক্রম করার সময় বলেনঃ এটা ওটার চেয়ে উত্তম। অতঃপর তিনি হলুদ রঙের খেযাব গ্রহণকারী এক ব্যক্তিকে অতিক্রমকালে বলেনঃ এটা ঐ সবগুলোর চেয়ে উত্তম। রাবী বলেন, তাউস (রাঃ) হলুদ রঙের খেযাব ব্যবহার করতেন। [২৯৫৯] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【35】

যে ব্যক্তি খেযাব বর্জন করে

আবূ জুহায়ফাহ (রাঃ), আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এ অংশটা অর্থাৎ তাঁর চিবুকের নিচের ও উপরের কিছু চুল সাদা দেখেছি। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস বিন মালিক (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি খেযাব ব্যবহার করেছেন? তিনি বলেন যে, তিনি তাঁর দাঁড়ীর সম্মুখভাবে মাত্র সতের বা বিশটি সাদা চুল দেখেছেন। ইবনু উমার (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বার্ধক্য বলতে ছিল গোটা বিশেক (সাদা) চুল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【36】

কেশ গুচ্ছবদ্ধ করা গুচ্ছহীন রাখা

উম্মু হানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মক্কায় প্রবেশ করেন তখন তাঁর মাথার চুলে চারটি বেণি ছিলো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু আব্বাস (রাঃ) তিনি বলেন, আহলে কিতাব সম্প্রদায় তাদের মাথার চুল পিছনের দিকে ছেড়ে দিতো এবং মুশরিকরা মাথার মাঝ বরাবর সিঁথি কাটতো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত) কিতাবীদের সাথে সামঞ্জস্য পছন্দ করতেন। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও তাঁর মাথার সামনের দিকের চুল স্ব-অবস্থায় পিছনের দিকে ছেড়ে দিতেন এবং পরবর্তী পর্যায়ে সিঁথি কাটতেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আয়িশাহ (রাঃ), আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিছন দিকের চুলে সিঁথি কেটে দিতাম, পরে আমি তাঁর মাথার সামনের চুল স্ব-অবস্থায় পিছনের দিকে ছেড়ে দিতাম। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস (রাঃ), রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চুল ছিল সামান্য কোঁকড়ানো এবং দু’কান ও দু’কাঁধের মাঝ বরাবর ঝুলানো। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আয়িশাহ (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাথার চুল ছিলো তাঁর কানের লতির নিম্নভাগ অতিক্রম করে প্রায় কাঁধ বরাবর প্রলম্বিত। [২৯৬৭] তাহকীক আলবানীঃ হাসান।

【37】

লম্বা চুল অপছন্দনীয়

ওয়াইল বিন হুজর (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার মাথার লম্বা চুল দেখে বললেনঃ দুর্ভাগ্য! আমি ফিরে গিয়ে তা খাটো করে ফেললাম। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখে বলেনঃ আমি তো তোমার সম্পর্কে মন্তব্য করিনি। তবে এটা উত্তম। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【38】

মাথার অংশবিশেষের চুল কামানো নিষেধ

ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘কাযা’ নিষিদ্ধ করেছেন। রাবী জিজ্ঞেস করেন, ‘কাযা’ কী? বিন উমার (রাঃ) বলেন, ‘কাযা’ হল শিশুদের মাথার একাংশের চুল কামানো এবং একাংশের চুল রেখে দেয়া। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু উমার (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথার অংশবিশেষের ‍চুল কামাতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【39】

আংটিতে নকশা করা

ইবনু উমার (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি রূপার আংটি গ্রহণ করলেন এবং তার গায়ে “মুহাম্মাদুর রাসূলূল্লাহ” খোদাই করান। অতঃপর তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন তার আংটিতে নকশা খোদাই না করে। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস বিন মালিক (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি আংটি তৈরি করান, তারপর বলেনঃ আমি একটি আংটি তৈরি করিয়েছি এবং তাতে কিছু নকশা করিয়েছি। সুতরাং কেউ যেন এর অনুরূপ নকশা খোদাই না করায়। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস বিন মালিক (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি রূপার আংটি গ্রহণ করেন। তাতে আবিসিনীয় পাথর ছিল এবং তার গায়ে “মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” খোদাইকৃত ছিল। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【40】

সোনার আংটি পরা নিষেধ

আলী (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোনার আংটি পরতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। ইবনু উমর (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোনার আংটি পরা নিষিদ্ধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উম্মুল মু’মিনীন আয়িশাহ (রাঃ), নাজ্জাশী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সোনার একটি আংটি উপহার দেন। তাতে আবিসিনীয় পাথর বসানো ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটি অপছন্দ করায় একটি কাঠি বা হাতের আংগুল দ্বারা তা নিলেন, অতঃপর তাঁর কন্যার কন্যা (নাতনি) উমামা বিনতু আবুল আসকে ডেকে বলেনঃ নাতনি! এটা তুমি পরো। [২৯৭৬] তাহকীক আলবানীঃ হাসান।

【41】

যে ব্যক্তি আংটির পাথর তার হাতের তালুর দিকে রাখে

ইবনু উমার (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর আংটির পাথর তাঁর হাতের তালুর দিকে রাখতেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। আনাস বিন মালিক (রাঃ), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি রূপার আংটি পরেন, তাতে আবিসিনীয় পাথর বসানো ছিল। তিনি পাথরটি তাঁর হাতের তালুর দিকে রাখতেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【42】

ডান হাতে আংটি পরা

আবদুল্লাহ বিন জা‘ফর (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাতে আংটি পরতেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【43】

বৃদ্ধাংগুলে আংটি পরা

আলী (রাঃ), রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এই আঙ্গুলে এবং এই আঙ্গুলে অর্থাৎ বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠাতে আংটি পরতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

【44】

ঘরে ছবি রাখা

আবূ তালহাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ঘরে কুকুর ও ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতাগণ প্রবেশ করে না। [২৯৮১] আলী বিন আবূ তালীব (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ঘরে কুকুর ও ছবি থাকে সেই ঘরে ফেরেশতাগণ প্রবেশ করেন না। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ আয়িশাহ (রাঃ), রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে জিবরাঈল (আঃ) এর একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাক্ষাতের প্রতিশ্রুতি ছিল কিন্তু তাতে বিলম্ব হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইরে বের হলেন এবং দেখলেন, জিবরাইল (আঃ) দরজায় দাঁড়ানো। তিনি বলেনঃ ভিতরে প্রবেশ করতে কিসে আপনাকে বাধা দিলো? তিনি বলেনঃ এ ঘরে একটি কুকুর আছে। যে ঘরে কুকুর ও ছবি থাকে সে ঘরে আমরা প্রবেশ করি না। [২৯৮৩] তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ আবূ উমামাহ (রাঃ), এক মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে তাঁকে অবহিত করে যে, তার স্বামী একটি জিহাদে গেছে। সে তাঁর নিকট তার ঘরে একটি খেজুর গাছের ছবি আঁকার অনুমতি চাইলে তিনি তাকে তা করতে নিষেধ করেন। [২৯৮৪] তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।

【45】

পদদলিত হওয়ার স্থানের ছবি

আয়িশাহ (রাঃ), আমি আমার ঘরের দরজায় ছবিযুক্ত একটি পর্দা টানালাম। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে তা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে আমি তা দিয়ে দু’টি তাকিয়ার গেলাফ বানালাম। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তার একটিতে হেলান দিয়ে বসতে দেখেছি। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।

【46】

লাল জিনপোশ ব্যাবহার

আলী (রাঃ), রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সোনার আংটি এবং লাল রঙের জিনপোষ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ

【47】

চিতা বাঘের চামড়ার উপর সওয়ার হওয়া

আমির আল-হাজরী (রাঃ), আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবী আবূ রায়হানা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চিতা বাঘের চামড়ার উপর সওয়ার হতে নিষেধ করতেন। [২৯৮৭] তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। মু‘আবিয়াহ (রাঃ), নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চিতা বাঘের চামড়ার উপর সওয়ার হতে নিষেধ করতেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ