16. জানাইয

【1】

মৃতের গোসল

মুহাম্মদ ইবনু বাকির (র) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কোর্তা পরিহিত অবস্থায় গোসল দেওয়া হয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) উম্মে ‘আতিয়া আনসারী (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কন্যার যখন ওফাত হয় তখন আমাদের কাছে এলেন, তারপর তিনি বললেন, তাকে তোমরা গোসল দাও তিনবার অথবা পাঁচবার অথবা উহা অপেক্ষা অধিক পানি ও কুলপত্র (কুলপত্রসহ গরম দেওয়া পানি) দ্বারা। আর শেষে তোমরা কর্পূর দাও অথবা (তিনি বলেছেন) কিছু কর্পূর দাও। তোমরা যখন গোসল সমাপ্ত করবে তখন আমাকে সংবাদ দেবে। অতঃপর আমরা গোসল সমাপ্ত করে তাকে খবর দিলাম। তিনি তাঁর ইযার (লঙ্গী) আমাদেরকে প্রদান করলেন এবং বললেন, এটা তার দেহের সাথে লেপটে দাও। উম্মে ‘আতিয়া (রা) হাকওয়া দ্বারা তাঁর ইযার বুঝিয়েছেন। (বুখারী ১২৫৩, মুসলিম ৯৩৯) আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বকর (রা) আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রা)-এর সহধর্মিণী আসমা বিন্ত উমাইস (রা) আবূ বক্‌র সিদ্দীককে গোসল দেন, যখন তিনি ইন্তিকাল করেন। অতঃপর তিনি বের হলেন এবং উপস্থিত মুহাজিরদের নিকট প্রশ্ন করলেন, আমি রোযাদার; আর এখন খুব শীতের দিন। আমার উপর গোসল কি জরুরী? তারা বললেন, না। (যয়ীফ, হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন, আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলেছেন [তামামুল মিন্নাহ পৃ: ১২১] মালিক (র) তিনি আহলে ইল্‌মকে (অভিজ্ঞ উলামা) বলতে শুনেছেন, কোন স্ত্রীলোকের মৃত্যু হলে এবং সে স্ত্রীলোকের সাথে তাকে গোসল দিতে পারে এইরূপ কোন মেয়েলোক যদি না থাকে এবং কোন মাহরম (যে সকল আত্মীয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম।) আত্মীয়ও না থাকে সে সেই স্ত্রীলোকের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে অথবা স্বামীও নেই যে তার গোসলের দায়িত্ব নিতে পারে এইরূপ অবস্থার সম্মুখীন হলে তবে সে স্ত্রীলোককে তায়াম্মুম করানো হবে; পবিত্র মাটি দ্বারা তার মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয়কে মসেহ করে দেয়া হবে। মালিক (র) বলেন, কোন পুরুষ লোকের মৃত্যু হলে তার নিকট বেগানা কোন স্ত্রীলোক ব্যতীত অন্য কেউ না থাকলে স্ত্রীলোকেরা তাকে অনুরূপ তায়াম্মুম করাবে। মালিক (র) বলেছেন, মৃত লোকের গোসলের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন নির্দিষ্ট সীমা ও সংজ্ঞা নাই, অবশ্য গোসল দেওয়াতে হবে, আর পবিত্র করাতে হবে।

【2】

মুর্দার কাফন

নবী-করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে سُحُولِيَّةٍ (সাহুল [ইয়েমেনের একটি প্রসিদ্ধ স্থানের নাম]-এ তৈরি) সাদা বর্ণের তিনটি কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া হয়েছিল। উহাতে কোর্তা এবং পাগড়ি ছিল না। (বুখারী ১২৬৪, মুসলিম ৯৪১) ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ (র) আমি অবগত হয়েছি যে, আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রা) যখন পীড়িত ছিলেন, তখন আয়েশা (রা)-কে বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কয়টি কাপড়ে কাফন দেয়া হয়েছে? আয়েশা (রা) বললেন, সাহুলে তৈরি সাদা রঙ্গের তিনটি কাপড়ে। তারপর আবূ বক্‌র (রা) তাঁর পরিধানে যে কাপড় ছিল সে কাপড়ের প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন, আয়েশা! এই কাপড়টি ধর এবং যাতে গেরুয়া রং অথবা জাফরান লেগেছিল, ইহাকে ধৌত কর। তারপর অন্য দু’টি কাপড়ের সাথে (মিলিয়ে) এ কাপড়ে আমাকে তোমরা কাফন দিও। (এটা শুনে) আয়েশা (রা) বললেন, এটা কি! নূতন কাপড় কি পাওয়া যাবে না? আবূ বক্‌র (রা) বললেন, মৃত ব্যক্তি অপেক্ষা জীবিত লোকেরই প্রয়োজন বেশি, আর এ কাপড় মৃতের পুঁজের জন্য। (সহীহ, বুখারী ১৩৮৭) আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনু ‘আস (র) তিনি বলেন, মুর্দাকে কোর্তা এবং ইযার পরিধান করানো হবে। অতঃপর তৃতীয় কাপড় দ্বারা তাকে আবৃত করতে হবে। আর যদি একটি কাপড় ব্যতীত অন্য কাপড় না থাকে তবে তাতেই কাফন দেয়া হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【3】

জানাযার আগে চলা

ইবনু শিহাব (র) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম), আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রা), উমার (রা) তাঁরা সকলেই জানাযার আগে চলতেন। তাঁদের পরে খলীফাগণ (যুগে যুগে) এবং আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-ও এরূপ করেছেন। (সহীহ, আবূ দাঊদ ৩১৭৯, তিরমিযী ১০০৭, নাসাঈ ১৯৪৪, ১৯৪৫, ইবনু মাজা ১৪৮৩, ১৪৮২, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ, সুনানে তিরমিযী] তবে ইমাম মালিক কর্তৃক হাদীসটি মুরসাল) ইবনু রবীআ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হুদায়র (র) তিনি যায়নব বিন্ত জাহাশ (রা)-এর জানাযার আগে উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-কে লোকের সম্মুখে চলতে দেখেছেন। হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) আমি আমার পিতাকে কখনও কোন জানাযায় উহার আগে আগে ছাড়া চলতে দেখিনি, কিন্তু বকী’তে পৌঁছার পর সেখানে বসতেন। লোকজন (জানাযাসহ) তাঁর সম্মুখ দিয়ে গমন করতো। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) ইবনু শিহাব জানাযার পেছনে চলা সুন্নতের খেলাফ। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【4】

জানাযার পেছনে আগুন নিয়ে চলা নিষেধ

আস্মা বিন্ত আবূ বক্‌র (রা) আস্মা বিন্ত আবূ বক্‌র (রা) নিজের পরিবারের লোকদেরকে বলেছেন, আমার মৃত্যু হলে আমার কাপড়কে (কাফন) খোশবুমুক্ত করো, তারপর আমার দেহে হানূত (কাপূর, মিশ্কে আম্বর ইত্যাতি দ্বারা তৈরি এক প্রকারের খোশবু) লাগাবে। কিন্তু হানূত আমার কাফনে ছিটাবে না, আর আগুন সাথে নিয়ে আমার পেছনে চলবে না। (ইবনু আসাকীর হাদীসটি তাখরীজ করেন [তারীখে দামেশক] তারীখে দামেশক ৭৩/২১, ইমাম মাইলায়ী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, নসবুর রয়াহ ২/২৬৪) আবূ সাঈদ মাকবুরী (রা) আবূ হুরায়রা (রা) তার মৃত্যুর পর পেছনে আগুন নিয়ে চলতে নিষেধ করেছেন। (সহীহ, আহমাদ ২/৪২৭, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, [আহকামুল জানায়েজ পৃঃ ৭০]) ইয়াহ্ইয়া (র) বললেন, আমি শুনেছি যে, মালিক (র) একে মাকরূহ জানতেন।

【5】

জানাযার তাকবীর

আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকদেরকে নাজ্জাশীর মৃত্যুর খবর দিয়েছেন, যেদিন তাঁর মৃত্যু হয়েছে সেদিন। অতঃপর লোকজনকে নিয়ে তিনি মুসল্লায় (নামাযের স্থানে) গমন করেছেন, অতঃপর তাদেরকে সারিবদ্ধ করিয়েছেন এবং চার তাকবীর বলেছেন। (বুখারী ১২৪৫, মুসলিম ৯৫১) আবূ উমামা (র) জনৈক মিসকীন স্ত্রীলোক অসুস্থ হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর রোগের খবর দেয়া হয়। (আবূ উমামা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অভ্যাস ছিল, তিনি মিসকীনদের শুশ্রূষা করতেন এবং তাদের খোঁজ-খবর রাখতেন। তাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এই স্ত্রীলোকের মৃত্যু হলে তোমরা তার মৃত্যু সংবাদ আমার কাছে পৌঁছাবে। কিন্তু তার জানাযা বের করা হল রাত্রে। তাই তাঁরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জাগানো উচিত মনে করলেন না। যখন ফজর হল, তখন তাঁর অবস্থা সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে খবর দেয়া হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে তার সংবাদ দেয়ার জন্য বলিনি ? তাঁরা বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আপনার কষ্ট হবে মনে করে আমরা সংবাদ দেয়া ভাল মনে করিনি। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হলেন এবং তাঁর কবরে লোকজনকে নিয়ে জানাযার জন্য দাঁড়ালেন। অতঃপর চারটি তকবীর বললেন। (উল্লেখিত হাদীসের অর্থে আবূ হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক মুত্তাসিল সনদে হাদীস বর্ণিত হয়েছে, নাসাঈ ১৯০৭, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে নাসাঈ]) বর্ণনাকারী মালিক (র) ইবনু শিহাব (র)-এর নিকট প্রশ্ন করলেন সে ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি জানাযার (নামাযের) কিছু তাকবীর পেয়েছে এবং কিছু পায়নি। তিনি বললেন, যা পায়নি তা পূর্ণ করতে হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【6】

জানাযার নামাযে মুসল্লি কি পড়বেন

আবূ সাঈদ মাকবুরী (র) আবূ সাঈদ মাকবুরী (র) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তাঁর পিতা জানাযার নামায কিভাবে আদায় করবেন তা আবূ হুরায়রা (রা)-এর নিকট প্রশ্ন করলেন। আবূ হুরায়রা (রা) বলেছেন, আল্লাহর স্থায়িত্বের কসম, আমি তোমাকে (এটার নিয়ম) শিখিয়ে দেব। আমি মৃত ব্যক্তির পরিবার-পরিজন হতে জানাযার সাথে চলি। জানাযা যখন রাখা হয়, আমি তখন তাকবীর বলি এবং আল্লাহর হামদ ও তাঁর নবীর উপর দরূদ পাঠ করি। তারপর বলিঃ اَللّٰهُمَّ إِنَّهُ عَبْدُكَ وَابْنُ عَبْدِكَ وَابْنُ أَمَتِكَ كَانَ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ وَأَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ اللهُمَّ إِنْ كَانَ مُحْسِنًا فَزِدْ فِي إِحْسَانِهِ وَإِنْ كَانَ مُسِيئًا فَتَجَاوَزْ عَنْ سَيِّئَاتِهِ اللهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ وَلَا تَفْتِنَّا بَعْدَهُ. হে আল্লাহ! এ ব্যক্তি আপনার বান্দা এবং আপনার বান্দা ও বান্দীর পুত্র, সে সাক্ষ্য দিত যে, আপনি ব্যতীত অন্য কোন মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সা) আপনার বান্দা ও আপনার রসূল, আপনি এই বান্দা সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। হে আল্লাহ! এই ব্যক্তি যদি প্রকৃত নেক বান্দা হন তবে তাঁর নেকী বৃদ্ধি করুন। আর যদি সে মন্দ লোক হয় তবে তাকে ক্ষমা করে দেন। হে আল্লাহ্! এর পুণ্যের সওয়াব হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং তার পর আমাদেরকে ফিতনায় লিপ্ত করবেন না। (হাদীসটি মারফু এর হুকুম বহন করে অন্যদিকে আলবানী হাদীসটি দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন [আহকামুল জানায়েজ পৃঃ ১২৫]) ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ (র) আমি সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (র)-কে বলতে শুনেছি, আমি আবূ হুরায়রা (রা)-এর পেছনে এমন একটি শিশুর জানাযা আদায় করেছি, যে শিশু কখনও কোন পাপ করেনি। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, اَللّٰهُمَّ أَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ “হে আল্লাহ্! একে কবর আযাব হতে বাঁচান”। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) এককভাবে বর্ণনা করেন, পূর্বে এর সমর্থনে হাদীস রয়েছে) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) জানাযার সালাতে কোন কিরাআত পড়তেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【7】

ফজরের ও আসরের পর জানাযার নামায আদায় করা

মুহাম্মদ ইবনু আবি হারমালা (র) যায়নব বিনতে আবি সালমা (রা)-এর যখন ওফাত হয়, তখন তারিক (র) মদীনার আমীর ছিলেন। তাঁর জানাযা আনা হল ফজরের পর, জানাযা বাকীতে রাখা হল, আর তারিক (র) খুব ভোরে ফজরের নামায আদায় করতেন। ইবনু আবি হারমালা (র) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা)-কে (তখন) যায়নবের লোকদেরকে বলতে শুনেছি তোমরা তোমাদের জানাযার নামায এখন আদায় করে নাও অথবা রেখে যাও সূর্য ঊর্ধ্বে ওঠা পর্যন্ত। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন, আসরের পর ও ফজরের পর জানাযার নামায পড়া যেতে পারে, যদি উভয় নামায যথাসময়ে পড়া হয়ে থাকে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【8】

মসজিদে জানাযার নামায পড়া

আবূন নাযর (র) সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রা)-এর যখন মৃত্যু হয়, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) তাঁর জানাযা মসজিদের ভেতর আয়েশা (রা)-এর সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেন তিনি তাঁর (সা’দ ইবনু আবি ওয়াককাসের) জন্য দু’আ করতে পারেন। লোকে তাঁর এ কাজের সমালোচনা করলেন। তখন আয়েশা (রা) বললেন, লোক কত তাড়াতাড়ি ভুলে গেল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সুহায়ল ইবনু বয়যা (রা)-এর জানাযার নামায মসজিদেই আদায় করেছিলেন। (সহীহ, মুসলিম ৯৭৩, ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদের মধ্যে إنقطاع রয়েছে) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন, তিনি উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর জানাযার নামায মসজিদের ভেতর আদায় করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【9】

জানাযার নামাযের বিবিধ আহকাম

মালিক (র) তাঁর কাছে খবর পৌঁছেছে যে, উসমান ইবনু আফ্ফান (রা), আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) এবং আবূ হুরায়রা (রা) মদীনায় পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জানাযার নামায (একত্রে) আদায় করতেন। তখন তাঁরা পুরুষদেরকে (লাশ) ইমামের নিকট, স্ত্রীলোকদেরকে (লাশ) কিবলার কাছে রাখতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রা) যখন জানাযার নামায আদায় করতেন, তখন (নামাযান্তে) পার্শ্ববর্তী লোকে শুনে এভাবে উচ্চৈঃস্বরে সালাম ফিরাতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) নাফি’ (র) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন, ওযূ ছাড়া কোন লোক যেন জানাযার নামায না পড়ে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) ইয়াহ্ইয়া (র) বলেন, মালিক (র) বলতেন, আমি আহলে ইল্মের মধ্যে কাউকেও জারজ সন্তান ও তার মাতার জানাযার নামায পড়াকে মাকরূহ মনে করতে দেখিনি।

【10】

মুর্দার দাফন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে

মালিক (র) তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওফাত পেয়েছেন সোমবার এবং তাঁকে দাফন করা হয়েছে মঙ্গলবার, আর লোকে তাঁর (জানাযার) নামায আদায় করেছেন পৃথক পৃথকভাবে; কেউ তাঁদের ইমামতি করছিলেন না। অতঃপর কিছু লোক বলেন, তাঁকে মিম্বরের নিকট দাফন করা হোক; পরে কেউ বলেন, বকী’তে দাফন করা হোক। ইতিমধ্যে আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রা) উপস্থিত হন। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কখনও কোন নবীকে দাফন করা হয়নি যে জায়গায় তিনি ওফাত পেয়েছেন সে জায়গায় ব্যতীত। অতঃপর সে জায়গায় (অর্থাৎ তাঁর হুজরা শরীফে) তাঁর কবরের স্থান নির্ধারণ করা হয়। যখন তাঁকে গোসল দেয়ার সময় হয় এবং লোকে তাঁর কোর্তা খোলার জন্য ইচ্ছা করেন, তখন তাঁরা আওয়ায শুনতে পেলেন কেউ বলতেছেন, কোর্তা খুলো না। তারপর কোর্তা খোলা হয়নি। ফলে কোর্তা তাঁর (পবিত্র) দেহেই ছিল। সে অবস্থায়ই গোসল দেয়া হয়েছে। (ইমাম তিরমিযী অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন ২/১২৯, এবং আলবানী ইমাম তিরমিযী কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের শেষে বলেন এই হাদীসের অনেক সনদ শাহেদ রয়েছে [আহকামুল জানায়েজ পৃঃ ১৩৭]) হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) তাঁর পিতা উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (র) হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) তাঁর পিতা উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (র) হতে বর্ণনা করেন মদীনায় দু’জন লোক ছিলেন, একজন বোগলী কবর তৈয়ার করতেন, অন্যজন বোগলী করতেন না। তাঁরা (সাহাবীগণ) বললেন, দু’জনের মধ্যে যিনি প্রথমে আসবেন তিনিই কাজ শুরু করবেন। তারপর যিনি বোগলী করতেন তিনি প্রথমে এলেন। পরে তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য বোগলী কবর প্রস্তুত করলেন। (যয়ীফ, ইমাম ইবনু মাজা আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন ১৫৫৭, আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে ইবনু মাজাহ], ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল) মালিক (র) তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী উম্মে সালমা (রা) বলতেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মৃত্যু সংবাদ বিশ্বাস করিনি, যতক্ষণ কোদাল চালনার শব্দ শুনতে পাইনি। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) আমি স্বপ্নে দেখলাম, তিনটি চাঁদ আমার হুজরায় পতিত হয়েছে। অতঃপর আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রা)-এর কাছে আমার স্বপ্ন বর্ণনা করলাম। আয়েশা (রা) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওফাত প্রাপ্ত হলেন এবং আমার গৃহে তাঁকে দাফন করা হল, তখন তিনি (আবূ বক্‌র সিদ্দীক রা) তাঁকে (আয়েশা রা) বললেন, (রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর স্বপ্নের দেখা) চাঁদসমূহের একটি এবং তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁদের মধ্যে উত্তম। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) মালিক (র) বর্ণনা করেন সা’দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রা) এবং সাঈদ ইবনু যায়দ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল (রা) আকিক নামক স্থানে ওফাত পান। তাদেরকে মদীনায় আনা হয় এবং সেখানে দাফন করা হয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) হিশাম ইবনু উরওয়াহ্ (র) তাঁর পিতা তিনি (যুবায়র রা) বলেছেন, বাকীতে আমাকে দাফন করা হোক. তা আমি পছন্দ করি না, কারণ আমাকে বাকীতে দাফন করা অপেক্ষা অন্যত্র দাফন করা আমার কাছে অধিক পছন্দনীয়। (কারণ সে কবরওয়ালা) অবশ্য দুই ব্যক্তির এক ব্যক্তি বটে, হয়ত সে জালিম, তাই সে ব্যক্তির সাথে আমাকে দাফন করা হোক তা আমি পছন্দ করি না অথবা তিনি সৎ ব্যক্তি, তাই আমার জন্য তাঁর হাড় (কবর) খোলা হোক, তা আমি পছন্দ করি না। (বাকী কবরস্থানে নূতন কবরেরও জায়গা না থাকায় পুরাতন কবর খুলে তাতে কবর দেয়া হত।) (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【11】

জানাযার জন্য দণ্ডায়মান হওয়া ও কবরের উপর বসা

আলী ইবনু আবি তালিব (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জানাযার সম্মানার্থে দাঁড়াতেন, পরবর্তী সময়ে তিনি দাঁড়াতেন না বরং বসে থাকতেন। (সহীহ, মুসলিম ৯৬২, তবে মুসলিম শরীফে رأينا رسول الله صلى الله عليه وسلم قامفقعدنا শব্দে এসেছে) মালিক (র) তাঁর কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আলী ইবনু আবি তালিব (রা) কবরকে তাকিয়া বানাতেন আর উহার উপর শুইতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন, আমরা যা জানি তা হল, মলমূত্র ত্যাগের জন্য কবরের উপর বসতে নিষেধ করা হয়েছে। আবূ বক্‌র ইবনু উসমান ইবনু সাহল ইবনু হুনায়ফ (র) তিনি আবূ উমামা ইবনু সাহল ইবনু হুনায়ফকে বলতে শুনেছেন, আমরা জানাযায় শরীক হতাম, তবে লোকদের মধ্যে শেষ ব্যক্তিও বসতেন না, যতক্ষণ না তাকে সকলে অনুমতি দিতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)

【12】

মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদতে নিষেধ করা

জাবির ইবনু আতিক (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবদুল্লাহ ইবনু সাবিত (রা)-কে রোগশয্যায় দেখতে এলেন। তাঁকে রোগে কাহিল অবস্থায় পেলেন। তিনি তাঁকে ডাকলেন, কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘ইন্নালিল্লাহি’ পাঠ করলেন এবং বললেন, হে আবূ রাবী’! আমরা তোমার ব্যাপারে পরাস্ত হলাম। স্ত্রীলোকেরা তখন চিৎকার করে উঠল এবং কাঁদতে লাগল। জাবির ইবনু আতিক (রা) তাদেরকে বারণ করতে লাগলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাদেরকে ছাড়, যখন সময় আসবে তখন কোন ক্রন্দনকারীণী ক্রন্দন করবে না। তাঁরা বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! সময় আসার অর্থ কি? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যখন মৃত্যু হবে। এটা শুনে তাঁর কন্যা মৃত পিতাকে বললেন, আল্লাহ্‌র কসম, আমি আশা করেছিলাম আপনি শহীদ হবেন। কারণ আপনি (জিহাদের) আসবাব প্রস্তুত করেছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাঁর নিয়ত অনুযায়ী আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর জন্য সওয়াব নির্ধারণ করেছেন। তোমরা শাহাদত কাকে গণ্য করে থাক? তাঁরা বললেন, আল্লাহর রাস্তায় নিহত হওয়াকে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহর পথে নিহত হওয়া ছাড়াও শহীদ সাত প্রকারের: (ক) তাউনে (মহামারীতে) মৃত ব্যক্তি শহীদ, (খ) যে ডুবে মারা যায় সে শহীদ, (গ) নিউমোনিয়া রোগে মৃত ব্যক্তি শহীদ, (ঘ) পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, (ঙ) যে পুড়ে মারা যায় সে শহীদ, (চ) কোন কিছু চাপা পড়ে যে মারা গেছে সে শহীদ, (ছ) আন্তঃসত্ত্বায় মৃত মহিলা শহীদ। (সহীহ, আবূ দাঊদ ৩১১১, নাসাঈ ১৮৪৬, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [আত-তারগীব ওয়াত তারহীব ১৩৯৮]) ‘আম্রা বিন্ত আবদুর রহমান (র) তিনি উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রা)-কে বলতে শুনেছেন, তাঁর নিকট উল্লেখ করা হয় যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন, জীবিত ব্যক্তির ক্রন্দনের কারণে মৃত ব্যক্তিকে আযাব দেয়া হয়। তা শুনে আয়েশা (রা) বললেন, আবূ আবদূর রহমানকে আল্লাহ্ ক্ষমা করুন। এটি সত্য যে, তিনি মিথ্যা বলেন নি। অবশ্য তিনি ভুলে গিয়েছেন অথবা ভুল করেছেন। ঘটনা এই যে, এক ইহুদী মহিলার (কবরের) পাশ দিয়ে একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যাচ্ছিলেন, তার পরিবারের লোকেরা তার জন্য কাঁদছিল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তারা এর জন্য কাঁদছে অথচ তাকে আযাব দেয়া হচ্ছে। (বুখারী ১২৮৯, মুসলিম ৯৩১)

【13】

মুসিবতে ধৈর্যধারণ

আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুসলমানদের কারো তিনটি সন্তানের মৃত্যু হলে তাকে (জাহান্নামের) আগুন স্পর্শ করবে না। তবে কসম হালাল হওয়া পরিমাণ সময় অর্থাৎ অতি অল্প সময় অথবা জাহান্নামের উপর দিয়ে (পুলসিরাত) অতিক্রম করাকালীন। (বুখারী ১২৫১, মুসলিম ২৬৩২) আবূ নাযর [১] সালামী (র) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুসলমানদের কারো যদি তিনটি সন্তান মারা যায়, অতঃপর সে যদি তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করে, তবে সন্তান তার জন্য (জাহান্নামের) আগুন হতে (রক্ষার) ঢালস্বরূপ হবে। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট জনৈকা মহিলা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! দু’টি সন্তানের মৃত্যু হলেও কি ? তিনি বললেন, দু’টি সন্তানের (মৃত্যু হলে)-ও। (বুখারী ১০২, মুসলিম ২৬৩৩) আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সর্বদা মু’মিনের উপর মুসিবত পৌঁছে থাকে, তার সন্তান ও আত্মীয়দের (মৃত্যু ও রোগের) কারণে। এমন কি এভাবে সে আল্লাহর সাথে মিলিত হয় নিষ্পাপ অবস্থায়। (সহীহ, তিরমিযী ২৩৯৯, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন) [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে তিরমিযী])

【14】

মুসিবতের ধৈর্যধারণ সম্পর্কে বিবিধ বর্ণনা

আবদুর রহমান ইবনু কাসিম (র) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুসলমানগণ তাদের মুসিবতে সান্ত্বনা লাভ করবে আমার মুসিবত দ্বারা অর্থাৎ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুসিবত দেখে। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন) নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী উম্মে সালমা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যার (উপর) কোন মুসিবত পৌঁছে, অতঃপর আল্লাহ্ তাকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন সেরূপ বলে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাযিউন اللهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَأَعْقِبْنِي خَيْرًا مِنْهَا. ‘হে আল্লাহ্! আমার মুসিবতে (উহার বিনিময়ে) আমাকে সওয়াব দান করুন এবং উহার পশ্চাতে আমাকে উহা অপেক্ষা উত্তম বস্তু দান করুন।’ তবে আল্লাহ্ তার সাথে সেরূপ করবেন। উম্মে সালমা (রা) বলেন, আবূ সালমা (রা)-এর ওফাতের পর আমি উক্ত দু’আ পাঠ করলাম, আর বললাম, আবূ সালমা (রা) হতে ভাল কে হবেন? ফলে তার পরিবর্তে আল্লাহ্ আমাকে তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে প্রদান করলেন, অতঃপর তিনি আমাকে বিবাহ করেন। (সহীহ, মুসলিম ৯১৮) কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (র) আমার এক স্ত্রীর ইন্তিকাল হয়। মুহাম্মদ ইবনু কা’ব কুরাজী (র) আমাকে তাঁর (মৃত্যু) উপলক্ষে সান্ত্বনা দিতে এলেন। তিনি বললেন, বনি ইসরাঈলের এক ব্যক্তি ছিলেন আলিম, ইবাদতগুযার, মুজতাহিদ, শরীয়তের মাসায়েলে পারদর্শী। তাঁর এক স্ত্রী ছিল, তাঁদের দু’জনের মধ্যে গভীর ভালবাসা ছিল। (ঘটনাক্রমে) সে স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এতে তিনি খুব মর্মাহত ও ব্যথিত হলেন। এমন কি তিনি নিজেকে একটি গৃহে অন্তরীণ করে ফেললেন এবং লোকের সংশ্রব বর্জন করলেন, অতঃপর কেউ তাঁর কাছে যেত না। জনৈকা মহিলা এই বৃত্তান্ত শুনে তাঁর কাছে উপস্থিত হলেন। তিনি বললেন, তাঁর কাছে আমার একটি আবশ্যক রয়েছে, যে বিষয়ে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করব। তার সাথে সামনাসামনি না হলে আমার আবশ্যক পূর্ণ হবে না। (তাঁর গৃহদ্বার ত্যাগ করে) সব লোক চলে গেল, কিন্তু উক্ত মহিলা তাঁর দ্বারে রয়ে গেলেন এবং বললেন, তাঁর নিকট আমার প্রয়োজন রয়েছে। একজন লোক সে ব্যক্তির নিকট বলল, এখানে একজন মহিলা আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছুক। তিনি বলতেছেন আমি তাঁর সাক্ষাতপ্রার্থী মাত্র। সকল লোক চলে গিয়েছে কিন্তু তিনি দরজা ছাড়েন না। তিনি বললেন, তোমরা তাকে আসতে অনুমতি দাও। (অনুমতি পেয়ে সেই মহিলা) প্রবেশ করলেন এবং বললেন, আমি আপনার নিকট একটি বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে এসেছি। তিনি বললেন, সে বিষয়টি কি ? (উক্ত মহিলা) বললেন, আমার প্রতিবেশিনীর নিকট হতে আমি একটি গহনা ধার নিলাম। অতঃপর আমি উহা পরিধান করতাম এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উহা লোককে ধারস্বরূপ দিতাম। অতঃপর তারা উহার (ফেরত দেওয়ার) জন্য আমার নিকট লোক পাঠালেন। আমি তা ফেরত দেব কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম। মহিলা বললেন, সে গহনাটি যে বেশ কিছুদিন আমার কাছে ছিল। তিনি বললেন, এজন্য আরও বেশি উচিত যে, তুমি উহা তাদের নিকট ফেরত দাও, তাঁরা এতকাল পর্যন্ত তোমাকে ধার দিয়েছেন। তখন উক্ত মহিলা বললেন, ওহে! আপনার প্রতি আল্লাহ্ দয়া করুন, আপনি আফসোস করতেছেন এমন বস্তুর উপর যা আল্লাহ্ আপনাকে ধার দিয়েছেন, অতঃপর তিনি উহা গ্রহণ করেছেন আপনার নিকট হতে। অথচ তিনি উহার হকদার বেশি আপনি অপেক্ষা। তবে ভেবে দেখুন আপনি কোন্ হালতে আছেন। আল্লাহ্ এই মহিলার উপদেশ দ্বারা তাঁকে উপকৃত করলেন। (ইসরাঈলী বর্ণনা এবং ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আর উল্লেখিত ঘটনা শরীয়তে মুহাম্মাদী এর সাথে। বিপরীত মুখিও নয়।)

【15】

কাফন চুরির সাজা

আবূ রিজাল মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহমান (র) তাঁর মাতা আমরা বিনতে আবদুর রহমান (র) তাঁকে বলতে শুনেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাফন-চোর পুরুষ এবং নারীকে লা’নত করেছেন। (সহীহ, বাইহাকী ৮/২৭০. আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সিলসিলাতুস সহীহা ২১৪৭]) নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী আয়েশা (রা) মৃতাবস্থায় মুসলমানদের হাড় ভেঙে দেয়া জীবিতাবস্থায় হাড় ভেঙে দেয়ার মত। মালিক (র) বলেন, অর্থাৎ পাপের দিক দিয়ে সমান। (সহীহ, মারফু, আবূ দাঊদ ৩২০৭, ইবনু মাজাহ ১৬১৬, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন [ইরওয়া ৭৬৩])

【16】

জানাযা সংক্রান্ত বিবিধ আহকাম

আব্বাস ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (র) নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পত্নী আয়েশা (রা) তাঁকে খবর দিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর ওফাতের পূর্বে যখন আয়েশা (রা)-এর বুকে মাথা রেখে শায়িত ছিলেন তখন আয়েশা (রা) তাঁর দিকে ঝুঁকে রয়েছিলেন। (বুখারী ৪৪৪০, মুসলিম ২৪৪৪) তখন তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন اللهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَأَلْحِقْنِي بِالرَّفِيقِ الْأَعْلَى ৪৬ [১] و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْ نَبِيٍّ يَمُوتُ حَتَّى يُخَيَّرَ قَالَتْ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ اللهُمَّ الرَّفِيقَ الْأَعْلَى فَعَرَفْتُ أَنَّهُ ذَاهِبٌ. নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, এখতিয়ার দেয়ার পূর্বে কোন নাবীর ওফাত হয় না। তিনি (আয়েশা রা.) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি اَللّٰهُمَّ الرَّفِيْقَ الْأَعْلَى তখন আমি জানতে পারলাম, তিনি পরলোকগমন করতেছেন। (বুখারী ৪৪৩৫, মুসলিম ২৪৪৪, আর ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত সনদটি মুনকাতে’) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন সকাল-সন্ধা তার নিকট তার অবস্থানের জায়গা পেশ করা হয়। যদি সে বেহেশতী হয় তবে বেহেশতীদের (ঠিকানার) মধ্যে তাঁর ঠিকানা দেখান হবে। আর যদি দোযখী হয় তবে দোযখীদের (ঠিকানার) মধ্যে তার ঠিকানা দেখান হবে। তাকে বলা হবে ইহাই তোমার ঠিকানা, কিয়ামত দিবসে উক্ত ঠিকানায় তোমাকে পৌঁছান পর্যন্ত। (বুখারী ১৩৭৯, মুসলিম ২৭৬৬) আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, বনি আদমের মেরুদণ্ডের নিম্নাংশের ক্ষুদ্র হাড়টি ব্যতীত সবকিছুই মাটি খেয়ে ফেলবে, উহা হতেই সৃষ্টি করা হয়েছে এবং উহা হতেই পুনরায় সৃষ্টি করা হবে। (সহীহ, মুসলিম ২৯৫৫) কা’ব ইবনু মালিক (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মু’মিনের আত্মা পাখির মত বেহেশতের বৃক্ষে লটকানো থাকে, পুনরুত্থান দিবসে তাঁর দেহে ফিরে পাঠান পর্যন্ত। (সহীহ, নাসাঈ ২০৭৩, তিরমিযী ১৬১৪, ইবনু মাজাহ ১৪৪৯, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ আল জামে’ ২৩৭৩]) আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেছেন আমার বান্দা আমার সাক্ষাতকে ভালবাসিলে আমিও তার সাক্ষাতকে ভালবাসি। আর সে আমার সাক্ষাতকে অপছন্দ করলে, আমিও তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করি। (সহীহ, বুখারী ৭৫০৪) আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, এক ব্যক্তি কোন সময় নেকী করেনি, তার পরিজনকে বলল, সে মারা গেলে তাকে যেন জ্বালিয়ে ফেলে, অতঃপর উহার অর্ধেক শুকনায় ছড়িয়ে দেয়, আর অর্ধেক সাগরে ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহর কসম, যদি আল্লাহ্ তার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করেন তবে তাকে এরূপ শাস্তি দিবেন জগৎবাসীদের কাউকেও সেরূপ শাস্তি তিনি দিবেন না। সে ব্যক্তির যখন মৃত্যু হল, তার পরিজন তার নির্দেশানুযায়ী কাজ করল। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা শুষ্ক ভূমিকে হুকুম করলেন, সে ব্যক্তির অংশসমূহকে যা তার মধ্যে ছিল একত্র করে দিতে, আর সাগরকে হুকুম দিলেন, যা তোমার মধ্যে ছিল একত্র করে দিতে। ভূমি সে ব্যক্তির অংশকে একত্র করে দিল, সাগরও উহাকে একত্র করে দিল। তারপর আল্লাহ্ বললেন, তুমি এই কাজ কেন করলে ? সে বলল, আপনার ভয়ে, হে প্রভু! আর আপনি অধিক জ্ঞাত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, অতঃপর তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল। (সহীহ, বুখারী ৭৫০৬, মুসলিম ২৪৫৬) আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, (বনি আদমের) প্রতিটি নবাগত সন্তান স্বভাব-এর فِطْرَةِ উপর জন্মায়। অতঃপর তার মাতাপিতা তাকে ইহুদী বানায়, অথবা খৃষ্টান বানায়, যেমন উট জন্ম নেয় সুস্থ-পূর্ণ দেহের উট হতে। তোমরা কি উহাকে কান কাটা অবস্থায় দেখতে পাও ? তারা বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! যে শিশু শৈশবে মারা যায় সে শিশু সম্পর্কে আপনার মতামত কি ? তিনি বললেন, তারা প্রাপ্তবয়স্ক হলে কিরূপ কাজ করত তা আল্লাহ্ অধিক অবগত। (বুখারী ১৩৫৮, মুসলিম ২৬৫৮) আবূ হুরায়রা (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষণ না এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির কবরের পাশ দিয়ে চলবে এবং বলবে আহা যদি আমি এই (কবরবাসী) লোকের জায়গায় হতাম। (বুখারী ৭১১৫, মুসলিম ১৫৭) আবূ কাতাদা ইবনু রিবয়ী (রা) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি বললেন, مُسْتَرِيحٌ وَمُسْتَرَاحٌ مِنْهُ . অর্থাৎ সে নিজেও শান্তিপ্রাপ্ত এবং অন্য লোকও তা হতে শান্তি লাভ করেছেন। তাঁরা (উপস্থিত সাহাবীগণ) বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! মুসতারীহ্ এবং মুসতারাহ্ মিনহ্-এর তাৎপর্য কি ? তিনি বললেন, মু’মিন বান্দা (মৃত্যুর মাধ্যমে) দুনিয়ার দুঃখ-ক্লেশ হতে (মুক্তি লাভ করে) আল্লাহর রহমতের দিকে গমন করে এবং শান্তি লাভ করে। আর পাপী বান্দা হতে আল্লাহর বান্দাগণ শহর, নগর, বৃক্ষরাজি ও জীব-জন্তু সবকিছুই শান্তি লাভ করে অর্থাৎ তার কষ্ট হতে মুক্তি পায়। (বুখারী ৬৫১২, ৬৫১৩, মুসলিম ৯৫০) আবুন নাযর (র) হতে বর্ণিত; যখন উসমান ইবনু মযউন (রা) ইন্তিকাল করলেন এবং তাঁর জানাযা নিয়ে যাওয়া হল, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি (দুনিয়া হতে) চলে গেলে (এমন অবস্থায় যে) দুনিয়ার সাথে কোন সম্পর্ক গড়লে না। (ইবনু সা’দ বর্ণনা করেন [তাবাকাত ৩/৩৯৭]) আলকামা ইবনু আবি আলকামা (র) তাঁর মাতা তিনি বলেছেন, আমি নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিনী আয়েশা (রা)-কে বলতে শুনেছে, এক রাত্রে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উঠলেন এবং কাপড় পরিধান করলেন। অতঃপর প্রস্থান করলেন। আয়েশা (রা) বলেন, আমি আমার দাসী বরীরাহ (রা)-কে তার অনুসরণ করতে নির্দেশ দিলাম। সে অনুসরণ করল। (যেতে যেতে) তিনি (হযরত সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাকী’ পর্যন্ত পৌঁছালেন এবং বাকী’তে দাঁড়ালেন, যতক্ষণ আল্লাহ্ ইচ্ছা করলেন। অতঃপর প্রত্যাবর্তন করলেন। বরীরাহ তাঁর আগেই চলে আসল এবং আমাকে ঘটনার খবর বলল, ভোর হওয়া পর্যন্ত আমি আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে কিছুই উল্লেখ করলাম না। ফজরে এই ঘটনা আমি তাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। তখন তিনি বললেন, বাকী’র বাসিন্দাদের নিকট আমি প্রেরিত হয়েছিলাম তাঁদের জন্য দু’আ করার উদ্দেশ্যে। (সহীহ, নাসাঈ ২০৩৮, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [সহীহ আল-জামে ২৮২৮]) নাফি’ (র) আবূ হুরায়রা (রা) বলেছেন, তোমরা জানাযা (নেওয়ার ব্যাপারে) খুব তাড়াতাড়ি করো। কারণ (সে জানাযা) হয়তো ভাল লোক যাকে তারা আল্লাহর কাছে পেশ করতেছে অথবা মন্দ লোক যাকে তোমরা নিজেদের ঘাড় হতে খালাশ করতেছ। (বুখারী ১৩১৫, মুসলিম ৯৪৪)