27. ফারায়েয

【1】

ভিন্ন ধর্মীয় লোকদের মীরাস

উসামা ইবনু যায়দ (রা) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলমান কাফিরের ওয়ারিস হবে না। (আর কাফিরও মুসলমানের ওয়ারিস হবে না। (বুখারী ৬৭৬৪, মুসলিম ১৬১৪) আলী ইবনু আবি তালিব (রা) যখন আবূ তালিবের মৃত্যু হয়েছে তখন তার ছেলে আকীল ও তালিব তার ওয়ারিস হয়েছে। কিন্তু আলী তার ওয়ারিস হয়নি। এজন্য আমরা মক্কার ঘরের নিজের অংশ ছেড়ে দিয়েছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) (কেননা এরা উভয়ে তখন কাফের ছিল, পরে আকীল মুসলমান হয়ে গিয়েছিল আর তালিব নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল।) সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (র) মুহাম্মদ ইবনু আশ‘আসের এক ফুফু ছিল ইহুদী অথবা খৃস্টান। সে মৃত্যুবরণ করলে মুহাম্মাদ ইবনু আশ‘আস উমার (রা)-এর নিকট তা বললেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, কে তার ওয়ারিস হবে? উমার (রা) বললেন, তার স্বধর্মীয়গণ তার ওয়ারিস হবে। অতঃপর যখন ‘উসমান খলীফা হলেন, তখন তার নিকট জিজ্ঞেস করলেন, ‘উসমান (রা) বললেন, কেন উমার তোমাকে যা বলেছেন তা কি তোমার স্মরণ নাই? অতঃপর তিনি বললেন, তার স্বধর্মের লোকেরাই তার ওয়ারিস হবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইসমাঈল ইবনু আবূ হাকীম (র) উমার ইবনু আবদীল আযীয (র)-এর এক খৃস্টান গোলাম ছিল। তিনি তাকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পর উমার আমাকে বললেন, তার মাল বায়তুলমালে জমা দিয়ে দাও (কেননা মুসলমান কাফেরের ওয়ারিস হবে না)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) সাঈদ ইবনু মুসায়্যাব (রা) তিনি বলতেন, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) অনারব লোকদেরকে আরবের লোকের ওয়ারিস হতে নিষেধ করতেন। অবশ্য যে আরবে জন্মগ্রহণ করত সে মীরাস পেত। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন : কোন গর্ভবতী স্ত্রীলোক কাফেরদের দেখ হতে এসে আরবে বসতি স্থির করল, তথায় তার সন্তান জন্মাল, এখন সে সন্তানের এবং সন্তান তার ওয়ারিস হবে। মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট এহা একটি সর্বসম্মত বিষয় যে, যে কোন আত্মীয়তার দরুনই হোক না কেন মুসলমান কাফেরের ওয়ারিস হবে না, বংশগত আত্মীয়তা হোক বা অন্য প্রকারের আর সে অন্য কাউকেও তার মীরাস হতে মাহরূম করতে পারবে না। যেমন কোন কাফের মৃত্যুবরণ করলে যার সন্তান মুসলমান, ভাই কাফের। এখন ছেলে মীরাস পাবে না ভাই পাবে। এই ছেলের জন্য ভাই মাহরূম হবে না। মালিক (র) বলেন : এইরূপে যে মীরাস না পায় এবং সে ব্যতীত অন্য ওয়ারিস বর্তমান থাকে তবে সে অন্যকে মাহরূম করতে পারে না।

【2】

সন্তানের মীরাস

মালিক (রঃ) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত মাসআলা এই, আমাদের শহরের আলিমগণকে মীরাসের অংশ বন্টন সম্পর্কে এই মতই পোষণ করতে দেখেছি : যখন ছেলেমেয়ের পিতা-মাতার মৃত্যু হয় এবং তার সম্পদ রেখে যায়, তবে মেয়ের দ্বিগুণ মীরাস ছেলে পাবে; যদি শুধু দুই মেয়ে কিংবা ততোধিক মেয়ে থাকে তবে পূর্ণ মালের দুই-তৃতীয়াংশ মেয়েগণ মীরাস পাবে। যদি এক মেয়ে থাকে তবে অর্ধেক অংশ মীরাস পাবে। আর যদি মৃত ব্যক্তির কোন যবিল ফুরূয (যাদেরকে হিস্যা কুরআন মজীদে নির্ধারিত আছে) থাকে এবং ছেলেমেয়েও বিদ্যমান থাকে তবে প্রথমত অংশীদারগণের হিস্যা আদায় করে ছেলেমেয়েদেরকে পূর্ব বর্ণিত নিয়মে অংশ দিবে অর্থাৎ ছেলে পাবে মেয়ের দ্বিগুণ। তবে পিতা যবিল ফুরূয হিসাবে এক-ষষ্ঠাংশ পাবে অবশিষ্ট ওয়ারিশগণ বাকী পাঁচ হিস্যার দুই হিস্যা এক ছেলে এবং তিন হিস্যা তিন মেয়ে পাবে। মালিক (রঃ) বলেন, যদি মৃতের পুত্র কন্যা কেউ না থাকে তবে নাতি এবং নাতনিগণ ওয়ারিস হবে। নাতি-নাতনীদের হিস্যাও পুত্র-কন্যাদের হিস্যার মতো বন্টন করা হবে, মীরাস পাওয়া না পাওয়ার ব্যাপারে হাদের হুকুম পুত্রদের মতো। তবে মৃতের একটি পুত্র ও নাতি থাকলে নাতি ওয়ারিস হবে না। মৃতের দুই অথবা ততোধিক কন্যা থাকলেও নাতনিগণ ওয়ারিস হবে না। হ্যাঁ, যদি নাতনীদের সঙ্গে কোন নাতিও থাকে, মৃত্রের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কন্যাদের মতো অথবা তাদের তুলনায় কিছু দূর-সম্পর্কীয়। তবে যবিল ফুরূযের হিস্যা দেওয়ার পর কিছু মাল বেঁচে থাকলে তা কন্যাদের সমপর্যায়ের নাতি এবং নাতির তুলনায় উচ্চ অর্থাৎ নিকট সম্পর্কীয়া নাতনীগণ পাবে এবং নাতনীর দ্বিগুণ নাতি পাবে। যদি যবিল ফুরূযকে দেওয়ার পর অবশিষ্ট না থাকে তবে তারা কিছুই পাবে না। যদি মৃতের একটি মেয়ে থাকে তবে সে অর্ধেক পাবে। আর তার পুত্রের মেয়ে সন্তান অর্থাৎ তার নাতনী এক বা একাধিক হলে এরা সকলেই মৃতের ওয়ারিস হিসাবে এক-ষষ্ঠাংশ পাবে আর যদি নাতনীদের সঙ্গে নাতিও থাকে তবে নাতনীরা কিছুই পাবে না, যদি যবিল ফুরূযকে দিয়ে কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে তা ঐ নাতির হিস্যা এবং তার সঙ্গে অন্য যে তার সমকক্ষ এবং তার ঊর্ধ্বের নাতনীরাও তার সঙ্গে হিস্যা পাবে, পুরুষ মেয়ের দ্বিগুণ এই হিসাবে আর দূরবর্তীদের জন্য কোন অংশ নাই যবিল যুরূযুকে দিয়ে কিছু অবশিষ্ট না থাকলে তাদের জন্য কিছুই নাই। আর ইহা এজন্য যে, আল্লাহ্ পাক স্বীয় কিতাবে বলেন : يُوْصِيْكُمُ اللهُ فِي أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ فَإِنْ كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِنْ كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিতেছেন, এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান, কিন্তু কেবল কন্যা দুই-এর অধিক থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ, আর এক কন্যা থাকলে তাদের জন্য অর্ধাংশ। (সূরা নিসা - ১১) মালিক (রঃ) বলেন : আতরাফ অর্থাৎ দূরবর্তীগণ।

【3】

মিরাস বণ্টনে স্বামীর অংশ স্ত্রী হতে এবং স্ত্রীর অংশ স্বামী হতে কি পরিমাণ

মালিক (র) বলেন : স্ত্রীর মৃত্যুর পর যদি তার কোন ছেলে কিংবা নাতি না থাকে তবে স্বামী অর্ধেক মালের মীরাস পাবে। যদি কোন ছেলে অথবা ছেলের ঔরসজাত নাতি বা নাতনী বিদ্যমান থাকে তবে স্বামী এক-চতুর্থাংশ মীরাস পাবে, তবে শর্ত এই মৃতের কোন ওসীয়্যত থাকলে কিংবা কোন ঋণ থাকলে তা পূর্বেই আদায় করতে হবে। তদ্রূপ স্বামীর মৃত্যু হলে যদি কোন ছেলে কিংবা নাতি না থাকে, তবে স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদ হতে স্ত্রী এক-চতুর্থাংশ পাবে। আর যদি কোন ছেলে কিংবা নাতি-নাতনী থাকে, তবে স্ত্রী এক-অষ্টমাংশ মীরাস পাবে। এ স্থলেও স্বামীর কোন ওসীয়্যত কিংবা ঋণ থাকলে তা মীরাস বন্টনের পূর্বেই আদায় করতে হবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা কুরআন পাকে বলেছেন : وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَاجُكُمْ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُنَّ وَلَدٌ فَإِنْ كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمْ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَكُمْ وَلَدٌ فَإِنْ كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُمْ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ . তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ তোমাদের জন্য যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে এবং তাদের সন্তান থাকলে তোমাদের জন্য তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ। তোমরা যা ওসীয়্যত করবে তা দেওয়া ও ঋণ পরিশোধের পর।

【4】

সন্তানের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পিতা-মাতার মীরাস

মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মত মাসআলা এই- আমাদের শহরের ‘আলিমগণকেও অনুরূপ মত পোষণ করতে দেখেছি যে, মৃত ব্যক্তি যদি ছেলে কিংবা পুত্রের ঔরসজাত নাতি রেখে মারা যায়, তবে মৃতের পিতা এক-ষষ্ঠাংশ মীরাস পাবে। আর যদি মৃতের ছেলে কিংবা নাতি না থাকে তবে যবিল ফুরূযের হিস্যা দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তা এক-ষষ্ঠাংশের সমান হোক কিংবা বেশি হোক তা পিতা পাবে। যদি যবিল ফুরূযের হিস্যা দেওয়ার পর ষষ্ঠাংশ না থাকে তবে ষষ্ঠাংশ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মৃত ব্যক্তির যদি মাতা, ছেলেমেয়ে কিংবা ছেলের পক্ষের নাতি, নাত্নী কিংবা দুই ভাই কিংবা ততোধিক ভাই থাকে, আপন ভাই কিংবা মাতৃপক্ষের ভাই কিংবা পিতৃপক্ষের ভাই কিংবা বোনসমূহ থাকে তবে মাতা এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। আর যদি উপরিউল্লিখিত কেউ না থাকে, তবে মাতা পূর্ণ এক-তৃতীয়াংশ পাবে। হ্যাঁ, শুধু দুই অবস্থায় এক-তৃতীয়াংশ পাবে না বরং অবশিষ্ট মালের এক-তৃতীয়াংশ পাবে। এক অবস্থা এই যে, যদি মৃতের মাতা-পিতা বিদ্যমান থাকে এবং স্ত্রী থাকে তবে স্ত্রী এক-চতুর্থাংশ মাল পাবে। এবং মাতা এক-তৃতীয়াংশ পাবে। দ্বিতীয় অবস্থা এই যে, মৃত ব্যক্তির যদি স্বামী এবং মাতা-পিতা থাকে তবে স্বামী অর্ধেক অংশ পাবে এবং মাতা যা বাকী থাকে তার এক-তৃতীয়াংশ পাবে। অর্থাৎ মাতা এক-ষষ্ঠাং এবং পিতা এক-ষষ্ঠাংশ পাবে। কেননা তাই আল্লাহ্ তা‘আলা স্বীয় কিতাবে ইরশাদ করেছেন وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِنْ كَانَ لَهُ وَلَدٌ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ الثُّلُثُ فَإِنْ كَانَ لَهُ إِخْوَةٌ فَلِأُمِّهِ السُّدُسُ তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-ষষ্ঠাংশ, সে নিঃসন্তান হলে এবং শুধু পিতামাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য এক-তৃতীয়াংশ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ। মালিক (র) বলেন : ভাইসমূহের অর্থ দুই ভাই কিংবা ততোধিক ভাই অর্থ লওয়াও প্রচলিত সুন্নতরূপে গণ্য।

【5】

মাতৃপক্ষীয় ভাইয়ের এবং বোনের মীরাসের বর্ণনা

মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে নির্ধারিত মাসআলা এই যে, মৃত ব্যক্তির যদি কোন সন্তান থাকে কিংবা তার পিতা কিংবা দাদা (পিতামহ) জীবিত থাকে তবে মাতৃপক্ষের ভাই-বোন মীরাস হতে বঞ্চিত (মাহ্রূম) হবে। যদি উল্লিখিত ওয়ারিসগণ না থাকে তবে তারাও মীরাস পাবে। যদি একজন আখিয়াফি ভাই কিংবা বোন থাকে তবে সে অর্ধেক মীরাস পাবে। যদি দুজন আখিয়াফি ভাই কিংবা বোন থাকে তবে প্রত্যেকে অর্ধেক অংশ পাবে। যদি ততোধিক থাকে তবে এক-তৃতীয়াংশ সম্পদের সকলে মিলে সমান সমান অংশ পাবে এবং বোন ভাইয়ের সমান অংশই পাবে। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কিতাবে বলেন : وَإِنْ كَانَ رَجُلٌ يُورَثُ كَلَالَةً أَوْ امْرَأَةٌ وَلَهُ أَخٌ أَوْ أُخْتٌ فَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسُ فَإِنْ كَانُوا أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ فَهُمْ شُرَكَاءُ فِي الثُّلُثِ যদি পিতা-মাতা ও সন্তানহীন কোন পুরুষ অথবা নারীর উত্তরাধিকারী থাকে তার এক বৈপিত্রেয় ভাই অথবা ভগ্নী তবে প্রত্যেকের জন্য এক-ষষ্ঠাংশ, তারা এর অধিক হলে সকলে সমঅংশীদার হবে এক-তৃতীয়াংশে। অর্থাৎ এরূপ অবস্থায় পুরুষ ও স্ত্রীলোকে তফাৎ হবে না, সকলে সমান অংশ পাবে।

【6】

সহোদর ভাই-বোনদের হিস্যা

মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে নির্ধারিত মাসআলা এই যে, মৃত ব্যক্তির ছেলে কিংবা নাতি কিংবা পিতা জীবিত থাকলে সহোদর ভাই-বোন মীরাস পাবে না। আর যদি মৃত ব্যক্তির দাদা জীবিত না থাকে শুধু কন্যা বা নাতিন (পুত্রের কন্যা) থাকে তবে সহোদর ভাই-বোন ওয়ারিস হবে; যবীল ফুরূযের হিস্যা দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে তা সহোদর ভাই-বোন পাবে। ভাই বোনের দ্বিগুণ পাবে। যদি যবীল ফুরূযের হিস্যা দেওয়ার পর মাল না থাকে তবে তারা মাহরূম হবে। মালিক (র) বলেন : মৃত ব্যক্তির বাপ ও দাদা যদি না থাকে, আর না ছেলে এবং নাতি থাকে, শুধু একজন সহোদর বোন থাকে, তবে সে অর্ধেক হিস্যা পাবে। যদি দুই বোন কিংবা ততোধিক সহোদর বোন থাকে, তবে দুই-তৃতীয়াংশ পাবে। যদি এই বোনদের সঙ্গে কোন ভাইও থাকে তবে কন্যাদের জন্য নির্দিষ্ট অংশ থাকবে না, তারা যবীল ফুরূযদের অংশ প্রদান করে আসাবা হবে। যা অবশিষ্ট থাকে তা হতে বোনেরা দ্বিগুণ এই হারে তারা পাবে। শুধু এক অবস্থায় তাদের জন্য কিছুই থাকবে না, বরং বৈপিত্রেয় ভাই বোনদের সঙ্গে শরীক হয়ে যাবে। যেমন কোন মৃত স্ত্রীলোকের স্বামী বিদ্যমান আছে, মাতা আছে এবং বৈপিত্রেয় ভাই সকল আছে এবং সহোদর ভাই সকলও বিদ্যমান আছে। প্রথমত স্বামী অর্ধেক অংশ পাবে। মাতা এক-ষষ্ঠাংশ এবং বৈপিত্রেয় ভাইয়েরা এক-তৃতীয়াংশ পাওয়ার পর আর মাল অবশিষ্ট রইল না। এমতাবস্থায় সহোদর ভাইগণ বৈপিত্রেয় ভাইদের সাথে এক-তৃতীয়াংশ হিস্যার শরীক হবে। কেননা সকলের মাতা এক হওয়াতে সবাই তৃতীয়াংশে শরীক হল। অংশের ভাগ এই হারে, ভাই বোনের দ্বিগুণ এ সম্বন্ধে আল্লাহ্ পাক স্বীয় কিতাবে বলেন : “যদি পিতা-মাতা সন্তানহীন কোন পুরুষ অথবা নারীর উত্তরাধিকারী থাকে তার এক বৈপিত্রেয় ভাই অথবা ভগ্নী তবে প্রত্যেকের জন্য এক-ষষ্ঠাংশ তারা এর অধিক সমঅংশীদার হবে এক-তৃতীয়াংশে।”

【7】

বৈমাত্রেয় ভাই-বোনদের মীরাস সম্বন্ধে

মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে নির্ধারিত মাসআলা এই যে, মৃতের যদি সহোদর ভাই-বোন না থাকে তবে অর্থাৎ বৈমাত্রেয় ভাই সহোদর ভাই ও বৈমাত্রেয় বিমাতা ভাই-বোনগণ তাদের স্থালাভিষিক্ত হবে। বোন সহোদর বোনের মত অংশ পাবে। উহা এইরূপ : একজন বৈমাত্রেয় ভাই থাকে তবে সে সম্পূর্ণ মাল পাবে। যদি একজন বৈমাত্রেয় বোন থাকে তবে অর্ধেক মাল পাবে। যদি দুই কিংবা ততোধিক বৈমাত্রেয় বোন থাকে তবে দুই-তৃতীয়াংশ মাল পাবে। যদি ভাই বোন উভয়ই থাকে তবে বোনের দ্বিগুণ ভাই পাবে। কিন্তু বৈমাত্রেয় ভাই-বোন বৈপিত্রেয় ভাই-বোনদের সাথে শরীক হবে না। কেননা তাদের মাতা পৃথক, এক নয়। যদি সহোদর বোনদের সাথে বৈমাত্রেয় বোনও থাকে এবং সহোদর কোন ভাইও থাকে তবে বৈমাত্রেয় বোনগণ মাহরূম (বঞ্চিত) হয়ে যাবে। যদি সহোদর ভাই না থাকে শুধু একজন সহোদর বোন থাকে এবং বৈমাত্রেয় বোনগণ থাকে, তবে সহোদর বোন অর্ধেক অংশ পাবে এবং বিমাতা বোনেরা ষষ্ঠাংশ পাবে। যদি বিমাতা বোনদের সাথে কোন বিমাতা ভাইও থাকে তবে তার হিস্যা নির্দিষ্ট হবে না। বরং যবীল ফুরূযকে হিস্যা দিয়ে যা অবশিষ্ট থাকবে তা বিমাতা ভাইও থাকে তবে তার হিস্যা নির্দিষ্ট হবে না। বরং যবীল ফুরূযকে হিস্যা দিয়ে যা অবশিষ্টথাকবে তা বিমাতা ভাই-বোনগণ ভাইয়ের দ্বিগুণ হিস্যা দিয়ে বন্টন করে নিবে। আর যদি কিছু অবশিষ্ট না থাকে তবে তারা মাহরূম হয়ে যাবে। যদি সহোদর বোনগণ দুই কিংবা ততোধিক থাকে, তবে দুই-তৃতীয়াংশ পাবে এবং বিমাতা বোনেরা মাহরূম হয়ে যাবে। হ্যাঁ, যদি বিমাতা বোনদের সাথে তাদের কোন ভাই থাকে তবে ভাই তাদেরকে ‘আসাবা বানাবে। বৈপিত্রেয় ভাই-বোন যদি সহোদর ভাই-বোনদের সাথে হয়, কিংবা বৈমাত্রেয় ভাই বোনদের সাথে হয়, তবে একজন হলে ষষ্ঠাংশ পাবে, আর দুজন বা আরো অধিক হলে এক- তহৃতীয়াংশ পাবে। এমতাবস্থায় ভাই-বোন সমান সমান অংশ পাবে, এখানে পুরুষ ও নারী এক পর্যায়ের গণ্য হবে।

【8】

দাদার (পিতামহের) অংশ

মালিক (র) মু‘আবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান যায়দ ইবনু সাবিত (র)-কে দাদার মীরাস সম্বন্ধে প্রশ্ন করে লিখেছিলেন। যায়েদ উত্তরে লিখলেন, তুমি দাদার মীরাস সম্ভন্ধে জিজ্ঞেস করেছ, ইহা এমন একটি মাসআলা সেই সম্বন্ধে দুই খলীফা [উমার, উসমান (রা)] ফয়সালা করার সময় আমি স্বয়ং এতে উপস্থিত ছিলাম। মৃতের এক ভাই থাকলে দাদাকে অর্ধেক অংশ দিতেন এবং দুই ভাই থাকলে দাদার এক-তৃতীয়াংশ এবং অনেক ভাই-বোন থাকলেও ঐ এক-তৃতীয়াংশই দাদাকে দিতেন, উহা হতে কম দিতেন না। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) উমার ইবনু খাত্তাব (রা) দাদাকে এইরূপ হিস্যা দিতেন যেরূপ আজকাল লোকেরা দিয়ে থাকে। মালিক (র) বলেন, সুলায়মান ইবনু ইয়াসার হতেও এইরূপ বর্ণিত আছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) উমার ইবনু খাত্তাব (রা) মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে নির্ধারিত মাসআলা এই যে, মৃতের পিতা জীবিত থাকলে দাদা মাহরূম হয়ে যায় কিন্তু মৃতের ছেলে কিংবা নাতি বিদ্যমান থাকলে দাদা যবিল ফুরূয হিসাবে ষষ্ঠাংশ পাবে। যদি মৃতের ছেলে কিংবা নাতি না থাকে এবং সহোদর ভাই-বোন কিংবা বিমাতা ভাই-বোন না থাকে, তবে যবিল ফুরূয থাকলে তাদের হিস্যা দিয়ে যদি ষষ্ঠাং কিংবা ততোধিক মাল অবশিষ্ট থাকে তবে তা দাদা পাবে। আর যদি ষষ্ঠাংশের চেয়ে কম মাল থাকে তবে ষষ্ঠাংশ দাদার জন্য অংশ হিসাবে নির্দিষ্ট হবে। মালিক (র) বলেন : যদি মৃতের দাদা এবং সহোদর ভাই-বোনদের সাথে কোন যবীল ফুরূয থাকে, তবে যবীল ফুরূযের হিস্যা দিয়ে যা কিছু অবশিষ্ট থাকবে এতে নিম্নলিখিত অবস্থায় যা উত্তম হয় তাই কার্যকরী করা হবে। (১) অবশিষ্ট মালের এক-তৃতীয়াংশ দাদাকে দেয়া হবে। (২) দাদাকে মৃতের ভাই ধার্য করে এক ভাইয়ের সমান হিস্যা দেয়া যাবে। (৩) পূর্ণ মালের ষষ্ঠাংশ দাদাকে দেয়ার পর যদি মাল অবশিষ্ট থেকে যায় তবে তা ভাই-বোনদেরকে বোনের দ্বিগুণ ভাইকে বন্টন করে দেওয়া হবে। কিন্তু আর একটি উদাহরণে বন্টন অন্যরূপে হবে। উদাহরণটি হল এই : এক মহিলা মৃত্যুবরণ করেছে তার স্বামী, মাতা, সহোদরা ভগ্নী ও দাদা আছে, তার সম্পদের অর্ধেক পাবে স্বামী, এক-তৃতীয়াংশ মাতা, ষষ্ঠাংশ দাদা আর সহোদরা ভগ্নী অর্ধেক। অতঃপর দাদার ষষ্ঠাংশ ও বোনের অর্ধেক একত্রিত করা হবে, উহাকে এইভাবে বন্টন করা হবে যে, দাদা পাবে দুই-তৃতীয়াংশ ও বোন পাবে এক-তৃতীয়াংশ। (এই মাসআলাটি ‘আওলের [১] একটি উদাহরণ।) মালিক (র) বলেন : যদি মৃত ব্যক্তির দাদার সঙ্গে তার বিমাতা ভাইও থাকে তবে সে সহোদর ভাইয়ের মতো গ্রাহ্য হবে। যদি সহোদরের সঙ্গে বিমাতা ভাই-বোনও থাকে, তবে বিমাতা ভাই শুধু ভাইদের গণনায় ধরা হবে এবং দাদার হিস্যা কম করে দিবে স্বয়ং কোন অংশ পাবে না। হ্যাঁ, যদি সহোদর ভাইদের সঙ্গে বৈপিত্রেয় ভাইও থাকে, তবে তারা ভাইদের শামিলে গণ্য হয়ে দাদার হিস্যায় কম করতে পারবে না। কেননা যদি দাদা থাকে এবং শুধু বৈপিত্রেয় ভাই থাকে তবে দাদা পূর্ণ মাল পাবে এবং বৈপিত্রেয় ভাই মাহরূম হয়ে যাবে। যে অবস্থায় দাদার সঙ্গে সহোদর ভাই এবং বৈমাত্রেয় ভাইবোনও থাকে তখন দাদার হিস্যা দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তা সহোদর ভাই-বোনদেরই হিস্যা হবে, বৈমাত্রেয় ভাই কিছুই পাবে না। হ্যাঁ, যদি সহোদর মাত্র এক বোন হয় এবং বাকী সকল বিমাতা ভাই-বোন হয় তবে বিমাতাদের কারণে সহোদর বোন দাদার হিস্যা কম করে দিবে এবং এই সহোদর বোন অর্ধেক অংশ পূর্ণ পাবে। তবুও যদি কিছু মাল অবশিষ্ট থেকে যায় তবে বিমাতা ভাই-বোনগণ নিজ নিজ হিস্যা ভাইয়েরা বোনদের দ্বিগুণ হিসেবে পাবে। আর যদি অবশিষ্ট না থাকে তবে বিমাতা ভাই-বোনগণ মাহরূম হয়ে যাবে।

【9】

দাদী ও নানীর অংশ প্রসঙ্গ

কুরাইসা ইবনু যুয়াইব এক মৃত ব্যক্তির দাদী তার মীরাসের জন্য আবূ বাকর সিদ্দীক (রা)-এর নিকট আসল। তিনি বললেন, তোমাদের হিস্যা সম্বন্ধে কিতাবুল্লাহতেও কোন উল্লেখ নাই এবং রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতেও কোন হাদীস শুনি নাই। এখন তুমি চলে যাও। আমি লোকের নিকট জিজ্ঞেস করে তা বলে দিব। অবশেষে আবূ বাকর সিদ্দীক (রা) সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, মুগীরা ইবনু শু‘বা (রা) বললেন, আমার সম্মুখে রসূল করীম (সা) দাদীকে ষষ্ঠাংশ দিয়েছেন। আবূ বকর (রা) বললেন, তোমার কোন সাক্ষী আছে কি? তখন মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা আনসারী দাঁড়িয়ে মুগীরা যেইরূপ বলেছিলেন তদ্রূপ বললেন। এই সাক্ষীর পর আবূ বকর (রা) দাদীকে ষষ্ঠাং দিয়েছেন। আবূ বকর (রা) বললেন, তোমার কোন সাক্ষী আছে কি? তখন মুহাম্মাদ মাসলামা আনসারী দাঁড়িয়ে মুগীরা যেরূপ বলেছিলেন তদ্রূপ বললেন। এই সাক্ষীর পর আবূ বাকর (রা) দাদীকে এক-ষষ্ঠাংশ দিয়ে দিলেন। অতঃপর উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর খিলাফতকালে এক দাদী মীরাসের জন্য তাঁর নিকট এলে। উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বললেন, কুরআনে তোমাদের কোন হিস্যার উল্লেখ নেই। তুমি ব্যতীত অন্যদের সম্বন্ধে কিছু সিদ্ধান্ত পূর্বে হয়েছে আমি স্বীয় পক্ষ হতে কারো জন্য মীরাসের হিস্যা বাড়াতে পারি না। তবে তুমিও ষষ্ঠাংশ নিয়ে নাও। যদি দাদী আরও অথবা নানীও থাকে তবে উভয়ে মিলে ষষ্ঠাংশ বন্টন করে দিও। আর তোমরা কেউ একজন থাকলে সে ষষ্ঠাংশ পাবে। (যয়ীফ, আবূ দাঊদ ২৮৯৪, তিরমিযী ২১০০, ২১০১, ইবনু মাজাহ ২৭২৪, আলবানী হাদীসটি যয়ীফ বলেছেন [ইরওয়া, ১৬৮০]) কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (র) নানী এবং দাদী মীরাসের জন্য আবূ বাকর সিদ্দীক (রা)-এর নিকট এল। তিনি নানীকে ষষ্ঠাংশ দিতে চাইলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন আপনি এমন ব্যক্তির দাদীর অংশ দিচ্ছেন না যে, যদি সে মৃত হত এবং উক্ত মৃত ব্যক্তি জীবিত হত তবে সে (নাতি) তাঁর ওয়ারিস হত। আর এমন ব্যক্তিকে হিস্যা দিতেছেন যে, যদি সে মৃত হত (অর্থাৎ নানী) এবং উক্ত মৃত ব্যক্তি জীবিত হত তবে সে (মেয়ের ছেলে) তার ওয়ারিস হত না। ইহা শুনে তিনি উভয়কে ষষ্ঠাংশ সমান বন্টন করে দিয়েছিলেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) আবূ বাকর ইবনু আবদুর রহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম নানী কিংবা দাদীকে হিস্যা দিতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে ইহা নির্ধারিত মাসআলা যে, মৃত ব্যক্তির মাতা জীবিত থাকলে নানী হিস্যা পাবে না। ইহা ব্যতীত অন্য অবস্থায় নানী ষষ্ঠাং পাবে তার মাতা অথবা পিতা জীবিত থাকাকালীন দাদী মাহরূম হবেন। অন্য অবস্থাতে তার জন্য ষষ্ঠাং। আর যদি দাদীও মৃত ব্যক্তির নিকটের হয় অথবা নৈকট্যের বিবেচনায় দুইজন সমপর্যায়ের হয় তবে দুইজনে (দাদী ও নানী) ষষ্ঠাংশের অর্ধেক হিস্যা প্রাপ্ত হবে। মালিক (র) বলেন : অন্যান্য দাদী-নানীর জন্য কোন মীরাস নাই এই দুই দাদী ও নানী ব্যতীত, যেহেতু আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাদীকে মীরাস দিয়েছেন। অতঃপর আবূ বকরকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হল। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাদীকে অংশ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পেয়ে তিনিও দাদীকে অংশ দিয়েছেন। অতঃপর এক নানী উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর নিকট এলে তিনি বলেছেন আমি কারো জন্য মীরাসে নূতন কোন অংশ দিতে পারি না, তবে দাদী ও নানী একত্র হলে ঐ অংশ তাদের মধ্যে সমানভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। আর তাদের যে কেউ একজন শুধু আছে (অন্য দাদী নানী নাই) তবে সে একই ষষ্ঠাংশ পাবে। মালিক (র) বলেন : ইসলামের প্রারম্ভ হতে আজ পর্যন্ত উক্ত নানীগণ এবং দাদীগণ ব্যতীত কেউই অন্য নানী কিংবা দাদীগণকে কোন মীরাস দেয়নি।

【10】

‘কালালা’র [১] মীরাস

যায়দ ইবনু আসলাম (রর) উমার ইবনু খাত্তাব (রা) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কালালাহ্ [২] সম্বন্ধে প্রশ্ন করলেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, গ্রীষ্ম মওসুমে সূরা নিসার শেষ যেই আয়াত নাযিল হয়েছে তাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (সহীহ, মুসলিম ১৬১৭, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল) মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট এটা একটি বিরোধবিহীন মাসআলা যে, কালালাহ দুই প্রকার। প্রথম সূরা নিসার প্রারম্ভে নাযিল হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যদি কোন স্ত্রী বা পুরুষ কালালাহ অবস্থায় মারা যায় এবং তার কোন বৈপিত্রেয় ভাই কিংবা বোন থাকে, তবে প্রত্যেক ষষ্ঠাংশ হিস্যা মীরাস পাবে। যদি বেশি ভাই-বোন থাকে, তবে সকলে এক-তৃতীয়াংশ মালে শরীক হবে। এইরূপ কালালাহ যার পিতা এবং সন্তান না থাকে, তবে বৈপিত্রেয় ভাইবোন মীরাস পবে। (সূরা নিসা - ১৭৬) এটা ঐ কালালাহ যার ভাইবোন ‘আসাবা হয়, যখন মৃতের কোন ছেলে না থাকে, তখন তারা দাদার সাথে মিলিয়ে কালালার ওয়ারিস হবে। মালিক (র) বলেন, দাদা ভাইদের সাথে মিলিয়ে এজন্য ওয়ারিস হবে যে. দাদা ভাইদের চেয়ে মৃতের অতি নিকটবর্তী হন। কেননা দাদা ছেলে বিদ্যমান থাকাকালীনও ষষ্ঠাংশের মালিক হয়। আর দাদা ভাইবোনদের সঙ্গে থেকে এক-তৃতীয়াংশ পাবার কারণ হল সহোদর ভাই-বোন থাকাকালীন বৈপিত্রেয় ভাই-বোন এক-তৃতীয়াংশ মাল পায়। বরং দাদা ঐ মালের মীরাস পাবে যা সহোদর এবং বিমাতা ভাই-বোনগণ পায় না। বরং তা বৈপিত্রেয় ভাই-বোনদের হক ছিল। দাদার কারণে তারা মাহরূম হল।

【11】

ফুফুর মীরাস

কুরায়শ সম্প্রদায়ের এক স্বাধীন করা গোলাম (যাকে ইবনু মিরসা বলা হত) আমি উমার ইবনু খাত্তাব (রা)-এর নিকট বসা ছিলাম, তিনি যুহরের নামায পড়ে য়ারফা নামক সাহাবীকে বললেন, আমার নিকট ঐ কিতাবটি নিয়ে আস, যা ফুফুর মীরাস সম্বন্ধে লেখা হয়েছে। আমি এব্যাপারে লোকের নিকট জিজ্ঞেস করব। অতঃপর উমার (রা) একটি পেয়ালা আনলেন যাতে পানি ছিল। ঐ পানি দ্বারা ঐ কিতাব ধুয়ে ফেললেন এবং বললেন, যদি ফুফুকে অংশ দেয়া আল্লাহর ইচ্ছা থাকত তা হলে স্বীয় কিতাবে উহা উল্লেখ করতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মুহাম্মদ ইবনু আবূ বাক্র ইবনু হাজম (র) তিনি তার পিতাকে অনেক বার বলতে শুনেছেন যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রা) বলতেন, ফুফুর ব্যাপার আশ্চর্যজনক, তিনি মীরাস পান না কিন্তু তার মীরাস অন্যরা পায়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

【12】

আসাবা [১] দের অংশ সম্বন্ধে

قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ وَالَّذِي أَدْرَكْتُ عَلَيْهِ أَهْلَ الْعِلْمِ بِبَلَدِنَا فِي وِلَايَةِ الْعَصَبَةِ أَنَّ الْأَخَ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ أَوْلَى بِالْمِيرَاثِ مِنْ الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأَخُ لِلْأَبِ أَوْلَى بِالْمِيرَاثِ مِنْ بَنِي الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَبَنُو الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ أَوْلَى مِنْ بَنِي الْأَخِ لِلْأَبِ وَبَنُو الْأَخِ لِلْأَبِ أَوْلَى مِنْ بَنِي ابْنِ الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَبَنُو ابْنِ الْأَخِ لِلْأَبِ أَوْلَى مِنْ الْعَمِّ أَخِي الْأَبِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَالْعَمُّ أَخُو الْأَبِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ أَوْلَى مِنْ الْعَمِّ أَخِي الْأَبِ لِلْأَبِ وَالْعَمُّ أَخُو الْأَبِ لِلْأَبِ أَوْلَى مِنْ بَنِي الْعَمِّ أَخِي الْأَبِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَابْنُ الْعَمِّ لِلْأَبِ أَوْلَى مِنْ عَمِّ الْأَبِ أَخِي أَبِي الْأَبِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ ১৮৮৬-قَالَ مَالِك وَكُلُّ شَيْءٍ سُئِلْتَ عَنْهُ مِنْ مِيرَاثِ الْعَصَبَةِ فَإِنَّهُ عَلَى نَحْوِ هَذَا انْسُبْ الْمُتَوَفَّى وَمَنْ يُنَازِعُ فِي وِلَايَتِهِ مِنْ عَصَبَتِهِ فَإِنْ وَجَدْتَ أَحَدًا مِنْهُمْ يَلْقَى الْمُتَوَفَّى إِلَى أَبٍ لَا يَلْقَاهُ أَحَدٌ مِنْهُمْ إِلَى أَبٍ دُونَهُ فَاجْعَلْ مِيرَاثَهُ لِلَّذِي يَلْقَاهُ إِلَى الْأَبِ الْأَدْنَى دُونَ مَنْ يَلْقَاهُ إِلَى فَوْقِ ذَلِكَ فَإِنْ وَجَدْتَهُمْ كُلَّهُمْ يَلْقَوْنَهُ إِلَى أَبٍ وَاحِدٍ يَجْمَعُهُمْ جَمِيعًا فَانْظُرْ أَقْعَدَهُمْ فِي النَّسَبِ فَإِنْ كَانَ ابْنَ أَبٍ فَقَطْ فَاجْعَلْ الْمِيرَاثَ لَهُ دُونَ الْأَطْرَافِ وَإِنْ كَانَ ابْنَ أَبٍ وَأُمٍّ وَإِنْ وَجَدْتَهُمْ مُسْتَوِينَ يَنْتَسِبُونَ مِنْ عَدَدِ الْآبَاءِ إِلَى عَدَدٍ وَاحِدٍ حَتَّى يَلْقَوْا نَسَبَ الْمُتَوَفَّى جَمِيعًا وَكَانُوا كُلُّهُمْ جَمِيعًا بَنِي أَبٍ أَوْ بَنِي أَبٍ وَأُمٍّ فَاجْعَلْ الْمِيرَاثَ بَيْنَهُمْ سَوَاءً وَإِنْ كَانَ وَالِدُ بَعْضِهِمْ أَخَا وَالِدِ الْمُتَوَفَّى لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَكَانَ مَنْ سِوَاهُ مِنْهُمْ إِنَّمَا هُوَ أَخُو أَبِي الْمُتَوَفَّى لِأَبِيهِ فَقَطْ فَإِنَّ الْمِيرَاثَ لِبَنِي أَخِي الْمُتَوَفَّى لِأَبِيهِ وَأُمِّهِ دُونَ بَنِي الْأَخِ لِلْأَبِ وَذَلِكَ أَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ { وَأُولُوا الْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَى بِبَعْضٍ فِي كِتَابِ اللهِ إِنَّ اللهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ } ১৮৮৭-قَالَ مَالِك وَالْجَدُّ أَبُو الْأَبِ أَوْلَى مِنْ بَنِي الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَأَوْلَى مِنْ الْعَمِّ أَخِي الْأَبِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ بِالْمِيرَاثِ وَابْنُ الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ أَوْلَى مِنْ الْجَدِّ بِوَلَاءِ الْمَوَالِي মালিক (র) বলেন : আমাদের নিকট ইহা একটি সর্বসম্মত ব্যাপার এবং আমরা আমাদের স্থানীয় লোকদেরকেও এর উপর পেয়েছি যে, সহোদর ভাই বৈমাত্রেয় ভাই-এর উপর অগ্রগণ্য। বৈমাত্রেয় ভাই সহোদর ভাই-এর সন্তান বৈপিত্রেয় ভাই-এর সন্তানদের উপর, বৈপিত্রেয় ভাই-এর সন্তান সহোদর ভাই-এর পৌত্রদের উপর অগ্রগণ্য। এইরূপে বৈপিত্রেয় ভাই-এর সন্তান আপন চাচা বৈপিত্রেয় চাচার উপর, বৈপিত্রেয় চাচা আপন চাচার সন্তানের উপর, বৈপিত্রেয় চাচার সন্তান পিতার চাচার উপর অগ্রগণ্য। মালিক (র) বলেন : এর সারকথা এই যে, উপস্থিত ‘আসাবাকে মৃত ব্যক্তির সাথে যুক্ত করলে তবে যারা উহাদের মধ্য হতে এরূপভাবে মৃত ব্যক্তির সাথে মিলবে যে, তার নিকট পিতার সাথে সম্পর্ক হিসাবে অন্য কেউ মিলবে না তা হলে তাকেই অংশ দেওয়া হবে। যে উপরের পিতার সাথে মিলতে হবে তাকে অংশ দেওয়া হবে না। যেমন যদি ভাই আর বাচ্চ থাকে তবে দেখতে হবে ভাই মৃত ব্যক্তির কি হয় ? মৃত ব্যক্তির পিতার সন্তান। আর চাচা কি হয়? মৃত ব্যক্তির পিতার পিতার সন্তান। এমতাবস্থায় ভাই অংশ পাবে। কেননা প্রথমেই সে মৃত ব্যক্তির পিতার সাথে মিলিত। আর চাচা অন্য পিতা (দাদা)-য় মিলিত। যদি এদের মধ্যে কয়েকজন পিতায় মিলে যায়, তবে দেখতে হবে কারো সম্বন্ধ নিকটবর্তী। যদিও নিকটবর্তী হওয়াটা সৎ-সম্পর্কিত হয় কিন্তু অংশ সে-ই পাবে, দূরবর্তী সহোদর হলেও অংশ সে পাবে না। সৎ ভাই-এর সন্তান আর সহোদর ভাই-এর পৌত্র যদিও তারা উভয়েই মৃত ব্যক্তির সাথে একই পিতায় মিলে যায় কিন্তু সৎ ভাই-এর সন্তান মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী আর সহোদর ভাই-এর পৌত্র দূরবর্তী। যদি সকলেই সম্বন্ধে বরাবর হয় বা সকলেই সৎসম্পর্কে সম্পর্কিত হয়, তবে সকলকেই সমান অংশ দিতে হবে। যদি এদের কারোও পিতা মৃত ব্যক্তির পিতা সহোদর হয়, আর কারো পিতা মৃত ব্যক্তির পিতার সৎ ভাই হয়, তবে মীরাস সহোদর ভাই-এর সন্তানগণ পাবে। কেননা আল্লাহ পাক বলেন : “আত্মীয়-স্বজনগণ আল্লাহর কিতাবে একে অন্য অপেক্ষা অধিক হকদার; আর প্রত্যেক বস্তু সম্বন্ধে আল্লাহ সম্যক অবহিত।” মালিক (র) বলেন : দাদা ভাতিজা হতে অগ্রগণ্য এবং চাচা হতেও। আর মওলা (আযদ করা গোলাম)-এর অভিভাবকত্বের বেলায় সহোদর ভাই-এর দাদার উপর অগ্রগণ্য। [১] আসাবা ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যার কোন অংশ কুরআন শরীফে উল্লেখ নেই। যদি কুরআনে উল্লেখিত অংশীদারদের অংশ দেওয়ার পর অবশিষ্ট কিছু থাকে, তবে উহা তারা পাবে, আর যদি তারা একলা হয় তবে সমস্ত মালই তারা পাবে। যদি অবশিষ্ট কিছু না থাকে, তবে তারা বঞ্চিত থাকে।

【13】

কে মীরাস পাবে না

قَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا الَّذِي لَا اخْتِلَافَ فِيهِ وَالَّذِي أَدْرَكْتُ عَلَيْهِ أَهْلَ الْعِلْمِ بِبَلَدِنَا أَنَّ ابْنَ الْأَخِ لِلْأُمِّ وَالْجَدَّ أَبَا الْأُمِّ وَالْعَمَّ أَخَا الْأَبِ لِلْأُمِّ وَالْخَالَ وَالْجَدَّةَ أُمَّ أَبِي الْأُمِّ وَابْنَةَ الْأَخِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَالْعَمَّةَ وَالْخَالَةَ لَا يَرِثُونَ بِأَرْحَامِهِمْ شَيْئًا قَالَ وَإِنَّهُ لَا تَرِثُ امْرَأَةٌ هِيَ أَبْعَدُ نَسَبًا مِنْ الْمُتَوَفَّى مِمَّنْ سُمِّيَ فِي هَذَا الْكِتَابِ بِرَحِمِهَا شَيْئًا وَإِنَّهُ لَا يَرِثُ أَحَدٌ مِنْ النِّسَاءِ شَيْئًا إِلَّا حَيْثُ سُمِّينَ وَإِنَّمَا ذَكَرَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي كِتَابِهِ مِيرَاثَ الْأُمِّ مِنْ وَلَدِهَا وَمِيرَاثَ الْبَنَاتِ مِنْ أَبِيهِنَّ وَمِيرَاثَ الزَّوْجَةِ مِنْ زَوْجِهَا وَمِيرَاثَ الْأَخَوَاتِ لِلْأَبِ وَالْأُمِّ وَمِيرَاثَ الْأَخَوَاتِ لِلْأَبِ وَمِيرَاثَ الْأَخَوَاتِ لِلْأُمِّ وَوَرِثَتْ الْجَدَّةُ بِالَّذِي جَاءَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهَا وَالْمَرْأَةُ تَرِثُ مَنْ أَعْتَقَتْ هِيَ نَفْسُهَا لِأَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ فِي كِتَابِهِ { فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَمَوَالِيكُمْ } মালিক (র) বলেন : এটা আমাদের নিকট সর্বসম্মত মাসআলা যে, বৈপিত্রেয় ভাইয়ের সন্তান, নানা, পিতার বৈপিত্রেয় ভাই, মামা এবং নানার মা, সহোদর ভাই-এর সন্তান, ফুফু এবং খালা যবিল আরহাম হওয়া সত্ত্বেও ওয়ারিস হবে না। মালিক (র) বলেন, যে স্ত্রীলোক দূরসম্পর্কীয় সে ওয়ারিস হবে না। আর স্ত্রীলোকদের মধ্যে ঐ স্ত্রীলোকেরা কেউ ওয়ারিস হবে না, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা কুরআন শরীফে বর্ণনা করে দিয়েছেন। তারাই হল মা, কন্যা, স্ত্রী, সহোদর ভগ্নী, সৎ ভগ্নী, বৈপিত্রেয় ভগ্নী। নানী এবং দাদীর অংশ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এইরূপ মহিলাগণ তাদের মুক্ত দাসের ওয়ারিস হবে; কারণ আল্লাহ পাক কুরআন মজীদে উল্লেখ করেছেন : উহাদেরকে তোমাদের ধর্মীয় ভ্রাতা ও বন্ধুরূপে গণ্য করবে।

【14】

যার নিহত হওয়া ইত্যাদি অজ্ঞাত থাকে

রবীয়া’ ইবনু আবূ আবদুর রহমান (র) একাধিক আলেম সূত্রে বর্ণনা করেন যে, জামাল যুদ্ধে, সিফফীন যুদ্ধে এবং হাররা দিবসে যারা নিহত হয়েছেন তারা মীরাস পাননি। এরপর ফুদাইদ দিবসে যারা নিহত হয়েছে তারাও একে অপরের মীরাস পাননি। কিন্তু মীরাস পাবে সেই ক্ষেত্রে যেই ক্ষেত্রে নিশ্চিত জানা গিয়েছে যে, তিনি তার সাথির পূর্বে নিহত হয়েছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইয়াহইয়া (র) বলেন : আমি মালিক (র)-কে বলতে শুনেছি, আমাদের ‘উলামায়ে কিরামের মধ্যে এ ব্যাপারে কোন বিরোধ নাই। মালিক (র) বলেন : যদি কয়েকজন পানিতে ডুবে অথবা মাটিতে ধ্বসে মৃত্যুবরণ করে অথবা নিহত হয়, আর কে আগে কে পরে মৃত্যুবরণ করেছে তা অজ্ঞাত থাকে তবে তারা এক অন্যের ওয়ারিস হবে না, বরং প্রত্যেকের মাল তাদের ওয়ারিসগণ পাবে, যারা জীবিত রয়েছে। মালিক (র) বলেন : কেউ সন্দেহস্থলে কারো ওয়ারিস হবে না, ওয়ারিস হওয়ার জন্য নিঃসন্দেহ হওয়া প্রয়োজন। যেমন কেউ মৃত্যুবরণ করলে, আর সে তার যে দাসকে মুক্ত করেছিল সেও মৃত্যুবরণ করল, এখন যদি এই সন্তান বলে যে, আমার পিতা এই দাসের ওয়ারিস হবে তবে তা ততক্ষণ পর্যন্ত সাব্যস্ত হবে না যতক্ষণ না সে সাক্ষী দ্বারা প্রমাণ করবে যে, ঐ দাস তার পিতার পূর্বে মারা গিয়েছে। যদি প্রমাণ করতে না পারে তবে ঐ দাসের জীবিত ওয়ারিসগণ তার মাল পাবে। মালিক (র) বলেন, অনুরূপভাবে যদি দুই সহোদর ভাই মারা যায় যাদের একজনের সন্তান রয়েছে অন্যজন নিঃসন্তান, আর তাদের উভয়ের একজন সৎ ভাইও রয়েছে। কিন্তু এটা জানা যায়নি যে, প্রথমে কোন ভাই মরেছে। এখন নিঃসন্তান ভাই-এর মাল তার সৎ ভাই পাবে, তার ভাতিজারা পাবে না। এইরূপে ফুফু ভাতিজা একত্রে মারা গেলে বা চাচা ভাতিজা একত্রে মারা গেলে আর কে আগে মারা গিয়েছে তা জানা নাই, তবে চাচা স্বীয় ভাতিজার এবং ভাতিজা স্বীয় ফুফুর ওয়ারিস হবে না।

【15】

যে স্ত্রী লি‘আন করেছে তার সন্তানের মীরাস এবং জারজ সন্তানের মীরাস

মালিক (র) উরওয়া ইবনু যুবায়র বলতেন, যখন লি‘আন ওয়ালী স্ত্রীলোকের সন্তান অথবা কোন জারজ সন্তান মারা যায়, তখন তার মা আল্লাহর কিতাব মতো তার অংশ পাবে আর তার বৈমাত্রেয় ভাইও অংশ পাবে। অবশিষ্ট মাল তার মাতার মাওলা (প্রভু)-কে দেয়া হবে। যদি তাকে মুক্ত করে দেয়া হয়ে থাকে, যদি সে আরবের হয়, সে তার অংশ পাবে, তার বৈপিত্রেয় ভাই-বোনেরা তাদের অংশ পাবে, আর অবশিষ্ট যা থাকবে তা মুসলিমদের জন্য। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) মালিক (র) বলেন : আমার নিকট সুলায়মান ইবনু ইয়াসার হতে এইরূপই সংবাদ পৌঁছেছে আর আমাদের শহরের আলিমদেরও এই মত। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)