32. শরীকী কারবার করা অধ্যায়

【1】

কিরায [১] সম্পর্কে রেওয়ায়ত

[১] কিরায ও মুযারাবা একই অর্থে ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ শরীকী কারবার করা। একজনের শ্রম অন্যজনের টাকা। মুনাফা উভয়ে ভাগ করে নিবে। যায়দ ইবন আসলাম (রহঃ) তাঁর পিতা উমার ইবন খাত্তাব (রা)-এর দুই পুত্র আবদুল্লাহ্ ও উবায়দুল্লাহ্ জিহাদের উদ্দেশ্যে এক কাফেলার সাথে ইরাক যাত্রা করলেন। ফিরবার সময় তাঁরা আবূ মূসা আশ’আরী (রা)-এর নিকট গেলেন। তিনি তখন বসরার আমীর ছিলেন। তিনি তাঁদের স্বাগতম জানিয়ে বললেন, যদি আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারতাম তা হলে নিশ্চয়ই তা করতাম। ঠিক আছে আমার নিকট আল্লাহর কিছু সম্পদ রয়েছে, আমি তা আমীরুল মু’মিনীনের নিকট পাঠাতে ইচ্ছা করেছি। আমি উহা তোমাদেরকে দিয়ে দিচ্ছি। তোমরা উহা দ্বারা ইরাক হতে কিছু বস্তু খরিদ করে নাও, পরে উহা মদীনায় বিক্রয় করে কিছু মুনাফা অর্জন করতে পার। তারা বললেন, আমরাও তাই চাচ্ছি। পরে আবূ মূসা তাই করলেন এবং উমার ইবন খাত্তাব (রা)-কে লিখে পাঠালেন যে, তাঁদের নিকট হতে মূলধন নিয়ে নিবেন। তাঁরা মদীনায় পৌঁছে ঐ বস্তু বিক্রয় করে অনেক মুনাফা অর্জন করলেন। মূল অর্থ নিয়ে উমার ইবন খাত্তাব (রা)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। উমার ইবন খাত্তাব (রা) জিজ্ঞেস করলেন, আবূ মূসা কি প্রত্যেক সৈনিককে এত অর্থ ঋণ দিয়েছেন? তাঁরা বললেন, না। উমার ইবন খাত্তার (রাঃ) বললেন, তিনি তোমাদেরকে আমীরুল মু’মিনীনের পুত্র হিসেবে এই অর্থ দিয়েছেন। তোমরা মূল অর্থ এবং মুনাফা উভয়টাই আদায় কর। শুনে আবদুল্লাহ্ তো চুপ করে রইলেন। কিন্তু উবায়দুল্লাহ্ বললেন, আমীরুল মু’মিনীন, আপনার এইরূপ করা উচিত হবে না। কারণ যদি এই অর্থ নষ্ট হয়ে যেত বা ক্ষতি হত, তবে আমরা উহার জন্য জিম্মাদার হতাম। উমার (রা) বললেন, না তোমরা সমস্তই দিয়ে দাও। আবদুল্লাহ্ চুপই রইলেন কিন্তু উবায়দুল্লাহ্ তার উক্তির পুনরাবৃত্তি করলেন। তখন উমার (রা)-এর উপদেষ্টা (আবদুর রহমান ইবন আউফ রা) বললেন, আমীরুল মু’মিনীন! এই ব্যাপারকে বা’য়ই-মুযারাবা সাব্যস্ত করতে পারেন, এটাই উত্তম হবে। উমার (রা) বললেন, উহাই সাব্যস্ত করলাম। পরে তিনি মূলধন এবং অর্ধেক মুনাফা গ্রহণ করলেন আর অর্ধেক মুনাফা গ্রহণ করলেন আবদুল্লাহ্ ও উবায়দুল্লাহ্। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) আলা ইবন আবদির রহমান তার পিতার মধ্যস্থতায় তার দাদা উসমান ইবন আফফান (রা) তাকে কিয়ায বা মুযারাবার উপর মাল দিয়েছিলেন যে, সে পরিশ্রম করবে আর মুনাফা উভয়ে ভাগ করে নিবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

【2】

কোন্ কোন্ মুযারাবা বৈধ

মালিক (রহঃ) মুযারাবাত বা শরীকী কারবার এইভাবে বৈধ যে, কেউ কারো নিকট হতে এই শর্তে টাকা নেয় যে, সে শ্রম ও মেহনত করবে। ক্ষতি হলে সে দায়ী থাকবে না। সফরে খাওয়া-দাওয়া এবং বহন খরচ ও অন্যান্য বৈধ খরচ ঐ মাল হতে নিয়ম মাফিক ব্যয় করা হবে মূলধন অনুযায়ী। অবশ্য অর্থ গ্রহণকারী আবাসে থাকলে মূলধন হতে ব্যয় করতে পারবে না। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি অর্থ গ্রহণকারী অর্থদাতাকে, অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারীকে তার শ্রমের পরিমাণ মতো কোন শর্ত ব্যতীত সাহায্য করে তবে তাতে কোন ক্ষতি নেই। যদি অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারী হতে শর্ত ব্যতীত কোন বস্তু খরিদ করে তবে এতেও কোন ক্ষতি নেই। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে এবং স্বীয় দাসকে শরীকী কারবারের জন্য অর্থ দেয় এবং এই শর্ত করে যে, উভয়ই ইহাতে কাজ করবে, তবে তা জায়েয আছে। কারণ নির্ধারিত লভ্যাংশের মালিক ক্রীতদাস হবে, তার প্রভু উহা ছিনিয়ে নিতে পারবে না, এই মালের স্বত্বাধিকারী ক্রীতদাসই থাকবে।

【3】

অবৈধ মুযারাবা

মালিক (রহঃ) যদি কেউ কারো নিকট করযের টাকা পাওনা থাকে আর যার নিকট টাকা পাওনা রয়েছে সে বলল, তোমার যে টাকা আমার নিকট রয়েছে, তা আমার নিকট শরীকী কারবারে থাকতে দাও ইহা অবৈধ বরং প্রথমে টাকা উশুল করে নেয়া উচিত, পরে তার ইচ্ছা হলে শরীকী কারবারে ঐ টাকা দিতেও পারে, নাও দিতে পারে। কেননা টাকা উশুল করার পূর্বে উহাকে শরীকী কারবারে দিলে উহাতে সুদ হওয়ার আশংকা রয়েছে, যেমন দাতা তাকে সময় দেয়ার পরিবর্তে ঋণ বাড়িয়ে দিল। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি কেউ কাউকেও শরীকী কারবারের জন্য টাকা দেয় এবং ব্যবসা আরম্ভ করবার পূর্বেই কিছু টাকা নষ্ট হয়ে যায়, অতঃপর বাকী টাকা দ্বারা ব্যবসা করে ঐ অবশিষ্ট টাকাকেই মূলধন ধরে লভ্যাংশের আধা-আধি ভাগ করে নেয়, তবে ইহা অবৈধ বরং প্রথমে সম্পূর্ণ মূলধন তার পরিশোধ করতে হবে, পরে যদি কিছু টাকা অবশিষ্ট থাকে উহাকে মুনাফা ধরে ভাগ করে নিবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ শরীকী কারবার স্বর্ণ, রৌপ্য ইত্যাদিতে জায়েয, অন্য আসবাব বৈধ নয়, কিন্তু যদি কারবারে বা ক্রয়-বিক্রয়ে কিছু অসুবিধা দেখা দেয় যা শোধরান কষ্টকর হয়, তবে বৈধ হবে, কিন্তু সুদ এর ব্যতিক্রম, কেননা উহার কম-বেশি সবই হারাম, কোন প্রকারেই জায়েয নয় আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ অর্থাৎ যদি তোমরা সুদের কারবার হতে তওবা কর, তবে তোমাদের জন্য মূলধন রয়েছে। না তোমরা কারো উপর জুলুম করবে, আর না কেউ তোমাদের উপর জুলুম করবে।

【4】

শরীকী কারবারের বৈধ শর্তসমূহ

মালিক (রহঃ) যদি এই শর্ত আরোপ করে যে, এই প্রকার মালেরই ব্যবসায় করবে তবে উহা মাকরূহ্। হ্যাঁ, যদি সেই মাল প্রত্যেক মৌসুমে বাজারে পর্যাপ্ত পাওয়া যায় তবে তা মাকরূহ নয়। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি মূলধন বিনিয়োগকারী নিজের জন্য শরীকী কারবারে কোন নির্দিষ্ট অঙ্ক নির্ধারিত করে, যাতে অপর শরীকের কোন অধিকার থাকবে না তা এক দিরহামই হোক না কেন তবুও ইহা জায়েয নয়। কেননা এতে পারে উহার ঊর্ধ্বে লাভ হবে না। হ্যাঁ, যদি ব্যবসায়ীর জন্য লাভের অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ বা চতুর্থাংশ বা ইহা হতে কম-বেশি নির্দিষ্ট করে অবশিষ্ট নিজের জন্য তবে তা জায়েয। ইহা হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত কিরায পদ্ধতি। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি লভ্যাংশের এক দিরহাম পুঁজি বিনিয়োগকারী নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে যাতে অপর শরীকের কোন অধিকার থাকবে না, অবশিষ্ট লাভ উভয়ের মধ্যে অর্ধেক হারে ভাগ হবে। তবে শরীকী কারবার অবৈধ হবে। ইহা মুসলমানদের কিরায-নীতি নয়।

【5】

শরীকী কারবারের অবৈধ শর্তসমূহ

মালিক (রহঃ) শরীকী কারবারে যে অর্থ দেয় সে যদি লভ্যাংশের কিছু অংশ নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে বা যে ব্যবসা করবে সে নিজের জন্য কিছু নির্দিষ্ট করে নেয় তবে এটা অবৈধ। শরীকী কারবারের সহিত কোন বস্তু ক্রয়ের, ভাড়া দেওয়ার, করযের অথবা অন্য কোন উপকারের শর্ত করা অবৈধ। তবে কোন শর্ত ব্যতীত নিয়ম মাফিক একে অন্যের সাহায্য করা বৈধ। নিয়ম মুতাবিক লাভ কর্তন ছাড়া একে অন্যের উপর কিছু অতিরিক্ত ধার্য করা অবৈধ, সেই অতিরিক্ত ধার্য করা সোনায়, চাঁদিতে, খাদ্য-সামগ্রীতে বা অন্য কোন কিছুতে হলেও যদি এইরূপে কোন শর্ত করা হয়, তবে তা ইজারা হয়ে যাবে। আর ইজারা শুধু নির্দিষ্ট ভাড়ার পরিবর্তে বৈধ হবে। শরীকী কারবারে অর্থ গ্রহীতার পক্ষে কাউকেও কোন উপকারের পরিবর্তে কিছু দান করা বা ক্রয়কৃত মাল তাওলিয়াতে বিক্রয় করা বা নিজে নির্দিষ্ট কোন বস্তুর অধিকারী হওয়া বৈধ নয়। যদি ব্যবসায়ে লাভ হয় তবে মূলধন পৃথক করার পর উভয়ে শর্ত অনুযায়ী ভাগ করে নিবে। যদি লাভ না হয় বা ক্ষতি হয় তবে ব্যবসায়ী দায়ী হবে না। নিজের খরচের জন্যও নয়, ক্ষতির জন্যও নয়, বরং ক্ষতি হবে অর্থ প্রদানকারীর। যদি ব্যবসায়ী এবং অর্থ প্রদানকারী উভয়ে লভ্যাংশের আধা-আধি অথবা প্রথম ব্যক্তি ১/৪ দ্বিতীয় ব্যক্তি ১/৪ বা এই ধরনের আর কিছুতে বেশি বা কমের উপর উভয়ে সম্মত হয়ে যায়, তবে শরীকী কারবার বৈধ হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ শরীকী কারবারে অর্থগ্রহণকারী বণিকা যদি শর্ত করে যে, এত দিনের মধ্যে আমার নিকট হতে মূলধন উঠিয়ে নেয়া চলবে না বা শর্ত করে যে, সে এতদিন মূলধন ফিরিয়ে দিতে পারবে না, তবে ইহা অবৈধ হইবে। কেননা শরীকী কারবারে সময়ের শর্ত হতে পারে না। যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী নিজের অর্থ বণিককে দিয়ে দেয় আর বণিকের উহা দ্বারা ব্যবসা করা ভাল না লাগে এমতাবস্থায় যদি অর্থ জমা থাকে তবে মূলধনের মালিক উহা ফেরত নিয়ে নিবে। আর যদি উহা দ্বারা কোন সামগ্রী ইত্যাদি ক্রয় করা হয়ে থাকে তবে পুঁজি বিনিয়োগকারী ঐ সামগ্রী নিবে না এবং বণিকও তাকে উহা নিতে বাধ্য করবে না, বরং এ সামগ্রী বিক্রয় করে নগদ অর্থ যোগাড় করবে ও উহা ফেরত দিবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী শর্ত করে যে, উহার যাকাত লভ্যাংশ হতে দিবে তবে ইহা অবৈধ হবে। আর পুঁজি বিনিয়োগকারীর পক্ষে এই শর্ত করাও বৈধ হবে না যে, অমুক ব্যক্তি হতেই মাল খরিদ করতে হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী তার শরীক ব্যবসায়ীর উপর মালের জন্য দায়ী হবার শর্ত করে ইহা জায়েয হবে না। এই অবস্থায় যদি লাভ হয় তা হলে এই দায়িত্বের জন্য অতিরিক্ত কিছুও দেয়া হবে না। যদি মাল নষ্ট হয়ে যায় তবে ব্যবসায়ীর উপর দায়িত্বও অর্পিত হবে না। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীর নিকট এই শর্ত আরোপ করে যে, এই মূলধন দ্বারা কিছু খেজুর গাছ বা কোন জন্তু খরিদ করে নিবে আর উহার ফল ও বাচ্চা বিক্রয় করতে থাকবে, ঐ গাছ বা জন্তু বিক্রয় করবে না, তবে তা বৈধ হবে না, আর ইহা শরীকী কারবারের নিয়ম নয়। হ্যাঁ, যদি ঐ গাছ বা জন্তু খরিদ করে অন্যান্য সামগ্রীর মতো বিক্রয় করে দেয় তবে তা বৈধ। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ব্যবসায়ী অর্থ বিনিয়োগকারীর প্রতি শর্ত আরোপ করে যে, আমি মূলধন হতে একটি দাস খরিদ করে নিব নিজের সাহায্যের জন্য, তবে ইহা বৈধ হবে। যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী এইরূপ অঙ্গীকার না নেয় যে, এই দাস কেবল পণ্যের রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করবে, অন্য কোন কার্যে সাহায্য করবে না।

【6】

পণ্যদ্রব্য ইত্যাদিতে শরীকী কারবার

মালিক (রহঃ) শরীকী কারবার শুধু সোনা চাঁদিতে হবে, পণ্যদ্রব্যে হবে না, কেননা পণ্য সামগ্রীতে শরীকী কারবার দুই প্রকারে হতে পারে; প্রথমত পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীকে পণ্য সামগ্রী দিয়ে বলবে, ইহা বিক্রয় করে ঐ টাকা দিয়ে কারবার কর- ইহা বৈধ নয়। কেননা এতে অর্থ বিনিয়োগকারীর এক বিশেষ উপকার এই রয়েছে যে, তার মাল নির্বিঘ্নে বিক্রয় হয়ে গেল; দ্বিতীয়ত, অর্থ বিনিয়োগকারী পণ্যসামগ্রী দিয়ে বলে দিল এর বিনিময়ে অন্য সামগ্রী ক্রয় করে নাও এবং ব্যবসা করতে থাক, যখন লেনদেন শেষ করতে ইচ্ছা কর তখন এই সামগ্রী আমাকে বাজার হতে খরিদ করে দিও। আর যা অতিরিক্ত থাকে তা আমরা ভাগ করে নিব, তবে এটাও অবৈধ হবে। কেননা এতে ধোঁকার আশংকা রয়েছে, হয়তো তখন এই মাল অধিক মূল্যে ক্রয় করতে হবে। আর সামগ্রী দেওয়ার সময় যে দাম ছিল সেই দাম হতে যদি এখন সস্তা হয়ে গিয়ে থাকে, তবে ব্যবসায়ীর সামগ্রীর মূল্যের হ্রাস অনুসারে লাভ করে যাবে বা আসল ও লাভ সমস্তই তা খরিদ করতে ব্যয় হয়ে যাবে, আর ব্যবসায়ীর মেহনত বৃথা যাবে। তবুও যদি কেউ এইরূপ লেনদেন করেই ফেলে তবে ব্যবসায়ীকে প্রথমে সামগ্রী বিক্রয়ের নিয়ম মতো পারিশ্রমিক দিতে হবে। আর যে দিন হতে মূলধন নগদ টাকা হল সেদিন হতে শরীকী কারবার শুরু হবে। অতঃপর কারবার শেষ হওয়ার সময় এই পরিমাণ মূলধনই ধরা হবে।

【7】

শরীকী ব্যবসার মালের ভাড়া

মালিক (রহঃ) যদি ব্যবসায়ী কিছু সামগ্রী খরিদ করে কোন শহরে নিয়ে যায় কিন্তু তথায় বিক্রয় করতে পারল না, পরে ক্ষতি মনে করে অন্য এক শহরে নিয়ে গেল। তথায় লোকসান দিয়ে ঐ মাল বিক্রয় করল আর মূলধন ভাড়া বাবদ খরচ হয়ে গেল, তবে ভাড়া পরিশোধ করার পর পুঁজি বিনিয়োগকারীও কিছু পাবে না এবং ব্যবসায়ীও ক্ষতি বহন করবে না। আর যদি উহার পরও কিছু ভাড়া বাকী থেকে গেল, তবে উহা ব্যবসায়ী নিজের পক্ষ হতে দিবে, অর্থ বিনিয়োগকারী থেকে নিতে পারবে না। কারণ অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীকে তার দেয় অর্থে ব্যবসা করতে বলেছে, উহার বাইরে নয়। অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের দায়িত্ব তার উপর চাপানো যায় না।

【8】

শরীকী কারবারের মালে সীমালংঘন

মালিক (রহঃ) যদি শরীকী কারবারে ব্যবসায়ী ব্যবসা করে মুনাফা করল। অতঃপর মূলধন বা লভ্যাংশ দ্বারা একটি দাসী ক্রয় করে তার সাথে সহবাস করল। এতে সে গর্ভবতী হল, আর পরবর্তীতে ব্যবসায়ে ক্ষতি হল তা হলে ব্যবসায়ীর নিজস্ব মাল হতে ঐ দাসীর মূল্য নিয়ে ক্ষতিপূরণ করা হবে। তারপর অতিরিক্ত মাল দুইজনের মধ্যে বণ্টিত হবে। আর যদি ক্ষতিপূরণ না হয় (ক্ষতিপূরণ করার মতো মাল তার না থাকে), তবে ঐ দাসী বিক্রয় করে ক্ষতিপূরণ করা হবে। মালিক (রহঃ) বলেন, যদি ব্যবসায়ী মাল খরিদ কারার সময় নিজের পক্ষ হতে বিনা কারণে উহার মূল্য বাড়িয়ে দেয় তবে অর্থ বিনিয়োগকারীর ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে। সে হয় পণ্য সামগ্রী ঐভাবে থাকতে দিবে না মূলধন হতে যা অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে, উহা আদায় করে দিবে অথবা ঐ মালে ব্যবসায়ীকে শরীক করে নিবে। মালিক (রহঃ) বলেন, যদি ব্যবসায়ী অন্য কাউকেও শরীকী কারবারে মাল দিয়ে দেয় এবং অর্থ বিনিয়োগকারীর নিকট জিজ্ঞেস না করে থাকে, তবে সে মালের জন্য দায়ী হবে। যদি উহাতে ক্ষতি হয়, তবে প্রথমে ব্যবসায়ী নিজের পক্ষ হতে এই ক্ষতিপূরণ করবে আর যদি লাভ হয় তবে অর্থ বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ শর্ত মতো আদায় করবে। অতঃপর বাড়তি মালে প্রথম ব্যবসায়ী ও দ্বিতীয় ব্যবসায়ী উভয়ে শরীক হবে। মালিক (রহঃ) বলেন, যদি ব্যবসায়ী শরীকী কারবারের মালের দ্বারা নিজের জন্য কোন কিছু খরিদ করে, তবে অর্থ বিনিয়োগকারী ইচ্ছা করলে উহাতে নিজেও শরীক হতে পারে বা উহা ছেড়ে দিতে পারে এবং নিজের মূলধন ব্যবসায়ী হতে ফিরিয়ে নিতে পারে। ব্যবসায়ী এই ধরনের যেকোনো সীমালংঘন করলে অর্থ বিনিয়োগকারীর মূলধন ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার থাকবে।

【9】

শরীকী কারবারে যা ব্যয় করা বৈধ

মালিক (রহঃ) যদি শরীকী কারবারের মাল এত অধিক হয় যে, খরচের বোঝা উঠাতে সক্ষম তবে ব্যবসায়ী তা হতে সফরে স্বীয় খোরাক-পোশাক নিয়ম মতো নিতে পারে। যদি তার একজনের পক্ষে সেই ব্যবসার কাজ আঞ্জাম দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে সে অন্য কাউকেও শ্রমিক নিযুক্ত করতে পারে। কোন কোন কাজ এমন রয়েছে যা ব্যবসায়ী নিজে একা করতে পারে না, যেমন অর্থ আদায়ের জন্য তাগাদা করা মাল আসবাব বেঁধে নেয়া, উহা উঠিয়ে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি এমতাবস্থায় ব্যবসায়ের মাল থেকে শ্রমিকের মুজুরী দিতে পারবে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যবসায়ী নিজের শহরে থাকে ততক্ষণ শরীকী মাল হতে খাদ্য ও পোশাক নিবে না। আর নিজ শহরে বিক্রয়ের যোগ্য পণ্য হলে মেহনতকারী উহা হতে কোন প্রকার খোরপোষ গ্রহণ করতে পারবে না। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি সফরে ব্যবসায়ী নিজের মালও নিয়ে যায় তবে সফরের খরচ উভয় মালে বর্তিবে অংশ অনুযায়ী।

【10】

শরীকী কারবারে যা ব্যয় করা অবৈধ

মালিক (রহঃ) ব্যবসায়ী শরীকী কারবারের মাল হতে হেবা করতে পারবে না; কোন ফকীরকে কিছু দিতে পারবে না এবং কারো ইহসানের বদলা দিতে পারবে না। যদি অন্যান্য লোক নিজেদের খাবার নিয়ে আসে তবে ব্যবসায়ীও নিজের খাবার তার সাথে মিশিয়ে খেতে পারে, তবে অধিক নিতে পারবে না। যদি অধিক নিতে ইচ্ছা করে, তবে অর্থ বিনিয়োগকারী হতে অনুমতি না মিললে তবে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

【11】

ধারে বা বাকীতে মাল বিক্রয় করার বিধান

মালিক (রহঃ) এই ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত এই যে, এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তিকে অর্থ যোগান দিল। সে উহা দ্বারা পণ্য খরিদ করল, অতঃপর উহা লাভের উপর ধারে বিক্রয় করল এবং টাকা উশুল করার পূর্বেই ব্যবসায়ী মারা গেল। তবে ব্যবসায়ীর ওয়ারিসদের ইখতিয়ার থাকবে যে, হয় ব্যবসায়ীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে মাল উশুল করবে বা ঐ কর্যের টাকা পুঁজি বিনিয়োগকারীকে উশুল করতে দিয়ে নিজেরা সরে পড়বে, সেই অবস্থায় তাদের কিছুই মিলবে না, যদি ওয়ারিসগণ তাগাদা করে তার কর্য আদায় করে নিয়ে থাকে। তবে ব্যবসায়ী খরচ ও লভ্যাংশ শর্ত মুতাবিক যা পাইত ওয়ারিসগণও তা পাবে যদি তারা সত্যিকারের ওয়ারিস হয়ে থাকে। যদি এমন হয় যে, তাদের উপর বিশ্বাস করা যায় না, তবে কোন বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে কর্য উশুল করে দেবে। যদি উহা উশুল হয়ে যায় তবে উহাদেরও ব্যবসায়ীর মতো হক মিলবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীর সাথে এই শর্ত করে থাকে যে, ধারে মাল বিক্রয় করবে না, করলে সে তার জন্য দায়ী হবে। এর পর যদি ব্যবসায়ী ধারে বিক্রয় করে থাকে তবে সে নিজেই দায়ী হবে।

【12】

শরীকী কারবারে ব্যবসা

মালিক (রহঃ) পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ী হতে বা ব্যবসায়ী পুঁজি বিনিয়োগকারী হতে কিছু কর্জ নিল বা পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীকে কিছু মাল বিক্রয় করতে দিল যে, ইহা বিক্রয় করে দাও বা কিছু দীনার দিল যে, ইহা দ্বারা কিছু মাল খরিদ করে লও। যদি এই লেনদেন বন্ধুত্বের নিয়মানুযায়ী হয়ে থাকে বা সাধারণ কাজ বিধায় শরীকী কারবারের মতো উহা না হয়ে থাকে। অর্থাৎ শরীকী কারবারের ব্যাপারে না হলেও এই কাজ তারা একে অন্যের জন্য করে দিত, তবে তা বৈধ হবে, অন্যথায় নয়। আর যদি এতে কোন শর্ত প্রবেশ করে অথবা ব্যবসায়ী এইরূপ করেছে এজন্য যাতে অর্থ বিনিয়োগকারী অর্থ তার নিকট রেখে দেয়, অথবা অর্থ বিনিয়োগকারী এইরূপ করল যাতে ব্যবসায়ী অর্থ ফেরত দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে না দেয়, আহল-ই ‘ইলম এইরূপ করতে নিষেধ করেন।

【13】

শরীকী কারবারে কর্জ

মালিক (রহঃ) কেউ কারো নিকট কর্জ পাওনা হয় আর যে কর্জ নিয়েছে সে দাতাকে বলে, যে অর্থ আমি কর্জ হিসেবে নিয়েছিলাম উহা শরীকী কারবারে আমার নিকট থাকতে দাও। তবে এইরূপ কারবার বৈধ হবে না। হ্যাঁ, যদি প্রথমে কর্জের অর্থ উশুল হয়ে যায় আর পরে ইচ্ছা হলে শরীকী কারবারে দিয়ে দেয় তবে বৈধ হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ব্যবসায়ী পুঁজি বিনিয়োগকারীকে বলে, আমার নিকট যে কারবারের অর্থ জমা আছে উহা আমাকে কর্জ হিসেবে দিয়ে দাও, তবে উহা অবৈধ হবে। কর্জ শোধ হলে পরে যদি ইচ্ছা হয় কর্জ দেবে, ইচ্ছা না হলে দেবে না। কারণ হয়তো ব্যবসায়ীর নিকট মূলধনে কিছু ঘাটতি হয়েছে। সে সময় বৃদ্ধি করিয়ে উক্ত ঘাটতি পূরণ করতে চায়, এটা অবৈধ।

【14】

শরীকী কারবারের হিসাব

মালিক (রহঃ) যদি ব্যবসায়ী ব্যবসা করে লাভ করল আর পুঁজি বিনিয়োগকারীর অনুপস্থিতিতে নিজের লভ্যাংশ নিতে ইচ্ছা করলে তবে ইহা বৈধ হবে না, যতক্ষণ না অর্থ বিনিয়োগকারী উপস্থিত হয়। যদি তার অনুপস্থিতিতেই নিয়ে নেয়, তবে সে এর জন্য দায়ী হবে, উভয়ের মধ্যে বণ্টনের সময় উক্ত মাল একত্রিত করা পর্যন্ত। মালিক (রহঃ) বলেনঃ পুঁজি বিনিয়োগকারীর জন্য ইহা বৈধ হবে না যে, মাল না দেখে লভ্যাংশের হিসাব করবে, বরং মাল উপস্থাপন প্রয়োজন হবে। প্রথমে পুঁজি বিনিয়োগকারী মূলধন নিয়ে নিবে। পরে শর্তানুযায়ী লভ্যাংশ ভাগ করবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ব্যবসায়ী কোন সামগ্রী ক্রয় করে আর ব্যবসায়ীর ঋণদাতাগণ তা আটকিয়ে বলে, এই মাল বিক্রয় করে যে লাভ হবে তোমার অংশে উহা হতে আমরা আমাদের পাওনা নিয়ে নিব। যদি পুঁজি বিনিয়োগকারীর অনুপস্থিতিতে এইরূপ করে তবে ইহা অবৈধ হবে। পুঁজি বিনিয়োগকারী তার মূলধন বের করে লওয়ার পর লভ্যাংশ ভাগ করা হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ব্যবসায়ী ব্যবসা করে লাভ করে এবং পুঁজি বিনিয়োগকারীর অবর্তমানে মূলধন পৃথক করে লভ্যাংশ সাক্ষীদের সম্মুখে ভাগ করে নেয় ইহা অবৈধ হবে। যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী আসার পূর্বে এইরূপ করেও ফেলে, তবে উহা ফেরত দিতে হবে, পুঁজি বিনিয়োগকারী এসে প্রথমে তার মূলধন পৃথক করে নিবে, তারপর অবশিষ্ট লভ্যাংশ ভাগ করা হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ ব্যবসায়ী ব্যবসা করে লাভ করল এবং সে পুঁজি বিনিয়োগকারীর লভ্যাংশ নিয়ে উপস্থিত হল এবং বলতে লাগল, ইহা তোমার লাভের অংশ। আমিও এইটুকু নিয়েছি। আর তোমার মূলধন আমার নিকট জমা রয়েছে, তবে এইরূপ করা অবৈধ হবে, বরং সে সমস্ত মূলধন ও লাভ নিয়ে পুঁজি বিনিয়োগকারীর সম্মুখে উপস্থিত করবে। অতঃপর পুঁজির মালিকের ইখতিয়ার রয়েছে, হয় মূলধন নিয়ে নিজে রেখে দিবে বা পুনরায় ব্যবসায়ীকে দিবে।

【15】

শরীকী কারবারের বিভিন্ন বিধান

মালিক (রহঃ) ব্যবসায়ী কিছু মাল খরিদ করলে পুঁজি বিনিয়োগকারী বলল, উহা বিক্রয় করে দাও, কিন্তু ব্যবসায়ী বলল, এখন বিক্রয় করা ঠিক হবে না, তবে এ ব্যাপারে অন্যান্য বিচক্ষণ ব্যবসায়ীর কাছে জিজ্ঞেস করা হবে। যদি তারা বিক্রয় করার পরামর্শ দেয়, তবে বিক্রয় করা হবে, না হয় রেখে দেয়া হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ ব্যবসায়ী শরীকী কারবারের মালে ব্যবসা আরম্ভ করার পর পুঁজি বিনিয়োগকারী তার পূর্ণ মাল মুনাফাসহ তলব করল। উত্তরে ব্যবসায়ী বলল, আমার নিকট পূর্ণ মালই জমা রয়েছে। অতঃপর যখন মাল ফেরত নেয়া আরম্ভ হল তখন ব্যবসায়ী বলল, আমার নিকট কিছু মাল নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আমি প্রথমে এজন্য বলেছিলাম যেন মাল আমার কাছে থাকতে দেয়া হয় তবে কোন প্রমাণ ব্যতীত ব্যবসায়ীর এই কথা বিশ্বাস করা হবে না। বরং তার পূর্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ফায়সালা দেয়া হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ অনুরূপভাবে ব্যবসায়ী পুঁজি বিনিয়োগকারীকে বলল, সে এত লাভ করেছে। অতঃপর যখন পুঁজি বিনিয়োগকারী মূলধন ও লভ্যাংশ চাইল তখন বলতে লাগল লাভ হয়নি, মূলধন আমার হাতে রেখে দেয়ার উদ্দেশ্যে লাভের কথা বলেছি, তবে প্রমাণ ব্যতীত তার কথা বিশ্বাস করা হবে না। বরং পূর্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ফায়সালা দেয়া হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ব্যবসায়ী ব্যবসায়ে লাভ করে তখন পুঁজি বিনিয়োগকারী বলল, লাভের এত-তৃতীয়াংশ তোমার এবং দুই-তৃতীয়াংশ আমার নির্ধারিত ছিল। ব্যবসায়ী বলল, না বরং দুই-তৃতীয়াংশ আমার আর এক-তৃতীয়াংশ তোমার নির্ধারিত করা হয়েছিল। তবে ব্যবসায়ীর কথা কসম সহকারে মেনে নেয়া হবে। কিন্তু এটা যদি দেশ প্রথার বিরুদ্ধে হয় তবে প্রথানুযায়ী লাভ বন্টনের ব্যবস্থা করা হবে। মালিক (রহঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে একশত দীনার শরীকী কারবারের জন্য দিল। সে উহা দ্বারা মাল খরিদ করল। যখন বিক্রেতাকে মালের মূল্য দিতে লাগল তখন বুঝা গেল ঐ দীনার চুরি হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় অর্থ বিনিয়োগকারী বলল, এই মাল বিক্রয় করে ফেল। যদি উহাতে লাভ হয়, তবে উহা আমার আর যদি ক্ষতি হয়, তবে সে জন্য তুমি দায়ী, কেননা তুমি আমার অর্থ নষ্ট করেছ। কিন্তু ব্যবসায়ী বলল, তুমি এই মালের মূল্য আদায় করে দাও, কেননা আমি এই মাল তোমার অর্থ দ্বারা খরিদ করেছি। মালিক (রহঃ) বলেনঃ এই অবস্থায় ক্রেতা ব্যবসায়ীকে বলা হবে তুমি এই মালের মূল্য বিক্রেতাকে আদায় করে দাও এবং অর্থ বিনিয়োগকারীকে বলা হবে যদি তোমার সম্মতি হয় তবে ব্যবসায়ীকে একশত দীনার আরও প্রদান কর যেন শরীকী কারবার বহাল থাকে, না হয় এই মালের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। যদি পুঁজি বা বিনিয়োগকারী একশত দীনার দেয়, তবে কারবার বহাল থাকবে, না হয় ঐ মাল ব্যবসায়ীর হয়ে যাবে। চুরি যাওয়ার কারণে অর্থ বিনিয়োগকারীর একশত দীনার বিনষ্ট হয়ে গেল। মালিক (রহঃ) বলেনঃ যখন পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ী পৃথক হয়ে যায় (শরীকী কারবার বন্ধ হয়ে যায়), কিন্তু ব্যবসায়ীর নিকট ব্যবসায়ে মাল হতে কোন মাল যেমন পুরাতন মশক বা পুরাতন কাপড় ইত্যাদি থেকে যায়, যদি এ দ্রব্যগুলো নিতান্ত স্বল্প মূল্যের হয়ে থাকে তবে উহা ব্যবসায়ীরই থাকবে। এটা ফেরত দিতে হবে না। যদি এই দ্রব্যগুলো মূল্যবান হয় যেমন কোন জন্তু, উট বা ইয়ামনী মোটা কাপড়, তবে যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী হতে মাফ করিয়ে নিয়া থাকে তবে তো ভাল, না হয় এটাও ফেরত দিতে হবে।