52. স্বপ্ন সম্পর্কিত অধ্যায়

【1】

স্বপ্ন প্রসঙ্গ

আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, নেককার মানুষের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের একভাগ সমতুল্য। [১] (সহীহ, বুখারী ৬৯৮৩) আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ (হাদীস) করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের নামায শেষে (উপস্থিত সাহাবীগণকে) জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ রাত্রে কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? অতঃপর বলতেন যে, আমার পরে ভাল (সত্য) স্বপ্ন ব্যতীত নবুয়তের কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না (অর্থাৎ ভাল স্বপ্নও নবুয়তের একটি অংশ)। (সহীহ, আবূ দাঊদ ৫০১৭, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন [সহীহ ও যয়ীফ সুনানে আবূ দাঊদ]) আতা ইব্নু ইয়াসার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার পরে মুবাশ্শাত (সুসংবাদসমূহ) ব্যতীত নবুয়তের কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। সাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্! মুবাশ্শাত কি? রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এমন ভাল ও শুভ স্বপ্ন যা কোন নেককার মানুষে দেখে কিংবা অপর কেউ তাঁর (উক্ত নেককার) সম্বন্ধে দেখে। ইহা নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (সহীহ, বুখারী ৬৯৯০, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল) আবূ কাতাদা ইব্নু রিবযী (রাঃ) আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শ্রবণ করেছি, তিনি বলেছেন, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ হতে হয় এবং দুঃস্বপ্ন শয়তানের পক্ষ হতে হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি কোন খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে সে যেন জাগ্রত হতে বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলে এবং উহার অমঙ্গল হতে আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থনা করে। তাহলে আল্লাহ্ চাহেন তো উহা আর তার কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। আবূ সালমা বলেন, আগে আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমার উপর পাহাড়ের চাইতেও অধিক বোঝা হত। কিন্তু যখন হতে এই হাদীস শ্রবণ করেছি, আমি আর সেই দিকে ভ্রুক্ষেপও করিনি। (বুখারী ৫৭৪৭, মুসলিম ২২৬১) বর্ণণাকারী উরওয়া ইব্নু যুবাইর (রহঃ) এই আয়াত সম্বন্ধে لَهُمْ الْبُشْرَى فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ (তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ রয়েছে) বলেন যে, এর অর্থ হল ঐ সমস্ত ভাল স্বপ্ন, যা নেককার মানুষে দেখে কিংবা অপর কেউ তার সম্বন্ধে দেখে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

【2】

শতরঞ্জ (দাবা) খেলা প্রসঙ্গে

আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি দাবা খেলা খেললো, সে আল্লাহ্ ও আল্লাহ্‌র রাসূলের নাফরমানী করল (অবাধ্য হল)। [১] (হাসান, আবূ দাঊদ ৪৯৩৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৬২, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন [সহীহ আল জামে ৬৫২৯]) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত; তাঁর বাড়ির একটি ঘরে কিছুসংখ্যক লোক বাস করত। তিনি শুনেছেন যে, উহাদের নিকট শতরঞ্জ রয়েছে। অতঃপর তিনি তাদের নিকট বলে পাঠালেন, তোমরা উহা (শতরঞ্জ) দূর কর। অন্যথায় আমি তোমাদেরকে আমার ঘর হতে বাহির করে দিব। তিনি উহাকে অত্যন্ত খারাপ মনে করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) বর্ণণাকারী আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রাঃ) তাঁর পরিবারের কাউকেও শতরঞ্জ খেলতে দেখলে তাকে মারতেন এবং শতরঞ্জ ভেঙ্গে ফেলতেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন) ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেন, আমি মালিক (রহঃ) হতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, শতরঞ্জ খেলা ভাল নয়। তিনি উহাকে মাকরূহ মনে করতেন। আমি (ইমাম) মালিক (রহঃ)-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলতেন যে, শতরঞ্জ খেলা, অপরাপর সকল অনর্থ এবং উদ্দেশ্যহীন খেলা মকরূহ। অতঃপর এই আয়াত তিলাওয়াত করতেন فَمَاذَا بَعْدَ الْحَقِّ إِلَّا الضَّلَالُ (হক-এর পর পথভ্রষ্টতা ছাড়া আর কিছু নেই)।