4. পবিত্রতা

【1】

ওযূর মাহাত্ম্য

আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ওযূ থাকা অবস্থায় ওযূ করবে, তার জন্য আল্লাহ্‌ দশটি নেকী রয়েছে লেখবেন। তাহক্বীক্ব : যঈফ। জাবের (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতের চাবি হল ছালাত। আর ছালাতের চাবি হল পবিত্রতা। তাহক্বীক্ব : উক্ত হাদীসের প্রথমাংশ যঈফ। এর কারণ হল, উক্ত সনদে দুইজন যঈফ রাবী আছে। সুলায়মান বিন করম ও আবু ইয়াহইয়া আল–কাত্তাত। আর দ্বিতীয় অংশ সম্পর্কে পৃথক সনদে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। মূলতঃ জান্নাতের চাবী ‘লা ইলা–হা ইল্লাল্লাহু’। শাবীব ইবনু আবু রাওহা শাবীব ইবনু আবু রাওহা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ছাহাবীগনের এক ব্যক্তি হতে বর্ণনা করেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা ফজরের ছালাত আদায় করলেন এবং ‘সূরা রূম’ পড়লেন। কিন্তু তেলাওয়াতে কিছুটা গোলমাল হয়ে গেল। যখন তিনি ছালাত শেষ করলেন তখন বললেন, তাদের কি হয়েছে, যারা আমাদের সাথে ছালাত আদায় করে, অথচ উত্তমরূপে পবিত্রতা লাভ করে না? এরাই আমাদের কুরআন পাঠে গোলযোগ সৃষ্টি করে। তাহক্বীক্ব : যঈফ। উক্ত হাদীছের সনদে আব্দুল মালেক বিন উমাইর নামে একজন যঈফ রাবী আছে। বানী সুলাইম গোত্রের এক ব্যক্তি একবার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই পাঁচটি কথা আমার হাতে অথবা তাঁর নিজের হাতে গুনে গুনে বললেন, ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা হল পাল্লার অর্ধেক আর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ উহাকে পূর্ণ করে এবং ‘আল্লাহু আকবর’ আসমান ও যমীনের মাঝে যা আছে তাকে পূর্ণ করে। ছিয়াম হল ধৈর্যের অর্ধেক এবং পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক। তাহক্বীক্ব : যঈফ।

【2】

যে যে কারনে ওযু ওয়াজিব হয়

মু’আবিয়া ইবনু আবি সুফিয়ান (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, চক্ষুদয় হল গুহ্যদ্বারের ঢাকনা। সুতরাং চোখ যখন ঘুমায়, তখন ঢাকনা খুলে যায়। তাহক্বীক্ব : যঈফ। উক্ত হাদীছের পরের হাদীছটি ছহীহ (মিশকাত হা/৩১৬)। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, নিশ্চয় ওযূ সেই ব্যক্তির উপর ওয়াজিব, যে কাত হয়ে ঘুমিয়েছে। কেননা যখন কেউ কাত হয়ে ঘুমায়, তখন তার শরীরের বন্ধনসমূহ খুলে যায়। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আবু রাফে’ (রাঃ) একদা তাকে একটা ছাগল হাদিয়া দেওয়া হল এবং তিনি পাতিলে রাখলেন। এমন সময় রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার নিকট উপস্থিত হলেন এবং বললেন, পাতিলে কি রাখা হয়েছে হে আবু রাফে’? তিনি বললেন, একটি ছাগল আমাদেরকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। তা পাতিলে পাক করেছি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমাকে এর একটি বাজু দাও। (আবু রাফে’ বলেন,) আমি তাঁকে একটি বাজু দিলাম। অতঃপর তিনি বললেন, আমাকে আর একটি বাজু দাও। আমি তাঁকে আরো একটি বাজু দিলাম। অতঃপর তিনি বললেন, আমাকে আর একটি বাজু দাও তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! ছাগলের মাত্র দুটি বাজু হয়। এটা শুনে তিনি বললেন, তুমি যদি চুপ করে থাকতে তাহলে আমাকে বাজুর পর বাজু দিতে থাকতেন। অতঃপর তিনি পানি চাইলেন এবং কুলি করলেন। তারপর তাঁর অঙ্গুলীসমূহের মাথা ধুয়ে ফেললেন। অতঃপর সালাতের জন্য দাঁড়ালেন এবং সালাত আদায় করলেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের নিকট পুনরায় ফিরে আসলেন এবং তাদের নিকট ঠান্ডা গোশত পেলেন। তিনি তা খেলেন। অতঃপর মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং সালাত আদায় করলেন, কিন্তু পানি স্পর্শ করলেন না। তাহক্বীক্ব : যঈফ। ইবনু ওমর (রাঃ) ওমর (রাঃ) বলেন, চুম্বন স্পর্শের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তোমরা চুম্বন দিয়ে ওযূ কর। তাহক্বীক্ব : যঈফ। ওমর ইবনু আব্দুল আযীয তামীমুদ দারী (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, প্রত্যেক প্রবাহমান রক্তের কারণেই ওযূ করতে হবে। তাহক্বীক্ব : যঈফ। ইমাম দারাকুৎনী (রহঃ) বলেন, ওমর ইবনু আব্দুল আযীয তামীমুদ্দারীর নিকট থেকে শুনেননি। আর ইয়াযীদ ইবনু খালেদ ও ইয়াযীদ ইবনু মুহাম্মাদ দু’জনই অপরিচিত রাবী।

【3】

পায়খানা-পেশাবের শিষ্টাচার

আনাস (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন পায়খানায় যেতেন, তখন তাঁর আংটিটি খুলে রাখতেন। তাহক্বীক্ব : হাদীছটি মুনকার হিসেবে যঈফ। আবু মূসা আশ'আরী (রাঃ) একদিন আমি নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। অতঃপর তিনি যখন পেশাব করার ইচ্ছা করলেন, তখন একটি দেয়ালের গোড়ায় নরম জায়গায় গেলেন এবং পেশাব করলেন। অতঃপর বললেন, যখন তোমাদের কেউ পেশাব করতে ইচ্ছা করে, তখন যেন সে এরূপ স্থান সন্ধান করে যাতে শরীরে পেশাবের ছিটা না পড়ে। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি চোখে সুরমা লাগায়, সে যেন বিজোড় সংখ্যায় লাগায়। যে এইরূপ করল সে ভাল কাজ করল, আর যে করল না সে মন্দ কাজ করল না। আর যে ব্যক্তি ইস্তিঞ্জা করে সেও যেন বিজোড় করে। যে তা করল সে ভাল করল, আর যে করল না সে মন্দ কাজ করল না। যে ব্যক্তি খানা খেল এবং খিলাল দ্বারা দাঁত হতে কিছু বের করল, সে যেন তা বাইরে ফেলে দেয় এবং যা জিহবা দ্বারা মথিত করে তা যেন গিলে ফেলে। যে এরূপ করল ভাল করল, আর যে এরূপ করল না সে মন্দ করল না এবং যে ব্যক্তি পায়খানায় যায়, সে যেন পর্দা করে, যদি সে পর্দা করতে বালির স্তূপ ব্যতীত কিছু না পায়, তাহলে স্তূপকে যেন পিঠ দিয়ে বসে। কারণ শয়তান মানুষের বসার স্থান নিয়ে খেলা করে। যে এরূপ করল ভাল করল, আর যে না করল মন্দ করল না। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আব্দুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় পেশাব না করে। অতঃপর সেখানে সে গোসল করবে অথবা ওযূ করবে, কারণ অধিকাংশ ধোঁকা সেখান থেকেই উৎপন্ন হয়। তাহক্বীক্ব : উক্ত হাদীসের প্রথমাংশ সহীহ আর শেষের অংশটুকু যঈফ। আব্দুল্লাহ ইবনু সারজেস (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন গর্তে পেশাব না করে। তাহক্বীক্ব : যঈফ। ওমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা আমাকে দাঁড়িয়ে পেশাব করতে দেখলেন। তখন তিনি বললেন, হে ওমর! দাঁড়িয়ে পেশাব করো না। তারপর থেকে আমি আর দাঁড়িয়ে পেশাব করিনি। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমার নিকট জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! যখন ওযূ করবেন, তখন পানি ছিটাবেন। তাহক্বীক্ব : যঈফ ও মুনকার। আয়েশা (রাঃ) একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পেশাব করলেন এবং ওমর তাঁর পিছনে পানির একটি পাত্র নিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি বললেন, হে ওমর! এটা কী? ওমর (রাঃ) বলেন, পানি- যার দ্বারা আপনি ওযূ করবেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি এভাবে আদিষ্ট হয়নি যে, যখনই পেশাব করব তখনই ওযূ করবো। যদি আমি সর্বদা এরূপ করি, তাহলে এটা সুন্নত হয়ে যাবে। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আনাস (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন পায়খানা হতে বের হতেন, তখন বলতেন, ‘সেই আল্লাহ্‌র যাবতীয় প্রশংসা, যিনি আমার নিকট হতে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করলেন এবং আমাকে নিরাপদ করলেন।’ তাহক্বীক্ব : যঈফ। উক্ত বর্ণনার সনদে ইসমাঈল ইবনু মুসলিম নামে একজন রাবী আছে। সে মুহাদ্দিসগণের ঐকমত্যে যঈফ।

【4】

মিসওয়াক করা

আবু আইয়ূব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, চারটি জিনিস নবীদের সুন্নাত। (ক) লজ্জা করা। (খ) সুগন্ধি ব্যবহার করা। (গ) মিসওয়াক করা ও (ঘ) বিবাহ করা। তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ। উক্ত বর্ণনায় কয়েকটি ত্রুটি রয়েছে। আইয়ূব ও মাকহূলের মাঝে রাবী বাদ পড়েছে। হাজ্জাজ বিন আরত্বাহ নামক রাবীর দোষ রয়েছে। এছাড়াও এর সনদে আবু শিমাল রয়েছে। তাকে আবু যুর’আহ ও ইবনু হাজার আসক্বালানী অপরিচিত বলেছেন। আবু উমামা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যখনই জিবরীল (আঃ) আমার নিকট আসতেন, তখনই আমাকে মিসওয়াক করার জন্য বলতেন, যাতে আমার ভয় হতে লাগলো যে, আমি আমার মুখের সম্মুখ দিক ক্ষয় করে দিব। তাহক্বীক্ব : নিতান্তই যঈফ। আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে সালাত মিসওয়াক করে আদায় করা হয়, সেই সালাতে মিসওয়াক করা বিহীন সালাতের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী নেকী হয়। তাহক্বীক্ব : ইমাম বায়হাক্বী উক্ত বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, মু’আবিয়া ইবনু ইয়াহইয়া যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন। সে নির্ভরযোগ্য নয়। অন্য সূত্রে উরওয়া আয়েশা থেকে বর্ণনা করেছে। কিন্তু তারা উভয়েই যঈফ। অন্য সূত্রে উরওয়া আক্বেদী থেকে বর্ণনা করেছে, সে মিথ্যুক।

【5】

ওযূর সুন্নাতসমূহ

বর্ণনাকারী আবু উমামা (রাঃ) একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ওযূর অবস্থা বর্ণনা করলেন। অতঃপর তিনি তাঁর দুই চোখের কোণা মাসহে করলেন এবং বললেন, দুই কান মাথারই অংশ। তাহক্বীক্ব : যঈফ। উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ওযূর জন্য একটি শয়তান রয়েছে, যাকে ‘ওলাহান’ বলা হয়। সুতরাং পানির কুমন্ত্রণা হতে সতর্ক থাকবে। তাহক্বীক্ব : নিতান্তই যঈফ। মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে দেখেছি, যখন তিনি ওযূ করতেন, আপন কাপড়ের কিনারা দ্বারা নিজ মুখমণ্ডল মুছে নিতেন। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আয়েশা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একটি পৃথক কাপড় খণ্ড ছিল, যার দ্বারা তিনি ওযূর পরে তাঁর ওযূর অঙ্গসমূহ মুছে নিতেন। তাহক্বীক্ব : যঈফ। ছাবেত ইবনু আবী সাফিয়া (রাঃ) আমি আবু জাফর মুহাম্মাদ আল-বাকেরকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে কি জাবের (রাঃ) বলেছেন যে, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওযূ করেছেন কখনো একবার কখনো দুই দুইবার; আবার কখনো তিন তিনবার করে। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আব্দুল্লাহ ইবনু যায়েদ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা দুই দুইবার করে ওযূ করলেন এবং বললেন, এটা এক নূরের উপর আরেক নূর। তাহক্বীক্ব : হাদীছটি জাল, ভিত্তিহীন। আবু হুরায়রা, ইবনু মাসঊদ ও ইবনু ওমর (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ওযূ করল এবং বিসমিল্লাহ্‌ পড়ল, সে তার সমস্ত শরীরকে পবিত্র করল। আর যে ব্যক্তি ওযূ করল অথচ বিসমিল্লাহ্‌ পড়ল না, সে কেবল তার ওযূর স্থানসমূহকেই পবিত্র করল। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আবু রাফে’ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন সালাতের জন্য ওযূ করতেন, তখন তাঁর আঙ্গুলে পরিহিত আংটি নাড়াচাড়া করতেন। তাহক্বীক্ব : যঈফ। উক্ত হাদীসের সনদে মা’মার ও তার পিতা মুহাম্মাদ ইবনু ওবায়দুল্লাহ নামে দুইজন দুর্বল রাবী আছে।

【6】

গোসল

আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক চুলের নিচে নাপাকী রয়েছে। সুতরাং চুলগুলোকে উত্তমরূপে ধৌত করবে এবং শরীর ভালভাবে পরিষ্কার করবে। তাহক্বীক্ব : যঈফ। এর সনদে হারিছ ইবনু ওয়াজীহ নামক এক রাবী আছে। ইমাম আবুদাউদ বলেন, তার হাদীছ মুনকার। সে দুর্বল রাবী। আলী (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি নাপাকীর এক চুল পরিমাণ স্থানও ছেড়ে দিবে এবং তা ধৌত করবে না, তার বিরুদ্ধে আগুনের এই এই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আলী (রাঃ) বলেন, সেই থেকে আমি আমার মাথার সাথে শত্রুতা পোষণ করেছি। এই কথা তিনি তিনবার বললেন। তাহক্বীক্ব : যঈফ। উক্ত বর্ণনার সনদে আত্বা হাম্মাদ ও যামান নামের দুই ব্যক্তি যঈফ রয়েছে। আয়েশা (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খিতমী দ্বারা মাথা ধৌত করতেন, অথচ তখন তিনি অপবিত্র থাকতেন। একেই তিনি যথেষ্ট মনে করতেন। মাথায় আর পানি ঢালতেন না। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আলী (রাঃ) জনৈক ব্যক্তি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকটে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমি নাপাকীর গোসল করেছি ও ফজরের সালাত পড়েছি। অতঃপর দেখি এক নখ পরিমাণ জায়গায় পানি পোঁছেনি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি তখন তুমি উহার উপর তোমার (ভিজা) হাত মুছে দিতে, তাহলে তোমার জন্য যথেষ্ট হত। তাহক্বীক্ব : যঈফ। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) সালাত ছিল পঞ্চাশ ওয়াক্ত, নাপাকীর গোসল ছিল সাতবার এবং কাপড় হতে পেশাব ধোয়ার বিধান ছিল সাতবার। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ্‌র দরবারে বারংবার প্রার্থনা করতে থাকেন, ফলে সালাত আদায় করা হয় পাঁচ ওয়াক্ত, নাপাকীর গোসল করা হয় একবার এবং পেশাব হতে কাপড় ধোয়ার বিধান করা হয় একবার। তাহক্বীক্ব : যঈফ।